ইউটিউব থেকে ইনকামের ৫টি কৌশল সম্পর্কে জেনে নিন

ফেসবুক সম্পর্কে ৫টি পদ্ধতি শিখলে ইনকাম হবেই হবেইউটিউব মার্কেটিং হলো আপনার ব্র্যান্ড, পণ্য বা সেবাকে প্রচার কর জন্য ইউটিউব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার একটি কৌশল। এটি বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের একটি শক্তিশালী মাধ্যম, যেখানে ভিডিওর মাধ্যমে অডিয়েন্সের সঙ্গে সরাসরি যোগযোগ করা যায়। ইউটিউবে প্রতি মাসে ২.৫ বিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে। 
ইউটিউব থেকে ইনকামের ৫টি কৌশল সম্পর্কে জেনে নিন
ভিডিও কনটেন্ট সাধারনত অন্য যে কোনো মাধ্যমের তুলনায় বেশি Engagement তৈরি করে। এটি ট্রাফিক বৃদ্ধি, লিড সংগ্রহ এবং বিক্রয় বাড়ানোর জন্য কার্যকর।একটি সঠিক কৌশল নির্ধারন করে ধারাবাহিকভাবে কাজ করলে ইউটিউব মার্কেটিং আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত ব্যবসা বা ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডের জন্য অসাধারন সাফল্য এনে দিতে পারে।

ভুমিকা

আপনারা আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে জানতে পারবে, ইউটিউব থেকে ইনকামের ৫টি কৌশল সম্পর্কে। আরোও জানতে পারবেন কিভাবে এডসেন্স ইনকাম করতে হয়, কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং এ নিজের এডিটিং স্কিল শেয়ার করে প্রজক্ট পেতে পারেন। ইউটিউব মার্কেটিং এর মাধ্যমে কিভাবে প্রমোশন বা পেইড কনটেন্ট করলে স্পন্সরশিপ পাওয়া যায়। কিভাবে ভিডিওর লিড কালেক্ট করে বিক্রি করতে হয়।

ইউটিউব মার্কেটিং এ অ্যাডসেন্স ইনকাম কিভাবে করতে হয়

ইউটিউব মার্কেটিং এবং অ্যাডসেন্স ইনকাম করার জন্য কয়েকটি ধাপে কাজ করতে হবে।নীচে আলোচনা করা হলো।
  • ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করুন: একটি গুগল অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন।পছন্দমতো নাম দিয়ে চ্যানেল তৈরি করুন একটি স্পেসিফিক নীশ/বিষয় নির্ধারন করুন (যেমন : ট্রাভেল, ফুড, টেক, এডুকেশন ইত্যাদি)। চ্যানেলের প্রফাইল ছবি এবং ব্যানার যোগ করুন
  • গুনগত মানসম্পন্ন কনটেন্ট তৈরি করুন: ট্রেন্ডিং এবং আপনার নীশ অনুযায়ী কন্টেন্ট আইডিয়া সংগ্রহ করুন।ভালো মানের ভিডিও বানান অর্থাঃ পরিষ্কার অডিও এবং ভিডিও কোয়ালিটি বজায় রাখুন। এডিটিং টুল ব্যবহার করে ভিডিও প্রফেশনালভাবে সাজান।নির্দিষ্ট সময়সুচি মেনে কনটেন্ট আপলোড করুন।
  • মনিটাইজেশন যোগ্যতা অর্জন করুন: ইউটিউবের জন্য আপনার চ্যানেলকে মনিটাইজ করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন সর্বশেষ ১২ মাসে ৪ ঘন্টা ওয়াচ টাইম, এক হাজার সাবস্ক্রাইব ও কমিউনিটি গাইডলাইন মেনে চলা।
  • গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট যুক্ত করুন: ইউটিউব Studio তে যান এবং Monetization ‍সেকশন থেকে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট সংযুক্ত করুন।অ্যাডসেন্স অ্যকাউন্ট ভেরিফাই করুন এবং পেমেন্ট সেটআপ সম্পন্ন করুন।
  • ভিডিওতে বিজ্ঞাপন চালু করুন : আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন চালু করতে ইউটিউব Studio এর Monetization Settings থেকে ভিডিও মনিটাইজেশন অপশন চালু করুন। বিজ্ঞাপনের ধরন (স্কিপেবল, নন-স্কিপেবল, ডিসপ্লে এড ইত্যাদি) নির্বাচন করুন।
  • ইউটিউব মার্কেটিং এবং ভিউ বাড়ান: SEO অপটিমাইজ করুন যেমন: ভিডিওর টাইটেল, Description ও Tag এ প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন। আকর্ষণীয় Thumbnail তৈরি করুন।সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন অর্থাৎ ভিডিও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য Facebook, Instagram, twitter ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করুন।
  • অডিয়েন্সের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাক্ট করুন : কমেন্টের উত্তর দিন এবং ফিডব্যাক নিন।
  • অ্যাডসেন্স ইনকাম ট্র্যাক করুন : গুগল অ্যাডসেন্স ড্যাশবোর্ড থেকে আপনার ইনকাম রিপোর্ট এবং পারফরম্যান্স ট্র্যাক করতে পারবেন।
সঠিক পরিকল্পনা , ধৈর্য ও নিয়মিত কাজের মাধ্যমে ইউটিউব মার্কেটিং এবং অ্যাডসেন্স ইনকাম সম্ভব। আপনি যদি একে পেশা হিসেবে নিতে চান, তবে ক্রমাগত শিখতে এবং উন্নতি করতে হবে।

