বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানীগুলো সম্পর্কে। এই কোম্পানিগুলো দেশের অর্থনিতীর নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো বেশিরভাগ উৎপাদন ও সেবা খাতের সাথে জড়িত। তবে বৃহৎ কোম্পানীগুলো মুলত উৎপাদন খাতের সাথে জড়িত।এই গ্রুপ গুলোতে চাকুরী করা খুবই সম্মানের ব্যাপার।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

ভুমিকা

আজকের আর্টিকেলটি যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে। প্রথমে এই ব্যবসাগুলো পারিবারিকভাবে শুরু হলেও পরে বৃহৎ কম্পানীতে রুপান্তরীত হয়।বর্তমানে তারা বৈচিত্র্যময় পন্য উৎপাদন করে আসছে।প্রায় ১০০ টির বেশি পারিবারিক প্রতিষ্ঠান বড় শিল্প গ্রুপ।

এ.কে খান অ্যান্ড কম্পানী

আবুল কাশেম খান ১৯৪৫ সালে চট্টগ্রামে এ.কে.খান অ্যান্ড কম্পানী প্রতিষ্ঠা করেন। যা পরবতীতে ভারত ভাগের পর পুর্ব পাকিস্থানের প্রধান বন্দর হয়ে উঠে। আবুল কাশেম খান ১৯৫৮ সাল থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত পাকিস্থান সরকারের শিল্পমন্ত্রী ছিলেন। 

১৯৫০ এর দশকে খান পাট, বীমা,টেক্সটাইল মিল, ট্যানারি, ভারি শিল্প, শিপিং এর মত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাড়াতে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেন।১৯৯১ সালে আবুল কাশেম খান মারা গেলে এ.এম জহিরুদ্দিন খান কম্পানীর হাল ধরেন। জহিরুদ্দিন খানের উদ্যোগে ১৯৯৭ সালে টেলিযোগাযোগ পরিসেবা AKTEL প্রতিষ্ঠা করেন।
জহিরুদ্দিন খান ২০০৫ সালে মারা গেলে এ.কে শামসুদ্দিন খান দায়িত্ব গ্রহন করেন। শামসুদ্দিন খান ২০০৮ সালে AKTEL এর ৩০ শতাংশ শেয়ার জাপানের NTT Docomo এর কাছে ৩৫০ মার্কিন ডলারে বিক্রি করে দেন।২০০৯ সালের দিকে কম্পানীটি হোটেল ব্যবসার দিকে ঝুঁকে পড়ে।২০১৪ সালে নরসিংদি জেলায় EPZ স্থাপন করে। 

২০১৬ সালে কম্পানীটি ভারতের CEAT এর সাথে যৌথ উদ্যেগে একটি টায়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করে।

বসুন্ধরা গ্রুপ অব কম্পানী

১৯৮৭ সালে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার মধ্য দিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ প্রতিষ্ঠিত হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান হলেন আহমেদ আকবর সোবহান। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় সফলতার পর এই গ্রুপ উৎপাদন, শিল্প ও বানিজ্য সহ নতুন নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ শুরু করে। 
১৯৯০ দশকের গোড়ার দিকে সিমেন্ট, কাগজ, সাজসজ্জা, টিস্যু পেপার ও ইস্পাত উৎপাদন এবং সেই সাথে এল.পি গ্যাস সিলিন্ডার জাত করন ও বিতরন শুরু করে।বসুন্ধরা গ্রুপ কেরানীগঞ্জ, ঢাকায় বাংলাদেশের বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের অনুমতি পেয়েছে।২০১৩ সালে আটা, গম, ইত্যাদি পন্য উৎপাদন করে।

