সোরিয়াসিস থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
টাইফয়েড এর ক্ষতিকর দিক - টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিনসারা পৃথিবীতে ২ থেকে ৩ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত।যদিও এই রোগটী সারেনা তবে চিকিৎসা নিলে সারা জীবন সুস্থ থাকা যায়।তাই আজকের আর্টিকেলটিতে সোরিয়াসিস থেকে মুক্তির উপায়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যদি আপনি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করতে পারেন এবং পুষ্টিকর খাবার খান তাহলে এই রোগ থেকে অনেক দুরে থাকবেন।
ভুমিকা
সোরিয়াসিস এমন একটি রোগ যা সংক্রামক নয়। আপনি যদি কিছু উপসর্গ দেখেন তাহলে ধরে নিতে পারেন যে আপনার সোরিয়াসিস হয়েছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আজকের আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে বর্ননা করা হয়েছে। আজকের আর্টিকেলটি যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন সোরিয়াসিস কি, এর প্রকারভেদ, কি কারনে সোরিয়াসিস হয়, এর লক্ষনগুলো কি ইত্যাদি।
আরোও জানতে পারবেন সোরিয়াসিসের প্রতিকার ও চিকিৎসা, ঘরোয়া উপকরন ব্যবহার করে কিভাবে সোরিয়াসিস থেকে মুক্ত থাকা যায়, সোরিয়াসিস প্রতিরোধে করনীয় ও কোন ধরনের খাবার খেলে এই রোগ বেশি বৃদ্ধি পায়।
সোরিয়াসিস কি
সোরিয়াসিস রোগটিকে একটি জটিল চর্মরোগ হিসেবে গন্য করা হয়।তবে এই রোগটি প্রদাহ সৃষ্টিকারি অসংক্রামক অর্থাৎ ছোঁয়াচে নয়। সোরিয়াসিস চামড়ার দীর্ঘমেয়াদী একটি সমস্যা। এই রোগ হলে আক্রান্ত স্থান থেকে মাছের আঁশের ন্যায় উঠতে থাকে এবং স্থানটি লাল হয়ে যায়। মুলত মাছের আঁশের ন্যায় অংশগুলো ত্বকের মৃত কোষ।
নারী পুরুষ নির্বিশেষে যেকোনো বয়সে এই রোগটি হতে পারে। তবে ত্রিশ বছর বয়সের উপরে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে।মানুয়ের যে ত্বক রয়েছে তা প্রতিনিয়ত একটি নির্দিষ্ট সময়ে মারা যায় এবং নতুন করে তৈরি হয়।কিন্তু যদি আপনার সোরিয়াসিস হয় তাহলে এই কোষ বৃ্দ্ধির হার অস্বাভাবিক হয়ে থাকে।
আমাদের ত্বকের সবচেয়ে ভিতরের স্তর থেকে নতুন কেরাটিনোসাইট কোষ উপরের স্তরে আসতে ২৮ দিন সময় লাগে কিন্তু সোরিয়াসিসের ক্ষেতে ৫ থেকে ৭ দিন লাগে।সোরিয়সিস শরীরের যেকোনো জায়গায় হতে পারে যেমন:মাথার ত্বক,পিঠ, হাত, পা, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে।
সোরিয়াসিসের প্রকারভেদঃ
৫ ধরনের সোরিয়াসিস লক্ষ্য করা যায়
প্লাক সোরিয়াসিস: এটি একটি সাধারন ধরনের সোরিয়াসিস। সোরিয়াসিস রোগীদের মধ্যে সারা পৃথিবীতে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মানুষ প্লাক সোরিয়াসিসে আক্রান্ত। তথ্য সুত্র : American Academy Of Dermatology
গাট্টেট সোরিয়াসিস: সাধারনত ছোট বেলায় অর্থাৎ শৈশবে এই রোগটি বেশী দেখা যায়। গাট্টেট সোরিয়াসিস বাহু বা পায়ে ছোট গোলাপি বা বেগুনী দাগ সৃষ্টি করে।
