ইসকন (ISKCON) সম্পর্কে বিস্তারীত জেনে নিন

বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটি পড়লে বিস্তারীতভাবে জানতে পারবেন ইসকন (ISKCON) সম্পর্কে।এই সংগঠন কৃষ্ণ ভক্তি প্রচার ও প্রসারে কাজ করে। ইসকন মুলত ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভক্তি, ভগবত গীতা এবং শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণের শিক্ষা প্রচারের মাধ্যমে মানবজীবনের আধ্যাত্বিক উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে কাজ করে।
ইসকন (ISKCON) সম্পর্কে বিস্তারীত জেনে নিন

ভুমিকা

আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে জানতে পারবেন ইসকন কি? ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা কে। ইসকনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি। ইসকনের বর্তমান নেতৃত্বে কারা রয়েছেন। বাংলাদেশে ইসকন কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশে ইসকনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি। আরোও জানতে পারবেন ইসকন কিভাবে কাজ করে, এর বিস্তার কোন কোন দেশে। কোন দেশে ইসকন নিষিদ্ধ এবং কেন নিষিদ্ধ।

ইসকন

ইসকন (ISKCON=International Society for Krishna Consciousness) বা আর্ন্তজাতিক কৃষ্ণ সংঘ হলো একটি বৈষ্ণব সংগঠন, যা হিন্দু ধর্মের গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতবাদ অনুসরণ করে। এই সংগঠন কৃষ্ণ ভক্তি প্রচার ও প্রসারে কাজ করে। ইসকন মুলত ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভক্তি, ভগবত গীতা এবং শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণের শিক্ষা প্রচারের মাধ্যমে মানবজীবনের আধ্যাত্বিক উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে কাজ করে।

ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা 

ইসকন প্রতিষ্ঠা করেন শ্রীল অভয়চরণার ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ। তিনি ১৯৬৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে এই সংগঠনের কার্যক্রম শুরু করেন। শ্রীল প্রভুপাদ চৈতন্য মহাপ্রভুর ভক্তি আন্দোলনের শিক্ষাগুলি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য েইসকন গঠন করা হয়।

ইসকনের বর্তমান নেতৃত্ব

ইসকনের নেতৃত্বের কেন্দ্র হলো গর্ভনিং বডি কমিশন (GBC)। এটি ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বিশ্বব্যাপী ইসকনের সমস্ত কার্য তত্ত্বাবধায়ন করে। GBC এর অধীনে বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে স্থানীয় নেতারা দায়িত্ব পালন করেন।
  • প্রেসিডেন্ট - শ্রী মাধু পন্ডিত দাসা (ইসকন ব্যাঙ্গালোর)
  • সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট - শ্রী চাঞ্চলাপাথী দাসা (ইসকন ব্যাঙ্গালোর)
  • সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট - শ্রী জয় চৈতন্য দাসা (ইসকন ব্যাঙ্গালোর)
  • সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট - শ্রী বাসুদেব কেশব দাসা (ইসকন ব্যাঙ্গালোর)
  • ভাইস প্রেসিডেন্ট - শ্রীমতি বকতিলতা দেবী দাসাই
  • ভাইস প্রেসিডেন্ট - শ্রী শ্রীধাম কৃষ্ণ দাসা [ধানানজায়া (এফ. আর)]
  • ভাইস প্রেসিডেন্ট - শ্রী গুন ভদ্রা দাসা (দেবতা বিভাগ)
  • ভাইস প্রেসিডেন্ট - শ্রী মহাপ্রভু গৌরাঙ্গ দাসা (কৃষ্ণ আশ্রয় বিভাগ ও চানতার ক্লাব)
  • ভাইস প্রেসিডেন্ট - শ্রী নন্দ নানদানা দাসা (মানবসম্পদ, গৃহস্থ আশ্রম, ক্রয় ষ্টোর, নৌবহর ব্যবস্থাপনা এবং কৃষ্ণমিত্র বিভাগ)
  • ভাইস প্রেসিডেন্ট - শ্রী প্রাহালাদেশা দাসা (ফার্ম-মহিশুর, ফ্যাসিলিটি এবং ইউলিলিটি বিভাগ)
  • ভাইস প্রেসিডেন্ট - শ্রী আচারিয়া রত্ন দাশা (ধনঞ্জায়া এবং অনলাইন বিভাগ)
  • ভাইস প্রেসিডেন্ট - শ্রী নাভিনা নিরাদা দাসা [অনলাইন কমিউনিকেশন এবং পাবলিক রিলেশান( স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন) বিভাগ]
  • ভাইস প্রেসিডেন্ট - (ফোক ইউথ প্রোগ্রাম বিভাগ)
  • ভাইস প্রেসিডেন্ট - শ্রী অনন্ত ক্রিত্তি দাসা (হরিনামা এবং কীর্তন বিভাগ)
  • ভাইস প্রেসিডেন্ট - শ্রী সায়ামা বল্লভ দাসা (ফিন্যান্স ও আ্যাকাউন্টস বিভাগ এবং কৃষ্ণ জীবন)

