খাঁটি মধু চেনার উপায়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

খাঁটি ঘি চেনার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিনবন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটি যদি বিস্তারিত পড়েন তাহলে জানতে পারবেন খাঁটি মধু চেনার উপায়গুলো সম্পর্কে। আমরা যদি মধুর পুষ্টিগুন ও স্বাদের দিকটি বিবেচনা করি তাহলে এই খাবারটি প্রথম সারিতেই থাকবে।মধু শরীরের জন্য খুব উপকারী।নিয়মিত মধু খেলে নানা ধরনের রোগবালাই থেকে দুরে থাকবেন। তাই আমাদের নিয়মিত মধু খাওয়া উচিত।
খাঁটি মধু চেনার উপায়

ভুমিকা

আজকের আর্টিকেলটি যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন কিভাবে খাঁটি মধু চেনা যায়,আপনাদের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি আছে খাঁটি মধু কি জমে ? এই আর্টিকেলটিতে বিভ্রান্তি দুর করা হয়েছে। নষ্ট মধু কিভাবে চিনবেন তা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। সুন্দরবনের মধু চেনার কিছু টিপস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। 

খাঁটি মধু খাওয়ার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সরিষা ফুলের মধুর বৈশিষ্ট্য কি তা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া চুন পরীক্ষার মাধ্যমে আদৌও কি খাঁটি মধু চেনা যায়? এই প্রশ্ন অনেকের মনে উদয় হয়। এই আর্টিকেলে চুন পরীক্ষার ভুল ধারনাটি দুর কর হয়েছে।

খাঁটি মধু চেনার উপায়

মধু হলো উচ্চ ঔষুধি গুন সম্পন্ন ভেষজ যা রোগ নিরাময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করে। আমাদের শরীরের জন্য মধু যে খুবই উপকারী তা আমরা সকলেই জানি।স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগন বলছেন মধু ও দারুচিনির মিশ্রন আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারি একটি খাদ্য। বিভিন্ন ধরনের রোগ সারাতে মধু জাদুর মত কাজ করে।
যেমন:বাতের ব্যাথায়, পিত্ত থলির সংক্রমন, মুখের দুর্গন্ধ এবং শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে খুব কার্যকর ভুমিকা পালন করে।নিয়মিত মধু খেলে শরীর সুস্থ থাকে।জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের প্রায় সর্দি-কাশি লেগে থাকে যা সারাতে মধু গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করে।মধু নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দুর হয় ও হার্ট সুস্থ থাকে।

তবে বর্তমানে খাঁটি মধু পাওয়া খুব কঠিন।চারিদিকে ভেজাল মধুতে সয়লাব হয়ে গেছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ড কোম্পানিগুলো মধুতে চিনির শিরা মিশিয়ে বাজারজাত করছে। খাঁটি মধু নিজেই একটি প্রিজারভেটিভ তাই সহজে নষ্ট হয় না। সুন্দরবনের মধুতেও ভেজাল মিশিয়ে মার্কেটে নির্ধিদ্বায় বিক্রি হচ্ছে। এসকল মধুতে ব্যাপকভাবে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে।
আমরা বাজারে গিয়ে মধু কিনতে গিয়ে ব্যাপকভাবে প্রতারিত হয়ে থাকি।তাই আজকের আর্টিকেলটিতে আসল মধু চেনার কিছু টিপস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, এই টিপসগুলো মেনে মধু কিনতে পারলে আপনারা আসল মধু সম্পর্কে জানতে পারবেন।