পাস্টলার সোরিয়াসিস: এই সোরিয়াসিসটি সাধারনত প্রাপ্ত বয়স্কদের হয়ে থাকে। যে জায়গাটা আক্রান্ত হয় সেই স্থানটি থেকে সাদা, পুঁজ ভরা ফোস্কা দেখা যায়। হাত বা পায়ে ব্যাপকভাবে এই চর্মরোগটি হয়ে থাকে।
ইনভার্স সোরিয়াসিস: এই সোরিয়াসিসে আক্রান্ত স্থান লাল হয়ে থাকে। এটি সাধারনত বগল, স্তনের নীচে, কুচকিতে এবং যৌনাঙ্গের ত্বকের ভাজের আশেপাশে হয়ে থাকে।
এরিথ্রোডার্মিক সোরিয়াসিস: এই সোরিয়াসিসটি অত্যন্ত বিরল ধরনের সোরিয়াসিস।কেউ যদি এই সোরিয়াসিসে আক্রান্ত হয় তাহলে মৃত্যেু ঘটতে পারে।
সোরিয়াসিসের কারন
সাধারনত রক্তের শ্বেতকনিকা ভুলবশত ত্বকের কোষকে আক্রমন করলে এই রোগটি হতে পারে। এটি হয় মুলত অটো ইমিউনিটির কারনে।২০১৯ সালের একটি গবেষনা অনুযায়ী দেখা যায়, পরিবারের কারোও সোরিয়াসিস থাকলে অথবা বংশে কারোও এই রোগ থাকলে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।আবার অস্বাভাবিকভাবে মানবিক চাপ থাকলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অতিরিক্ত মদ্যপান সোরিয়াসিসের আরেকটি কারন।তাই মদ্যপান থেকে দুরে থাকতে হবে। এছাড়া কিছু কিছু ওষুধ যেমন: লিথিয়াম, ম্যালেরিয়ার ওষুধ ও উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় এই রোগ হয়ে থাকে।
সোরিয়াসিসের লক্ষন
ব্যক্তিভেদে সোরিয়াসিসের লক্ষন ও ধরন ভিন্ন হতে পারে। সোরিয়াসিসের কারনে ত্বকের উপর ছোট স্পট হয় আবার বড় ক্ষতও হতে পারে। সবচেয়ে বেশি যে জায়গাগুলো আক্রান্ত হতে পারে সেগুলো হলো মাথার উপরের অংশ, কনুই, হাত ও পা।
- শরীরের আাক্রান্ত স্থানটি লাল অথবা বাদামী বর্ন ধারন করে।
- আপনার ত্বক যদি শুষ্ক হয় এবং শুষ্ক ত্বক সোরিয়াসিস দ্বারা আক্রান্ত হয় তাহলে আক্রান্ত স্থানটিতে ফাটল হতে পারে েএবং সে স্থান থেকে রক্তপাত হতে পারে।
- সোরিয়াসিস আক্রান্ত স্থানটির আশেপাশে ব্যাথা অনুভুত হতে পারে।
- সোরিয়াসিস আক্রান্ত স্থানটি ব্যপক চুলকানি হয় ফলে চুলকাতে চুলকালে জায়গাটি থেকে রক্ত বের হয় এবং প্রচন্ত জ্বলন অনুভুত হয়।
- শরীরের হাড়ের জোড়াগুলি ফুলে যায় এবং ব্যাথা অনুভুত হয়।
- মাথার ত্বক ,কনুই ও উপরের অংশ আক্রান্ত হতে পারে।
- সোরায়সিস যদি নখে হয় তাহলে নখ মোটা হয়ে যায় এবং নখের রং পরিবর্তন হয় ও কখনও কখনও চামড়া থেকে নখ আলগা হয়ে যায়।
- আক্রান্ত স্থানগুলো ফুলে যায় এবং খুব যন্ত্রনাদায়ক হয়।
সোরিয়াসিসের প্রতিকার ও চিকিৎসা
সোরিয়াসিসের জন্য স্থায়ী কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি এখনো বের হয়নি। চিকিৎসার মুল লক্ষ্য হলো যাতে আক্রান্ত ব্যক্তির জীবনধারার মধ্যে গুনগত ঘটে এবং উপসর্গ থেকে আরাম অনুভুত হয়।সোরিয়াসিস রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি ৩টি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে যেমন:সাময়িক চিকিৎসা, পদ্ধতিগত ওষুধ এবং ফটোথেরাপি বা লাইট থেরাপি।
সাময়িক চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে
