শরীরে চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়গুলো সম্পর্কে বিস্তারীত জেনে নিন
কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ - কিডনি সমস্যা বোঝার উপায়বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটিতে বিস্তারীতভাবে বর্ননা করা হয়েছে শরীরে চুলকানি দুর করার ঘরোয়া উপায়গুলো নিয়ে। শরীরে নানা কারনে চুলকানি হতে পারে যেমন: এলার্জি, মশার কামড় বা যেকোনো পোকার কামড় ইত্যাদি। তবে শরীরের কোন জায়গায় ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হয়ে চুলকানি হলে তা সহজে সেরে উঠতে চাই না, তবে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে এর সমাধান করা যায়।
ভুমিকা
আজকের আর্টিকেলটি পড়লে জানতে পারবেন চুলকানি দুর করতে ঘরোয়া কি কি উপাদান ব্যবহার করবেন, গোপনাঙ্গে যদি চুলকানি হয় তাহলে কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করবেন, আরোও জানতে পারবেন দুই রানের চিপায় চুলকানি হলে কিংবা দাদ হলে ঘরোয়া কি কি পদ্ধতি কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে বুঝতে পারবেন।
চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়
চুলকানি ত্বকের অত্যন্ত মারাত্বক সমস্যা। আপনাদের মধ্যে অনেকের ধারনা এ সমস্যাটি দেখা দিলে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। চর্মরোগ বিভিন্ন কারনে হতে পারে যেমন কিডনির রোগ, লিভারের রোগ, সেলিয়াক রোগ ও লিম্ফোমা ইত্যাদি। তবে সাধারনত ত্বকের সাধারন সমস্যা থেকে চুলকানি হয়ে থাকে। যদি ঘরোয়া চিকিৎসায় এই সমস্যা না সারে তাহলে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
নারিকেল তেল অথবা জলপাই তেল: চুলকানির জন্য ঘরোয়া চিকিৎসায় এই উপাদানগুলি খুবই কার্যকর ভুমিকা পালন করে। Dermatologist & leisure center এর ত্বক বিশেষজ্ঞগন বলেন, নারিকেল তেল ও জলপাই তেল ত্বকের কোন ক্ষতি করেনা বরং এটি ত্বকের আদ্রতার জন্য খুব ভালো। এই মিশ্রন ত্বকের শুষ্ক স্থানে ১/২ সপ্তাহ ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।
ওটমিলের গুঁড়া: চুলকানি দুর করতে ওটমিলও কার্যকর ভুমিকা পালন করে। গোসল করা সময় যদি অল্প পরিমান ওটস পাওডার বালতিতে পানির সঙ্গে মিশিয়ে গোসল করতে পারেন তাহলে তা বেশ কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
Arts of skin এর কসমেটিক সার্জন ও ডার্মাটোলজিস্টগন বলেন কলোইডাল ওটমিল মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল করলে ত্বকের ওপর চুলকানির ফলে যে স্থানটি ফুলে যায় তা উপসম হয় এবং ফোলা কমে আরামদায়ক অনুভুতি অনুভুত হয়। রোদে পোড় ত্বকের উজ্জলতা ফেরাতেও ওটসমিলের গুঁড়া ব্যবহার হয়ে থাকে।
ভেজিটেবল ফ্যাট: চুলকানির চিকিৎসায় ভেজিটেবল ফ্যাট কার্যকর ভুমিকা পালন করে। ডাঃ পাম বলেন, চুলকানি উপসমে ভেজিটেবল ফ্যাটের ব্যবহার অবাক করা বিষয় মনে হতে পারে কিন্তু বাস্তবতা হলো ভেজিটেবল ফ্যাট একটি কার্যকর ময়শ্চারাইজার। চিকিৎসকগন ত্বকের একজিমা চিকিৎসায় ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান: চুলকানি চিকিৎসায় শুধুমাত্র ত্বকের বাহিরের অংশের চিকিৎসা করাবেন তাহলে হবেনা ভেতর থেকেও চিকিৎসার প্রয়োজন। তাই ত্বকের ভিতরের চিকিৎসায় পানি খুব কার্যকর ভুমিকা পালন করে। আপনি যদি প্রচুর পানি পান করেন তাহলে ত্বক সবসময় আর্দ্র হয়ে থাকে। আমরা সবাই জানি ত্বক আর্দ্র থাকলে চুলকানির প্রবনতা কমে যায়।