ইউটিউটিউব মার্কেটিং এ নিজের এডিটিং স্কিল শেয়ার করে কিভাবে প্রজেক্ট পাওয়া যায় 

ইউটিউব মার্কেটিং এ নিজের এডিটিং স্কিল শেয়ার করে প্রজেক্ট পাওয়া একটি চমৎকার উপায়। এটি করা জন্য কৌশলগতভাবে কন্টেন্ট তৈরি এবং মার্কেটিং করা প্রয়োজন। নীচে বিস্তরীত ধাপ দেওয়া হলো।
  • নিজের স্কিল হাইলাইট করুন: আপনার এডিটিং দক্ষতা প্রদর্শনের জন্য ছোট ডেমো ডিডিও তৈরি করুন। বিভিন্ন এডিটিং স্টাইল (মোশন গ্রাফিক্স, কালার গ্রেডিং, ট্রানজিশন, ইফেক্ট ইত্যাদি) দেখান। Before ও After ক্লিপ তৈরি করুন যাতে পরিবর্তন স্পষ্টভাবে বোঝা যায়।
  • পোর্টফোলিও তৈরি করুন : ইউটিউব চ্যানেল প্লেলিস্ট বানিয়ে আপনার কাজগুলো সাজান। এটি আপনার কাজ দেখানোর জন্য পোর্টফোলিওর মতো কাজ করবে।
  • এডিটিং বিষয়ক টিউটোরিয়াল শেয়ার করুন : কন্টেন্ট তৈরি করতে পারেন যেমন : Adobe premiere pro, Final cut pro, Da Vinci resolve) নিয়ে । সহজ টিপস এবং ট্রিকস শেয়ার করুন। এডিটিং ইফেক্ট বা ট্রানজিশন তৈরি করার পদ্ধতি দেখান। বিষয়ভিত্তিক প্লেলিষ্ট তৈরি করুন যেমন : Basic editing, Advance effects, Color grading tips ইত্যাদি।
  • অডিয়েন্স তৈরি করুন এবং তাদের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাক্ট করুন: যারা আপনার ভিডিও দেখে প্রশ্ন করে, তাদের উত্তর দিন। প্রয়োজনীয় ফাইল বা প্রজেক্ট শেয়ার করে বিশ্বাস অর্জন করুন।ইউটিউব লাইভে এসে এডিটিং শেখান এবং দর্শকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলুন।
  • সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করুন : আপনার ইউটিউব ভিডিওগুলো ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিঙ্কডইন এবং টুইটারে শেয়ার করুন। এডিটিং কমিউনিটি এবং ফোরামে অংশগ্রহন করুন। আপনার কাজ হাইলাইট করে ছোট ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করুন।
  • কাস্টমারদের লক্ষ্য করে কন্টেন্ট তৈরি করুন: টার্গেট অডিয়েন্স নির্ধারন করুন যেমন:ছোট ব্যবসা ,ইউটিউবার, গেমার, ইভেন্ট প্ল্যানার।তাদের সমস্যা সমাধান করুন যেমন:কীভাবে প্রফেশনার লুকিং প্রোমো ভিডিও বানাবেন।
  • ফ্রিল্যান্স কাজের অফার দিন : আপনার ভিডিওর শেষে বা ভিডিওর বর্ননায় উল্লেখ করুন যে আপনি ফ্রিল্যান্স কাজের জন্য উন্মুক্ত। কন্টাক্ট ইনফো এবং সোশ্যাল মিডিয়া লিংক দিন। উদাহরন : আপনার প্রজেক্টের জন্য আমাকে হায়ার করতে চাইলে নীচের লিঙ্কে যোগাযোগ করুন।
  • কোলাবরেশন করুন : অন্য ইউটিউবারদের সঙ্গে কাজ করুন। তাদের জন্য ভিডিও এডিটিং সেবা দিয়ে আপনার স্কিল প্রদর্শন করুন। জনপ্রিয় চ্যানেলগুলোতে গেস্ট হিসেবে উপস্থিত থাকুন।
  • ক্লায়েন্টদের কাছে থেকে রিভিউ নিন : আপনার কাজের জন্য যারা আপনাকে হায়ার করেছেন, তাদের রিভিউ চেয়ে নিন।রিভিউ বা টেস্টিমোনিয়াল ভিডিও তৈরি করে নিজের চ্যানেলে আপলোড করুন।
  • মনিটাইজেশন এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং: এডিটিং সফটওয়্যার বা রিসোর্সের জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং চালান। আপনার স্কিল শেখানোর জন্য পেইড কোর্স তৈরি করুন।
  • ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করুন : ফাইভার, আপওয়ার্ক এবং লিঙ্কডইনে প্রোফাইল তৈরি করুন এবং আপনার ইউটিউব ভিডিওর লিংক শেয়ার করুন।ক্লায়েন্টদের আকৃষ্ট করতে ইউটিউবের ভিডিওগুলো আপনার কাজের প্রমান হিসেবে ব্যবহার করুন।
টিপস 
  • প্রতিনিয়ত নতুন এডিটিং স্টাইল এবং টেকনিক শেখার চেষ্টা করুন।
  • পেশাদারিত্ব বজায় রাখুন এবং সময়মতো কাজ ডেলিভার করুন।
  • আপনার কাজকে সৃজনশীলভাবে উপস্থাপন করুন।
  • সঠিক প্রচেষ্টা এবং কৌশলের মাধ্যমে আপনি ইউটিউব থেকে এডিটিং প্রজেক্ট পেতে পারবেন।