ইসকন বাংলাদেশে 

বাংলাদেশে ইসকনের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৭০ এর দশকের দিকে এবং সময়ের সাথে সাথে এটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে সনাতন ধর্মাবলীদের মধ্যে। বাংলাদেশে ইসকনের সাধারন সম্পাদক বর্তমানে চারু চন্দ্র দাসা ব্রহ্মচারী। তিনি সংগঠনটির বিভিন্ন কার্যক্রম এবং নীতিমালা পরিচালনা করেন।

বাংলাদেশে যে কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করে ইসকন

ধর্মীয় উপাসনা ও অনুষ্ঠান: ইসকনের মন্দিরে নিয়মিতভাবে শ্রীকৃষ্ণের আরতি, কীর্তন, প্রসাদ বিতরন এবং ভগবদগীতার পাঠ অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষত, জন্মাষ্ঠমী, রথযাত্রা এবং গৌড় পুর্নিমার মতো উৎসবগুলো বাংলাদেশে অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে উদযাপিত হয়।

প্রসাদ বিতরন

  • শিক্ষা প্রচার : ভগবদগীতা এবং শ্রীমদ্ভাগবত পুরানের শিক্ষার প্রচারই ইসকনের মুল লক্ষ্য। এজন্য বিভিন্ন পাঠশালা, সেমিনার ও ধর্মীয় আলোচনা আয়োজন করা হয়। তরুন প্রজন্মকে কৃষ্ণভাবনায় অনুপ্রানিত করতে ইসকন বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করে।
  • সাংস্কৃতিক কার্যক্রম : ইসকন সংগীত, নাটক, নৃত্য এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে কৃষ্ণভাবনা প্রচার করে। রথযাত্রা উৎসবের মাধ্যমে জনসাধারনের মধ্যে কৃষ্ণভাবনার প্রসার ঘটানো হয়।
  • সামাজিক সেবা : ইসকন বাংলাদেশে দুর্যোগকালীন সাহায্য কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বন্যা, ঘুর্নিঝড় এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ তারা খাদ্য, পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরন করে।

বাংলাদেশে ইসকনের মন্দির সমুহ

বাংলাদেশে ইসকনের বিভিন্ন স্থানে মন্দির রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য
  • ঢাকা ইসকন মন্দির (স্বামীবাগ) : এটি বাংলাদেশে ইসকনের প্রধান কেন্দ্র এবং এখানে বড় ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
  • সিলেট ইসকন মন্দির : সিলেট অঞ্চলে ইসকনের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
  • চট্টগ্রাম ইসকন মন্দির : চট্টগ্রামে ইসকনের একটি সুসজ্জিত মন্দির রয়েছে। এটি চট্টগ্রাম বিভাগের প্রধান ইসকন কার্যালয়।

বাংলাদেশে ইসকনের সমালোচনা ও চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশে ইসকন কিছু সমালোচনা হয়েছে। ইসকনের কিছু মানুষ তাদের মুল ভাবধারা থেকে সরে গিয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করার চেষ্ট করছে। এছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সংগঠনের আধিপত্য নিয়ে কিছু বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় জনগনের মধ্যে সাংস্কৃতিক পার্থক্যের কারণে কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। 

তবে, ইসকনের প্রকৃত নেতৃত্ব তাদের আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার মাধ্যমে সমাজে শান্তি ও মানবসেবা করা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে ইসকনের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য 