মধু চেনার কয়েকটি কৌশল

  • আপনি যদি দেখেন বৃদ্ধাঙ্গুলে মধু নেওয়ার পর তা বেশ আঠালো হয় এবং আঙ্গুলে চিটচিটে ভাব থাকে তহালে বুঝতে হবে মধু খাঁটি অর্থাৎ মধুর ঘনত্ব দেখে আসল মধু চেনা যায়।
  • আপনি যদি মধু ফ্রিজে কিছু সময়ের জন্য রেখে দেন তাহলে দেখবেন তা জমে গেছে। কিন্তু মধু যদি ভেজাল হয় তাহলে পাত্রের নীচে তলানি পড়ে আছে অর্থাৎ ফ্রিজে রেখে আসল বা নকল মধু সহজেই চেনা যায়।
  • একটি সাদা কাপড় নিয়ে তাতে মধু মাখিয়ে আধা ঘন্টা রাখার পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলেন, যদি দেখেন কাপড়ে দাগ লেগে আছে তাহলে বুঝবেন মধু খাঁটি নয়। এছাড়া শীতের দিনে মধু দানা বেঁধে যায়।
  • খাঁটি মধুর গন্ধ সবসময় মিষ্টি ও আর্কষনীয় হয় এতে কোন ঝাঁঝলো ভাব থাকবে না। যদি দেখেন মধু ঝাঁঝালো গন্ধযুক্ত ও কম মিষ্টি তাহলে বুঝবেন তা খাঁটি নয়।
  • মোমবাতির শলতে মধু মাখিয়ে আগুন ধরালে যদি দেখেন আগুন জ্বলে গেছে তাহলে বুঝবেন তা খাঁটি।আর যদি আগুন না জ্বলে তাহলে বুঝবেন মধুতে পানি মেশানো আছে।
  • মধু অনেকদিন ধরে একটি পাত্রে ঘরে রেখে দিলে চিনি জমে যায়। পাত্রটি আগুনে গরম করলে চিনি গলে তা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। যদি দেখেন মধুর মধ্যে উক্ত অবস্থা বিরাজ না করে তাহলে বুঝবেন তা খাঁটি নয়।
  • ব্লটিং পেপার দিয়েও আসল মধু ও নকল মধু চেনা যায়।ব্লটিং পেপারে মধু লাগানোর পর কাগজ যদি তা পুরোপুরি শুষে নেয় তাহলে বুঝবেন মধুতে ভেজাল আছে।
  • একটি কাঁচের গ্লাসে ১ চামচ মধু দিন এবং তার উপর পানি দিন যদি দেখেন মধু পানির সাথে মিশে গেছে তাহলে বুঝবেন মধুতে ভেজাল আছে।কারন খাঁটি মধুর ঘনত্ব পানির চেয়ে অনেক বেশী তাই এটি পানির সাথে মিশে না। চামচ দিয়ে নাড়াচাড়া করলেও তা মিশবে না।
  • কয়েক ফোটা ভিনেগার ও পানির সাথে মধু মিশিয়ে ঝাঁকি দিন যদি দেখেন ফেনার মত কিছু একটা তৈরি হয়েছে তাহলে বুঝবেন মধুতে ভেজাল আছে।
  • আপনার হাতের কয়েক ফোটা মধু নিয়ে যদি দেখেন তা গড়িয়ে পড়ছে তাহলে বুঝবেন মধুতে ভেজাল আছে। কারন খাঁটি মধু কখনই গড়িয়ে পড়বে না।

আসল মধু কি জমে

Wikipedia এর তথ্য মতে মধুতে ৪৫ টি খাদ্য উপাদান রয়েছে তার মধ্যে Glucose ও Fructose হল অন্যতম।মধুতে Glucose এর পরিমান ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ ও Fructose এর পরিমান ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ। গড় মান হিসাব করলে দেখা যাবে মধুতে Glucose ও Fructose এর পরিমান রয়েছে ৭০ শতাংশ বাঁকি ৩০ শতাংশের মধ্যে ১৮ শতাংশ পানি বা আর্দ্রতা রয়েছে।

আর ১২ শতাংশ অ্যামাইনো এসিড ও বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদান।প্রাকৃতিকভাবে মধুতে বিদ্যমান ৭০ শতাংশ Glucose ও Fructose এবং ১৮ শতাংশ পানির সঙ্গে দ্রবীভুত অবস্থায় থাকে। কিন্তু ৭০ শতাংশ চিনির সাথে ৩০ শতাংশ পানি যোগ করেও দ্রবন তৈরি করা সম্ভব নয়।কারন পাত্রের তলায় চিনি অদ্রবীভুত অবস্থায় থেকে যায়।
প্রাকৃতিকভবে মধুতে Glucose ও Fructose ভারসাম্যপুর্ন অবস্থায় থাকে অর্থাৎ মধুতে বিদ্যমান পানি থেকে Glucose আলাদা হয়ে যেয়ে স্ফটিক আকারে জমতে শুরু করে আবার ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক এই দ্রবনটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। মধুর এই জমে যাওয়া প্রক্রিয়াটিকে স্ফটিকায়ন বলা হয়ে থাকে। এটা মধুর ভৌত বৈশিষ্ট্য যা প্রাকৃতিকভাবে ঘটে থাকে। 