ইউটিউব মার্কেটিং এ কিভাবে প্রমোশন বা পেইড কন্টেন্ট করলে স্পন্সরশিপ পাওয়া যায়

ইউটিউব মার্কেটিং এ প্রমোশন বা পেইড কন্টেন্টের মাধ্যমে স্পন্সরশিপ পেতে হলে আপনাকে পরিকল্পিতভাবে কাজ করতে হবে। স্পন্সরদের আকৃষ্ট করতে আপনাকে পেশাদার এবং প্রভাবশালী প্রোফাইল তৈরি করতে হবে।নীচে আলোচনা করা হলো।
  • আপনার নিশ নির্ধারন করুন : যেমন: ফিটনেস, ট্রাভেল, টেক রিভিউ, ফুড, এডুকেশন ইত্যাদি। স্পন্সররা সাধারনত নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ফোকাস করা চ্যানেল খোঁজে। আপনার কনটেন্ট সেই নীশের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক এবং আর্কষনীয় হতে হবে।
  • উন্নতমানের কনটেন্ট তৈরি করুন : ভালো ক্যামেরা ও অডিও কোয়ালিটি নিশ্চিত করুন। আপনার ভিডিও এডিটিং সুন্দর এবং আর্কষনীয় হওয়া প্রয়োজন। এমন কনটেন্ট তৈরি করুন যা আপনার দর্শকদের সমস্যা সমাধান করে এবং তাদের জীবনকে সহজ করে।নিয়মিত এবং ধারাবাহিকভাবে কনটেন্ট প্রকাশ করুন।
  • আপনার অডিয়েন্স তৈরি করুন : দর্শকদের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাক্ট করুন যেমন: কমেন্টের উত্তর দিন, ফিডব্যাক দিন ইত্যাদি।পোল এবং কমিউনিটি পোস্ট ব্যবহার করুন। স্পন্সররা যেন দেখতে পাই দর্শকরা আপনার কনটেন্টের সঙ্গে কতটা সংযুক্ত।
  • স্পন্সরদের জন্য আর্কষনীয় ডেটা সংগ্রহ করুন : ভিউ সংখ্যা, ওয়াচ টাইম, সিটিআর এবং ইঙ্গেজমেন্ট রেট শেয়ার করার জন্য প্রস্তুত রাখুন।
  • ডেমোগ্রাফিক ডেটা : আপনার দর্শকদের বয়স, লোকেশন এবং লিঙ্গ শেয়ার করুন যা স্পন্সরের জন্য গুরুত্বপূর্ন।
  • পেইড প্রমোশন এবং ব্র্যান্ড ফিচার করুন : শুরুতে ছোট ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট রিভিউ বা প্রমোশন করুন। প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে একটি প্রাসঙ্গিক এবং স্বাভাবিক কনটেন্ট বানান।কন্টেন্ট এমনভাবে সাজান যাতে আপনার অডিয়েন্সের জন্য তা আর্কষনীয় হয়। ভিডিওর শুরুতে পেইড প্রমোশন বা স্পন্সরশিপ সম্পর্কে জানিয়ে দিন।
  • স্পন্সরদের আকৃষ্ট করতে নিজেকে প্রস্তুত করুন : একটি প্রফেশনাল মিডিয়া কিট বানাতে হবে যেখানে থাকবে আপনার চ্যানেলের বিবরন, কন্টেন্ট টাইপ, অ্যানালিটিক্স ডেটা (ভিউ, ইঙ্গেজমেন্ট ইত্যাদি), সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা এবং ডেমোগ্রাফিক ও আপনার কাজের নমুনা। প্রাসঙ্গিক ব্র্যান্ড বা কোম্পানিকে ইমেইল পাঠান, তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের সঙ্গে কিভাবে আপনার কনটেন্ট মানানসই হবে তা উল্লেখ করুন। ব্র্যান্ডস্পন্সর, গ্র্যাপিভাইন, Influencer marketplace ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করুন।
  • আপনার প্রোফাইল সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করুন : আপনার ইউটিউব ভিডিওগুলো ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও লিঙ্কডইনে শেয়ার করুন। স্পন্সরশিপ কন্টেন্টগুলো নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করুন। লিঙ্কডইনে প্রোফেশনালভাবে নিজের প্রোফাইল সাজিয়ে রাখুন এবং ব্র্যান্ডদের টার্গেট করুন।
  • অতীত প্রজেক্টের রিভিউ শেয়ার করুন : স্পন্সরশিপ থেকে পাওয়া সাফল্যের গল্প বা কাজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন। চ্যানেলে স্পন্সরদের সঙ্গে কাজ করার প্রভাব সম্পর্কে বলুন।
  • মনিটাইজেশন বাড়ানোর জন্য ক্রিয়েটিভ হন : স্পন্সরশিপের পাশাপাশি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, মার্চেন্ডাইজ সেলিং এবং কোর্স প্রমোশন চালু করুন। ভিডিওর মাধ্যমে নতুন ধরনের ব্র্যান্ড ক্যাম্পেইন আইডিয়া স্পন্সরদের প্রস্তাব দিন।
টিপস
  • ধৈর্য্য ধারন করতে হবে। শুরুতে বড় ব্র্যান্ড স্পন্সর পেতে সময় লাগতে পারে। পেশাদারিত্ব বজায় রাখুন এবং সব সময় স্পন্সরের শর্ত মেনে কাজ করুন। নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি করুন যাতে স্পন্সররা আপনাকে সহজেই বিশ্বাস করে। সঠিক কৌশল এবং ধারাবাহিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আপনি ইউটিউবে স্পন্সরশিপ পেতে সক্ষম হবেন।