২০২০ সালে বিটুমিন প্ল্যান্ট তৈরি করে।২০২০ সালে কয়লা ব্যবসার সাথে জড়িত হয়।২০২১ সালে তেল শোধনাগার তৈরি করতে বিনিয়োগ করে।২০২২ সালে স্বর্নশোধনাগার তৈরিতে বিনিয়োগ করে, এছাড়া মাল্টি-স্টিল ইন্ডাট্রিজ প্রতিষ্ঠা করে।

মেঘনা গ্রুপ অব কম্পানী

কামাল ট্রেডিং কম্পানীতে ১৯৭০ সালে মেঘনা গ্রুপের উৎপত্তি হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৬ সালে জনাব মোস্তফা কামাল পুর্নাঙ্গভাবে মেঘনা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৯ সালে মেঘনা ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কম্পানী প্রতিষ্ঠা করেন।১৯৯৬ সালে কম্পনীটি ন্যশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করে।
১৯৯৯ সালে ব্যাগ কম্পানী প্রতিষ্ঠা করেন যা ইউনাইটেড ফাইবার ইন্ডাস্ট্রিজ নামে পরিচিত।২০০১ সালে কম্পানীটি Poultry Feed উৎপাদনের জন্য United feeds ltd.নামে একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে।২০০২ সালে রপ্তানীমুখী WPP ব্যাগ উৎপাদন করার জন্য তানভীর পলিমার েইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে একটি কম্পানী স্থাপন করে।

২০১১ সালে হেলিকপ্টার ভাড়া পরিসেবা প্রতিষ্ঠা করে। ২০১৭ সালে এই গ্রুপ সোনারগাঁও স্টিল ফ্যাব্রিকেট লিমিটেড চালু করে।২০১৮ সালে মেঘনা সুগার রিফাইনারি লিমিটেড কম্পানী প্রতিষ্ঠা করে।২০২১ সালে শিপিং ব্যবসায় প্রবেশ করে এবং আটটি জাহাজ ক্রয় করে।২০২১ সালে তারা সিরামিক ব্যবসায় প্রবেশ করে।

২০২২ সালে কুমিল্লা অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মানে উদ্যোগ নেয়।২০২৩ সালে তানভীর ফুডস লিমিটেড প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়।

যমুনা গ্রুপ অব কম্পানী

১৯৭০ সালে নুরুল ইসলাম বাবুল যমুনা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন।তিনি যমুনা ফিউটার পার্ক প্রতিষ্ঠা করেন।দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টিভির প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। এছাড়া সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের সেবাদানের জন্য অলাভজনক প্রতিষ্ঠান NPO প্রতিষ্ঠা করেন। যমুনা গ্রুপ বাংলাদেশের বৃহত্তর শিল্প সংগঠন।তারা টেক্সটাইল, রাসায়নিক , চামড়া, মোটর সাইকেল ইত্যাদি ব্যবসার সাথে জড়িত।
এছাড়া এই গ্রুপ ভোক্তা পন্য, মিডিয়া ও বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে। তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম যুগান্তর পত্রিকা, যমুনা ফিউচার পার্ক, যমুনা টিভি, জেডব্লিউ ম্যারিয়ট হোটেল, ক্রাউন বেভারেজ, যমুনা নিটিং এন্ড ডাইং লিঃ, যমুনা ডেনিমস লিঃ, যমুনা স্পিনিং মিলস লিঃ, শামীম স্পিনিং মিলস লিঃ, শামীম কম্পোজিট মিলস লিঃ, শামীম রোটার স্পিনিং লিঃ।

যমুনা শহর, নিউ উত্তরা মডেল টাউন, পেগাসাস লেদারস লিঃ,যমুনা ডিষ্টিলারি লিঃ, যমুনা ওয়েল্ডিং ইলেকট্রোড লিঃ, যমুনা ইলেকট্রনিক্স এন্ড অটোমোবাইল, যমুনা টায়ার, যমুনা কাগজ, যমুনা পিভিসি পাইপ, যমুনা মোটরসাইকেল, যমুনা রাবার এন্ড টায়ার, যমুনা কাগজ, যমুনা পলি সিল্ক, হুরইন এইচ টি এফ, পাইকারি ক্লাব লিঃ।