বাংলাদেশে ইসকন তার কার্যক্রম আরও সম্প্রসারন করতে চায়। এর মধ্যে রয়েছে নতুন মন্দির নির্মান, শিক্ষা কার্যক্রম বৃদ্ধি এবং সমাজের অবহেলিত মানুষের জন্য আরও মানবিক উদ্যোগ গ্রহন। ইসকনের কর্মকান্ড ধর্মীয় , সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সমাজে গুরুত্বপুর্ন প্রভাব রাখছে। এটি ধর্মীয় ঐক্য ও কৃষ্ণভাবনার প্রচারে একটি অনন্য ভুমিকা পালন করে।

ইসকনের গঠন প্রনালী 

ইসকনের গঠন প্রনালীটি একটি আধ্যত্বিক সংগঠনের আদলে সাজানো হয়েছে। এটি পরিচালিত হয় একটি কেন্দ্রীয় বোর্ড এবং বিভিন্ন মঠ বা মন্দিরের মাধ্যমে।
  • মন্দির : ইসকনের মুল কেন্দ্র হল মন্দির। এখানে কৃষ্ণের মুর্তি (যেমন : রাধা-কৃষ্ণ, জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা) স্থাপন করা হয় এবং প্রতিদিন পুজা-অর্চনা, কীর্তন ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পরিচালিত হয়।
  • ভক্তি সম্প্রদায় : ইসকনে যুক্ত হওয়া ব্যক্তিরা “ভক্ত” হিসেবে পরিচিত। তারা নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন মেনে জীবনযাপন করে।
  • গবেষনা ও শিক্ষা কেন্দ্র : ইসকনের অনেক স্থানে ভগবত গীতা, শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ এবং অন্যান্য শাস্ত্রের পাঠদান ও গবেষনা করা হয়।
  • প্রচার কার্যক্রম : ইসকনের সদস্যরা হরিনাম সংকীর্তন, ধর্মীয় আলোচনা সভা এবং বিভিন্ন আধ্যাত্বিক উৎসবের মাধ্যমে ভক্তি প্রচার করেন।
  • সম্প্রদায় সেবা : ইসকন বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে, যেমন : বিনামুল্যে প্রসাদ বিতরন (খাবার বিতরন), শিক্ষা কার্যক্রম এবং আধ্যাত্বিক চিকিৎসা সেবা।

ইসকন কিভাবে কাজ করে

  • ভগবানের নামগান : হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ এবং গান ইসকনের মুল কার্যক্রম। এটি ভক্তদের আধাত্বিকভাবে উন্নত করতে সাহয্য করে।
  • ধর্মগ্রন্থ প্রচার : ইসকনের সদস্যরা ভগবত গীতা ও শ্রীমদ্ভাবত পুরানের মতো পবিত্র গ্রন্থগুলির অনুবাদ প্রচার করে।
  • উৎসব উদযাপন : কৃষ্ণ জন্মাষ্ঠমী, রথযাত্রা এবং গৌড় পুর্নিমার মতো উৎসবগুলিকে বড় করে উদযাপন করা হয়।
  • প্রসাদ বিতরন : ইসকন “ফুড ফর লাইফ” প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে বিনামুল্যে খাবার বিতরন করে।
  • আন্তর্জাতিক সম্প্রসারণ : ইসকন সারা বিশ্বে মন্দির নির্মাণ, সেমিনার এবং আধ্যাত্বিক প্রশিক্ষন পরিচালনার মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম বিস্তার করেছে।

ইসকনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য 

ইসকন (ISKCON=International Society for Krishna Consciousness) প্রতিষ্ঠার মুল উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য হলো ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চেতনাকে প্রচার করা ও মানুষের মধ্যে আধ্যাত্বিক শিক্ষা ও জ্ঞানের প্রসার ঘটানো। ১৯৬৬ সালে শ্রীল অভয়চরণার ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ নিউইয়র্ক সিটিতে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।

ইসকনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সমুহ

  • সমাজে আধ্যাত্বিক জ্ঞান প্রচার করা এবং জীবনের সঠিক মুল্যবোধ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
  • ভগবদগীতা ও শ্রীমদ্ভাগবত এর শিক্ষার মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণের চেতনাকে ছড়িয়ে দেওয়া।
  • সদস্যদের একত্রিত করে শ্রীকৃষ্ণের নিকটবর্তী করা এবং তাদের মধ্যে একত্ববোধ তৈরি করা।
  • ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষার আলোকে সংকীর্তন আন্দোলন (সংগীত ও মন্ত্রগান) প্রচার করা।
  • শ্রীকৃষ্ণের লীলাস্থল হিসেবে মন্দির ও পবিত্র স্থান প্রতিষ্ঠা করা।
  • সহজ ও প্রাকৃতিক জীবনধারা শেখানো, যাতে আধ্যাত্বিক চর্চার জন্য সময় বাড়ানো যায়।
  • বই, ম্যাগাজিন এবং অন্যান্য ধর্মীয় প্রকাশনা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে জ্ঞান বিতরন করা।
  • এই লক্ষ্যগুলোর মাধ্যমে ইসকন তাদের সদস্য এবং বিশ্বব্যাপী মানুষের আধ্যাত্বিক উন্নতিতে কাজ করে থাকে।