ইউটিউব মার্কেটিং এ কিভাবে ভিডিওর মাধ্যমে লিড কালেক্ট করে বিক্রি করতে হয় 

ইউটিউব মার্কেটিং ব্যবহার করে ভিডিওর মাধ্যমে লিড সংগ্রহ এবং বিক্রি করা একটি কার্যকর পদ্ধতি। সঠিক কৌশল এবং পরিকল্পনার মাধ্যমে আপনি আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের কাছ থেকে লিড সংগ্রহ করতে পারবেন এবং সেগুলো বিক্রিতে রুপান্তরিত করতে পারবেন। নীচে এই প্রক্রিয়াটি আলোচনা করা হলো।
  • লিড জেনারেশনের জন্য সঠিক কনটেন্ট তৈরি করুন : আপনার অডিয়েন্সের একটি নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করতে পারে এমন কনটেন্ট তৈরি করুন। যেমন : “আপনার ওজন কমানোর জন্য সেরা ৫টি টিপস”, কিভাবে ছোট ব্যাবসার জন্য ফেসবুক বিজ্ঞাপন চালাবেন। ভিডিওতে এমন তথ্য দিন যা অডিয়েন্সের জন্য উপকারী। এটি অডিয়েন্স আপনাকে বিশ্বাস করবে। কেনটেন্টের ধরন নির্বাচন করতে হবে যেমন : প্রোডাক্ট রিভিউ, টিউটোরিয়াল ভিডিও, ওয়ার্কশপ বা ডেমো ইত্যাদি।
  • কল টু অ্যাকশ (CTA) সংযুক্ত করুন : ভিডিওর ‍শুরু, মাঝে ও শেষে স্পষ্টভাবে বলুন আপনার দর্শকরা কী করবেন। যেমন: “নতুন অফার পেতে আমাদের লিঙ্কে ক্লিক করুন”, “ফ্রি ই-বুক ডাউনলোড করতে নীচের লিঙ্কে যান” ইত্যাদি। আপনার CTA এর মাধ্যমে দর্শকরা আপনার ল্যান্ডিং পেজে, সাইন-আপ ফর্মে বা ওয়েবসাইটে যেতে পারে।
  • ল্যান্ডিং পেজ তৈরি করুন : আপনার ল্যান্ডিং পেজ দেখতে প্রফেশনাল এবং ব্যবহারকারী বান্ধব হওয়া উচিত। একটি সহজ ফর্মে নাম, ইমেইল এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য জিজ্ঞাসা করুন। যেমন:ফ্রি ই-বুক, কোর্স, ডেমো বা ডিসকাউন্ট কুপন।
  • ভিডিওর বর্ননায় লিঙ্ক যোগ করুন : ভিডিওর ডেসক্রিপমন বক্সে ল্যান্ডিং পেজের লিঙ্ক দিন। প্রাসঙ্গিক টেক্সট যোগ করুন যেমন :“ ফ্রি রিসোর্স পেতে এখানে ক্লিক করুন ”।আমাদের অফার সম্পর্কে আরও জানতে এখানে ক্লিক করুন ইত্যাদি।
