স্বল্পমেয়াদী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় বিস্তারিতভাবে জেনে নিনবন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে স্বল্পমেয়াদী জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি সম্পর্কে। বাংলাদেশে যে সকল জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতিগুলো আছে তা সবই খুবই স্বাস্থ্যসম্মত ও উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি।এই পদ্ধতিগুলো খুব নিরাপদ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন। এগুলো সহজেই নারী ও পুরুষের শরীরের সাথে খাপ খেয়ে যায়। তাই পরিবার ছোট রাখতে পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা উচিত।
স্বল্পমেয়াদী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন

ভুমিকা

আজকের আর্টিকেলটি যদি বিস্তারিত পড়েন তাহলে জানতে পারবেন জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি কত প্রকার ও কি কি। এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে কিভাবে দীর্ঘমেয়াদী জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়।স্বল্পমেয়াদী পদ্ধতিগুলো কি কি সে সম্পকেও ধারনা দেওয়া হয়েছে। ইমপ্ল্যন্ট জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কত প্রকার

পুরুষ ও মহিলা যে কেউই জন্মনিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারে। পুরুষেরা জন্ম নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে ভেসেকটমি পদ্ধতি ব্যবহার করে। আর নারীদের ক্ষেত্রে টিউবেকটমি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। ভেসেকটমি পদ্ধতিতে জন্মনিয়ন্ত্রনের সফলতার হার ৯৯.৮৫% ও টিউবেকটমি পদ্ধতিতে জন্মনিয়ন্ত্রনের সফলতার হার ৯৯.৫০%।জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতির প্রকারভেদ:
  • সনাতন পদ্ধতি
  • আধুনিক পদ্ধতি

সনাতন পদ্ধতি 

এই পদ্ধতি এমন একটা পদ্ধতি যা সমাজে ঐতিহ্যগতভাবে প্রচলিত আছে যেমন: বীর্য বাইরে ফেলা, বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো, নিরাপদকাল মেনে চলা, আত্মসংযম করা বা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সহবাস থেকে বিরত থাকা।

আধুনিক পদ্ধতি

আধুনিক পদ্ধতিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন: নন ক্লিনিক্যাল পদ্ধতি ও ক্লিনিক্যাল পদ্ধতি।

নন-ক্লিনিক্যাল পদ্ধতি

এই পদ্ধতিতে কোনো সাহায্য ছাড়া নারী ও পুরুষ নিজেরাই ব্যবহার করে জন্মনিয়ন্ত্রন করে থাকে।যেমন: খাবারবড়ি ও কনডম।

ক্লিনিক্যাল পদ্ধতি

এই পদ্ধতিতে নারী ও পুরুষ প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত সেবাদানকারীর সাহায্য নিতে হয়।যেমন:অস্থায়ী পদ্ধতি ও স্থায়ী পদ্ধতি।
  • অস্থায়ী পদ্ধতি: ইনজেকশন, আই.ইউ.ডি, নরপ্ল্যান্ট ইত্যাদি।
  • স্থায়ী পদ্ধতি: ভ্যাসেকটমি ও টিউবেকটমি।

দীর্ঘমেয়াদী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

অনেক পদ্ধতিতে জন্ম নিয়ন্ত্রন করা হয়ে থাকে।যার মধ্যে কিছু আছে স্থায়ী পদ্ধতি ও কিছু আছে অস্থায়ী পদ্ধতি।আজকের আর্টিকেলটিতে দীর্ঘমেয়াদী জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

ইনজেকশন: ইনজেকশনের মাধ্যমে হরমোন পুশ করা হয় যা গর্ভধারন রোধে সহায়তা করে। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ইনজেকশন পুশ করবেন। অনেক ক্ষেত্রে ওষুধ সেবনের মাধ্যমেও হরমোন প্রবেশ করানো হয়। তবে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া হওয়ায় পরবর্তীতে গর্ভধারনে সমস্যা হতে পারে।

আযল: মিলনের সময় বীর্য বাইরে ফেলার মাধ্যমে গর্ভরোধ করার প্রক্রিয়াকে আজল বলে। এটি ইসলামি শরীয়া সম্মত একটি উপায়। এই উপায়ে কোন প্রকার ওষুধ ব্যবহার হয়না বলে এটি স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি করেনা এবং ভবিষ্যৎ গর্ভধারনে কোন সমস্যা সৃষ্টি করেনা এবং যেহেতু বীর্য যোনীপথে আসতে পারেনা সেহেত গর্ভধারনের সম্ভাবনা নেই।