ইসকনের বিস্তার

বিশ্বব্যাপী ইসকনের ছড়িয়ে রয়েছে। প্রায় ১০০টি দেশে ৬৫০ টিরও বেশি মন্দির, ৬৫টি গ্রামীন সম্প্রদায় এবং ১১০টি নিরামিষভোজী রেষ্টুরেন্ট পরিচালিত হয়।

ইসকনের প্রধান কার্যালয়সমুহ 

  • ভারত : মায়াপুর (গ্লোবাল হেডকোয়াটার্স), বৃন্দাবন।
  • যুক্তরাষ্ট্র : নিউইয়র্ক, লসএঞ্জেলেস।
  • যুক্তরাজ্য : বাকতিভেডানটা মানোর ,লন্ডন।
  • রাশিয়া : মস্কো।
  • আফ্রিকা : সাউথ আফ্রিকা, কেনিয়া, নাইজেরিয়া।
  • অষ্ট্রেলিয়া
তবে কিছু দেশে যেমন : সিঙ্গাপুরে ইসকনের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এা ধরনের নিষেধাজ্ঞা ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক কারণে আরোপিত হয়েছে, যদিও ইসকন বহু দেশে এই প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে।

ইসকন কেন সিঙ্গাপুরে নিষিদ্ধ করা হলো

সিঙ্গাপুরে ইসকনের (ISKCON) কর্মকান্ড নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ ঐতিহাসিক এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটের সাথে সম্পর্কিত। ১৯৭০ এর দশকে, সিঙ্গাপুর সরকার ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির কার্যক্রম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রন করা হতো। 

ইসকনের কার্যক্রম পশ্চিমা দেশগুলোতে হিপি সংস্কৃতির সাথে যুক্ত হওয়ায় এবং প্রথমদিকে এর কিছু সদস্যদের মধ্যে অস্থিরতা এবং সামাজিক নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ থাকায় সিঙ্গাপুর সরকার এটিকে “চরমপন্থী গোষ্ঠী” হিসেবে বিবেচনা করে। এই উদ্বেগগুলো থেকে ইসকনকে সিঙ্গাপুরে নিষিদ্ধ করা হয়। 

এছাড়া ইসকনের বিদেশী সন্ন্যাসী এবং এর প্রতিষ্ঠাতা শ্রীল প্রভুপাদকে সিঙ্গাপুরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিলো। সিঙ্গাপুর সরকার মনে করেছিলো ইসকনের কার্যক্রম স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে। সিঙ্গাপুরে ধর্মীয় স্বাধীনতা থাকলেও সরকাররের নীতি হলো এমন কার্যক্রম বন্ধ করা যা সাম্প্রদায়িক সম্পর্কের ভারসাম্য বিঘ্নিত করতে পারে। 

তবে বর্তমানে ইসকনের অনুসারীরা বিভিন্ন বিকল্প নামে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে, যেমন : শ্রীকৃষ্ণ মন্দির এবং গীতা রিডিং সোসাইটি। এরা স্থানীয় হিন্দু মন্দিরগুলোর সাথে মিলে তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান সম্পন্ন করছে এবং গীতা অধ্যয়নের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করছে। 

তারা ইসকনের সরাসরি নাম ব্যবহার না করে এই কার্যক্রমগুলো চালায়, যা সিঙ্গাপুরে আইনের সাথে সামঞ্জস্যপুর্ন বলে মনে করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল থাকলেও ধর্মীওয় সহিষ্ণুতা এবং সমঝোতার মাধ্যমে অনুসারীরা সীমিত পর্যায়ে তাদের ধর্মীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

লেখকের শেষকথা

উপরের আলোচনা থেকে নিশ্চয় আপনার ইসকনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারীত জেনে গেছেন।উপরের আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