বেকিং সোডা: ত্বকের উপসমে বেকিং সোডা কার্যকর ভুমিকা পালন করে। তারিন ডার্মাটোলজির ত্বক বিশেষজ্ঞ বলেন,“ত্বকের চুলকানি কমাতে গোসলের পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে গোসল করলে ত্বকের চুলকানিজনিত উপসমে সহায়তা করে। আমাদের ত্বকের উপর যে এসিড থাকে বেকিং সোডা উক্ত ত্বকের এসিডকে নিস্ক্রিয় করে ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।
ভিটামিন ডি: সাধারনত শীতকালে চুলকানির প্রবনতা বেড়ে যায়। আপনার শরীরে কি পরিমান ভিটামিন ডি আছে তার উপর ত্বকের চুলকানি বাড়াতে ও কমাতে পারে। এই কারনে আপনার শরীরে কি পরিমান ভিটামিন ডি রয়েছে তা জানার জন্য ডাক্তারের পরামর্শে পরীক্ষা করতে পারেন। শীতকালে যদি ভিটামিন ডি কমে যায় তাহলে চুলকানি মারাত্মক আকার ধারন করে।
ওমেগা ৩: ওমেগা ৩ একটি উৎকৃষ্ট মানের ফ্যাটি এসিড। তাই চিকিৎসকগন চুলকানিতে ভোগা মানুষদের বেশি করে ওমেগা ৩ খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। ওমেগা ৩ সমৃদ্ধ খাবারগুলে হলো অ্যাভোকাডো, বাদাম ও সালমন মাছ। পর্যাপ্ত পরিমানে ওমেগা ৩ খেলে ত্বকের চুলকানি প্রশমিত করতে সহায়তা করে।
অ্যালেভেরা: পোড়া ত্বকের নিরাময়ে অ্যালোভেরা জেল খুবই কার্যকর ভুমিকা পালন করে। আপনারা সকলেই জানেন অ্যালোভেরা জেল ত্বকের চুলকানি প্রতিরোদে সহায়তা করে। ত্বকের উপর যে চুলকানি হয় তাতে বেশ ব্যথা অনুভুত হয় এই ব্যথা উপসমে আ্যালেভেরা জেল ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। আপনার চুলকানি স্থানে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে কয়েক সপ্তাহ পর উপসম হয়।
এলার্জি চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়
ত্বকের একটি মারাত্বক সমস্যা হলো অ্যালার্জি। এই সমস্যায় চুলকানি হয় এবং ত্বকে ছোট ছোট ফুসকুড়ি দেখা দেয়। অনেকের অ্যালার্জির কারনে বড় গোলাকৃতির ফোলাভাব দেখা দেয়। চিকিৎসা শাস্ত্রে অ্যালার্জি হলো শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মারাত্মক ত্রুটি।
যেসকল খাবারে রোগীর অ্যালার্জি আছে তা যদি রোগি মেনে না চলে তাহলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে পালমোনারি ইডিমা তৈরি করে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ভ্যাসোডাইলেশন। তাই অ্যালার্জি রোগীদের খাবারের ব্যপারে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে ও জীবন যাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে।
মধু: অ্যালার্জির সমস্যায় মধু কার্যকর ভুমিকা পালন করে। আমাদের পরিবেশে যে অ্যালার্জেন আছে মধু এই অ্যালার্জেনকে শরীরের সাথে খাপ খাওয়াতে সহায়তা করে। এছাড়া মধুর মধ্যে থাকা অ্যালার্জেন বৈশিষ্ট্য ফুসকুড়ি কমাতে সহায়তা করে।
তিতা জাতীয় খাবার: নিয়মিত খাবারের খাবারের তালিকায় নিমপাতা ভাজা ও করলা রাখতে হবে। সকালে খালিপেটে চিরতা খাওয়া অ্যালার্জির জন্য খুবই কার্যকর। তাই আমাদের খাবারের তালিকায় প্রতিদিন তিতা খাবার রাখা খুবই প্রয়োজন।
