বিসিএস প্রস্তুতি - বিসিএস পরীক্ষায় কেন ফেল করে জেনে নিন

ব্যাংকে চাকরির জন্য কি পড়তে হবে জেনে নিনবন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটি যদি বিস্তারিত পড়েন তাহলে জানতে পারবেন বিসিএস পরীক্ষায় কেন ফেল করে। আপনারা জেনে অবাক হবেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ফেল করে এই বিসিএস পরীক্ষায়।প্রিলিমিনারিতে ৯০ শতাংশ থেকে ৯৫ শতাংশ ফেল করে।সঠিকভাবে বিসিএস এর প্রস্তুতি না নিতে পারলে বিসিএসে পাস করা খুব কঠিন।
বি সি এস পরীক্ষায় কেন ফেল করে

ভুমিকা

আজকের আর্টিকেলটি যদি বিস্তারিত পড়েন তাহলে জানতে পারবেন কেন মানুষ বিসিএসে ফেল করে। বিসিএস পরীক্ষার রুটিন কিভাবে তৈরি করবেন। কিভাবে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবেন।এই পরীক্ষার মানবন্টন কিভাবে হয়ে থাকে। এই আর্টিকেলে বিসিএসের গুরুত্বপূর্ন বইগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

বিসিএস পরীক্ষায় ফেল করার কারন

প্রতিটি বিষয়ে অসফলতার যেমন কারণ আছে ঠিক তেমনি বিসিএসে অকৃতকার্য হওয়ারও অনেক কারণ আছে। সরকারী কর্ম কমিশন থেকে যে তথ্য পাওয়া যায় তাতে ৪৬ তম তম বিসিএসে আবেদন করেছেন ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০৪ জন। সাধারনত প্রতি বিসিএসে ৩ থেকে ৪ লাখ প্রার্থী আবেদন করে থাকেন।বিসিএস পরীক্ষা ৩ ধাপে সম্পুর্ন হয়।

ধাপগুলো হলো প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা এবং এর মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থী যাচাই করা হয়। এই ধাপগুলোর মধ্যে প্রিলিমিনারিতে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী বাদ পড়েন।বিসিএস পরীক্ষায় যারা অংশগ্রহন করেন তারা সকলেই প্রায় একই রকমের প্রস্তুতি গ্রহন করে থাকেন। তবে এদের মধ্যে যারা কৌশল অবলম্বন করে পড়াশুনা করেন তারাই এগিয়ে যান।

Time Management: নির্ধারিত সময়ে যদি আপনি পরীক্ষা শেষ করতে না পারেন অর্থাৎ সব প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারেন তাহলে এই পরীক্ষায় ফেল করতে বাধ্য। যতই আপনি পড়াশুনা করেন না কেন সঠিক সময়ে সব উত্তর দিতে না পারলে ভালো পড়াশুনার কোন মুল্য থাকবে না।তাই এই সমস্যা থেকে বাঁচতে অর্ধেক ইংরেজি ও গণিত এবং বাঁকি অর্ধেক সময় অন্য বিষয়গুলোতে মনোযোগ দেওয়া যেতে পারে।
Negative Marking: বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য যেমন ১ নম্বর বরাদ্দ থাকে ঠিক তেমনিভাবে ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কাটা যায়। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.৫ নম্বর কাটা যায়। যা নেগেটিভ মার্কিং নামে পরিচিত।তাই নেগেটিভ মার্কিংয়ের কারণে প্রশ্নের উত্তর ভুল করলে মেধা তালিকা থেকে ছিঁটকে পড়বেন।

Nervousness: বেশীরভাগ পরীক্ষার্থী এই রোগটিতে ভুগেন। আপনার প্রিপারেসন খুব ভালো হওয়া সত্বেও শুধুমাত্র Nervousness এর কারণে পরীক্ষার হলে উদ্বিগ্ন হয়ে পরীক্ষা খারাপ হতে পারে। মূলত আত্মবিশ্বাসহীনতা এবং কখনো কখনো শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে এই Nervousness হতে পারে।এ রকম সমস্যা থাকলে ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রশ্ন কমন না পড়া: আপনার যদি প্রশ্ন কমন না পড়ে তাহলে ফেল করতে পারেন। অনেক সময় দেখা যায় প্রশ্ন কমন পড়ে না। কারন তারা সিলেবাস রিসার্চ করে পড়ে না। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বিপিএসসি দ্বারা প্রনীত সম্পূর্ন সিলেবাস ভালোভাবে যাচাই করে পড়তে হবে।মনে রাখতে হবে গণিত, মানসিক দক্ষতা, সাধারন বিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্তি, বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরন ইত্যাদি বিষয়গুলোতে দক্ষ হয়ে উঠতে পারলে পরীক্ষায় প্রশ্ন কমন পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।

নেতিবাচক মনোভাব:অনেকে আছেন যারা মনে করেন চাকুরীর বয়স থাকাকালে বিসিএস তো বেশ কয়েকবারই দেয়া যায়, তাই এবার না হলেও পরের বার ঠিকই হয়ে যাবে। এই ধরনের মনোভাব আসলে আত্মঘাতি মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই এই ধরনের মানসিকতা পরিহার করে ভালোভাবে পড়াশুনা করা উচিত।

বিসিএস প্রস্তুতির জন্য পড়ার রুটিন

বিসিএস প্রস্তুতির জন্য একেকজন শিক্ষার্থীর রুটিন একেক রকম হয়ে থাকে। তবে এই রুটিন তৈরি করার সময় কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
  • প্রতিদিন নির্দিষ্ট বিষয়ে নির্দিষ্ট সময় মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করতে হবে।
  • প্রতিনিয়ত মডেল টেষ্ট দিতে হবে।
  • প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পড়াশুনা করতে হবে।

