শীতকালে ত্বকের যত্ন কেন ও কিভাবে করবেন

ত্বক ফর্সায় গাজরের ভূমিকা সম্পর্কে জেনে নিনআজকের আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে শীতকালে ত্বকের যত্ন কেন ও কিভাবে করবেন সেই সম্পর্কে। শীতকাল আমাদের জীবনে এক অনন্য ঋতু। এই সময়ে শীতল বাতাস, কম আর্দ্রতা এবং শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা কমে যায়, যা ত্বককে করে তোলে শুষ্ক ও রুক্ষ। এর ফলে ত্বক ফেটে যায়, ফাটা অংশে চুলকানি ও কখনও কখনও জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
শীতকালে ত্বকের যত্ন কেন ও কিভাবে করবেন
বিশেষত যারা শুষ্ক ও সংবেদনশীল ত্বকের অধিকারী তাদের জন্য এই আবহাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।ত্বক আমাদের শরীরের বাইরের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপৃর্ন অঙ্গ। এটি আমাদের শরীরকে বাইরের ধুলা, ময়লা, রোদ এবং ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে। তাই শীতকালে ত্বককে সুস্থ, উজ্জল ও প্রানবন্ত রাখতে সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

ভুমিকা

আমরা যদি শীতকালে ত্বকের যত্নের জন্য কিছু সহজ পদক্ষেপ গ্রহন করি তাহলে ত্বকের শুষ্কতা দুর করা সম্ভব হবে এবং ত্বকের মসৃনতা ও নরমভাব বজায় থাকবে। এর জন্য প্রয়োজন ত্বকের পরিচর্যা করার সঠিক জ্ঞান ও জীবনযাত্রার কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন। 

শীতকালে ত্বক সুরক্ষিত রাখতে হলে নিয়মিত ময়শ্চারাইজার ব্যবহার, সঠিক খাদ্যাভাস এবং পর্যাপ্ত পানি পান করাসহ বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরন করা প্রয়োজন। তাই শীতকালে ত্বকের যত্ন নেওয়ার সঠিক পদ্ধতিগুলো জানা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুবই গুরুত্বপৃর্ন ভুমিকা পালন করে। 

এটি ত্বককে সুস্থ ও আর্কষনীয় রাখতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘমেয়াদে ত্বকের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়ক ভুমিকা পালন করে।

শীতকালে ত্বকের যত্ন নেওয়ার উপায়

শীতকালে ঠান্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারনে ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। তাই এই সময় ত্বকের সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপৃর্ন। তবে শীতকালে ত্বকের যত্নের উপায়গুলোর মধ্যে রয়েছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, আর্দ্রতা বজায় রাখা ও উপযুক্ত পণ্যের ব্যবহার। নিম্নে কয়েকটি টিপস দেওয়া হলো যা আপনার ত্বককে সুরক্ষিত ও মসৃন রাখতে সাহায্য করবে।

ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন

শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা দুর করতে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। গোসলের পর ও ঘুমানোর আগে ময়শ্চারাইজার লাগানো সবচেয়ে ভালো।

ময়শ্চারাইজার কী

ময়শ্চারাইজার ত্বকের যত্নের একটি গুরুত্বপুর্ন উপাদান যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এটি ত্বককে শুষ্ক ও রুক্ষ হওয়া থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের উপর একটি সুরক্ষা স্তর তৈরি করে। শীতকাল কিংবা রুক্ষ আবহাওয়ায় এটি বিশেষভাবে কার্যকর।

ময়শ্চারাইজার কিভাবে ব্যবহার করবেন

ত্বক পরিষ্কার করুন: ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের আগে মুখ ও শরীর ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

ত্বক মুছে নিন: পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে ত্বক শুকিয়ে নিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে ত্বকে যেন সামান্য আর্দ্রভাব থাকে।

ময়শ্চারাইজার লাগান: অল্প পরিমান ময়শ্চারাইজার ক্রিম হাতের আঙ্গুলে লাগিয়ে নিয়ে ত্বকে আলতোভাবে লাগিয়ে মালিশ করতে হবে।

নিয়মিত ব্যবহার করুন: প্রতিদিন সকালে এবং রাতে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে গোসলের পর এটি ব্যবহার করলে সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয়।