ইন্ট্রাইউটেরাইন ডিভাইস(Intrauterine device (IUD): এটি কপার ও প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হতে পারে যেখানে প্রোগেসটিন নামক হরমন থাকে। এই মেশিনটি যোনীপথে স্থাপন করা হয়। যখন যৌন মিলন হয় তখন শুক্রানু যোনীপথ দিয়ে ডিম্বানুর কাছে যেতে পারে না এবং গর্ভধারনের কোনো সম্ভাবন থাকে না। এটি স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি।

স্বল্পমেয়াদী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি 

যে জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতিগুলো অধিক সময় ধরে কার্যকর নয় তাদের স্বল্পমেয়াদি জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি বলে।যেমন:

ইমার্জেন্সি পিল: এই পিলটি এমন একটি ওষুধ যা জন্ম নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে।যৌন মিলনের আগে অথবা পরে এই ওষুধ সেবন করে গর্ভধারন রোধ করা হয়। একেক ধরনের ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম একেক রকমের। এই ইমার্জেন্সি পিল যেহেতু বেশিক্ষন কার্যকর থাকেনা তাই এগুলোকে স্বল্প মেয়াদি জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি বলা হয়।

বাজারে নোরিক্স পিল পাওয়া যায় যেটা মিলনের ৭২ ঘন্টা বা ৩ দিন পর্যন্ত আপনাকে সুরক্ষা করবে।

ইমপ্ল্যান্ট জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

গর্ভনিরোধক ইমপ্লান্ট এটি জন্মনিয়ন্ত্রন ইমপ্লান্ট নামেও পরিচিত এই গর্ভনিরোধকটি দীর্ঘমেয়াদী যা ছোট পাতলা রডের আকারে থাকে যা উপরের বাহুতে প্রবেশ করানো হয়। এই রডগুলি একটি হরমোন নিঃসরন করে যা ৩ থেকে ৫ বছরের জন্য গর্ভধারন হতে বাধা দেয়।গর্ভনিরোধক ইমপ্লান্টটি ছোট, নমনীয় প্লাস্টিকের রড বা ক্যাপসুলের মতো যা বাহুর ত্বকের নীচে ঢোকানো হয়।
একজন মহিলা ইচ্ছা করলেই গর্ভনিরোধক ইমপ্লান্ট ব্যবহার শুরু বা বন্ধ করতে পারে না। একমাত্র প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী কর্মীর মাধ্যমে এটি সন্নিবেশিত বা অপসারন করা উচিত।গর্ভনিরোধক ইমপ্লান্ট প্রোজেস্টিন হরমোন নিঃসরন করে, যা একজন মহিলার শরীরে পাওয়া প্রোজেস্টেরনের অনুরুপ, প্রোজেস্টেরন ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বানু নিঃসরনে বাাঁধা দেয়।

এবং জরায়ুর শ্লেষ্মা ঘন করে শুক্রানুকে ডিম্বানুতে আসতে বাধা দেয়। গর্ভনিরোধক ইমপ্লান্ট ৫ বছর পর্যন্ত গর্ভধারন প্রতিরোধ করতে পারে। ইমপ্ল্যনন বা নেক্সপ্ল্যানন ও ইটোনোজেস্টল ধারনকারী একটি রড। এটি ৩ বছরের জন্য কার্যকর।তবে গবেষনা করে দেখা গেছে এটি ৫ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।জ্যাডেল হলো দুটি রড যাতে লেভোনরজেস্ট্রেল থাকে। 

এটি ৫ বছর পর্যন্ত কার্যকর। লেভোপ্লান্ট সিনো ইমপ্লান্ট নামেও পরিচিত লেভোনরজেস্ট্রেল ধারনকারী দুটি রডের আকারে আসে।এটি ৩ বছর পর্যন্ত কার্যকর। এটি গর্ভাবস্থা এবং অ্যাক্টোপিক গর্ভাবস্থা সহ অন্যান্য সম্পর্কিত ঝুুঁকিগুলির বিরুদ্ধে ৯৯.৯% সুরক্ষা প্রদান করে।তবে কিছু ওষুধ ইমপ্লান্টের কার্যকারিতা কমাতে পারে।

আপনি যদি গর্ভনিরোধক ইমপ্লান্টের কথা বিবেচনা করেন,তাহলে আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর কাছে আপনি যে ওষুধ গ্রহন করছেন তা উল্লেখ করতে ভুলবেন না।

পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গুলো কি কি

ভিন্ন ভিন্ন পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধগুলো ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।আপনার সঙ্গি, অন্যান্য নারী ও একজন স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করলে জানতে পারবেন যে আপনার জন্য কোনটা সঠিক বলে বিবেচিত হবে।আপনি যখন পরিবার পরিকল্পনার পদ্ধতিগুলো বাছাই করবেন তখন নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে হবে।
  • গর্ভধারন রোধ করতে এটি কতটা কার্যকর ভুমিকা পালন করবে।
  • যৌনবাহিত রোগ সংক্রমন থেকে দুরে থাকে এটা কতটা কার্যকর।
  • আপনার স্ত্রি বা সঙ্গি পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করতে আগ্রহী কিনা বা বিষয়টি তার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখার প্রয়োজন আছে কিনা।
  • পরিবার পরিকল্পনার পদ্ধতিগুলো সহজে পাওয়া যায় কিনা বা কতদিন পরপর তা ব্যবহার করতে হবে।
  • পরিবার পরিকল্পনার পদ্ধতিটি যেটা পছন্দ করছেন তার খরচ কিরুপ অর্থাৎ ব্যয়বহুল কিনা।
  • পরিবার পরিকল্পনার যে পদ্ধতিটি আপনি ব্যবহার করবেন তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি ধরনের।

কনডম

এটি পুরুষদের জন্য একটি অস্থায়ী জন্মনিরোধক পদ্ধতি। এটি বেশ সহজলভ্য ও সহজে ব্যবহার করা যায়।এটি জন্মরোধের পাশাপাশি যৌনবাহিত রোগ ও এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধে সহায়তা করে।কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে।পুরুষ পদ্ধতি বিধায় স্ত্রীকে কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয় না।তবে সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে ছিঁড়ে যেতে পারে এবং এটি ব্যবহারে অনেকে পুর্ন যৌনতৃপ্তি নাও পেতে পারেন।

ইনজেকটেবল

এটি মহিলাদের জন্য ক্লিনিক্যাল ও অস্থায়ী দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতি।বাংলাদেশে ডিপোপ্রভেরা ইনজেকশন ব্যবহার করা হচ্ছে। ডিপোপ্রভেরা প্রতি ৩ মাস পরপর নিতে হয়।এই ইনজেকশন নিতে হয় একটি জিবীত সন্তান থাকলে।এটি নিতে হয় মাসিক শুরু হওয়ার প্রথম দিন থেকে ৭ দিনের মধ্যে।

আপনি যদি বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ান তাহলে ৬ সপ্তাহ পর আর বুকের দুধ না খাওয়ালে ৪ সপ্তাহ পর ইনজেকশন নেয়া যায়। এটি নেওয়া যায় গর্ভাপাতের সঙ্গে সঙ্গে অথবা দু-সপ্তাহের মধ্যে। এর বিশেষ কিছু সুবিধা আছে যেমন: এটি নিরাপদ, কার্যকর ও সহজলভ্য। এটি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালেও নেওয়া যায়।এটির ব্যবহারে বুকের দুধ কমে যায় না।

তবে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় যেমন: প্রতিদিন পদ্ধতি ব্যবহারের ঝামেলা নেই। এটি কেবলমাত্র প্রশিক্ষপ্রাপ্ত কর্মী দ্বারা সময়সুচী অনুযায়ী নিতে হয়। মাসিকের পরিবর্তন দেখা দেয়। অনিয়মিত রক্তস্রাব ফোঁটা ফোঁটা রক্তস্রাব, মাসিক বন্ধ থাকা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে রক্তস্রাব বেশি হতে পারে। আবার ওজন বেড়ে যেতে পারে।

খাবার বড়ি

এটি মহিলাদের জন্ম নিরোধক পদ্ধতি।আমাদের দেশের বেশীরভাগ মহিলা এ পদ্ধতি গ্রহন করছেন।এটি খুব জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি।এটি সাধারনত মাসিকের প্রথম দিন থেকে খাবার বড়ি শুরু করতে হয়। প্রথমে ২১ টি সাদা বড়ি ও পরে ৭ টি আয়রন ট্যাবলেট খেতে হয়। মোট ২৮ টি বড়ি শেষ হলে অন্য পাতা থেকে শুরু করতে হয়। প্রতিদিন রাতে খাবারের পর শোবার আগে বড়ি খাওয়ার উপযুক্ত সময়।