টি-ট্রি অয়েল: টি-ট্রি অয়েল অ্যালার্জির বিরুদ্ধে কার্যকর ভুমিকা পালন করে। এই অয়েলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য যা ত্বককে অ্যালার্জি থেকে মুক্তি দেয়। তাই ত্বকের লালচেভাব ও চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে বেশ কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
আপেল সিডার ভিনেগার: এটি ওজন হ্রাস ও হজমে কার্যকর ভুমিকা রাখে। এই ভিনেগার ত্বকের অ্যালার্জি সারাতেও কার্যকর ভুমিকা পালন করে। এত যে অ্যাসিটিক এসিড রয়েছে তা ত্বকের চুলকানি ও অ্যালার্জির প্রভাব কমিয়ে দেয়। তবে আপনার ত্বক যদি সংবেদনশীল হয় তাহলে এই ভিনেগার ব্যবহার না করায় ভালো।
১ কাপ গরম পানিতে ১ চামচ আপেল সিডার ভিনেগার ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর তুলা দিয়ে যে জায়গাটা আক্রান্ত হয়েছে সেই জায়গায় লাগান। দিনে অন্তত ২ বার মিশ্রনটি লাগালে ত্বকের অ্যালার্জি থেকে নিস্কৃতি পাবেন।
নারিকেল তেল: ত্বকের দেখভালের ক্ষেত্রে নারিকেল তেল অতুলনীয়। এতে যে ময়শ্চারাইজিং উপাদান রয়েছে তা ত্বকে অ্যালার্জিমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া নারিকেল তেল চুলকানি কমাতে সহায়তা করে। এক বাটি নারিকেল তেল নিয়ে ভালোভাবে গরম করে নিতে হবে। তারপর অ্যালার্জির জায়গায় লাগাতে হবে।
১ ঘন্টা রাখার পর আবার নতুন করে লাগাতে হবে। এভাবে ৩/৪ ঘন্টা পরপর তেলটি লাগাতে হবে। এই তেল ১ সপ্তাহ লাগালে ত্বকের অ্যালার্জি দুর হবে।
যোনিতে চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়
বর্তমান যুগে মহিলাদের যৌনাঙ্গে সংক্রমন একটা সাধারন বিষয়ে পরিনত হয়েছে। এই সমস্যা জন্য মুলত দায়ী হলো জীবানু। জীবানু ছাড়াও আরো কিছু কারনে যোনিতে চুলকানি হতে পারে যেমন: ছত্রাকের আক্রমন, ট্রাইকোমোনিয়াসিস প্যারাসাইট, যৌনাঙ্গে উকুন বা স্ক্যাবিজ, খোঁস পাঁচরা ও মাইকোপ্লাজমা জেনেটালিয়ামের সংক্রমন ইত্যাদি।
মধু: অ্যালার্জির সমস্যায় মধু কার্যকর ভুমিকা পালন করে। আমাদের পরিবেশে যে অ্যালার্জেন আছে মধু এই অ্যালার্জেনকে শরীরের সাথে খাপ খাওয়াতে সহায়তা করে। এছাড়া মধুর মধ্যে থাকা অ্যালার্জেন বৈশিষ্ট্য ফুসকুড়ি কমাতে সহায়তা করে।
তিতা জাতীয় খাবার: নিয়মিত খাবারের খাবারের তালিকায় নিমপাতা ভাজা ও করলা রাখতে হবে। সকালে খালিপেটে চিরতা খাওয়া অ্যালার্জির জন্য খুবই কার্যকর। তাই আমাদের খাবারের তালিকায় প্রতিদিন তিতা খাবার রাখা খুবই প্রয়োজন।
টি-ট্রি অয়েল: টি-ট্রি অয়েল অ্যালার্জির বিরুদ্ধে কার্যকর ভুমিকা পালন করে। এই অয়েলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য যা ত্বককে অ্যালার্জি থেকে মুক্তি দেয়। তাই ত্বকের লালচেভাব ও চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে বেশ কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
আপেল সিডার ভিনেগার: এটি ওজন হ্রাস ও হজমে কার্যকর ভুমিকা রাখে। এই ভিনেগার ত্বকের অ্যালার্জি সারাতেও কার্যকর ভুমিকা পালন করে। এত যে অ্যাসিটিক এসিড রয়েছে তা ত্বকের চুলকানি ও অ্যালার্জির প্রভাব কমিয়ে দেয়। তবে আপনার ত্বক যদি সংবেদনশীল হয় তাহলে এই ভিনেগার ব্যবহার না করায় ভালো।
১ কাপ গরম পানিতে ১ চামচ আপেল সিডার ভিনেগার ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর তুলা দিয়ে যে জায়গাটা আক্রান্ত হয়েছে সেই জায়গায় লাগান। দিনে অন্তত ২ বার মিশ্রনটি লাগালে ত্বকের অ্যালার্জি থেকে নিস্কৃতি পাবেন।