ময়শ্চারাইজারযুক্ত ক্রিমের নাম

নিম্নে কিছু জনপ্রিয় ময়শ্চারাইজারযুক্ত ক্রিমের নাম উল্লেখ করা হলো
  • Ponds cold cream
  • Vaseline intensive care
  • Nivea soft cream
  • Himalaya nourishing skin cream
  • Dove deep moisture cream
  • L'Oreal hydra fresh cream
  • Lakme peach milk moisturizer
আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়শ্চারাইজার বেছে নেওয়া উচিত। ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় তাহলে হালকা ও নন-গ্রিজি ময়শ্চারাইজার করতে হবে।শুষ্ক ত্বকের জন্য বেশি Hydrating ক্রিম বেছে নিন।

হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন

অতিরিক্ত গরম পানির ব্যবহার ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা নষ্ট করে দেয়। তাই গোসল ও মুখ ধোয়ার সময় হালকা গরম পানি ব্যবাহার করতে হবে।

হালকা গরম পানি কিভাবে ব্যবহার করবেন

শীতকালে বা অন্যান্য সময়ে ত্বকের যত্নে এবং শরীরকে আরামদায়ক রাখতে হালকা গরম পানি ব্যবহারের সঠিক উপায়গুলো নিম্নরুপ।
  • গোসলের জন্য হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন
  • গরম পানি দিয়ে দীর্ঘ সময় গোসল করা উচিত নয়, কারন এটি ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা দুর করতে পারে।
  • গোসল শেষে ত্বক সামান্য ভেজা থাকা অবস্থায় ময়শ্চারাইজার লাগাতে হবে।
মুখ ধোয়ার জন্য
  • হালকা গরম পানি ব্যবহার করলে ত্বক পরিষ্কার হয় এবং রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকে।
  • খুব গরম পানি মুখের ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ করে ফেলতে পারে, তাই এই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
চুল ধোয়ার জন্য
  • চুলের জন্য হালকা গরম পানি ব্যবহার করলে মাথার ত্বকের ময়লা ভালোভাবে পরিষ্কার হয়।
  • তবে খুব গরম পানি ব্যবহার করলে শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে।
ঠান্ডা লাগা বা ক্লান্তি দুর করতে
  • হাত ও পা গরম পানিতে কিছুক্ষন ডুবিয়ে রাখলে খুব Relaxation অনুভুত হয়।
  • হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে পা ভিজিয়ে রাখলে পায়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
বাষ্প নেওয়ার জন্য: হালকা গরম পানির বাষ্প নাক, কান ও গলা পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।এটি সাইনাস বা ঠান্ডার সমস্যা দুর করতেও বেশ কার্যকর ভুমিকা পালন করে।

সর্তকতা
  • কখনোই খুব বেশি গরম পানি ব্যবহার করা উচিত নয়, কারন এটি ত্বক পুড়িয়ে দিতে পারে বা ত্বকের প্রাকৃতিক তেল দুর করতে পারে।
  • শিশু বা প্রবীণদের ক্ষেত্রে গরম পানির তাপমাত্রা পরীক্ষা করে ব্যবহার করুন।
  • সঠিক পদ্ধতিতে হারকা গরম পানি ব্যবহার করলে এটি স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যের জন্য খুব উপকারী।

সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন

শীতকালে সুর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন অবশ্যই লাগাবেন।

সানস্ক্রিন কী

সানস্ক্রিন একটি ত্বকের যত্নের পণ্য যা সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয়।এটি ত্বককে রোদে পোড়া (Sun burn) থেকে রক্ষা করে এবং দীর্ঘমেয়াদে ত্বকের বার্ধক্য ও ত্বকের ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

সানস্ক্রিন কিভাবে ব্যবহার করবেন

সানস্ক্রিন সঠিকভাবে ব্যবহার করতে নীচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে।

পরিমান অনুযায়ী ব্যবহার করুন: মুখ ঘাড়ের জন্য ১ টেবিল চামচ পরিমান সানস্ক্রিন যথেষ্ট। শরীরের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।

বাইরে যাওয়ার আগে ব্যবহার করুন: বাইরে যাওয়ার অন্তত ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন লাগান যাতে এটি ত্বকে ভালোভাবে শোষিত হয়।

