আম খাওয়ার ১৩ টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
গরম থেকে বাঁচতে ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিনবাংলাদেশের এটি একটি জনপ্রিয় ফল। এই ফল খায় না এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। সাধারণত এপ্রিল মাস থেকেই আম পাওয়া যায় এবং মে মাসের শুরু থেকে আম পাকতে শুরু করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও সোডিয়াম। এটি শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়।ক্যান্সার কোষ কে মেরে ফেলে।
ভুমিকা
আমে উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে যা জীবানুর বিরুদ্ধে লড়াই করে। আমে খেলে দৃষ্টি শক্তি ভালো থাকে।যাদের লিভারের সমস্যা আছে তাদের কাঁচা আম খাওয়া উচিত ।এটি বাইন নামে এক ধরনের এসিড নিঃসরণ করে যা অন্ত্রের মধ্যে খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলোকে হত্যা করে নতুন রক্ত উৎপাদনের সহায়তা করে।
এই ফলটি যদি আপনি নির্দিষ্ট পরিমানে খেতে পারেন তাহলে আপনার গ্রোথ হরমোন বৃদ্ধি পাবে। ফলে ফিগার হবে সুস্থ, সবল ও সুঠাম।এছাড়াও এতে রয়েছে খনিজ লবণ ভিটামিন বি, ই সেলেনিয়াম ,এনজাইম ,সাইট্রিক এসিড। আম খেলে মুখের ত্বক মসৃণ থাকে, চুল পড়া কমে,হজমের সমস্যা দূর হয় ,চোখের যে নানারকম রোগ রয়েছে তা দূর হয় এছাড়া এই ফলটি দিয়ে জ্যাম জেলি আচার তৈরি হয়।
আম খাওয়ার ১৩ টি উপকারিতা
আমকে বলা হয় ফলের রাজা।এই ফল খেতে ভালোবাসেনা এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল। গ্রীষ্ম কালের সবচেয়ে আকর্ষনীয় ও লোভনীয় ফল হচ্ছে আম। এই ফলটি শুধুমাত্র সুস্বাদু নয় বরং এর উপকারিতাও অনেক। আপনি যদি নিয়মিত আম খান তাহলে তা শরীরের জন্য খুব উপকারী। তবে আমে রয়েছে প্রচুর ক্যালোরি।
তাই আম খাওয়ার আগে এই ব্যাপারে যথেষ্ট নজর রাখা দরকার।আম প্রো বায়োটিক, ডায়েটরি ফাইবার, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানে ভরপুর। অনেক গবেষনায় দেখা গেছে, আমের অ্যান্টি অষ্কিডেন্ট উপাদান, কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, লিউকেমিয়া ও প্রস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধের উপাদান রয়েছে।
কোলেষ্টরল কমায়: বিশেষজ্ঞরা বলছেন কেউ যদি আমের সময় নিয়মিত আম খায় তাহলে তা কোলেষ্টরল কমাতে সাহায্য করে। এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটমিন সি, পেকটিন ও ফাইবার রয়েছে যা শরীরের কোলেষ্টরল কমিয়ে হার্টকে সুস্থ রাখে। তাই পরিমিত পরিমানে প্রতিটি মানুষের আম খাওয়া উচিত।
চোখের জন্য উপকারী: একটি আমে ২৫ শতাংশ ভিটামিন এ থাকে যা চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে এবং রাতকানা ও শুষ্ক চোখ প্রতিরোধে সহায়তা করে। তাই যারা চোখের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য আম একটি উপকারী খাবার। তাই নিয়মিত এই ফল খেলে চোখ ভালো থাকে।
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করে: আম থেকে যে জুস তৈরি হয় তা বাইরের অতিরিক্ত তাপ থেকে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং সহজে ক্লান্ত হওয়া দুর করতে সাহায্য করে।শুধু পাকা আম নয় কাঁচা আমের শরবতও বেশ উপকারী।
ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে: আমের মধ্যে কোয়েরসেটিন, ফাইসেটিন, আইসোকোয়েরসেটিন, অ্যাস্ট্রাগ্যালিন, গ্যালিক অ্যাসিড ও মিথাইল গ্যালেট নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা স্তন ক্যান্সার থেকে শুরু করে কোলন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার ও লিউকেমিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে।
ওজন কমাতে সহায়তা করে: আমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমানে বায়ো-অ্যাক্টিভ ও ফাইটো-কেমিক্যাল উপাদান যা শরীরের ফ্যাটি সেল ও ফ্যাট সম্পর্কিত জিনের বৃদ্ধি ও বিকাশে অন্যতম ভুমিকা পালন করে।তাই খুব সহজেই ওজন বা মেদ বাড়ে না।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: আমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পটাসিয়াম ও ফাইবার যা শরীরের Glucose, কোলেষ্টরল ও ওজন নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে ও হৃদপিন্ডের সার্বিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে।
দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে: আমে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ এর খুব ভালো উৎস।৩/৪ কাপ আমে এ দৈনিক চাহিদার প্রায় ৮ শতাংশ পুরন করে। এ উপাদানগুলো আমাদের শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের কাজ করার পাশাপাশি দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ত্বক ও চুলের যত্নে: আমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ,সি ও ই। ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।বিশেষ করে ত্বকের ব্রোন দুর করে ও ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায়। আমের মধ্যে থাকা উচ্চ মাত্রার ভিটামিন-সি ত্বকের কোলাজেন তৈরিকে ত্বরান্বিত করে, যা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ার প্রবনতা থেকে দুরে রাখতে সহায়তা করে।
আরোও পড়ুনঃ পেঁয়াজ কেনো খাবেন বিস্তারীতভাবে জেনে নিন
এছাড়া আমের মধ্যে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট চুলের ফলিকলকে অক্সিডেটিভ ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে, যা চুল পড়ার হার কমিয়ে দেয়।
ঘুমে সহায়ক ভুমিকা পালন করে: আমের মধ্যে রয়েছে ট্রিপটোফ্যান, মেলাটোনিন ও ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের ঘুমকে তরান্বিত করতে সহয়তা করে।
অ্যালকালাইনের ভারসাম্যতা রক্ষা করে: আমের মধ্যে রয়েছে টারটারিক অ্যাসিড ও ম্যালিক অ্যাসিড ও সাইট্রিক এসিড যা শরীরের অ্যালকালি নামের রাসায়নিকের ভারসাম্যতা রক্ষা করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: একটি মাঝারি মাপের আম প্রতিদিনের ভিটামিন সি এর চাহিদার দুই তৃতীয়াংশ পুরন করতে সহায়তা করে।এর শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
শরীর সুস্থ রাখে: একটি পাকা আমে থাকে প্রচুর পরিমানে পটাসিয়াম যা শরীরের রক্ত স্বল্পতা দুর করতে এবং হার্ট সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া আমে থাকা ক্যালসিয়াম শরীরের হাড় মজবুত করতে সহয়তা করে। আমে থাকা এনজাইমগুলো প্রোটিন উপাদানগুলোকে সহজে ভেঙে ফেলতে পারে। ফলে খাবার দ্রুত হজম হয় এবং পাকস্থলীর বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিক রোগীদের খাদ্য: আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৫০ এর বেশি হয়ে থাকে। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স হলো কার্বোহাইড্রেটের সুচক।আপনি যত কম গ্লাইসেমিক রেটের খাবার খাবেন ততই শরীরের জন্য ভালো। আপনাদের মধ্যে অনেকের ধারনা আছে ডায়াবেটিস রোগীরা আম খেতে পারেন না। কিন্তু বিষয়টা মোটেও ঠিক নয়।
তবে পেট ভরে খাওয়ার পর দুপুর বা রাতে আম খেলে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।
আম খেলে কি ওজন বাড়ে ?
আপনি যদি পরিমিত পরিমানে আম খান তাহলে ওজন বাড়বে না।যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন তারা প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমানে ক্যালোরি মেপে আম খান তাহলে অবশ্যই ওজন কমবে।আপনি যদি কোনো চিনিযুক্ত ডেজার্ট বা আমের জুস খান তাহলে ক্যালোরির পরিমান অনেক বেড়ে যায়।আম খেলে ওজন না বাড়ার আরেকটি কারন হচ্ছে এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার।
আপনারা যদি দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় ২ টি করে আম খেতে খান তাহলে কখনই ওজন বাড়বে না। এছাড়া আমে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ট্রিপটোফেন যা ঘুমের পরিমান বাড়িয়ে দেয়। সাধারনত দিনের বেলায় ঘুম আমাদের মেটাবলিক রেট কমিয়ে দেয় যা আমাদের ওজন মাঝে মাঝে বাড়িয়ে দিতে পারে।
পাকা আমে কোন ভিটামিন থাকে
পাকা আমে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন , খনিজ লবন, ফাইবার ইত্যাদি,যা আমাদের দেহের জন্য খুব উপকারী। পাকা আমে ক্যারোটিনের মাত্রা সবচেযে বেশি থাকে।এছাড়াও আমে রয়েছে আয়রন, ফসফরাস, ভিটামিন সি, রিভোফ্লেভিন ও থায়ামিন।আরোও রয়েছে ভিটামিন বি-১ ও বি-২, প্রোটিন ও ফ্যাট ও শ্বেতসার।
লেখকের শেষকথা
আশা করছি ,উপরের আর্টিকেলটি আপনারা খুব ভালো মতো পড়েছেন। ফলে আপনারা জেনে গেছেন আমের উপকারিতাগুলো নিয়ে এবং এটি নিয়মিত খেলে আপনি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবেন।এছাড়া আরোও জানতে পেরেছেন আপনি যদি নিয়মিতভাবে আম খান তাহলে নানা ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। উপরের আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।
যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।
সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়
comment url