  • ইউটিউব কার্ড এবং এন্ড স্ক্রিন ব্যবহার করুন : ভিডিওর মধ্যে লিঙ্ক যুক্ত করুন যেখানে সরাসরি ক্লিক করে ল্যান্ডিং পেজে যেতে পারেন। ভিডিওর শেষে সাবস্ক্রাইব বাটন এবং ল্যান্ডিং পেজের লিঙ্কযুক্ত ভিডিও বা প্লেলিস্ট প্রমোট করুন।
  • ইমেইল মার্কেটিং ব্যবহার করুন : যারা আপনার ফর্ম পুরন করেছেন, তাদের ইমেইল পাঠিয়ে আরোও ভ্যালু অফার করুন। প্রাসঙ্গিক এবং আর্কষনীয় তথ্য দিয়ে তাদের আগ্রহ ধরে রাখুন।ডিসকাউন্ট নতুন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে ইমেইলে জানিয়ে দিন।
  • সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিজ্ঞাপন ব্যবহার করুন : ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং লিঙ্কডইন এ আপনার ভিডিও শেয়ার করুন। ইউটিউব অ্যাডস ব্যবহার করে আপনার ভিডিওর রিচ বাড়ান।
  • ট্র্যাকিং এবং অপটিমাইজেশন : গুগল অ্যানালিটিক্স এবং ইউটিউব অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করুন এবং কোন ভিডিও থেকে কত লিড আসছে তা পর্যবেক্ষন করুন। আপনার ল্যান্ডিং পেজ বা ভিডিওর বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করে দেখুন কী ভালো কাজ করছে। কম ফলাফল পাওয়া অংশগুলো উন্নত করুন।
  • লিড রুপান্তর করে বিক্রি করুন : লিড সংগ্রহ করার পরে তাদের প্রয়োজন অনযায়ী প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রস্তাব করুন। যারা একটি প্রোডাক্ট কিনেছেন তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত আরোও প্রোডাক্ট অফার করুন। বিক্রির পরে ভালো সাপোর্ট দিলে তারা পুনরায় আপনার কাছ থেকে কিনতে আগ্রহী হবে।
  • পর্যালোচনা ও উন্নতি করুন : লিড জেনারেশন এবং বিক্রির পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়মিত পর্যালোচনা করুন। আপনার কৌশলগুলো কোথায় কাজ করছে বা উন্নতির প্রয়োজন তা নির্ধারন করুন।
  • সঠিক পদ্ধতিতে ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে লিড জেনারেট করা এবং বিক্রি করা গেলে এটি আপনার ব্যবসার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি লাভজনক কৌশল হতে পারে।

