বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়

বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় গুলো নিয়ে।আজকের যারা শিশু তারা আগামি দিনের ভবিষ্যত।কারন রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাদের একসময় নিতে হবে।কিন্তু দুঃখের বিষয় এই ভবিষ্যত প্রজন্ম ধীরে ধীরে মোবাইল বা স্মার্টফোন নামক নেশায় বুধ হয়ে আছে।এই নেশা থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়

ভুমিকা

আজকের আর্টিকেলটি যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কিভাবে দূর করা যায়, আরোও জানতে পারবেন মোবাইল আসক্তির ফলে বাচ্চাদের উপর কি ধরনের প্রভাব প্রতিফলিত হচ্ছে।এই মোবাইল আসক্তির কারন কি এবং এই সমস্যা সমাধানের উপায়গুলো কি। আসুন আলোচনা করা যাক।

বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়

আজকের যুগের শিশুদের মোবাইল আসক্তি নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে দুঃচিন্তার শেষ নেই।বেশিরভাগ শিশু স্মার্টফোনে গেমস খেলতে ও ভিডিও কন্টেন্ট দেখতে পছন্দ করে। তারা এই মোবাইল ফোনে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় পার করে।অত্যধিক মোবাইল আসক্তির কারনে মস্তিষ্কের কোষ থেকে ডোপামিন নিউরোট্রান্সমিটার নিঃসৃত হয়।
  • ডোপামিনের কাজ হলো ভালোলাগার অনুভুতিকে বাড়িয়ে দেওয়া যা শিশুদের আসক্তি বাড়িয়ে দেয়। অতিরিক্ত স্মার্টফোনের ব্যবহারে শিশুদের মানসিক বিকাশে প্রভাব ফেলে।ফলে বাচ্চাদের স্বাভাবিক বিকাশ বাঁধাপ্রাপ্ত হয়। এ সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় অভিভাবকদের সচেতন হওয়া।শিশুদের মোবাইল ফোন আসক্তি কমানোর বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিম্নরুপ।
  • প্রতিটি অভিভাবককে শিশুদের সামনে মোবাইল ফোনের ব্যবহার কমাতে হবে এবং পরিবারের সাথে পর্যাপ্ত সময় পার করতে হবে।
  • শিশুদের একাকিত্বের কারনে মোবাইল আসক্তি বেশি হয়ে থাকে।তাই তাদেরকে বিভিন্ন কাজে জড়িত রাখতে হবে যেমন:কোরআন শিক্ষা, ইসলামিক গানের প্রশিক্ষন, কবিতা আবৃত্তি, ফুটবল, ক্রিকেট খেলা ইত্যাদি।
  • শিশুদের মধ্যে বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।প্রতিদিন শিশুদের বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে শোনাতে হবে।তাহলে মোবাইলে আসক্ত হওয়ার প্রবনতা অনেকটা কমে যাবে।
  • শিশুদের শৈশবকে উপভোগ্য করার জন্য তাদের বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে যেমন:বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে, খেলাধুলার ব্যবস্থা করতে হবে।
  • যদি মোবাইল তাদেরকে ব্যবহার করতে দেন তাহলে আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে ইন্টারনেটে শিশুরা কি ধরনের ভিডিও দেখে এবং ভিডিও দেখার সময় নির্ধারন করে দিতে হবে।
  • আপনাদের শিশুদের ঘরের কাজের দায়িত্ব দিন। বাড়ির বিভিন্ন ছোট ছোট কাজের সহযোগিতা করার জন্য উৎসাহ প্রদান করতে হবে।
  • আপনার শিশুকে মোবাইলে গেম, কার্টুন দেখিয়ে খাওয়ার অভ্যাস পরিহার করুন বরং খাওয়ানোর সময় বিভিন্ন ধরনের মজার মজার গল্প করুন।
  • মোবাইল ফোন থেকে শব্দ, ব্যানার, ভাইব্রেশন অর্থাৎ সকল ধরনের নোটিফিকেশন বাদ দিতে হবে।
  • আপনি কোন অ্যাপস কতক্ষন ব্যবহার করবেন তার সময় আগে থেকে নির্ধারন করে দিতে হবে।
  • বিভিন্ন ফিল্টারিং সফটওয়্যার আপনার মোবাইলে ব্যবহার করুনা।আপত্তিকর ও পর্ন সাইটগুলো ফায়ারওয়াল প্রোটেকশন দিয়ে বন্ধ করে রাখুন।
  • শিশুদের ধর্মীয় ও নৈতিকতা শিক্ষা প্রদান করুন এবং ইন্টারনেটের ভালো দিকগুলো নিয়ে সচেতন করুন।
  • আপনার শিশু কোন সাইটগুলো সার্চ করছে তা পর্যবেক্ষন করুন।
  • প্রয়োজন ছাড়া আপনার শিশুকে ফোন ব্যবহার করতে দিবেন না।