সোরিয়াসিস রোগটি যদি আপনার অল্প পরিমানে হয় তাহলে সাময়িক চিকিৎসাতে সেরে উঠে।যদি মাঝারি বা প্রবল সোরিয়াসিস হয়ে থাকে তাহলে তা সাময়িক বা তাৎক্ষনিক চিকিৎসার সাথে মুখে খাওয়ার ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এটা যদি মারাত্মক আকার ধারন করে তাহলে ফটোথেরাপি দেওয়া হয়।
বায়োলজিক ওষুধ
- কর্টিকোস্টেরয়েড
- ভিটামিন ডি অ্যানালগ
- টপিক্যাল রেটিনয়েড
- স্যালিসাইলিক এসিড
- কোলটার
- এডালিমুমাব
- ইনফ্লিক্সিমাব
- ইটানারসেপ্ট
- ক্যালসিনিউরিন ইনহিবিটর
- অ্যানর্থালিন
- ত্বক নরম রাখার ক্রিম বা ময়শ্চারাইজার
পদ্ধতিগত ওষুধের মধ্যে রয়েছে
আপনার সোরাইসিসের আক্রমন যদি তীব্র আকার ধারন করে এবং তাৎক্ষনিক চিকিৎসায় সাড়া না পাওয়া যায় তখন সেক্ষেত্রে মুখ দিয়ে অথবা ইনজেকশনের মাধ্যমে ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়।সাধারনত এই ওষুধগুলির চুড়ান্ত পাার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে যার কারনে খুব অল্প সময়ের জন্য ও অন্য থেরাপির সাথে বদবদল করে ব্যবহার করা হয়।
মুখে খাওয়ার ওষুধ
- মেথোট্রেক্সেট
- সাইক্লোস্পোরাইন
- এসিট্রেসিন
- রেটিরয়েডস
- ইমিউনোমডুলেটর
- হাইড্রক্সিউরিয়া
- লাইট থেরাপি
ফটোথেরাপি বা লাইট থেরাপির মধ্যে রয়েছে
এই পদ্ধতিতে ত্বকের যে অংশ আঁশের মত দেখা যায় সেই অংশগুলি অতি বেগুনি রশ্মির নীচে রেখে চিকিৎসা করা হয়।সাধারনত মাঝারি ও তীব্র সোরিয়াসিসের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ওষুধ দিয়ে সাময়িক চিকিৎসার সাথে লাইট থেরাপি বা ফটোথেরাপি দেওয়া হয়।
- সুর্যরশ্মির নীচে দাঁড়ান
- UVB ফটোথেরাপি
- গোকারম্যাব থেরাপি
- লেজার থেরাপি
- সোরোলেন প্লাস আলট্রাভায়োলেট থেরাপি
মনে রাখতে হবে উপরোক্ত ওষুধগুলো অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে খাবেন কারন এগুলোর ব্যপক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।তবে বর্তমানে তুলনামুলক কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত ইন্টারলিউকিন-১৭ অ্যান্টাগনিস্ট বাংলাদেশে সহজে পাওয়া গেলেও এটা খুব ব্যয়বহুল।
সোরিয়াসস থেকে বাঁচার ঘরোয়া কিছু উপায়
সোরিয়াসিস প্রথমে বুক, পিঠ, হাত ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আক্রান্ত করে। পরবর্তীতে ত্বকের আক্রান্ত অংশগুলো পুরু হয়ে মাছের আঁশ উঠার মতো ত্বকের খোসা উঠতে থাকে।
সোরিয়াসির হওয়ার প্রথম দিকে চিকিৎসা না করলে শরীরে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। এই রোগের তেমন কোনো স্থায়ী চিকিৎসা নেয়।তবে নিয়ম মেনে চললে এর লক্ষনগুলো কম প্রকাশ পায়।
- সোরিয়াসিস থেকে মুক্ত থাকতে হলে ত্বককে অবশ্যই আদ্র রাখতে হবে। এজন্য অফিস কিংবা বাড়িতে ময়শ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
- National psoriasis foundation এর মতে, ফিশ অয়েল, ভিটামিন ডি, দুধ, অ্যালোভেরা ও আঙ্গুরের রস খেতে হবে যা সোরিয়াসিস নির্মুলে কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