স্কয়ার গ্রুপ অব কোম্পানি

১৯৫৮ সালে স্যামসন এইচ চৌধুরী স্কয়ার গ্রুপ অব কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানের ৬০ হাজার কমীবাহিনী রয়েছে। বার্ষিক লেনদেন প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার উপরে। ৫০ টি বেশি দেশে এই কোম্পানি তার পন্য রপ্তানি করে থাকে। রপ্তানি আয় প্রায় ২৮ শত কোটি টাকা। 

স্বাস্থ্যসেবা, ভোগ্যপন্য, বস্ত্র, মিডিয়া, টিভি, তথ্য প্রযুক্তি, নিরাপত্তা সেবা, ব্যাংক ও ইন্স্যুরেন্স, হেলিকপ্টার ও কৃষিপন্যত খাতে ব্যবসা করে থাকে। 
স্কয়ার গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যলস, স্কয়ার টেক্সটাইলস, স্কয়ার ফ্যাশনস, স্কয়ার ইয়ার্ন, স্কয়ার হেস্ককন, স্কয়ার হাসপাতাল, স্কয়ার ফুড এন্ড বেভারেজ, স্কয়ার সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট, স্কয়ার ফার্মা প্যাকেজেস, স্কয়ার মিডিয়া কম, স্কয়ার এয়ার, স্কয়ার ইনফরমেটিকস, স্কয়ার ফ্যাশন ইয়ার্ন।

টিকে গ্রুপ অব কোম্পানি

১৯৭২ সালে দুই ভাই মোহাম্মদ আবু তৈয়ব ও মোহাম্মদ আবুল কালাম একটি ট্রেডিং কোম্পানী দিয়ে যাত্রা শুরু করেন পরবর্তীতে এটি টি.কে গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজে রুপান্তরিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভিজ্জ তেল ব্যবসার জন্য বেশি পরিচিত।এছাড়াও ইস্পাত, জাহাজ নির্মান, সজ্জা, প্লাস্টিক, কাগজ, সিমেন্ট ও টেক্সটাইল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে। 
এই প্রতিষ্ঠানটির সদর দপ্তর চট্টগ্রামে। টি. কে গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম সমুদা কেমিক্যাল কমপ্লেক্স লিমিটেড, সুপার নিটিং এন্ড ডাইং মিলস লিঃ, সুপার থ্রেড লিঃ, সুপার সিনথেটিক লিঃ, মোহাম্মদী ট্রেডিং কোম্পানি লিঃ, বাংলাদেশ টিম্বার এন্ড প্লাইউড ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ, এম.এ.এফ নিউজ প্রিন্ট মিলস লিঃ, MAF জুতা লিঃ, ট্রেডভাইজর লিঃ, মডার্ন হ্যাচারি লিঃ ইত্যাদি।

এছাড়া আরোও রয়েছে মডার্ন পাওয়ার কোম্পানী লিঃ, মডার্ন ফাইবারস ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ, মডার্ন পলি ইন্ডাস্টিজ লিমিটেড, মাসুদ এন্ড ব্রাদার্স, রুবি ফুড প্রডাক্টস লিমিটেড, ইউনি ট্রেড, প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স লিঃ, রিফ লেদার লিমিটেড, ট্রেডভাইজার লিমিটেড, এম.এ.এফ মোটরস।

আকিজ গ্রুপ অব কোম্পানি

শেখ আকিজ উদ্দীন ১৯৪০ সালে আকিজ গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন।অন্য ব্যবসা ও সিগারেট কোম্পানী হওয়ার আগে এটি পাট শিল্প ছিলো।এই প্রতিষ্ঠানটি টেক্সটাইল, তামাক, সিরামিক, প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং, ওষুধ ও ভোগ্যপন্য সহ অনেক ব্যবসার সাথে জড়িত। আকিজ গ্রুপ, স্বস্থ্যখাত, তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তিতে সেবা প্রদান করে থাকে। 