যদি কোনো কারনে বড়ি খেতে ‍ভুলে যান তাহলে পরের দিন যখনই মনের পড়বে তখন খেয়ে ফেলতে হবে। পর পর দুইদিন বড়ি খেতে ভুলে গেলে পরের দুইদিন দুটি করে বড়ি খেতে হবে এবং এই বড়ির পাতা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বড়ির সাথে অন্য একটি পদ্ধতি যেমন: কনডম ব্যবহার করতে হবে। এটি খুবই কার্যকর পদ্ধতি এবং সাফল্যের হার শতকরা ৯৭ থেকে ৯৯ শতাংশ।

যেকোনো সময়ে এ পদ্ধতি পরিবর্তন করে অন্য পদ্ধতি ব্যবহার কর যায়। আয়রন বড়ি সেবনে রক্তস্বল্পতা হ্রাস পায়। এই বড়ি সেবন করলে মাসিক স্রাব নিয়মিত হয়।প্রতিদিন নিয়মিত খেতে হয় বলে বেশ ঝামেলা মনে হয়। যোনিপথের পিচ্ছিলতা কমে যেতে পারে।মাসিকের পরিমান কম হয় বলে অনেক মহিলা এ নিয়ে ‍দুশ্চিন্তায় ভোগেন।

ইমপ্ল্যানন

এ পদ্ধতি মহিলাদের জন্য অস্থায়ী দীর্ঘমেয়াদী ক্লিনিক্যাল পদ্ধতি। এতে রয়েছে একটি বা দুটি নরম চিকন ক্যাপসুল যা মহিলাদের হাতের কনুইয়ের উপরে ভেতরের দিকে চামড়ার নীচে ঢুকিয়ে দেয়া হয়।যে কোনো সক্ষম দম্পতি এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।মাসিকের প্রথম ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ইমপ্ল্যান্ট নিতে হবে।
শুধুমাত্র প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত ডাক্তারের কাছে ইমপ্ল্যান্ট নেয়া যায়। এ পদ্ধতিটি ৩ থেকে ৫ বছরের জন্য কার্যকর। পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে।আপনি যদি বুকের দুধ খাওয়ালেও এটা নেয়া যায়। এটির প্রয়োগে বুকের দুধ কমে না। প্রসব পরবর্তী পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা যায়, প্রয়োজনে খুলে ফেলে দ্রুত সন্তান ধারন করা যায়। 

কারো কারো ক্ষেত্রে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। মাসিক বন্ধ হলে গর্ভসঞ্চার হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়।মাসিকের সময় রক্তস্রাব বেশি হতে পারে।দুই মাসিকের মধ্যবর্তী সময়ে ফোঁটা ফোঁটা রক্তস্রাব হতে পারে।মাথা ব্যাথা হতে পারে।ওজন বেড়ে যেতে পারে।

আই.ইউ.ডি

মহিলাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী, অস্থায়ী ক্লিনিক্যাল পদ্ধতি। এটি মহিলাদের জরায়ুতে স্থাপন করা হয়।বর্তমানে বাংলাদেশে কপার-টি ৩৮০A ব্যবহার করা হয়।কারোও যদি একটি সন্তান থাকে তাহলে এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবেন।এটি একটানা ১০ বছরের জন্য কার্যকর। স্বাভাবিক প্রসবের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে অথবা সিজারিয়ান অপারেশনের সময় আইইউডি গ্রহন করা যায়।

এটি দীর্ঘমেয়াদী ও সহজলভ্য। যখন ইচ্ছা ক্লিনিক/স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে খুলে নেয়া যায়। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মহিলারাও ব্যবহার করতে পারেন। এই পদ্ধতির পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া কম।সহবাসের সময় স্বামী ও স্ত্রীর কোনো সমস্যা হয় না।তবে এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে প্রথম কেয়েক মাস তলপেটে ব্যথা হতে পারে।ফোঁটা ফোঁটা রক্তস্রাব হতে পারে। 

তাই মাসিকের পর নিয়মিত সুতা পরীক্ষা করতে হয়। এটি প্রয়োগ, খোলা ও ফলো-আপ এর জন্য ক্লিনিকে যেতে হয়।