বিসিএস এ প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি

প্রিলিমিনারি বিসিএস পরীক্ষার প্রথম ধাপ।এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে প্রার্থীদের ছাঁটাই করা হয়।প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ন হওয়া খুব কঠিন। প্রিলিমিনারিতে ২০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠীত হয়ে থাকে।আগে ১০০ নম্বর পেলেই উর্ত্তীর্ণ হওয়া যেত। তবে বর্তমানে ৪৩ তম বিসিএসে সাম্ভাব্য কাটমার্ক ১১০ নম্বর, ৪৪ তম বিসিএসে ১২২ নম্বর ও ৪৫ তম বিসিএসে ১১৫ ছিল বলে ধরে নেওয়া হয়।

কাটমার্কের এই উর্ধ্বগতি বলে দেয় বিসিএস পরীক্ষার প্রতি প্রার্থীদের আগ্রহ ও পরীক্ষাটা কতটা প্রতিদ্বন্দিতাপুর্ন।বিসিএস পরীক্ষার নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হতে ৩ থেকে ৪ বছর সময় লেগে যায়, তাই প্রার্থীরা প্রথমবারেই পাশ করার প্রানপন চেষ্টা করেন। ৪১ ও ৪৩ তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্তদের বেশিরভাগই প্রথম বিসিএসে ক্যাডার হয়েছেন। 
তাই যারা বিসিএস প্রিলিমিনারি পাশ করতে চান তারা এইচএসসি পাশ করেই পড়াশুনা শুরু করতে হবে।এখন আর অল্প প্রস্তুতি নিয়ে প্রিলিমিনারি পাস করা অসম্ভব।বিসিএসের সবচেয়ে কঠিন ধাপ হলো প্রিলিমিনারি। এই পরীক্ষায় তারাই জয়যুক্ত হবেন যারা ২ ঘন্টার পরীক্ষায় মাথা ঠান্ডা রেখে সর্বোচ্চ সতর্ককতার সঙ্গে বৃত্ত ভরাট করবেন।

বিসিএসের প্রিলিমিনারি অনেকটা টি ২০ খেলার সাথে তুলনা করা যায়।তাই খুব ভালো প্রস্তুতি থাকা সত্বেও শুধুমাত্র স্নায়ু চাপের কারণে পরীক্ষা খারাপ হয়ে যেতে পারে। যেকোনো খেলায় যেমন খেললেই হয়না খেলাতে কৌশল, দক্ষতা, পরিশ্রম ও একাগ্রতা থাকতে হয় ঠিক তেমনি ২ ঘন্টার পরীক্ষায় সময়কে যদি যথাযথ ব্যবহার করা হয় তাহলে প্রথম ধাপে কৃতকার্য হওয়া সম্ভব। 

৪১ তম বিসিএসে আবেদনকারী ছিল ৪ লাখ ৭৫ হাজার প্রার্থী। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয় মাত্র ২১ হাজার ৫৬ জন। পাসের হার মাত্র ৪.৪৩ শতাংশ।৪০ তম বিসিএসে পরীক্ষার্থী ছিলেন ৪ লাখ ১২ হাজার এবং উত্তীর্ন হয়েছিলেন মাত্র ২০ হাজার ২৭৭ জন। পাসের হার ৪.৯২ শতাংশ।বর্তমানে এক বছরে এক বিসিএসে শেষ করার কর্যক্রম হাতে নেওয়ায় প্রিলিতে আরও কম প্রার্থী পাস করানো হচ্ছে। 

বেশিরভাগ পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়ে থাকে নেতিবাচক নম্বর থাকার কারণে।প্রতি ভুল উত্তরের জন্য ০.৫০ নম্বর কাটা হয়। তাই সংশয়যুক্ত প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া উচিত।এই কারনে প্রয়োজন বিষয়ভিত্তিক পরিপুর্ন প্রস্তুতি।যত ভালো প্রস্তুতি থাকবে সংশয় তত দুর হবে এবং পরীক্ষাকেন্দ্রে আপনার আত্মবিশ্বাস তত বৃদ্ধি পাবে।

তাই প্রতিদ্বন্দিতা বৃদ্ধি পাওয়া ও কম সংখ্যক প্রার্থী টেকানোর কারনে ভবিষ্যতে প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ন হওয়া দুর্গম পাহাড় অতিক্রম করার মতো কষ্টসাধ্য ব্যাপার।

বিসিএস এ লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি

বিসিএসের লিখীত পরীক্ষা হলো অপেক্ষাকৃত সহজ ধাপ।প্রিলিমিনারির চেয়ে লিখিত পরীক্ষায় পাস করা বেশ সহজ।লিখিত পরীক্ষায় ৯০০ নম্বর থাকে যেখানে ৫০ শতাংশ নম্বর পেলেই পাস করা যায়।লিখিত পরীক্ষার সিলেবাসের প্রায় অর্ধেক প্রিলির সাথে মিল আছে। যদি একজন পরীক্ষার্থী প্রিলিতে উর্ত্তীর্ন হয় তাহলে ধরে নিতে হবে তিনি লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির অর্ধেক সম্পূর্ন হয়েছে।