শিশুদের মোবাইল আসক্তির কুফল

বর্তমান যুগে একটি শিশু না খেয়ে থাকলেও কোনো সমস্যা হয় না কিন্তু মোবাইল ছাড়া কোনো ভাবেই তার চলে না।বেশিরভাগ অভিভাবক তার সন্তানদের মোবাইল আসক্তি থেকে দুরে রাখার পরিবর্তে আধুনিকতার দোহাই দিয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ব্যাপারে বাধা না দিয়ে বরং উৎসাহিত করছে। কিন্তু এই আসক্তি তাদের সন্তানদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর তা উপলব্ধি করতে পারছে না।
  • মোবাইল ফোন আসক্তি আপনার শিশুর স্বাভাবিক বিকাশকে বাধাগ্রস্থ করে। শিশুদের মধ্যে যে স্বাভাবিক ধৈর্য্য ধারন করার প্রবনতা,তা কমে যায় এবং যেকোনো কাজে মনোযোগ হ্রাস পাই।ফলে শিশুর আস্তে আস্তে অসহিঞ্চু, অসামাজিক ও উশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। তার সহজাত স্বাভাবিক গুনাবলীগুলো মরে যায়।
  • অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারনে পর্যাপ্ত ঘুম হয় না। ফলে “মনোযোগ ঘাটতিজনিত চঞ্চলতা” নামক জটিল রোগে ভুগে।
  • মোবাইলে অনেক সময় নানা ধরনের অনৈতিক ন্যুড জিনিষ সামনে চলে আসে যা তারা এটাকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহন করে। ফলে অনৈতিকতা ও মুল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটে।
  • অনেক সময় ধরে মোবাইল দেখার কারনে নানা ধরনের চোখের রোগজনিত সমস্যায় ভুগে।
  • শুয়ে বসে মোবাইল দেখার কারনে শিশুর খেলাধুলায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।ফলে ছোট বয়সে শরীরের ওজন বেড়ে যায়।গবেষকরা বলছেন, পরবর্তীতে এই শিশুরা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও কিডনি রোগে ভুগে।

বাচ্চাদের মোবাইল দেখলে কি হয়

আমাদের দেশে শিশুরা ব্যাপকভাবে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছে তাদের অনেকে পর্ন সাইটগুলোতে প্রবেশ করে ফলে তারা নানা ধরনের বিকৃত রুচির যৌনকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ছে।অস্বাভাবিক মারদাঙ্গা হলিউড ও বলিউডের সিনেমাগুলো দেখে তারা ধীরে ধীরে অপরাধমুলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে।অল্পবয়সী শিশুরা ঘন্টার পর ঘন্টা কার্টুন দেখে সময় পার করছে।
আবার অনেকে অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িয়ে পড়ছে।যাতে তাদের আচার আচরন অস্বাভাবিক হয়ে পড়ছে। এই শিশুরা ঠিকমতো খাবার, পড়াশুনা খেলাধুলা বা অন্য কোন কাজ নির্দিষ্ট সময়ে করতে পারছে না।শিশুরা মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও গেম খেলে যার বেশিরভাগ কন্টেন্ট সহিংসতা, রক্তাক্ত হামলা, ধ্বংশলীলা, হত্যা, চুরি, যৌনতা, প্রতারনা ও অমানবিকায় ভরপুর।

মোবাইল আসক্তির কারণ ও প্রতিকার

ডিজিটাল এই যুগে মোবাইল ফোন আমাদের খুবই প্রয়োজনীয় একটি ডিভাইস। আর এই ডিভাইস ছাড়া আমরা এক সেকেন্ড চলতে পারিনা।অতিরিক্ত মোবাইলের ব্যবহার আমাদের মধ্যে মারাত্মকভাবে আসক্তি তৈরী করছে।যা আমাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করলে এই আসক্তি থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।আমরা সাধারনত মোবাইল বেশি ব্যবহার করি ইন্টারনেটের কারনে।তাই মোবাইল ব্যবহারের সাথে ইন্টারনেট ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। তবে এই আসক্তির প্রতিকারের আগে এর কারনগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