মধুতে Glucose ও Fructose ছাড়াও যে উপাদানগুলি রয়েছে তা হলো অ্যামাইনো এসিড, প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন ইত্যাদি। এগুলি মধুর স্ফটিকায়ন বা জমে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। ধুলিকনা, ফুলের পরাগরেনু ও মৌচাকের মোমের কনা যা স্ফটিকায়নের গতি তরান্বিত করতে পারে। 

এছাড়াও আরো কিছু প্রভাবক রয়েছে যেমন:তাপমাত্রা, বাতাসের আর্দ্রতা ও পাত্রের ধরন ইত্যাদি এগুলিও মধুর জমে যাওয়ার প্রক্রিয়াতে প্রভাব ফেলে। সাধারনত কম তাপমাত্রায় অর্থাৎ শীতকালে মধু খুব তাড়াতাড়ি জমে যায়। কাঁচের পাত্রে সংরক্ষিত মধুর চেয়ে প্লাস্টিক পাত্রে সংরক্ষিত মধু দ্রুত জমে যায়।আবার তরল মধুতে এক ফোঁটা জমে যাওয়া মধু মেশালেও মধু জমে যায়।

নষ্ট মধু চেনার উপায়

ঔষুধিগুন সম্পর্ন মধুর রোগ সারাতে কোন জুড়ি নেই। ত্বকের যত্নে ও ঠান্ডাজনিত সমস্যায় মধু জাদুর মত কাজ করে। মধুতে ৪৫ টির বেশি খাদ্য উপাদান রয়েছে। তবে মধুতে কোন চর্বি বা প্রোটিন নেই। প্রতি ১০০ গ্রাম মধুতে ৩০৪ ক্যালরি শক্তি রয়েছে।মধু কিনতে গেলে আমরা সবাই বিপাকে পড়ি। তাই নষ্ট মধু চেনার উপায় নীচে আলোচনা করা হলো।
  • মধুর সাথে পানি মেশানোর পর যদি দেখা যায় মধু পানিতে মিশে গেছে তাহলে বুঝতে হবে মধুতে ভেজাল আছে বা মধু খারাপ।
  • মধুর মধ্যে যদি দেখেন ফেনা উঠছে এবং টক টক গন্ধ করছে তাহলে বুঝতে হবে মধুতে ভেজাল আছে।
  • নষ্ট মধুর ঘনত্ব কম থাকে হাত দিয়ে নাড়লে বেশ পাতলা মনে হয় খেতে খুব একটা সুস্বাদু হয় না তলানিটা খসখসে থাকে।
  • খাঁটি মধু একটি গ্লাসে ১ ড্রপ দিন যদি দেখেন ড্রপটি নীচে চলে গেছে এবং নাড়াচাড়া করলে পানির সাথে মিশছে না তাহলে বুঝতে হবে মধু খাঁটি আছে আর যদি দেখেন ড্রপটি পানির সাথে মিশে গেছে তাহলে বুঝবেন মধুতে ভেজাল আছে বা মধুটি নষ্ট।

সুন্দরবনের খাঁটি মধু চেনার উপায়

আমাদের দেশের সুন্দরবনে যে মধু পাওয়া যায় তা পৃথিবীর সেবা মধু। এই মধুর স্বাদ ও গন্ধের তুলনা হয়না, তাই সুন্দবনের মধুর জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশী।সুন্দরবনের মধু দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানী করা হচ্ছে।সুন্দরবনের মধু সংগ্রহ করা শুরু হয় ফেব্রুয়ারি মাসে এবং শেষ হয় জুন মাসে। সাধারনত খলিশা, গড়ান, কেওড়া ও বাইন গাছের ফুল থেকে মৌঁমাছিরা মধু সংগ্রহ করে। 
তাই এই মধু স্বাদ ও গন্ধে অতুলনীয় হয়ে থাকে। এছাড়া সারা বছর যে ফুল ফোটে তা থেকেও মৌঁমাছিরা মধু সংগ্রহ করে বলে সারা বছরই সুন্দরবনে মধু পাওয়া যায় তবে তা পরিমানে কম হয়। বাংলাদেশে মধু উৎপাদনের ২০ শতাংশ সুন্দরবন থেকে পাওয়া যায়। তাই আজকের আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হয়েছে সুন্দরবনের মধুর বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে।
  • সুন্দরবনের মধুর রং হালকা হলুদাভ বাদমি বর্নের হয়ে থাকে তবে ফুল ভেদে হালকা ও গাঢ় হতে পারে।
  • খেতে খুবই সুস্বাদু হাল্ক একটু টকটক মিষ্টি মিষ্টি হয়ে থাকে।
  • সুন্দরবনের মধু ঘন কম হয় অর্থাৎ পাতলা হয়ে থাকে।
  • সুন্দরবনের মধু একটা পাত্রে রেখে যদি ঝাঁকুনি দেওয়া যায় তাহলে ফেনা হয়।
  • এই মধু কখনও জমে না।
  • সুন্দরবনের প্রাকৃতিক মধুতে Active এনজাইম, প্রোটিন এবং অ্যামিনো এসিড থাকে।
  • সুন্দরবন যেহেতু সমুদ্র উপকুল ঘেষে তাই এতে ময়শ্চারের পরিমান বেশি থাকে তাই মধুর ঘনত্ব কম হয়।ঘনত্ব কম হওয়ার কারনে ঝাঁকি লাগলে রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয় ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয় যা ফেলা আকারে মধুর পাত্রে উপরে উঠে আসে।