৪৩ তম বিসিএসে প্রিলিমিনারিতে উর্ত্তীর্ন ১৫ হাজার ২২৯ জনের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ন হয়েছিলেন ৯ হাজার ৮৪১ জন।পাশের হার ৬৪.৬২ শতাংশ।৪১ তম বিসিএসে প্রিলিমিনারিতে উর্ত্তীর্ন হয় ২১ হাজার ৫৬ জন এদের মধ্যে ১৩ হাজার প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ন হয়েছিলেন। পাসের হার ৬১.৭৪ শতাংশ।৪০ তম বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৫৪ শতাংশ।

তবে জেনে রাখা ভালো লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ন হওয়া ও ক্যাডার পাওয়া এক বিষয় নয়। ক্যাডার পেতে লিখিত পরীক্ষায় খুব ভালো নম্বর পেতে হবে। কারন লিখিত পরীক্ষাকে বলা হয় বিসিএসের প্রান।আপনি যদি লিখিত পরীক্ষা খুব ভালো করেন তাহলে মৌখিক পরীক্ষায় খুব ভালো না করলেও বা মোটামুটি করলেও ক্যাডার পাওয়া খুব একটা কঠিন হবে না। 
আপনি যদি লিখিত পরীক্ষায় ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ নম্বর পান তাহলে নিঃসন্দেহে একটি ক্যাডার পাবেন। যারা গনিত ও বিজ্ঞানে দক্ষ তাঁরা লিখিত পরীক্ষায় এগিয়ে থাকবেন।

বিসিএস এ মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি

বিসিএসে ২০০ নম্বরের পরীক্ষা নেয়া হয়। এক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ নম্বর পেলে পাস করা যায়।আপনি যদি মৌখিক পরীক্ষায় কোনো প্রশ্নের উত্তর না পারলেও সাধারনত ফেল করানো হয় না, যদি না কোনো অসদআচরন করে থাকেন।সাধারনত মৌখিক পরীক্ষায় অনেক প্রশ্ন করা যা আপনি নিজস্ব মেধা, বুদ্ধি খাটিয়ে উত্তর দিতে পারেন।

মৌখিক পরীক্ষাকে আপনি যদি সহজ ও উপভোগ্য করতে পারেন তাহলে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। আজকের দিনে মৌখিক পরীক্ষায় খুব কম প্রার্থীকে ফেল করানো হয়। ৪১ তম বিসিএসে ১৩ হাজার লিখিত উত্তীর্ন প্রার্থীদের মধ্যে ২ হাজার ৫২০ জন ক্যাডার পেয়েছেন এবং ৯ হাজার ৮২১ জন নন-ক্যাডারের জন্য মনোনিত হয়েছেন। মাত্র ৬৫৯ জন অনুত্তীর্ন হয়েছেন। 

মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ন হওয়ার হার ৯৪ শতাংশ।যদিও অনুত্তীর্নদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা মৌখিক পরীক্ষায় উপস্থিত হননি। ৪০ তম বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষায় মাত্র ৮৩৫ জন অনুত্তীর্ন হয়েছেন।মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ন হওয়ার হার ছিল ৯২.৩৮ শতাংশ।

বিসিএসে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার মানবন্টন

বিসিএসের সিলেবাস প্রনয়ন করে থাকে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা বিপিএসসি যা পিএসসি নামে পরিচিত। বিসিএস এর সিলেবাস প্রনয়ন করা হয়েছে যাতে রয়েছে বাংলা(ভাষা ও সাহিত্য), ইংরেজি (ব্যাকরন ও সাহিত্য), গনিত, মানসিক দক্ষতা, সাধারন বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি, সাধারন জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী, সাধারন জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন মোট ১০ টি বিষয় রয়েছে।

১০ বিষয়ের মার্ক বন্টন

ক্রমিক নং

বিষয়াবলী

মানবন্টন

বাংলা (ভাষা ও সাহিত্য)

৩৫

ইংরেজি (ভাষা ও সাহিত্য)

৩৫

বাংলাদেশ বিষয়বলী

৩০

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী

২০

গাণিতিক যুক্তি

১৫

মানসিক দক্ষতা

১৫

সাধারণ বিজ্ঞান

১৫

কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি

১৫

ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্তাপনা

১০

১০

নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন

১০


সর্বমোট

২০০

বিসিএস লিখিত পরীক্ষার মানবন্টন

প্রফেশনাল ক্যাডার ও সাধারণ ক্যাডারের লিখিত পরীক্ষার সিলেবাসে বেশ মিল থাকলেও কিছু অমিল আছে। সাধারন ক্যাডারের জন্য বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস অনুযায়ী মানবন্টন নীচে দেওয়া হলো।

সাধারন ক্যাডারের জন্য বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস ও মানবন্টন

ক্রমিক নং

বিষয়াবলী

মানবন্টন

সাধারন বাংলা (১ম ও ২য় পত্র)

২০০

সাধারন ইংরেজি (১ম ও ২য় পত্র)

২০০

বাংলাদেশ বিষয়াবলী (১ম ও ২য় পত্র)

২০০

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী

১০০

গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা

১০০

সাধারন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

১০০


সর্বমোট

৯০০

টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ক্যডারের জন্য বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস ও মানবন্টন

ক্রমিক নং

বিষয়াবলী

মানবন্টন

সাধারন বাংলা (১ম ও ২য় পত্র)

১০০

সাধারন ইংরেজি (১ম ও ২য় পত্র)

২০০

বাংলাদেশ বিষয়াবলী (১ম ও ২য় পত্র)

২০০

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী

১০০

গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা

১০০

দুটি পোস্ট সম্পর্কিত বিষয় ২টা

২০০


সর্বমোট

৯০০

বিসিএস পরীক্ষার বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রস্তুতি

বাংলা (ভাষা ও সাহিত্য)