এন এস ভি

পুরুষদের জন্য এটি একটি স্থায়ী পদ্ধতি এই পদ্ধতিকে ভ্যাসেকটমি বলা হয়। এ পদ্ধতি স্থায়ী, কার্যকর ও নিরাপদ। একটি সহজ ও ছোট অপারেশনের মাধ্যমে পুরুষের এই পদ্ধতি প্রদান করা হয়।এই অপারেশনকে বলে ভ্যাসেকটিমি।যে কোনো উপজেলা স্বস্থ্য কমপ্লেক্স, মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র, নির্বাচিত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র।

এবং কিছু এন.জি.ও ক্লিনিকে এ পদ্ধতির সেবা প্রদান করা হয়। যে সকল সক্ষম দম্পতির ২ টি জীবিত সন্তান আছে এবং ছোটটির বয়স কমপক্ষে ১ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে তাদের জন্য প্রজোয্য। এটি ছুরি কাটাবিহীন স্থায়ী পদ্ধতি।অপারেশনের দুইদিন পরেই স্বাভাবিক কাজ-কর্ম করা যায়।কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
অপারেশনের জন্য কোনো কাটা বা সেলাই লাগে না রক্তপাত নেই বললেই চলে। এটি করতে ৫ থেকে ৭ মিনিট সময় লাগে। অপারেশনের পর সামান্য ব্যথা থাকে।যৌন ক্ষমতা স্বাভাবিক থাকে।তবে এটি অপারেশনের ৩ মাস পর থেকে কার্যকর হয়। 

অপারেশনের পর প্রথম ৩ মাস সহবাসের সময় কনডম ব্যবহার অথবা স্ত্রীকে অন্য যে কোন অস্থায়ী পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয়। প্রশিক্ষন প্রাপ্ত ডাক্তার দ্বারা এ অপারেশন করতে হয়। পুর্বাবস্থায় সহজে ফিরে যাওয়া যায় না।

টিউবেকটমি

মহিলাদের জন্য স্থায়ী পদ্ধতিকে টিউবেকটমি বলে।এটি একটি সহজ অপারেশন।যেকোন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র,নির্বাচিত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র এবং কিছু এন.জি.ও ক্লিনিকে এ পদ্ধতির সেবা প্রদান করা হয়। যে সকল সক্ষম দম্পতির ২ টি জীবিত সন্তান আছে এবং ছোটটির বয়স কমপক্ষে ১ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। 

অপারেশনের পর পরই এটি কার্যকর। এটি একটি স্থায়ী পদ্ধতি।অপারেশন সহজ, সময় লাগে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট।কার্যকারিতার হার শতকরা ১০০ শতাংশ।কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। প্রসবের পর ৭ দিনের মধ্যে টিউবেকটমি করা নিরাপদ ও সুবিধাজনক।তবে অপারেশনের পর হাসপাতাল/ক্লিনিকে কমপক্ষে ৪ ঘন্টা থাকতে হয়।

প্রশিক্ষন প্রাপ্ত ডাক্তার দ্বারা এ অপারেশন করতে হয়।পুর্বাবস্থায় সহজে ফিরে যাওয়া যায় না।

জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ইমপ্লান্ট এর খরচ

আজকের আর্টিকেলটিতে আপনাদের জানাবো জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতিগুলো করতে কি পরিমান খরচ হয়। কারন আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্র ও অসচেতন তাই তারা পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করতে সাহস পান না বা কোনো আগ্রহ প্রকাশ করেন না।যার ফলস্রুতিতে বাংলাদেশের জনসংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

তাই সরকার জনগনের আর্থিক অবস্থা ও সামাজিক প্রেক্ষাপট চিন্তা করে সকল থানা ও ইউনিয়ন পরিষদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে এবং জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সকল হাসপাতালে পদ্ধতিগুলো প্রয়োগ বিনামুল্যে করে দিয়েছে। তাই এই পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হোলে উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে আসলে প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কর্মীরা তা সস্পর্কে ধারনা দিয়ে দিবেন।

লেখকের শেষ কথা

আশা করছি ,উপরের আর্টিকেলটি আপনারা খুব ভালো মতো পড়েছেন। ফলে আপনারা জেনে গেছেন স্বল্পমেয়াদী জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতিগুলো প্রয়োগ করতে কি কি নিয়ম মেনে চলতে হবে যদি সঠিক সময়ে সঠিক নিয়মে জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতিগুলো মেনে চলতে পারেন তাহলে পরিবার হবে সুখী ও দেশ হবে সমৃদ্ধ।

আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