আকিজ গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম আদ দ্বীন ফাউন্ডেশন, আকিজ অটোমোটিভ ইন্ডাস্ট্রিজ, আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরি লিমিটেড, আকিজ সিমেন্ট কোম্পনি লিঃ, আকিজ সিরামিক কোম্পানি লিঃ, আকিজ কর্পোরেশন লিঃ, আকিজ ফুড এন্ড বেভারেজ লিঃ, আকিজ গ্রঅস কোম্পানি লিঃ, আকিজ হোটেল এন্ড রিশর্টস, আকিজ ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি ইত্যাদি।
এছাড়া আরোও রয়েছে আকিজ জুট মিলস লিমিটেড, আকিজ মোটরস, আকিজ পার্টিক্যাল বোর্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ, আকিজ ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ, আকিজ প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং লিঃ, আকিজ রিয়েল স্টেট লিঃ, আকিজ সিকিউরিটিজ লিঃ, আকিজ টেক্সটাইল লিঃ, আকিজ ওয়াইল্ড লাইফ ফার্ম লিঃ, আকিজ বেকার্স লিঃ, আকিজ জর্দা ফ্যাক্টরি লিঃ ইত্যাদি।

আরোও রয়েছে এস. এ. এফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ, আকিজ ফাউন্ডেশন স্কুল ও কলেজ, আকিজ আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, আকিজ রাইস মিল ইন্ডাস্ট্রি, আকিজ ফ্লোর মিল ইন্ডাস্ট্রি, আকিজ সিরামিক লিঃ, আকিজ প্লাস্টিক।

বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানি

১৯৭২ সালে এ.এস.এফ রহমান ও সালমান এফ রহমান বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এই কোম্পানীর কর্মী সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার।এই প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগ, ব্যাংকিং ও অর্থনীতি, ফার্মাসিউটিক্যাল, বস্ত্র প্রস্তুতকরন, বস্ত্র বিক্রয়, গনমাধ্যম ও আইটি ব্যবসা সহ অনেক ব্যবসার সাথে জড়িত। 
বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম IFIC Bank, Beximco Pharma, Yellow, Independent television, বিডি নিউজ ২৪.কম, আকাশ ডি. টি. এইচ, ওয়েস্টিন হোটেলস, শাইপুকুর ক্রিকেট ক্লাব, বেক্সিমকো পাওয়ার কোম্পানি লিঃ, শাইন পুকুর সিবামিকস, বেক্সিমকো কমিউনিকেশন লিমিটেড, বেক্সিমকো ফিশারিজ লিঃ, বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, বেক্সিমকো রিয়েল এস্টেট ডিভিশন, বেক্সিমকো পোর্টস লিমিটেড

সিটি গ্রুপ অব কম্পানী

১৯৭২ সালে সিটি ওয়েল মিলস দিয়ে ফজলুর রহমান চেয়ারম্যান ও নির্বাহী প্রধান করে এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়।এই প্রতিষ্ঠান শক্তি এবং জ্বালানিখাত, শেয়ার এবং সিকিওরিটি, বীমা, মিডিয়া, স্বাস্থ্যসেবা, মুদ্রন ও প্যাকেজিং, শিপিং, ইস্পাতসহ আরোও অনেক ব্যবসার সাথে জড়িত। 
সিটি গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম সিটি অয়েল মিলস, সিটি ভেজিটেবল অয়েল মিলস লিঃ, সিটি ফাইবার্স লিঃ, হাসান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ, হাসান ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেড, হাসান প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ, হাসান কনটেইনারস লিঃ ইত্যাদি। 