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মোট ৩৫ টি প্রশ্ন থাকে। ২ টি বিষয়ে ভাগ করে নম্বর বরাদ্দ করা হয়। একটি হচ্ছে ভাষা ও অন্যটি সাহিত্য অংশ।
  • ভাষা অংশে - ১৫ নম্বর
  • প্রাচীন ও মধ্যযুগের সাহিত্য অংশে - ৫ নম্বর
  • আধুনিক যুগ (১৮০০ সন থেকে বর্তমান পর্যন্ত) অংশে - ১৫ নম্বর
  • সর্বমোট - ৩৫ নম্বর

বাংলা ভাষা অংশে যে টপিক গুলো ভালোভাবে পড়তে হবে

তাহলো ধ্বনি, শব্দ, বাক্য, বানান এবং বাক্য শুদ্ধি, সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দ, প্রত্যয়, পরিভাষা, সমাস, বাগধারা, এক কথায় প্রকাশ ইত্যাদি।

বাংলা সাহিত্য অংশে যে টপিক গুলো ভালোভাবে পড়তে হবে

বাংলা সহিত্যে ভালো মার্ক পেতে হলে খুব ভালোভাবে পড়তে হবে এবং খুঁটিনাঁটি বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। কোনো বিষয় বাদ দিলে হবে না।

প্রাচীন ও মধ্যযুগ

এই যুগে পড়ার বিষয় হলো চর্যাপদ। চর্যাপদ থেকে প্রিলিমিনারিতে প্রশ্ন আসবেই তবে মধ্যযুগের ক্ষেত্রে টপিক খুব বেশি নেই। প্রাচীন যুগের চর্যাপদ তো পড়তেই হবে তার পাশাপাশি মধ্যযুগের শ্রীকৃঞ্চকীর্তন, মনসা মঙ্গল কাব্য, খনার বচন, মৈথিলি কাব্য, ইউসুফ-জুলেখা ইত্যাদি বিষয়গুলো ভালোভাবে পড়তে হবে।

আধুনিক যুগ

প্রাচীন ও মধ্যযুগের তুলনায় আধুনিক যুগের উপর প্রশ্ন বেশি থাকে। সাধারনত বাংলা সাহিত্যের শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ে বেশি ভালো করে থাকে। তবে আপনি যদি কয়েকজন বিশেষ সাহিত্যিকের সাহিত্য ভালোভাবে পড়েন তাহলে বাংলা সাহিত্যের ছাত্র না হয়েও বেশিরভাগ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন।
সাহিত্যিকগণ হচ্ছেন ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জসীম উদ্দীন, মাইকেল মধুসুদন দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মীর মোশাররফ হোসেন, দীনবন্ধু মিত্র, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন, কায়কোবাদ, ফররুখ আহমেদ, জীবনানন্দ দাশ, বিঞ্চু দে, অমিয় চক্রবর্তী, সুধীরনাথ দত্ত এবং বুদ্ধদেব বসু। 

আপনাদের জেনে রাখা ভালো জীবনানন্দ দাশ, বিঞ্চু দে, অমিয় চক্রবর্তী, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত এবং বুদ্ধদেব বসুকে একত্রে বাংলা সাহিত্যের পঞ্চপান্ডব হয়ে থাকে।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে ভালো করার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত টিপস

  • আগের বছরের যে প্রশ্নগুলো রয়েছে তার সল্যুশন করতে হবে।এতে আপনার প্রশ্নপত্রের ধরন সম্পর্কে ধারনা গড়ে উঠবে।
  • সিলেবাসে যে বিষয়গুলো আছে যেমন: ধ্বনি, শব্দ, বাক্য, বানান ও বাক্য শুদ্ধি, প্রত্যয়, পরিভাষা, বিপরীত শব্দ, সমার্থক শব্দ, সমাস,এক কথায় প্রকাশ ইত্যাদি বিষয়ের পাশাপাশি সিলেবাসে নেই এমন বিষয়গুলোও পড়া জরুরি যেমন:বাগধারা।
  • খুব ভালোভাবে আধুনিক যুগের উপর পড়তে হবে কারন প্রাচীন যুগের চেয়ে আধুনিক যুগের উপর বেশি মার্ক থাকে।
  • এনসিটিবি প্রকাশিত বাংলা ব্যকরন বোর্ড বই যা ৯ম ও ১০ম শ্রেনীর অবশ্যই পড়তে হবে। নতুন ভার্সনের বইসমুহ থেকে পুরাতন ভার্সনের বইয়ে তথ্য বেশি আছে বিধায় পুরনো ভার্সন পড়লে সুবিধা হবে। তবে সাম্প্রতিক তথ্যের ক্ষেত্রে কোনো রকম বিভ্রান্তি থাকলে নতুন ভার্সন অনুসরন করে উত্তর দিতে হবে।
  • হুমায়ন আজাদ সাহেবের রচিত লাল নীল দীপাবলি বইটি পড়লে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন অংশ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
  • বাংলা সাহিত্যের আধুনিক অংশের জন্য বাংলাপিডিয়ার পাশাপাশি LIVE MCQ প্রদত্ত পিডিএফসমূহ থেকেও পড়াশোনা করলে উপকৃত হবেন।
  • পড়াশুনা করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন শুধু প্রিলিমিনারি নয় বরং পড়াশুনাটা যেন লিখিত ও মৌখিক জন্যও হয়।

বিসিএস ইংরেজি ব্যাকরন ও সাহিত্য প্রস্তুুতি

ইংরেজি ব্যাকরন ও সাহিত্যেও মোট ৩৫ নম্বর বরাদ্দ আছে। এর মধ্যে ইংরেজি ভাষা বিষয়ে ২০ নম্বর ও ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ে মোট ১৫ নম্বর।