সঠিকভাবে লাগান: সানস্ক্রিন ত্বকের প্রতিটি অংশে সমানভাবে লাগাতে হবে। বিশেষ করে নাক, কপাল, গলা, কান ও হাতের মতো অংশে ভালোভাবে লাগাতে হবে।

নিয়মিত পুনরায় ব্যবহার করুন: দীর্ঘ সময় বাইরে থাকলে বা ঘাম হলে প্রতি ২ থেকে ৩ ঘন্টা পরপর সানস্ক্রিন পুনরায় ব্যবহার করতে হবে।

ত্বকের ধরন অনুযায়ী বেছে নিন
  • তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জেল বা ম্যাট ফিনিশ সানস্ক্রিন ভালো।
  • শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়শ্চারাইজিং সানস্ক্রিন কার্যকর।
  • সংবেদনশীল ত্বকের জন্য মাইল্ড সানস্ক্রিন বেছে নিন।

জনপ্রিয় সানস্ক্রিন ক্রিমের নাম

  • Lakme sun expert
  • Neutrogena ultra sheer
  • L'Oreal UV perfect
  • Himalaya herbal sunscreen
  • Biotique Bio aloevera sunscreen
  • Nivea sun protect & Moisture
  • Ponds sun protect
  • Derma sheer sunscreen
  • Mamaearth ultra light sunscreen
টিপস
  • SPF ৩০ বা তার বেশি মাত্রার সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
  • যদি আপনি বেশি সময় সুর্যের নিচে থাকেন, তবে ওয়াটার-রেজিষ্ট্যান্ট সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
  • শীতকালে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা খুব জরুরি।

পানির পরিমান বৃদ্ধি করুন

শীতে কম পানি পান করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করুন


শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া সাধারন একটি সমস্যা। সঠিক খাবার খেলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা সম্ভব। নিচে কয়েকটি উপকারী সবজির নাম, কেন তা উপকারী এবং কীভাবে খেতে হবে তা উল্লেখ করা হলো।শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা দুর করতে যে সবজিগুলো খেতে হবে।

গাজর কেন খাবেন: গাজরে প্রচুর বিটা-ক্যারোটন এবং ভিটামিন এ থাকে, যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বককে নরম ও মসৃন রাখে।

গাজর কিভাবে খাবেন
  • কাঁচা সালাদ হিসেবে খেতে পারেন।
  • স্যুপ বা স্মুদি তৈরি করে পান করতে পারেন।
শাকপাতা (পালং শাক ও লালশাক) কেন খাবেন: শাকপাতায় প্রচুর ভিটামিন এ, সি ও ই থাকে যা ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে। এগুলো ত্বকের কোলাজেন তৈরি বৃদ্ধি করে যা ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য করে।

শাকপাতা (পালং শাক ও লালশাক) কিভাবে খাবেন
  • ভাজি করে বা সেদ্ধ করে খেতে হবে।
  • স্যুপ বা তরকারিতে মিশিয়ে রান্না করে খেতে হবে।
টমেটো কেন খাবেন: টমেটোতে প্রচুর পরিমানে লাইকোপেন থাকে, যা ত্বককে সুর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

টমেটো কিভাবে খাবেন
  • কাঁচা সালাদ হিসেবে খেতে পারেন।
  • স্যুপ বা তরকারিতে ব্যবহার করে খেতে পারেন।
কুমড়ো কেন খাবেন: কুমড়োতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, সি ও ই আছে, যা ত্বকের শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে সজীব রাখে।

কুমড়ো কিভাবে খাবেন
  • সেদ্ধ বা ভাজি করে খেতে হবে।
  • কুমড়োর স্যুপ বানিয়ে খেতে পারেন।
শসা কেন খাবেন: সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে যা ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে এবং শুষ্কতা কমায়।

শসা কিভাবে খাবেন
  • সালাদে কাঁচা শসা যোগ করতে পারেন।
  • স্মুদি জুস বানিয়ে পান করতে পারেন।
বিট কেন খাবেন: বিটে প্রচুর পরিমানে আয়রন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বককে উজ্জল ও আর্দ্র রাখে।

বিট কিভাবে খাবেন
  • সেদ্ধ করে সালাদে মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • স্মুদি বানিয়ে পান করতে পারেন।
বাাঁধাকপি ও ফুলকপি কেন খাবেন: এগুলিতে ভিটামিন সি ও কে থাকে, যা ত্বককে স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে এবং শুষ্কতা কমায়।