খাঁটি মধু সেবনের উপকারিতা

আল্লাহ সুবহানাহুয়া তায়ালার অপার দান হলো এই প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক মধু। নিয়মিত মধু খেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। মধুতে যে Glucose ও Fructose তা শরীরে সাথে সাথে শক্তি যোগায়। এছাড়া মধুতে রয়েছে ভিটামিন, অ্যামাইনো এসিড ও খনিজ লবন যা শরীর গঠনে কার্যকর ভুমিকা পালন করে। ৪৫টি খাদ্য উপাদান রয়েছে মধুতে।

মধুর উপাদান

  • Glucose - ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ
  • Fructose - ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ
  • Sucrose - ০.৫ থেকে ৩ শতাংশ
  • Maltose - ৫ থেকে ১২ শতাংশ
  • Amino acid - ২২ শতাংশ
  • খনিজ লবন - ২৮ শতাংশ
  • প্রাকৃতিক এনজাইম - ১১ শতাংশ
  • ১০০ গ্রাম মধুতে ক্যালারি - ২৮৮ গ্রাম

মধুর উপকারিতা

  • মধুতে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি-অষ্কিডেন্ট রয়েছে। তাই এই খাবারটি নিয়মিত খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • মধু শরীরের দুর্বলতা দুর করে তাৎক্ষনিক শক্তি যোগায়। এছাড়া মধু নিয়মিত খেলে শরীরে তাপ উৎপাদন হয়।
  • মধু খাবারকে সহজে হজম করে দেয়। ফলে নিয়মিত মধু খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • মধু রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে রক্তশুন্যতা দুর করে।তাই আপনার যারা নিয়মিত মধু খান তারা কখনই রক্তশুন্যতা রোগে ভুগবেন না।
  • মধু শরীরের রক্তনালীগুলোকে প্রসারনের মাধ্যমে হৃদপিন্ডের কার্যক্রমকে স্বাভাবিক রাখে এবং শরীরে স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে।
  • নিয়মিত মধু পান করলে বিভিন্ন ধরনের খনিজ যেমন: কপার, লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদির অভাব দুর করে।
  • মধু আমাদের দাঁতকে মজবুত করতে সহায়তা করে এবং মুখের মধ্যে বিভিন্ন ঘা নিরাময়ে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করে।
  • জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে মৌসুমি সর্দি, জ্বর হয় তা নিরাময়ে সাহায্য করে।আপনি যদি তুলসি পাতার সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে সর্দি, জ্বর আপনার ধারে কাছে ভিড়তে পারবে না।
  • ফুসফুসের বিভিন্ন ভাইরাস নিরাময়ে মধু খুবই কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
  • আপনাদের মধ্যে যাদের লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যা আছে তারা যদি নিয়মিত মধু দিয়ে গাঁজানো রসুন খেতে পারেন তাহলে এই সমস্যা থেকে অবশ্যই মুক্তি পাবেন।
  • নিয়মিত মধু খেলে শরীরের ওজন, রক্তে কোলেষ্টরল ও ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রনে থাকে।
  • শিশুদের হাড় গঠন ও মজবুত করতে সাহায্য করে।এছাড়া এই খাবারটি নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • রাতে ঘুমানোর আগে যদি দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে অনিদ্রাজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
  • নিয়মিত মধু খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দুর হয় বাতের ব্যাথা উপসম করে এবং এর মধ্যে বিদ্যমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের রং উজ্জল করতে, তারুন্য ধরে রাখতে ও মুখের ব্রন দুর করতে এবং চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে।