বিসিএস ইংরেজি ব্যাকরন প্রস্তুতি

ইংরেজি অংশের বিষয়গুলো হলো Parts of speech, The verb, Idioms & phrases, Clauses, Corrections, Sentences & Transformations, Words এবং Composition।

বিসিএস ইংরেজি সাহিত্য প্রস্তুতি

ইংরেজি সাহিত্য অংশে Names of writers of literary pieces rom Elizabethan period to the 21st century এবং Quotations from drama/poetry of different ages বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে।তাই কয়েকজন গুরুত্বপূর্ন সাহিত্যিকের সাহিত্য নিয়ে গভীরভাবে পড়ালেখা করলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বেশ অনেকগুলো প্রশ্ন কমন পাওয়া যেতে পারে। 
আরোও পড়ুনঃ
এই সাহিত্যিক হচ্ছেন William Shakespeare, William Wordsworth, John Milton, S.T. Coleridge,W.S Maugham, Charles Dickens, Robert Browning, Ernest Hemingway, Jonathan Swift, P.B.Shelley, Edmund Spencer O Henry, Bertrand Russell, Jane Austen, H.G. Wells, G.B. Shaw. Alfred Tennyson, William Blake,W.B.Yeats, T.S. Eliot, E.M. Foster এবং Sir Walter Scott

ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে ভালো করার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত টিপস

  • ইংরেজির ক্ষেত্রে ভোকাবুলারি চর্চা করা খুবই জরুরী। প্রতিদিন অল্প অল্প করে প্রতিদিন কিছু কিছু করে শিখলে নতুন শব্দের ভান্ডার বৃদ্ধি পাবে।
  • Noun, Adjective, Verb, Preposition, Number, Voice, Spelling, Phrase, Synonym-antonym টপিকসমূহ থেকে প্রায় প্রতি প্রিলিতেই অন্তত ১ থেকে ৩টি প্রশ্ন এসে থাকে।
  • বানান ভুল একদম করা যাবে না।
  • আগের বছরের প্রশ্নসমূহ সমাধান করতে হবে।
  • ইংরেজী সাহিত্যের বিভিন্ন যুগ, সাহিত্যিক টার্মস, গুরুত্বপুর্ন চরিত্রসমুহ ও উক্তিগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
  • প্রতিদিন ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার ১ম, ২য় ও শেষ পৃষ্ঠা এবং আন্তর্জাতিক সংবাদের পৃষ্ঠা ও সম্পাদকীয় কলামসমূহ পড়তে হবে।

বিসিএস পরীক্ষার বাংলাদেশ বিষয়াবলির প্রস্তুতি

বাংলাদেশ বিষয়াবলীর উপর ৩০ টি প্রশ্ন করা হয় যাতে ৩০ নম্বর বরাদ্দ থাকে। বাংলাদেশের কৃষি সম্পদ, বাংলাদেশের অর্থনিতী, বাংলাদেশের শিল্প ও বানিজ্য, বাংলাদেশের সংবিধান, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন হয়ে থাকে। 

এছাড়াও সাম্প্রতিক বিষয় যেমন: বাংলাদেশের জাতীয় অর্জন, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনাসমূহ, জাতীয় পুরষ্কার, খেলাধুলা, চলচ্চিত্র ও গনমাধ্যম সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ বিষয়াবলি বিষয়ে ভালো করার টিপসসমূহ

  • বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান ও অর্থনিতীর বিষয়সমূহ থেকে প্রতি বছর প্রশ্ন হয়ে থাকে।তাই এই বিষয়গুলো খুব ভালোভাবে পড়তে হবে।
  • বাংলাদেশের কৃষি ও অর্থনিতী বিষয়ে সাধারনত সম-সাময়িক বিষয়ে প্রশ্ন হয়ে থাকে।উপজাতিসমূহের বসবাস,উৎসব, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের উপর মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
  • বাংলাদেশের সংবিধান খুব ভালোভাবে পড়তে হবে কারন এই অংশ থেকে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভার জন্য প্রশ্ন হয়ে থাকে।
  • বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা অংশ থেকে আইন, শাসন ও বিচার বিভাগ সম্পর্কে ভালোভাবে পড়তে হবে।
  • সাম্প্রতিক বিষয়ের তথ্যগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে।

বিসিএস আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির উপর প্রস্তুতি

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির উপর যেখান থেকে প্রশ্ন হয়ে থাকে তা হলো বৈশ্বিক ইতিহাস, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা, ভূ-রাজনিতী, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও আন্তরাষ্ট্রীয় ক্ষমতা, বিশ্বের সাম্প্রতিক ও চলমান ঘটনাপ্রবাহ, আন্তার্জাতিক পরিবেশগত ইস্যু ও কুটনিতী, আন্তার্জাতিক সংগঠন সমূহ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি।

আন্তর্জতিক বিষয়াবলি বিষয়ে ভালো করার টিপসসমূহ

  • বৈশ্বিকভাবে চলমান ও আলোচিত যুদ্ধ, চুক্তি, সনদ ও সম্মেলন বিষয়ে খুব ভালোভাবে পড়তে হবে।
  • পৃথিবীতে যে সকল আলোচিত আন্তর্জাতিক সংগঠন, তাদের প্রতিষ্ঠার সাল, সদস্য সংখ্যা, সদর দপ্তর, বর্তমান প্রধান, অঙ্গ সংগঠন ইত্যাদি বিষয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করতে হবে।
  • নিউজ পেপারের আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
  • সর্বশেষ আপডেট তথ্য সম্পর্কে জানতে হবে।
  • পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেরে ভৌগলিক সীমারেখা, সমুদ্রসীমা ও সীমান্ত বিষয়ে আপডেট ধারনা রাখতে হবে।