বাাঁধাকপি ও ফুলকপি কিভাবে খাবেন
  • ভাজি করে বা স্যুপ বানিয়ে খান।
  • স্টিম করে কাঁচা খান।
মিষ্টি আলু কেন খাবেন: মিষ্টি আলুতে ভিটামিন এ, সি এবং ডি থাকে, যা ত্বককে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে।

মিষ্টি আলু কিভাবে খাবেন
  • সেদ্ধ বা বেক করে খান।
  • চাট বা তরকারিতে যোগ করতে পারেন।
উপরোক্ত ঐ সবজিগুলোতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও পানি সমৃদ্ধ উপাদান থাকে যা ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগায়। শীতকালে শুষ্কতা কমাতে এবং ত্বককে উজ্জল রাখতে এই উপাদানগুলো অপরিহার্য। নিয়মিত এসব সবজি খাদ্য তালিকায় রাখলে ত্বক থাকবে সজীব ও উজ্জল।

লিপ বাম ও হাতের যত্ন

লিপ বাম হলো এমন একটি পণ্য যা ঠোঁটের শুষ্কতা ও ফাটল দুর করতে সাহায্য করে। এটি ঠোঁটকে নরম, মসৃন ও আর্দ্র রাখে। শীতকালে ঠোঁট বেশি শুষ্ক হয়ে যায়, তাই এই সময় লিপ বাম ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। হ্যান্ড ক্রিম এমন একটি ময়শ্চারাইজার যা হাতের শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বককে নরম রাখতে সাহায্য করে। এটি শীতকালীন আবহাওয়ায় হাত ফাটা রোধ করে এবং ত্বককে আর্দ্র রাখে।

লিপ বাম ও হ্যান্ড ক্রিম কেন ব্যবহার করবেন

  • শুষ্ক ঠোঁটের শীতলতা দুর করতে এটি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
  • ঠোঁট ফাটা রোধ করতে।
  • ঠোঁট নরম ও স্বাস্থ্যকর রাখতে।
  • হাতের ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে গেলে তা মসৃন করতে।
  • শীতেকালে হাত ফাটা ও ত্বকের চামড়া উঠা রোধ করতে।
  • হাতকে নরম ও ময়শ্চারাইজারযুক্ত রাখতে।

লিপ বাম ব্যবহার করার নিয়ম

  • প্রথমে ঠোঁট পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিন।
  • সামান্য পরিমান লিপ বাম আঙুল বা সরাসরি প্যাকেট থেকে ঠোটে লাগান।
  • দিনের মধ্যে প্রয়োজনে একাধিকবার ব্যবহার করুন।
  • রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করলে ঠোঁট সারারাত ময়শ্চারাইজার থাকবে।

হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহারের নিয়ম

  • প্রথমে হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে।
  • হ্যান্ড ক্রিম সামান্য পরিমান হাতে নিন।
  • হাতের তালু ও আঙুলে ক্রিম ভালোভাবে মেখে নিন।
  • হাত শুষ্ক অনুভুত হলে দিনে ২ থেকে ৩ বার বা তারও বেশি ব্যবহার করুন।

জনপ্রিয় লিপ বাম ও হ্যান্ড ক্রিমের নাম

লিপ বামের নাম
  • Nivea lip care
  • Vaseline lip therapy
  • Himalaya lip balm
  • Maybelline baby lips
  • The body shop lip balm
  • Buts bees lip balm
হ্যান্ডক্রিমের নাম
  • Nivea hand cream
  • Vaseline hand cream
  • Lakme hand cream
  • The body shop hand cream
  • L'Occitane shea butter hand cream
  • Himalaya hand cream
টিপস
  • ঠোঁট ও হাতের ত্বক বেশি শুষ্ক হলে ময়শ্চারাইজিং উপাদান সমৃদ্ধ পণ্য বেছে নিন।
  • নিয়মিত ব্যবহাতে শীতের শুষ্কতা ও রুক্ষতা থেকে ত্বক সুরক্ষিত থাকবে।

ত্বক পরিষ্কার রাখুন

ত্বক পরিষ্কার রাখতে মৃদু ক্লিনজার ব্যবহার করুন, যা ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ধরে রাখবে।