আরোও রয়েছে সিটি ডাল মিলস লিঃ, সিটি ব্র্র্যান ওয়েল, সময় মিডিয়া লিমিটেড, সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ,হামিদা প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স লিঃ,আসগর আলী হাসপাতাল লিঃ, নাহার টি এস্টেট।

প্রাণ-আর এফ এল গ্রুপ

১৯৮১ সালে আমজাদ খান চৌধুরী মেজর জেনারেল পদ থেকে অবসর নিয়ে পেনশনের টাকা দিয়ে শুরু করেন ফাউন্ড্রি বা টিউবওয়েল তৈরি ও আবাসন ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তীতে আবাসন ব্যবসা বাদ দিয়ে ফাউন্ড্রি ব্যবসা শুরু করেন। এই ফাউন্ড্রি ব্যবসার নাম দেন রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড বা আর.এফ.এল। 
১৯৮৫ সালে অ্যাগ্রিকালচারাল মার্কেটিং কোম্পানি লিমিটেড প্রান প্রতিষ্ঠা করেন।১৯৯৭ সালে ফ্রান্সে আনারস রপ্তানীর মাধ্যমে রপ্তানি ব্যবসা শুরু করেন। প্রান গ্রুপের কর্মী সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার।এই গ্রুপ দক্ষিন এশিয়া, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে তাদের পন্য রপ্তানী করে। 

প্রানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম প্রান ফুডস লিঃ, প্রান বেভারেজ লিঃ, প্রান অ্যাগ্রো লিঃ,প্রান ডেইরী লিঃ, প্রান কেনফেকশনারি লিঃ, প্রান এক্সপোটার্স লিঃ ইত্যাদি।

এ.সি.আই

১৯৯২ সালে ICI তাদের ব্যবসা গুটিয়ে বর্তমান গোষ্ঠীটির কাছে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দেন। মুলত ICI পরিচিত ছিলো ওষুধ উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে।
বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটি ওষুধ, সার,পশুর ওষুধ, কীটনাশক, কৃষিপন্য, ভোগ্যপন্য, খাদ্যপন্য, নিত্যব্যবহার্য পন্য, কৃষি ও বানিজ্যিক যান, মোটর সাইকেল ইত্যাদি ব্যবসার সাথে জড়িত। এই কোম্পানিতে প্রায় ১০ হাজার কর্মী কাজ করে।

ট্রান্সকম গ্রুপ অব কম্পানী

১৯৭৩ সালে লতিফুর রহমান ট্রান্সকম গ্রুপ তৈরি করেন। ট্রান্সকম গ্রুপ পিৎজা হাট, KFC, PepsiPHILLIPS ইত্যাদি আর্ন্তজাতিক ব্যান্ড্রের লোকাল এজেন্ট। তাদের ফার্মসিউটিক্যাল কোম্পানীর নাম হলো SK+F । 
এই প্রতিষ্ঠানটি ফার্মাসিউটিক্যাল, বেভারেজ, ডিস্ট্রিবিউশন ও লজিস্টিকস, কনজিউমার গুডস, রেস্তোরা ফ্র্যাঞ্চাইজি, ইলেকট্রনিক্স, প্রিন্টিং, লাইটিং, মিডিয়া, ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং ও অ্যাফিলিয়েটেড বিজনেসের সাথে জড়িত। 

এই প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন ব্র্যান্ড্রের মধ্যে রয়েছে PEPSI, 7 UP, MERINDA, MOUNTAIN DEW, DIET PEPSI, 7 UP LIGHT, ACUAPHINA, KFC, PIZZA HURT, PHILLIPS, WHIRLPOOL, NOVO NORDISK ইত্যাদি।