ইউটিউব মার্কেটিং এ কিভাবে মার্চেন্ডাইজ করে ইনকাম করা যায়

ইউটিউব মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে মার্চেন্ডাইজ বিক্রি করে আয় করা একটি জনপ্রিয় এবং কার্যকর পদ্ধতি। আপনি যদি একটি ভালো সাবস্ক্রাইব বেস এবং নির্দিষ্ট নীশ (নিশ্চিত বিষয়ের উপর ভিত্তি করে চ্যানেল) নিয়ে কাজ করেন, তাহলে এই পদ্ধতিটি আপনার জন্য বিশেষভাবে উপযোগী হতে পারে।নীচে বিস্তারীত ধাপে ধাপে আলোচনা করা হলো।
  • মার্চেন্ডাইজ প্ল্যানিং করুন : আপনি যে নীশ নিয়ে কাজ করছেন তার সঙ্গে সম্পর্কিত পণ্য বিক্রি করুন। যেমন : গেমিং চ্যানেলের জন্য গেমিং গিয়ার বা কাস্টমােইজড পোশাক। ট্রাভেল চ্যানেলের জন্য ট্রাভেল চ্যানেলে জন্য ট্রাভেল অ্যাকসেসরিজ।ফিটনেস চ্যানেলের জন্য স্পোর্টস ওয়্যার বা পানির বোতল। জনপ্রিয় পণ্য বেছে নিতে হবে যেমন: টি-শার্ট, মগ, টোট ব্যাগ, ফোন কেস, স্টিকার ইত্যাদি।
  • নিজস্ব ডিজাইন তৈরি করুন : পণ্যে আপনার ব্র্যান্ডের লোগো, স্লোগান বা আর্কষনীয় কোনো লাইন যোগ করুন।আপনার দর্শকদের পছন্দ অনুযায়ী কাস্টম ডিজাইন তৈরি করুন। ‍যদি আপনার ডিজাইনিং স্কিল না থাকে তবে একজন পেশাদার ডিজাইনারকে নিয়োগ করুন।
  • মার্চেন্ডাইজ প্রোডাকশন এবং সাপ্লাই প্ল্যাটফর্ম বেছে নিন : Tee spring, Redbubble, Spread shirt, Printful এই জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলোতে আপনার ডিজাইন অনুযায়ী পণ্য তৈরি এবং সরবরাহ করবে। আপনি যদি নিজের পণ্য তৈরি এবং সরবরাহ করতে চান তাহলে একটি ছোট ইনভেন্টরি ম্যানেজ করুন।
  • ইউটিউবে মার্চেন্ডাইজ প্রমোট করুন : আপনার পণ্য কেমন দেখাচ্ছে এবং এটি কেন ব্যবহার করা উচিত তা দেখান। ভিডিওর বর্ননায় পণ্যের ওয়েবসাইট বা স্টোরের লিঙ্ক যোগ করুন। যেমন: “আমাদের মার্চেন্ডাইজ কিনুন” [লিঙ্ক]। ইউটিউবের শপ ট্যাবে আপনার পণ্য প্রদর্শন করুন।
  • অফার এবং ডিসকাউন্ট দিন : প্রথমদিকে বেশি বিক্রির জন্য ডিসকাউন্ট অফার দিন।যেমন: “এই সপ্তাহে ২০% ছাড়, কোড SAVE20 ব্যবহার করুন”। আপনার অডিয়েন্সের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য সময়সীমা নির্ধারন করুন।
  • সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করুন : ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টুইটারে আপনার পণ্য শেয়ার করুন। ইনস্টাগ্রাম স্টোরি বা রিলসে আপনার পণ্য প্রদর্শন করুন। দর্শকদের কাছ থেকে ফিডব্যাক চেয়ে তাদের পোস্ট শেয়ার করুন।
  • ফ্যান ইনজেগমেন্ট বাড়ান : দর্শকদের আকৃষ্ট করতে ফ্রি পণ্য গিভঅ্যাওয়ে দিন। নতুন পণ্যের আপডেট শেয়ার করতে ইউটিউব কমিউনিটি ট্যাব ব্যবহার করুন। আপনার দর্শকদের কাছ থেকে তাদের পছন্দের ডিজাইনের অনুরোধ নিন।
  • ফিডব্যাক এবং রিভিউ সংগ্রহ করুন : যারা পণ্য কিনেছেন তাদের রিভিউ ভিডিওতে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে বলুন। পণ্যের মান উন্নত করতে ফ্যানদের মতামত গ্রহন করুন।
  • ট্র্যাকিং এবং অপ্টিমাইজেশন : কোন পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে এবং কোনটা কম তা নির্ধারন করুন। পণ্য প্রমোশনের কৌশল উন্নত করতে নতুন আইডিয়া প্রয়োগ করুন।
  • মনিটাইজেশন প্রসারিত করুন : কাস্টমাইজড প্রোডাক্ট লাইন চালু করুন যেমন: একটি “লিমিটেড এডিশন” প্রোডাক্ট সিরিজ চালু করুন। আপনার মার্চেন্ডাইজের পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক পণ্য প্রমোট করে অতিরিক্ত আয় করুন।
টিপস
  • পণ্যের গুনগতমান ভালো রাখুন যাতে দর্শকরা সন্তুষ্ট থাকে।
  • প্রতিযোগিতামুলক দামে পণ্য অফার করুন।
  • সবসময় দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন এবং তাদের পছন্দকে প্রাধান্য দিন।
  • সঠিক কৌশলে কাজ করলে ইউটিউব মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে মার্চেন্ডাইজ বিক্রি করে উল্লেখযোগ্য আয় করা সম্ভব।

লেখকের শেষকথা

ইউটিউব মার্কেটিং হলো আপনার পণ্য, সেবা বা ব্র্যান্ডের প্রচারের জন্য একটি শক্তিশালী মাধ্যম। সঠিক কৌশল মানসম্মত কনটেন্ট এবং ধারাবাহিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এটি কাস্টমার ইঙ্গেগমেন্ট বাড়াতে লিড সংগ্রহ করতে এবং আয় বাড়াতে সাহায্য করে। বর্তমান প্রতিযোগতামুলক ডিজিটাল যুগে এটি একটি অপরিহার্য মার্কেটিং টুল।

উপরের আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