- সুগন্ধযুক্ত সাবান বা সুগন্ধি ব্যবহার করা বন্ধ রাখতে হবে।কারন এগুলোর মধ্যে থাকা রাসায়নিক পদার্থ ত্বকের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।যাদের ত্বক খুব সংবেদনশীল তারা এগুলো এড়িয়ে চলায় ভালো।
- যেকোনো চর্মরোগের জন্য হলুদের ব্যবহার সেটা খাওয়ার মাধ্যমে অথবা ত্বকের উপরে লাগানোর মাধ্যমেও হতে পারে খুব কার্যকর ভুমিকা পালন করে। কারন এতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটোরি বৈশিষ্ট্য ত্বকের প্রদাহ দুর করে।
- সোয়াসিসের চুলকানি কমাতে রক সল্ট, দুধ বা জলপাইয়ের তেল মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগালে চুলকানি থেকে উপশম পাওয়া যায়।
- সোরিয়াসিস থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই আপনাকে মাছ, বাদাম ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার গ্রহন করা উচিত।
- মানসিক চাপ সোরিয়াসিস বৃদ্ধির আরেকটি অন্যতম কারন।তাই যোগব্যায়াম এবং মেডিটেশন এর মতো অনুশীলনগুলো খুব কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
- ধুমপান ও তামাক সেবন সোরিয়াসিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই দ্রুত ধুমপানে আসক্ত হয়ে থাকলে তা ত্যাগ করতে হবে।
- ভিটমিন সি-সমৃদ্ধ ফল খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো।প্রোটিনের পরিমানও বৃদ্ধি করতে হবে।সর্বোপরি, নিয়মিত চিকিৎসা করাতে হবে।মনে রাখতে হবে সোরিয়াসিস মোটামুটি সারা জীবনের সঙ্গী। তাই নিয়মিত ওষুধ খাওয়া এবং চিকিৎসকের পরামর্শমতো চলা এক্ষেত্রে খুব জরুরী। নিজের ইচ্ছামতো দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাওয়া বা হঠাৎ চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়া দুই সমান ক্ষতিকর।
সোরিয়াসিস প্রতিরোধে করনীয়
একজন সোরিয়াসিস আক্রান্ত ব্যক্তি তার জীবনযাপনের উপর দারুনভাবে প্রভাব ফেলে। সোরিয়াসিস সম্পর্কে আপনি যদি সচেতন থাকেন তাহলে এই রোগ মোকাবেলা করা সম্ভব। এই রোগ নিয়ন্ত্রনে ও এর সঙ্গে এ রোগের ফলে যা অসুবিধা হয় তার সমাধানের উত্তর খুঁজে পাওয়া সহজ হয়।ধুমপান ও অ্যালকোহল পান পরিহার করতে হবে।
- এই রোগে যত চুলকাবেন তত বেশি চুলকাতে ইচ্ছা করবে।তাই চুলকানি এড়াবার জন্য ময়শ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
- যোগ ব্যায়াম:সাধারনত মানসিক চাপের কারনে সোরিয়াসিস বৃদ্ধি পায়।আপনি যদি যোগ ব্যায়াম করেন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশল ও একান্ত চিত্তে ধ্যান করতে পারলে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রিত হয় এবং সোরিয়াসিসের তীব্রতা কমে।
- সোরিয়াসিস থেকে দুরে থাকতে হলে অবশ্যই পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহন করতে হবে।সেই সকল খাবার খেতে হবে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- সোরিয়াসিস থেকে মুক্ত থাকতে হলে ওজন নিয়ন্ত্রন করতে হবে।অতিরিক্ত ওজনের কারনে শরীরে নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধে যা চর্ম রোগ বৃদ্ধিতে সহয়তা করে।