ওয়ালটন গ্রুপ

১৯৭৭ সালে নুরুল আলম রিজভীর হাত ধরে ওয়ালটনের যাত্রা শুরু হয়। ওয়ালটন গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান হলো ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড যা ২০০২ সালে গাজীপুরের চন্দ্রায় শুরু হয়ে ২০০৬ সালে শেষ হয়। এই প্রতিষ্ঠানে রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, মোটর সাইকেল, এয়ার কন্ডিশন ও টেলিভিশন তৈরি শুরু করে। 
এই প্রতিষ্ঠানটি কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স, কম্প্রেসর, অটোমোবাইল, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সের সাথে জড়িত। এই প্রতিষ্ঠানের কর্মী সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার।

ইউনাইটেড গ্রুপ অব কম্পানী

১৯৭৮ সালে হাসান রাজা ও তার চার বন্ধু মিলে ইউনাইটেড গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানটি স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, আবাসন, নির্মান, বন্দর, স্পিনিং, বিশেষ পরিসেবা ও শিপিং এবং লজিস্টিক সহ ৪০ টিরও বেশী ব্যবসার সাথে জড়িত। 
ইউনাইটেড গ্রুপের বিভন্ন প্রতিষ্ঠনের নাম ইউনাইটেড পাওযার জেনারেশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কো লিমিটেড, ইউনাইটেড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড পাওয়ার সার্ভিসেস লিমিটেড, কুমিল্লা স্পিনিং মিলস লিমিটেড, ইউনাইটেড লুব অয়েল লিমিটেড, ইউনাইটেড পলিমারস লিমিটেড, মৌলভী চা বাগান, ইউনাইটেড শিপিং এন্ড লজিস্টিকস সার্ভিসেস লিমিটেড ইত্যাদি। 

আরোও রয়েছে ইউনাইটেড ল্যান্ডপোর্ট টেকনাফ লিমিটেড, ইউনাইটেড সিটি, মেঘবোন কনডমিনিয়াম, ইউনাইটেড প্রপার্টি সলিউশন লিমিটেড, নেপচুন কমার্শিয়াল, আইপিসি হোটেল লিমিটেড, নেপচুন ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, গুলশান সেন্টার পয়েন্ট, ইউনাইটেড হাসপাতাল, ইউনাইটেড কলেজ অফ নার্সিং, স্যার জন উইলসন স্কুল।

পারটেক্স গ্রুপ অব কম্পানী

১৯৬২ সালে এম.এ হাশেম পার্টটেক্স গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৭০ হাজার কর্মচারী কাজ করেন। এই প্রতিষ্ঠানটি খাদ্য ও পানীয়, প্লাস্টিক, কাপড়, তুলা, চিনি, কাগজ, পাট, শিপিং, আসবাবপত্র, কৃষি ব্যবসা, তেল, তার, বিমান চলাচল, পিভিসি, টেলিযোগাযোগ, লজিস্টিক, মৎস্য, শিক্ষা, পরিসেবা, আইটি সহ আরোও অনেক ব্যবসার সাথে জড়িত।
পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম পারটেক্স ক্যবলস লিঃ, স্টার পার্টিকেল বোর্ড মিলস লিঃ,পারটেক্স আসবাবপত্র, পারটেক্স বিল্ডার্স লিমিাটেড, স্টার জিপসাম বোর্ড মিলস লিঃ, পারটেক্স ল্যামিনেটস লিঃ, পারটেক্স এগ্রো লিঃ, পারটেক্স লিঃ, ডেনিস কনডেন্সড মিল্ক বিডি লিঃ, ডেনিশ ফুডস লিঃ, ডেনিশ ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক লিমিটেড, ড্যানিশ মিল্ক বাংলাদেশ লিঃ, ডেনিস ডেইরি ফার্ম লিঃ, পারটেক্স পেপার মিলস লিঃ, পারটেক্স ডেনিম মিলস লিঃ।

লেখকের শেষকথা

উপরের বিস্তারিত আলোচনা থেকে নিশ্চয়ই আপনারা জেনে গেছেন বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো সম্পর্কে। এছাড়া আরোও জানতে পেরেছেন এই কোম্পানিগুলোর Sister concern গুলো কারা। উপরের আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।

যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