ত্বক পরিষ্কার কিভাবে করতে হয়

ত্বক পরিষ্কার রাখা ত্বকের যত্নের অন্যতম গুরুত্বপুর্ন ধাপ। এটি ত্বকের ময়লা, ধুলো এবং অতিরিক্ত তেল দুর করে ত্বককে সুস্থ ও উজ্জল রাখে। ত্ক পরিষ্কার করার সঠিক পদ্ধতি নিচে দেওয়া হলো।

ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্লিনজার বেছে নিন

  • শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়শ্চারাইজিং ক্লিনজার।
  • তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জেল বা ফোমিং ক্লিনজার।
  • সংবেদনশীল ত্বকের জন্য মাইল্ড বা প্যরাবেন-মুক্ত ক্লিনজার।
মুখ ধোয়ার আগে হাত ধুয়ে নিন:ত্বক পরিষ্কার করার আগে হাত পরিষ্কার রাখা জরুরি, যাতে অতিরিক্ত ময়লা বা জীবানু ত্বকে না যায়।

গরম বা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন: গরম পানি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করতে পারে, তাই কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা ভালো।

ক্লিনজার ব্যবহার করুন: একটি মৃদু ক্লিনজার নিয়ে মুখে লাগিয়ে ১ থেকে ২ মিনিট আলতোভাবে মালিশ করুন। তারপর পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলুন।

ত্বকের ব্যবহৃত ক্লিনজারগুলোর নাম

শুষ্ক ত্বকের জন্য
  • Cetaphil gentle skin cleanser
  • Neutrogena hydro boost cleanser
  • Dove beauty cleansing foam
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ক্লিনজার
  • Lakme deep pore cleanser
  • Himalaya purifying neem cleanser
  • Clean & Clear foaming face wash
সংবেদনশীল ত্বকের জন্য ক্লিনজার
  • Bioderma sensibio H2O
  • L'Oreal mild cleanser
  • Aveeno ultra calming cleanser
নিয়মিত ব্যবাহারের জন্য সাধারন ক্লিনজার
  • Nivea micellar water
  • Garnier micellar cleansing water
  • Ponds white beauty cleanser
টিপস
  • ত্বক বেশি শুষ্ক বা সংবেদনশীল হলে দিনে একবার ক্লিনজার ব্যবহার করুন।
  • তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে দিনে ২ বার ক্লিনজার ব্যবহার করা ভালো।
  • নিয়মিত ক্লিনজার ব্যবহারে ত্বক পরিষ্কার, স্বাস্থ্যকর ও উজ্জল থাকবে।
এই সহজ অভ্যাসগুলো মেনে চললে শীতকালে আপনার ত্বক থাকবে কোমল, উজ্জল এবং সুরক্ষিত।

লেখকের শেষকথা

শতিকালে ত্বককে সুস্থ ও উজ্জল রাখতে সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। শীতের শুষ্ক ও ঠান্ডা বাতাস ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হ্রাস করে, যা শুষ্কতা, রুক্ষতা ও ফাটল সৃষ্টি করতে পারে। তবে নিয়মিত পরিচর্যা এবং জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনলে এই সমস্যা সহজেই সমাধান করা সম্ভব। 

ত্বকের যত্নের জন্য ময়শ্চারাইজার , সানস্ক্রিন, হাইড্রেটিং ক্লিনজার ব্যবহার এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া শীতকালে অত্যন্ত গুরুত্বপৃর্ন। পর্যাপ্ত পানি পান, হালকা গরম পানি ব্যবহার এবং ধুলোবালির ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারলে শীতকালটা বেশ আরামে পার করতে পারবেন। 

তবে নিয়মিত ত্বকের যত্ন নেওয়া শুধু শীতকালের জন্য নয়, বরং সারা বছর ত্বকের সৌন্দর্য ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে। শীতকালিন পরিচর্যার মাধ্যমে আমরা ত্বককে শুধু সুরক্ষিত রাখতে পারি না, বরং এটি দীর্ঘমেয়াদে উজ্জল ও স্বাস্থ্যবান রাখার পথও প্রশস্ত করে। তাই শীতের শুষ্কতা ও রুক্ষতা কাটিয়ে ত্বককে সজীব ও সুন্দর রাখতে সঠিক যত্ন নেওয়া উচিত।

উপরের আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