নারিকেল তেল: ত্বকের দেখভালের ক্ষেত্রে নারিকেল তেল অতুলনীয়। এতে যে ময়শ্চারাইজিং উপাদান রয়েছে তা ত্বকে অ্যালার্জিমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া নারিকেল তেল চুলকানি কমাতে সহায়তা করে। এক বাটি নারিকেল তেল নিয়ে ভালোভাবে গরম করে নিতে হবে। তারপর অ্যালার্জির জায়গায় লাগাতে হবে।
১ ঘন্টা রাখার পর আবার নতুন করে লাগাতে হবে। এভাবে ৩/৪ ঘন্টা পরপর তেলটি লাগাতে হবে। এই তেল ১ সপ্তাহ লাগালে ত্বকের অ্যালার্জি দুর হবে।
নারিকেল তেলের ব্যবহার: আমাদের দেশের গ্রাম বাংলার নানী-দাদিরা বহুকাল আগে থেকে নারিকেল ব্যবহার করে আসছে। ২০১৬ সালের দিকে এক গবেষনায় বলা হয় নারিকেল তেল ক্যান্ডিডা অ্যালবিব্যান্স এর বিরুদ্ধে কাজ করে। তাই আপনার যদি কোনো ছত্রাকের কারনে যোনিতে চুলকানি হয়ে থাকে তাহলে নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন।
লবন গরম পানি: গোসল করার জন্য আমরা যে পানি ব্যবহার করি তাতে ৪ টেবিল চামচ লবন মিশিয়ে ঐ পানিতে নিজেকে আধা ঘন্টা ভিজিয়ে রাখলে এক সপ্তাহের মধ্যে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। তাই প্রথমে ১ টি বড় গামলা নিন তাতে গরম পানি ঢালুন, এরপর তাতে ৪ টেবিল চামচ লবন দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
সব লবন গলে গেলে তার উপর বসে পড়ুন এভাবে অন্তত আধা ঘন্টা থাকুন। সাতদিন এই প্রকৃয়াটি করতে পারলে দেখবেন সব ব্যাকটেরিয়া মরে গেছে এবং চুলকানি কমে গেছে।
দই: দইয়ের মধ্যে এক ধরনের ভালো ব্যাকটেরিয়া Lactobacillus acidophilus যা শরীরের যেকোনে ইনফেকশন দুর করতে কার্যকর ভুমিকা পালন করে। যোনিতে চুলকানি হোলে বা কোন সংক্রমন হলে ২০/৩০ মিনিট দই লাগিয়ে রাখলে চুলকানি ও সংক্রমন উভয়ে দুর হবে। এই প্রকৃয়াটি দিনে দুইবার করে লাগারে ১ সপ্তাহের মধ্যে ভালো ফল পাবেন।
রসুন: রসুনের অ্যান্টি-ফাংগাল, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুনাগুন সর্বজন স্বীকৃত। কয়েক কোয়া রসুন ভালোভাবে পেষ্ট করে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে বা ফুসকুরি উঠেছে এই রকম জায়গায় লাগিয়ে দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। রসুন ছত্রাক দুর সিদ্ধহস্ত। এই প্রক্রিয়াটি ১ সপ্তাহ ধরে প্রয়োগ করলে চুলকানি দুর হবে ও সংক্রমন কমে যাবে।
পুরুষাঙ্গের চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়
বিভিন্ন সময় পুরুষ মানুষের নিম্নাঙ্গে তীব্র চুলকানি হতে পারে। এটি এমন একটি সমস্যা যা সকল পরিবেশে যেমন:কর্মক্ষেত্র, সামাজিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা এমনকি পরিবারের কাছে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। অনেক ক্ষেত্রে এ নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই চুলকানির জন্য মুলত কিছু জীবানুকে দায়ী করা যেতে পারে।
ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ছাড়াও যৌনাঙ্গে উকুন, খোসপাঁচড়া ও মাইকোপ্লাজমা জেনেটালিয়ামের সংক্রমন হলে নিম্নাঙ্গে চুলকানি হতে পারে। কারো যদি সিফিলিস, গনোরিয়া হয় তাদেরও চুলকানি হতে পারে। আবার ডিটারজেন্ট, কেমিক্যাল, সুগন্ধিযুক্ত সাবান, রংওয়ালা টিস্যু পেপার, ফেমিনিন হাইজেনিক স্প্রে ইত্যাদি ব্যবহার করলেও চুলকানি হতে পারে।
- সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
- সুগন্ধিযুক্ত টয়লেট টিস্যু, সাবান ব্যবহার কমাতে হবে।
- প্রয়োজন ছাড়া ফেমিনিন হাইজিন স্প্রে ব্যবহার করা যাবে না।
- ভেজা কাপড় পড়ে বেশিক্ষন থাকা যাবে না।
- ঘেমে গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আন্ডার ওয়্যার পাল্টে ফেলতে হবে।
- সুইমিংপুলে সাাঁতার কাটলে ক্লোরিনের কারনে চুলকানি হতে পারে। তাই সুইমিংপুলে গোসল যদি করেন তাহলে পুল থেকে উঠে তাড়াতাড়ি গোসল করে নিতে হবে।
- সব সময় সুতি কাপড় ও সুতি আন্ডার ওয়্যার পড়তে হবে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে।
- ওজন কম রাখতে হবে।
- নিয়মিত গোসল করতে হবে।
- আন্ডার ওয়্যার নিয়মিত রোদে শুকাতে হবে যাতে ব্যাকটেরিয়া মুক্ত হয়।
- উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চললে পুরুষাঙ্গে চুলকানি থেকে মুক্তি পাবেন। যদি উপরোক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করে না সারে তাহলে অবশ্যই চর্ম বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে।
রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়
প্রতিটি মানুষের রানের চিপা স্যাঁতসেতে অবস্থায় থাকে। যার ফলে বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া আক্রমন দেখা যায়। সমস্যার প্রথমদিকে যদি আপনি যথাযথ চিকিৎসা নিতে পারেন তাহলে খুব সহজেই সারিয়ে নিতে পারবেন। কিন্তু যদি অবহেলা করেন তাহলে পরবর্তীতে নানা ধরনের সংক্রমনে ভুগতে পারেন। ধীরে ধীরে ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে।
সাবান ব্যবহার করবেন না: সংক্রমিত স্থান পরিষ্কার করার জন্য কখনোই সাবান ব্যবহার করা যাবে না। সাবান ব্যবহার করলে সাময়িকভাবে মনে হতে পারে পরিষ্কার হয়েছে বা জীবানুমুক্ত হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে আপনার সমস্যা বা চুলকানি আরো বেড়ে যাবে এই সাবান ব্যবহার করার কারনে। তাই রানের চিপা পরিষ্কার করার জন্য হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করবেন।
মধু ও রসুনের পেস্ট: প্রথমে কয়েকটি রসুন পিষে পেস্ট করে নিতে হবে সেই রসের সাথে ৩ ভাগের ১ ভাগ পানি মিশিয়ে হালকা গরম করে নিতে হবে। তারপর রসুনের রসের ৩ ভাগের ১ ভাগ পরিমান মধু মিশিয়ে মিশ্রন তৈরি করে নিতে হবে। রানের চিপায় ও আশেপাশের সংক্রমিত স্থানে এই পেস্ট দিনে তিনবার লাগাতে হবে।
যতবার আপনি ব্যবহার করবেন তার আগে কুসুম গরম পানি দিয়ে সংক্রমিত স্থানটি পরিষ্কার করে নিবেন। গোসলের পরে, ঘুমাতে যাওয়ার আগে ও ঘুম থেকে উঠে মিশ্রনটি ব্যবহার করবেন।
অ্যালোভেরা রস: অ্যালোভেরাতে রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। যা ত্বকের যেকোনো ধরনের সংক্রমনের চিকিৎসায় ব্যপক কাজ করে। আ্যালোভেরার রাস সরাসরি আক্রান্ত স্থানে লাগালে তাৎক্ষনিক চুলকানি কমাতে খুব কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
আরোও কিছু করনীয়: প্রতিদিন গোসলের সময় রানের চিপা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।পুরুষের যে অন্ডকোষ আছে তাতে ব্যপক ময়লা জমে। এই ময়লা থেকে সাধারনত চুলকানি হতে পারে। তাই অন্ডকোষ সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তাহলে ৯০ শতাংশ চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।রানের চিপা সাবান ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