আসক্তির কারন
  • নতুন যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তারা ব্যপক উৎসাহের সাথে বিভিন্ন লিংকে প্রবশ করেন। বিভিন্ন সাইটে ঘুরে নতুন নতুন তথ্য সংগ্রহের নেশায় পড়ে যায়। ফলে মোবাইলে ঘন্টার পর ঘন্টা কিভাবে কেটে যায় তা কেউ বলতে পারেনা।
  • ইন্টারনেট এমন একটি নেটওয়ার্ক যেখানে সব বয়সি মানুষের তথ্য সংগ্রহ করা থাকে। মানুষ শখের বসে বা পেশাগত কারনে নতুন নতুন তথ্য সংগ্রহের কারনে অনেক সময় ধরে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করে থাকে। এভাবে দিনের বেশিরভাগ সময় যে কখন এই ডিভাইস ব্যবহারের পেছনে চলে যায় সে নিজেই বলতে পারেনা।
  • ইন্টারনেটে যে সকল মারাত্মক চরিত্র হননকারি এবং সময় নষ্টকারী পর্ন সাইটগুলো রয়েছে সেখানে বিভিন্ন বয়সের মানুষের বিচরন সবচেয়ে বেশী। এই নগ্ন, কুরুচিপুর্ন ও বিকৃত সাইটগুলো এতো ব্যপক পরিমানে ব্রাউজ করা হয় যা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
  • এই ইন্টানেটের সুবাধ দেশ বিদেশ ও দুর দুরান্তের মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়েছে। এই বন্ধুত্বের প্ল্যাটফর্মগুলো হচ্ছে ব্লগ, চার্টরুম, ফেইসবুক,টুইটার, ইন্সষ্টাগ্রাম ও ফোরাম ইত্যাদি যার মাধ্যমে একে অপরের মধ্যে পরিচিতি ঘটতে এবং কাছাকাছি যাচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে ততই ভার্চুয়াল বন্ধু বান্ধবদের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে অযথায় এই ডিভাইসের কারনে সময় নষ্ট হচ্ছে।
প্রতিকার
  • ধীরে ধীরে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাত্রা কমিয়ে আনতে হব।তাহলে মোবাইল ব্যবহারের মাত্রা কমে আসবে।
  • যদি নিজস্ব কিছু সমস্যা থাকে তাহলে সেটা আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধবদের সাথে আলোচনা করতে হবে।
  • বিনোদনের জন্য অন্য প্রাকৃতিক বিষয়গুলো চিন্তা করতে হবে এবং অসামাজিক ঘরকুনো স্বভাব থাকলে তা পরিবর্তন করতে হবে।
  • বাচ্চাদের এই মোবাইল নেশা থেকে বিরত রাখার জন্য মোবাইলের অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন বাদ দিতে হবে।কোন অ্যাপস কতক্ষন ব্যবহার করবেন তার আগে থেকে নির্ধারন করে দিতে হবে।ঘুমানোর সময় মোবাইল দুরে রাখতে হবে।আইফোন বা অ্যান্ড্রয়েড অপরেটিং সিস্টেমে চলা মোবাইলে গ্রেস্কেল মুডে সুইচ অন করে রাখতে হবে।
  • যারা প্রতিনিয়ত ইমেইল, টিকটক, ইনষ্টাগ্রাম ও ফেসবুকের মতো অ্যাপগুলো ব্যবহার থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারছে না তারা চাইলে অ্যাপগুলো লুকিয়ে রাখতে পারে।
  • কম্পিউটারের কাজ কম্পিউটারে করুন তাহলে মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমাতে পারবেন।

মোবাইল গেম থেকে বিরত থাকার পরামর্শ

আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা মোবাইল আসক্তির মধ্যে পড়ে নিজেদের উজ্জল ভবিষ্যত ধ্বংশ করে ফেলছে।পড়াশুনা লাটে উঠিয়ে সারাদিন ফেইসবুক, ইনষ্টাগ্রাম, টুইটার ইউটিউবের নেশায় বুদ হয়ে সময় নষ্ট করছে।তারা তাদের জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ দিনে দিনে হারিয়ে ফেলছে।তবে কিছু সহজ ও ছোট ছোট কৌশল অবলম্বন করলে এ আসক্তি থেকে বের হওয়া যায়।
  • ফেইসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ইন্সটাগ্রামে অনবরত নোটিফিকেশন আসতে থাকে।ফলে কিছুক্ষন পর পর কি নোটিফিকেশন এসেছে তার জন্য মন অস্থির হয়ে থাকে।অবচেতন মনে আমরা মোবাইল আসক্তির সম্মুখীন হই।তাই সকল সোশ্যল মিডিয়ার নোটিফিকেশন বন্ধ রাখতে হবে।
  • আপনি যত কম মোবাইল ব্যবহার করবেন মোবাইল আসক্তির সম্ভাবনা তত কমে যাবে। এই আসক্তি থেকে যদি সত্যি আপনি মন থেকে বের হয়ে আসতে চান তাহলে অবশ্যই অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে এবং বাটন মোবাইল ব্যবহার করতে হবে।
  • আপনাদের মধ্যে একটা মারাত্মক বধভ্যাস আছে সেটা হলো খাবার গ্রহন করার সময় মোবাইল ব্যবহার করা। অনেকে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে মোবাইল ব্যবহার করেন আবার হয়ত বন্ধুদের আড্ডা মারছেন এই সময় সকলে আড্ডা মারছে আর আপনি মোবাইল নিয়ে টিপাটিপি করছেন। এই যে তিনটি সময়ে মোবাইল ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
  • সকল ধরনের সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যাট করা বন্ধ করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের মোবাইল আসক্তি