বিসিএস পরীক্ষায় গণিতের প্রস্তুতি

প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় গনিতে ১৫ নম্বর বরাদ্দ থাকে। লসাগু ও গসাগুতে ১ নম্বর, সূচক ও লগারিদমে ২ নম্বর, সরল ও যৌগিক মুনাফা ১ নম্বর, সমান্তর ও গুণোত্তর ধারা ২ নম্বর, সরল ও দ্বিপদী অসমতা ১ নম্বর, শতকরা ও লাভ-ক্ষতি ১ নম্বর, কোণ ও ত্রিভুজ ২ নম্বর,সেট ১ নম্বর অন্যান্যতে ২ নম্বর বরাদ্দ থাকে।

বিসিএস পরীক্ষায় গাণিতিক বিষয়ের উপর প্রস্তুতি

  • আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী গণিত বিষয়ে খুব ভয় পায়। আপনি যদি রেগুলার প্র্যাকটিস করেন তাহলে ভয় কেটে যাবে।
  • বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন সমূহ ও জব সল্যুশান সমাধান করতে হবে।
  • বিন্যাশ ও সমাবেশ, সেট, পরিসংখ্যান ও সাম্ভাব্যতা খুবই মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

বিসিএস পরীক্ষায় মানসিক দক্ষতার উপর প্রস্তুতি

প্রিলিমিনারিতে মানসিক দক্ষতার উপর ১৫ নম্বর থাকে। ভাষাগত যৌক্তিক বিচার, সমস্যা সমাধান, বানান ও ভাষা, যান্ত্রিক দক্ষতা স্থানাঙ্ক সম্পর্ক ও সংখ্যাগত ক্ষমতা ইত্যাদি বিষয়গুলোর উপর ভালোভাবে জোড় দিতে হবে। 
কোডিং ও ডিকোডিং বিষয়ে ২ নম্বর, সমস্যা সমাধানে ১ নম্বর সাদৃশ্য বা অ্যানালজি বিষয়ে ১ নম্বর, সিরিজের সংখ্যা নির্ণয় বিষয়কে৩ নম্বর, দিক ও চিত্র নির্ণয় বিষয়ে ৩ নম্বর, আয়নায় প্রতিবিম্ব বিষয়ে ১ নম্বর, ‍দিন ও সম্পর্ক নির্ণয় বিষয়ে ২ নম্বর ও অন্যান্য বিষয়ে ২ নম্বর থাকে।

মানসিক দক্ষতা বিষয়ে ভালো করার টিপসসমূহ

  • এই বিষয়ে ভালো করতে প্রচুর প্র্যাকটিস করতে হবে।
  • এই বিষয়ে বাজার থেকে ভালো বই পড়তে হবে।
  • এই বিষয়টি নির্ভর করে পরীক্ষার্থীর কমনসেন্সের উপর।
  • আপনি যদি গণিতে ভালো হন তাহলে মানসিক দক্ষতা বিষয়ে ভালো করতে পারবেন।
  • মানসিক দক্ষতায় বাংলা ও ইংরেজি বানান, সমার্থক শব্দ ও বিপরীত শব্দের উপর প্রশ্ন হয়ে থাকে।আপনি যদি উভয় বিষয়ের ভাষা অংশের উপর ভালোভাবে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে মানসিক দক্ষতার উপর ভালো করতে পারবেন।

বিসিএস পরীক্ষায় সাধারন বিজ্ঞানের উপর প্রস্তুতি

বিসিএস প্রিলিমিনারিতে সাধারন বিজ্ঞানের উপর ১৫ নম্বর বরাদ্দ থাকে। এই বিষয়ে ভালো করতে হলে অবশ্যই ভৌত বিজ্ঞান, জীব বিজ্ঞান ও আধুনিক বিজ্ঞানে ভালোভাবে পড়াশুনা করতে হবে। এই বিষয়ে আলোর প্রকৃতিতে ১ নম্বর, শক্তির উৎস এবং রুপান্তরে ১ নম্বর, ভিটামিন, খাদ্য ও পুষ্টিতে ১ নম্বর, ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে ২ নম্বর, রোগের কারণ ও তার প্রতিকার থেকে ১ নম্বর, স্থির এবং চলতড়িৎ থেকে ২ নম্বর মানবদেহ থেকে ১ নম্বর ও অন্যান্য বিষয় থেকে ৬ নম্বর থাকে।

সাধারন বিজ্ঞান বিষয়ে ভালো করার টিপসসমূহ

  • সাধারন বিজ্ঞানে ভৌত বিজ্ঞান অংশের এসিড, ক্ষার, লবন, জারণ-বিজারণ, স্থির ও চলতড়িৎ, ইলেকট্রনিক্স, নবায়ন যোগ্য শক্তির উৎস বিষয়ে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। এছাড়া তড়িৎ চৌম্বক, ট্রান্সফর্মার, এক্সরে ও তেজস্ক্রিয়ত বিষয়েও ভালোভাবে পড়তে হবে।
  • জীব বিজ্ঞান অংশে যে হৃৎপিন্ড, খাদ্য ও পুষ্টি, ভিটামিন, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, মানবদেহ, রোগের কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে ভালোভাবে পড়তে হবে।
  • আধুনিক বিজ্ঞান অংশে যতগুলো টপিক রয়েছে সবগুলো পড়তে হবে।