- অতিরিক্ত স্যাচুরেটেড ফ্যাট যেমন:মাংস ও দুগ্ধজাত খাবার সোরিয়াসিস বৃদ্ধির নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।তাই এই খাবার গুলো কম করে খেতে হবে।
- বেশী করে শাক সবজি সামুদ্রিক মাছ যাতে ওমেগা-৩ বেশি আছে সেই খাবারগুলো খেতে হবে।
- কোনোভাবেই ত্বক শুষ্ক রাখা যাবে না।সাধারনত শীতকালে এই সমস্যা বেশী বাড়ে। বাচ্চা নিতে হলে অবশ্যই আপনাকে এই রোগটি নিয়ন্ত্রনে আনতে হবে কেননা গর্ভাবস্থায় এই রোগের ওষুধ খাওয়া যাবে না। তাই সোরিয়াসিস নিয়ন্ত্রনে এনে তারপর সন্তান ধারনের পরিকল্পনা করতে হবে এবং সন্তান ধারনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
যেসব খাবারে সোরিয়াসিস বাড়ে
মরিচ:আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা মরিচ খেতে খুব ভালোবাসেন।তবে সোরিয়াসিস রোগীদের জন্য কাঁচা মরিচ ও শুকনা মরিচের পরিমানে খুব কম পরিমানে খেতে হবে।কারন মরিচের ঝাল সোরিয়াসিস রোগীদের দীর্ঘমেয়াদী ক্রনিক প্রদাহ সৃষ্টি করে। আর যদি প্রদাহ বেড়ে যায় তাহলে সোরিয়াসিসের উপসর্গও তীব্র হতে থাকে।
টমেটো: নাইটশেড পরিবারের কিছু ফল ও সবজি রয়েছে যেমন:টমেটো, মরিচ,বেগুন ও সাদা আলু। এই নাইটশেড পরিবারের সবজিগুলো খেলে অনেক রোগী বলে থাকেন এই রোগের উপসর্গ তীব্র আকার ধারন করে।যদিও আজ পর্যন্ত কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমান করতে পারেননি যে নাইটশেড পরিবারের সবজিগুলো খেলে সোরিয়াসিসের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়।
দুগ্ধজাত খাবার: ফুল ফ্যাট দুধ ও দই সোরিয়াসিসের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। তাই এই রোগে যারা আক্রান্ত তারা যেন লো ফ্যাটের দুগ্ধজাত খাবার খান এবং খাওয়ার পর এর প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করুন। যদি দেখেন লো ফ্যাটে দুগ্ধজাত খাবার খেলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না তাহলে তা নিয়মিত খেতে পারেন।
চিনিযুক্ত খাবার:গ্রানোলা ও দইয়ের মতো স্বাস্থ্যকর খাবারও সোরিয়াসিসের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। গ্রানোলার মধ্যে ২০ গ্রামের বেশি চিনি ও কর্ন সিরাপ রয়েছে।
লবন: লবন যুক্ত বিভিন্ন চিপস ও খাবার সোরিয়াসিসের তীব্রতা বাড়িয়ে দিতে পারে।ঠিক যেমন চিনিযুক্ত খাবার শরীরের প্রদাহ বাড়াতে পারে ঠিক তেমনি বেশি লবনযুক্ত খাবারও শরীরে প্রদাহ বাড়িয়ে দেয়। তিই সোরিয়াসিস মুক্ত থাকতে চাইলে খাবারে ৫০০ মিলিগ্রামের বেশি লবন ব্যবহার করা উচত নয়।
লেখকের শেষকথা
আশা করছি ,উপরের আর্টিকেলটি আপনারা খুব ভালো মতো পড়েছেন। ফলে আপনারা জেনে গেছেন সোরিয়াসিস রোগ থেকে মুক্ত থাকতে হলে কি কি নিয়ম মেনে চলতে হয়। যদি সঠিক সময়ে সঠিক নিয়মে উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলতে পারেন তাহলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।
সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়
comment url