করোনা পরবর্তী মানুষের জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। করোনাকালীন সময়ে কিছু মানুষ উপকৃত হলেও বেশিরভাগ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।ফলে মানুষের জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষনীয়। করোনাকালীন সময়ে পরিবর্তিত পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ দিক হচ্ছে মোবাইর ফোন আসক্তি। 

একসময় যারা পড়াশুনায় খুব ভালো ছিলো তারা মোবাইল আসক্তির কারনে পড়াশুনা থেকে একে বারে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এর পেছনে মুল কারন হচ্ছে মোবাইল আসক্তি। বই হচ্ছে এমন একটা বস্তু যা চর্চা করলে মস্তিষ্কে থাকে আর চর্চা না করলে মস্তিষ্ক থেকে বেরিয়ে যায়। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীর মধ্যে মস্তিষ্কে ঢুকে গেছে বই এর বদলে মোবাইল ফোন নামক বিষধর সাপ। 

যার দংশনে মুছতে বসেছে বইয়ের স্মৃতি চিহ্ন।২০২০ সালের মার্চের পর করোনার কারনে সবকিছু যখন বন্ধ হয়ে গেলো তখন শিক্ষার্থীদের একমাত্র বিনোদন হলো মোবাইল ফোন।অনলাইন ক্লাসের নাম করে ঘন্টার পর ঘন্টা পার করতে থাকে মোবাইর ফোনে। 

তারা যতটুকু সময় পার করতো অনলাইন ক্লাসের জন্য তার চেয়ে অনেক বেশী সময় ব্যয় করতো ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম ও ইউটিউবের পিছনে। UNICEF এর তথ্যমতে পৃথিবীতে প্রতি তিনজন ইন্টারনেটের ব্যবহারকারীর মধ্যে একজন শিশু।প্রতিদিন হাফ সেকেন্ডে একজন শিশু নতুন করে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হচ্ছে।
গবেষনায় দেখা গেছে একজন শিক্ষর্থী ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ব্যয় করে মোবাইল ফোনের পেছনে।ইংল্যান্ডের এক জরিপে দেখা গেছে তাদের দেশের যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যায় তারা যেসব প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ব্যবহার করা যায় তাদের চেয়ে ফলাফল ৬ শতাংশ ভালো। 

গবেষকরা বলছেন স্মার্টফোন ব্যবহারে কিছু সুবিধা থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে ও পড়াশুনার ব্যপক ক্ষতি হচ্ছে। মুলত স্মার্টফোনে আসক্তির জন্য ফ্রিফায়ার ও পাবজির মতো অনলাইন গেমসগুলো দায়ী। 

এইসব গেমগুলো সারাদিন ধরে খেলার কারণে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে এবং পড়াশোনার উপর ব্যাপক খারাপ প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। আবার স্মার্টফোনের মাধ্যমে টিকটক কালচার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। তারা সারাদিন টিক টক ভিডিও বানানোর জন্য ব্যস্ত থাকছে।ফলে তাদের পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে যাচ্ছে। 

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে দিন দিন হার্ট অ্যাটাকের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ বাড়ছে, মেজাজ খিটমিটে হয়ে যাচ্ছে, ক্ষুধা মন্দা দেখা যাচ্ছে। অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহারে স্ক্রিনের যে রেডিয়েশন বের হয় তাতে শিশুদের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। 

এভাবে ধীরে ধীরে একটি প্রজন্ম ধ্বংশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।তাই সবার আগে প্রয়োজন অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা। অভিভাবক সচেতন হলে এ সমস্যার অনেকখানি সমাধান করা সম্ভব।

লেখকের শেষকথা

আশা করছি ,উপরের আর্টিকেলটি আপনারা খুব ভালো মতো পড়েছেন। ফলে আপনারা জেনে গেছেন বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়গুলো সম্পর্কে।তাহলে আশা করা যায় আপনারা যদি উপরোক্ত নিয়ম-কানুনগুলো মানতে পারেন তাহলে এই মোবাইল আসক্তি কড়াল গ্রাস থেকে শিশুদের রক্ষা করতে পারবেন।

উপরের আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