বিসিএস কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি প্রস্তুতি

বিসিএস প্রিলিমিনারিতে কম্পিউটারের উপর ১০ মার্ক ও তথ্য প্রযুক্তির উপর ৫ মার্ক থাকে। এক্ষেত্রে কম্পিউটার ডিভাইসে ১ নম্বর, অপারেটিং সিস্টেমে ১ নম্বর, কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ৫ নম্বর, কম্পিউটার নম্বর ব্যবস্থাপনায় ১ নম্বর, ইন্টারনেটে ২ নম্বর, কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের পূর্ন রুপ থেকে ১ নম্বর ও অন্যান্য বিষয় থেকে ৪ নম্বর থাকে।

কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে বিষয়ে ভালো করার টিপসসমূহ

  • কম্পিউটার পেরিফেরাস, কী বোর্ড, মাউস, ওসিআর, কম্পিউটার অঙ্গ সংগঠন, সিপিইউ, হার্ড ডিস্ক বিষয়গুলোতে খুব ভালোভাবে পড়াশুনা করতে হবে।
  • কম্পিউটার নেটওয়ার্ক থেকে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন আসে। তাই এই চ্যাপ্টারটি খুব ভালোভাবে পড়াশুনা করতে হবে।
  • কম্পিউটার ভাইরাস, ফায়ারওয়াল ও কম্পিউটার প্রোগ্রাম বিষয়ে খুব ভালোভাবে পড়াশুনা করতে হবে।

বিসিএস ভূগোল পরিবেশ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রস্তুতি

বিসিএস প্রিলিমিনারিতে এই বিষয়ে ১০ নম্বর থাকে।বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন বিশ্লেষন করে দেখা গেছে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক ভৌগলিক অবস্থান, বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা বিষয় থেকে প্রশ্ন থাকে।

ভূগোল পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিষয়ে ভালো করার টিপসসমূহ

  • এই বিষয়ে ভালো করতে হলে অবশ্যই ৯ম ও ১০ম শ্রেনীর বোর্ড বাই পড়তে হবে।
  • বাংলাদেশের সীমানা, অবস্থান, সীমান্ত, সমুদ্রসীমা, অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ, বাংলাদেশের উপর দিয়ে যাওয়া রেখাগুলো বিষয়ে খুব ভালোভাবে পড়তে হবে।
  • বাংলাদেশের খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ে খুব ভালোভাবে পড়াশুনা করতে হবে।

বিসিএস নৈতিক মূল্যবোধ ও সুশাসন বিষয়ে প্রস্তুতি

এই বিষয়ে মোট ১০ নম্বর থাকে।এই বিষয়ে ভালো করতে হলে সুশাসনের ধারনা ও সংজ্ঞা, মূলাবোধের ধারনা, সংজ্ঞা ও উপাদান, বিশ্বব্যাংক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্দিষ্ট করে দেয়া সুশাসনের উপাদানসমূহ সম্পর্কে ভালো পড়াশুনা থাকতে হবে।এই বিষয়ে ভালো করতে হলে বাজারের যেকোনো বই পড়লেই হবে।

বিসিএস এর জন্য প্রয়োজনীয় বইসমূহ

বাংলা ব্যাকরন ও সাহিত্য

  • বাংলা একডেমি অভিধান
  • বোর্ড বই (ষষ্ঠ শ্রেনী থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেনী পর্যন্ত)
  • Live MCQ বাংলাবিদ ব্যাকরণ - মেহেদী ধ্রুব
  • বাংলাপিডিয়া
  • সাহিত্য বোর্ড বই
  • বাংলাপিডিয়া
  • লালনীল দীপাবলি - হুমায়ুন অজাদ
  • ভাষা ও শিক্ষা - হায়াত মাসুদ
  • শীকর - মহসনি নাজিলা
  • ৯ম - ১০ম শ্রেনির বাংলা - ২য় পত্র বোর্ড বই
ইংরেজি সাহিত্য ও ব্যকরন
  • Live MCQ English Wizard Grammar by Saleh Ahmed
  • High School English grammar and composition by Wren and Martin
  • Advanced Learners grammar and composition by Chowdhury and Hossain
  • A passage to the English language by S.M Zakir Hossain
  • Applied English Grammar & Composition by P.C DAS
  • Oxford Advance Learners Oxford, Cambridge, Merriam-Webster, Collins etc. Dictionary
  • English Grammar in use by Raymond Murphy
  • Cliffs TOEFL
  • Common mistakes in English
  • An ABC of English Literature by Dr.M.Mofizar Rahman
  • ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাস- শীতল ঘোষ
  • Encyclopedia Britannica
  • Live MCQ English Literature PDF
  • Master English - Jahangir Alam
  • A passage to english laungues
  • English paper

বাংলাদেশ বিষয়াবলী

  • স্নাতক পর্যায়ের একাডেমিক বই
  • বাংলাপিডিয়া
  • সাম্প্রতিক তথ্যের জন্য দৈনিক পত্রিকা Live MCQ PDF
  • বাংলাদেশ সংবিধান - আরিফ খান
  • ৮ম ও ১০ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় (বোর্ড বই)
  • ৯ম ও ১০ম শ্রেনির পৌরনীতি (বোর্ড বই)
  • ৯ম ও ১০ শ্রেনির বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা
  • পলাশী থেকে একাত্তর - শাহাদত হোসেন খান
  • মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর - গোলাম মুরশিদ
  • নাগরিকদের জানা ভালো - মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী

  • স্নাতক পর্যায়ের একাডেমিক বই
  • Encyclopedia Britannica, World atlas, History.com etc reliable website
  • সাম্প্রতিক তথ্যের দৈনিক পত্রিকা ও Live MCQ PDF

সাধারন গণিত

  • NCTB প্রনীত বোর্ড বই (ষষ্ঠ শ্রেনী থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেনী পর্যন্ত)
  • গণিত অলিম্পিয়াডের প্রশ্নপত্র
  • যেকোনো একটি ভালো গাইড বই।
  • ৯ম ও ১০ম শ্রেনির সাধারন গনিত বোর্ড বই

ভুগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা

  • বোর্ড বই
  • আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ওয়েবসাইট
  • World atlas
  • বাংলাপিডিয়া

সাধারন জ্ঞান

  • বোর্ড বই
  • Reliable Website

কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি

  • বোর্ড বই
  • Reliable Website

নৈতিকতা, মুল্যবোধ ও সুশাসন

  • বোর্ড বই
  • Reliable Website
  • United Nations, UNDP,World Bank ইত্যাদি সংগঠনসমুহের সুশাসন বিষয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন ডকুমেন্ট।

বিসিএস ভাইভা প্রস্তুতি

যে সকল পরীক্ষার্থি লিখিত পরীক্ষায় পাস করে শুধুমাত্র তাদেরকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। মৌখিক পরীক্ষার মোট নম্বর ২০০।ভাইভাতে পাস নম্বর ৫০ শতাংশ।ভাইভাতে আপনি যত বেশী ভালো করবেন ততো বেশি আপনার কাঙ্খিত ক্যাডারটি পাওয়ার সম্ভবনা ততবেশী বাড়বে।
  • ভাইভাতে শুধুমাত্র একাডেমিক যোগ্যতায় দেখা যায় না বরং আপনার গেটআপ, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, পোশাক পরিচ্ছদ ও উপস্থাপনা কৌশলও দেখা হয়।তাই পড়াশুনার পাশাপাশি এই বিষয়গুলি ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
  • আপনার নিজের সম্পর্কে, নিজ জেলা, বিশ্ববিদ্যালয় ও আপনার অনার্সে পঠিত বিষয় সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা থাকতে হবে।
  • আপনার ক্যাডার চয়েস লিস্ট বিষয়ে পুরোপুরিভাবে স্বচ্ছ ধারনা থাকতে হবে। আপনাকে সব ক্যাডার সম্পর্কেও ভালো ধারনা থাকতে হবে।
  • বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান থাকতে হবে।
  • সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে।
  • আপনাকে অবশ্যই আত্মবিশ্বাসী ও বিনয়ী হতে হবে। তবে অতিরিক্ত বিশ্বাস ভাইবার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • যতক্ষন ভাইভা চলবে পুরোটা সময় মুখে স্ফিত হাসি থাকবে।
  • কথা বলার সময় ভাষায় আঞ্চলিকতা পরিহার করতে হবে।
  • যেকোনো প্রশ্ন মন দিয়ে শুনার পর উত্তর দিতে হবে। প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের মাঝে কথা বলা যাবে না।
  • অনুমান নির্ভর কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যাবে না।
  • সবসময় টেনশন ফ্রি থাকতে হবে।
  • বাংলায় প্রশ্ন করে ইংরেজিতে উত্তর দিতে বললে সেটিই করবেন ও ইংরেজিতে প্রশ্ন করলে ইংরেজিতে উত্তর দিবেন।
  • ভাইবা বোর্ডে একজনের প্রশ্নের উত্তর করার মাঝে যদি আরেকজন প্রশ্ন করে তাহলে প্রথমজনের অনুমতি নিয়ে দ্বিতীয়জনের প্রশ্নের উত্তর দিবেন।
  • কোন প্রশ্ন যদি শুনতে বা বুঝতে না পারেন তাহলে বিনীতভাবে সেটি জানাবেন।
  • যদি আপনার একাডেমিক পড়াশুনার রেজাল্ট ভালো হয়ে না থাকে তাহলে এই ভালো না হওয়ার গ্রহনযোগ্য কারণ তৈরি করে রাখবেন।
  • আপনার যদি কোন মুদ্রাদোষ থাকে তাহলে সে বিষয়ে খুব সচেতন থাকবেন।
  • বিভিন্ন কোচিং সেন্টারগুলোতে মডের ভাইভা হয়ে থাকে সেগুলোতে বেশি করে অংশ গ্রহন করুন।
  • ভাইভা বোর্ডে নিজেকে যাহির করার চেষ্টা করবেন না। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে প্রশ্নের উত্তর দিতে বেশি দেরি করবেন না।
  • নিজের রাজনৈতিক দর্শন প্রকাশ করবেন না।
  • কোনো ভাবেই ভাইবা বোর্ডে তর্কে জড়াবেন না।যদি কোন প্রশ্নের উত্তর তারা ভুল প্রতিপন্ন করে তাহলে আপনি আপডেট তথ্যটি জানেন না বলে তাদের জানাবেন এবং পরবর্তীতে সঠিক তথ্যটি জেনে নিবেন বলে তাদের আশ্বস্থ করবেন।

লেখকের শেষ কথা

আশা করছি ,উপরের আর্টিকেলটি আপনারা খুব ভালো মতো পড়েছেন। ফলে আপনারা জেনে গেছেন কিভাবে পড়াশুনা করলে বিসিএসে পাশ করতে পারবেন।যদি সঠিক নিয়মে উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলতে পারেন তাহলে আপনি আশা করতে পারেন বিসিএসে একটি ক্যাডার পাবেন।

আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