মধু খাওয়ার নিয়ম

  • ১ থেকে ২ চামচ মধু সরাসরি প্রতিদিন সকালে যদি নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে তা শরীরের জন্য খুব উপকারী।
  • কুমুম গরম পানিতে ১ থেকে ২ চামচ মধু মিশিয়ে তার সাথে অল্প লেবুর রস দিয়ে খালি পেটে খেতে পারলে শরীরের ওজন কমে যাবে।
  • ১ চামচ মধুর সাথে কাঁচা ছোলা মিশিয়ে খেতে পারলে শরীরের সব দুর্বলতা কেটে যাবে।
  • ১ চামচ মধু রুটির সাথে মিশিয়ে নিয়মিত খেলে শরীরে পর্যাপ্ত শক্তী পাবেন যা সারাদিন আপনাকে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করবে।
  • চায়ের সাথে চিনির মত “হোয়াইট পয়জন” না খেয়ে যদি মধু মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে শরীরের সব ক্লান্তি দুর হবে।
  • দুধের সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেলে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকবে।
  • ১ চামচ মধুর সাথে কালোজিরা মিশিয়ে খেলে মৃত্যেু বাদ দিয়ে সকল ধরনের রোগ থেকে দুরে থাকবেন।
  • শরীরে তাৎক্ষনিক শক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য মধুর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে শরবত খেতে পারেন।
  • ১ গ্লাস পানিতে ২ চা চামচ ইসুফগুলের ভুসি ও ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবেন।
  • ১ চামচ মধুর সাথে দারুচিনির গুঁড়া মিশিয়ে নিয়মিত খেলে রক্তনালীর সমস্যা দুর হবে এবং কোলেষ্টরলের পরিমান ১০ শতাংশ কমে যাবে।
  • তুলসি পাতা বা বাসক পাতার সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেলে সর্দি-জ্বর থেকে মুক্তি পাবেন।

চুন দিয়ে মধু পরীক্ষা

আপনাদের মধ্যে অনেকেই বিশ্বাস করেন মধুর সাথে চুন মিশিয়ে হাতের তালুতে নিয়ে ঘর্ষন করলে হাতের তালু যদি গরম হয়ে যায় তাহলে মধু খাঁটি আর হাতের তালু যদি গরম না হয় তাহলে মধু ভেজাল।কিন্তু এই পদ্ধতিটি সম্পুর্ন অবৈজ্ঞানিক ও ভুল ধারনা।কারন চুনের সাথে খাঁটি মধু হোক বা ভেজাল মধু হোক হাতের তালু গরম হবে।সুতরাং এই পরীক্ষাটি সম্পুর্ন ভুল।

সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায়

মৌমাছি ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌচাকে জমা করে সেই মধুকে কাঁচা মধু বলা হয়।আমাদের দেশের বাজারে যে মধু বিক্রি হয় তার বেশিরভাগ প্রক্রিয়াজাত মধু। 
কাাঁচা মধু ও প্রক্রিয়াজাত মধুর মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। মধু গরম করে প্রক্রিয়াজাত করা হয়।আর মধু গরম করলে মধুর অনেক গুনাগুন নষ্ট হয়ে যায়।এই মধু খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
  • সরিষাফুলের মধু হালকা হলুদা বর্নের হয়ে থাকে। তবে মধু পুরাতন হয়ে জমে গেলে সাদা বর্ন ধারন করতে পারে।
  • এই মধুর ঘ্রান সরিষা ফুলের মত হয়।
  • মধুর ঘনত্ব কম বা বেশি হতে পারে।
  • মধু ঘন হলে ফেনা হতে দেখা যায়।
  • সরিষা ফুলের মধু সারা বছর জমে থাকে।
  • সরিষা ফুলের মধু স্বাদে হালকা ঝাঁঝালো হয়ে থাকে।
  • এই মধু ঠান্ডায় জমে যায়।

লেখকের শেষকথা

আশা করছি ,উপরের আর্টিকেলটি আপনারা খুব ভালো মতো পড়েছেন। ফলে আপনারা জেনে গেছেন খাঁটি মধুর উপকারিতাগুলো নিয়ে তাই এই খাবারটি আপনি যদি নিয়মিত খান তাহলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবেন। উপরের আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।

যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