কুসুম গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। টাইট ফিটিং আন্ডার ওয়্যার পরা থেকে বিরত থাকতে হবে।আন্ডারওয়্যার ও প্যান্ট পরিধানের পর প্রতিদিন ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।খেয়াল রাখতে হবে যেন প্যান্টে ডিটারজেন্ট লেগে না থাকে। অন্যের আন্ডারওয়্যার পড়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
দাদ চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়
দাদ হলো ফাংগাল ইনফেকশন। হাত, পা, পিঠ,পায়ের আঙ্গুল, হাতের আঙ্গুল ও মাথার তালুতে এর সংক্রমন হতে পারে। সাধারনত ছত্রাকের কারনে দাদ হয়ে থাকে। স্যঁতসেঁতে ভেজা জায়গায় ছত্রাক জন্মায়। আপনি যদি অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান করলে বা সংক্রামক ব্যাক্তির পোশাক পরিধান করলে দাদ হয়ে থাকে।
আক্রান্ত ব্যক্তি, সংক্রমিত প্রানি, দুষিত মাটি ও দুষিত বস্তু থেকে আপনি আক্রান্ত হতে পারেন।
মধু: মধু ব্যবহার করে ঘরোয়া উপায়ে দাদ দুর করতে পারেন। এর মধ্যে থাকা হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ও ছত্রাক নাশক উপাদান ছত্রাক বৃদ্ধি ঠেকাতে কাজ করে। একটি পরিষ্কার তুলায় মধু লাগিয়ে আক্রান্ত স্থানে নিয়মিত ব্যবহার করলে দাদ দুর হয়।
অ্যালোভেরা: আমরা সকলেই অ্যালোভেরার উপকারিতা সম্পর্কে জানি। অ্যালোভেরা ত্বক ও চুলের জন্য খুব উপকারী। অ্যালোভেরাতে রেজিন নামক এক ধরনের উপকারী উপাদান রয়েছে যা ছত্রাকের সংক্রমন ঠেকাতে কার্যকর ভুমিকা পালন করে। নিয়মিত অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে দাদের কারনে চুলকানি ও যন্ত্রনা দুর হয়।
রসুন: রসুন ছত্রাক নাশ করতে দারুন ভুমিকা পালন করে। ১/২ টি রসুনের কোয়া ভালোভাবে থেঁতলে নিয়ে এর সাথে ৩ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ও ৩ টেবিল চামচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে মিশ্রনটি যদি আক্রান্ত স্থানে নিয়মিত সাতদিন লাগান তাহলে দেখবেন দাদ অনেকটা কমে গেছে।
হলুদের রস: হলুদের রসের মধ্যে থাকা অ্যান্টি-সেপটিক ও অ্যান্টি-ফাংগাল উপাদান দাদ দুর করতে কার্যকর ভুমিকা পালন করে। প্রথমে কাাঁচা হলুদ পিসে একটি পেষ্ট বানিয়ে নিন, তারপর এই পেষ্ট আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে কিছুক্ষন রাখুন। স্থানটি শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহখানেরক এই প্রকৃয়াটি চালু রাখলে দাদ ভালো হয়ে যাবে।
লেখকের শেষকথা
উপরের বিস্তারিত আলোচনা থেকে নিশ্চয়ই আপনারা জেনে গেছেন শরীরে চুলকানি হলে কিভাবে চিরতরে বিদায় দিবেন তার কার্যপ্রনালী সম্পর্কে। এছাড়া আরোও জানতে পেরেছেন শরীরে চুলকানি রোধে বিভিন্ন Tips & Tricks অবলম্বন করে কিভাবে উপকৃত হবেন। আপনি যদি নিয়মিতভাবে উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলেন তাহলে আপনারা চুলকানি থেকে মুক্তি পাবেন।
উপরের আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।
সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়
comment url