কি খেলে পাদে গন্ধ হয় - পায়খানার গন্ধ দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন
বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটিতে বিস্তারীতভাবে আলোচনা করা হয়েছে কি খেলে পাদে গন্ধ হয়।এছাড়া আরোও আলোচনা করা হয়েছে পায়খানার গন্ধ দুর করার উপায়গুলো নিয়ে।অতিরিক্ত প্রোটিনযুক্ত খাবার খেলে সাধারনত পেটে গ্যাস সৃষ্টি হয় ফলে অত্যন্ত দুর্গন্ধযুক্ত বায়ু পায়ুপথ থেকে বের হয়ে আসে। নীচে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু Tips & Tricks নিয়ে আলোচন করা হয়েছে।
ভুমিকা
আজকের আর্টিকেলটি যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন কি কারনে পেট থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। আরোও আলোচনা করা হয়েছে পায়খানা থেকে গন্ধ দুর করার উপায়গুলো নিয়ে, কোন ধরনের খাবারগুলো খেলে পাদে গন্ধ হয় এবং গন্ধ দুর করার উপায় ও পেট থেকে কিভাবে গ্যাস দুর করা যায় এবং মুখের গন্ধের কি লক্ষন সেই সম্পর্কে।
পেটের ভিতর থেকে দুর্গন্ধ আসার কারন কি
আমরা যে খাবারটা খেয়ে থাকি তা পাকস্থলীতে যাই। পাকস্থলী ওই খাবারটিকে হজম করার জন্য কিছু এসিড তৈরি করে। এসিড এবং খাবার সাধারণত নীচের দিকে জমতে থাকে।
ফলে পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস তৈরি করে। সাধারনত নিম্নলিখিত কারনে পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস তৈরি হয়।
- বেশি মসলা দিয়ে খাবার রান্না করলে সেই মসলার প্রভাবে মুখ জ্বালাপোড়া হতে পারে এবং পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয়।
- অনেকের কফি খাওয়ার কারণে বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে এবং পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয়।
- আপনি যদি বারবার একই খাবার গরম করে খান তাহলে এই সমস্যা হতে পারে এবং পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয়।
- অতিরিক্ত পরিমাণে সফট ড্রিংকস খেলেও এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে এবং পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয়।
- যারা ধূমপান করে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায় এবং পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয়।
- আপনি যদি অতিরিক্ত টেনশনে থাকেন সেই ক্ষেত্রেও আপনার গ্যাস্ট্রিক হতে পারে এবং পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয়।
- আপনি যদি স্থুলকায় হয়ে থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রেও আপনার গ্যাস্ট্রিক হতে পারে।
- গর্ভবতী মায়েদের ও এই গ্যাস্ট্রিক হতে পারে এবং পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয়।
- হায়টাস হারনিয়া রোগে যারা ভুগছেন তারা এই সমস্যায় ভুগতে পারেন।এটা হয় কারণ পাকস্থলীর কিছু অংশ বুকের উপর চলে আসে এবং পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয়।
- অ্যাসপিরিন,আইবুপ্রুফেন টাইপের ওষুধ গুলো খেলে গ্যাস্ট্রিক হতে পারে এবং পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয়।
প্রতিকার
- একবারে বেশি খাবার খাওয়া যাবেনা সারাদিনে ভাগ ভাগ করে খেতে হবে।
- নিয়মিত খাবার খেতে হবে।
- যেসব খাবারগুলো আপনার গ্যাস্টিক সমস্যা তৈরি করে সেই ধরনের খাবারগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে।
- রাতে ঘুমাতে যাওয়ার তিন-চার ঘন্টা আগে খাবার খেয়ে নিতে হবে।আপনি যদি এগারোটার দিকে ঘুমাতে যান তাহলে ৮ টার আগে খাবার খেয়ে নিতে হবে।
- রাতে ঘুমানোর সময় কোমরের চেয়ে মাথা ও বুক ১০ থেকে ২০ সেন্টিমিটার উঁচুতে রাখতে হবে।
- ওজন বেশি হলে তা কমানোর চেষ্টা করতে হবে।
- ধূমপান যদি ছেড়ে দেন তাহলে আপনার এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকাংশই কমে যাবে।
অতিরিক্ত দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস্ট্রিক এর লক্ষণ
- মসলাদার ও তৈলাক্ত খাবার খেলে বুক ও পেটের মাঝখানে জ্বালাপোড়া করে এবং টক ঢেকুর উঠে।
- পেটের কোথাও কোথাও ব্যথা অনুভূত হয় এবং বুকের মাঝখানে ব্যথা হয় এবং অস্বস্তি লাগে।
- বমি বমি ভাব অনুভূত হয়।
- খাবারের পর পেট ফেঁপে যায় এবং অতিরিক্ত গ্যাস বের হয়।
- খাবারে অরুচি ভাব আসে।
- অধিকাংশ খাবার খেলে বুক জ্বালা করে।
- দুর্গন্ধযুক্ত ঢেকুর উঠে।
পায়খানার গন্ধ দূর করার উপায়
নীচে যে খাবার গুলোর নাম দেওয়া হলো তা যদি আপনারা নিয়মিত ও পর্যাপ্ত খেতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনারা সারা জীবন সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবেন।
আরোও পড়ুনঃ কোমল পানীয় এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জেনে নিন
আমাদের দেশে এই খাবারগুলো খুব সহজেই পাওয়া যায় এবং দামেও মোটামুটি সস্তা হওয়ায় আপনারা অবশ্যই এগুলো নিয়মিত খাবেন।তাহলে আপনার পায়খানা থেকে দুর্গন্ধ বের হবে না।
পানি: প্রতিদিন অন্তত ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করুন এই পানি পাকস্থলীতে গ্যাস জমতে দেয় না। তাই গ্যাসমুক্ত থাকতে হলে প্রতিদিন পানি পান করতে হয়।
টমেটো: টমেটোতে আছে পটাশিয়াম যা শরীরের সোডিয়ামের ভারসাম্য রক্ষা করে যার ফলে পেট ফাঁপা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
কলা: কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এই পটাশিয়াম রক্তের সোডিয়ামকে নিয়ন্ত্রণ করে ফলে পেটে গ্যাস উৎপাদন হয় না। তাই কারো যদি পেটে গ্যাস হয় তাহলে সে একটি কলা খেয়ে নিতে পারে। এছাড়া কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সারাদিনে অন্তত দুইটি কলা খাওয়া যেতে পারে।
আনারস: আনারস গ্যাস মুক্ত রাখতে অত্যন্ত কার্যকর একটি ফল। আনারসে আছে ব্রোমিলিন নামে এক ধরনের অ্যান্টি অ্যাসিড এজেন্ট যা আমাদের পেট ফাঁপা রোদে সহায়তা করে এবং গ্যাস হওয়া থেকে মুক্তি দেয়।
শসা: শসা খুব ঠান্ডা একটি খাবার। এটিতে রয়েছে ফ্লেভালয়েড ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাস উৎপাদন হতে বাধা দেয়।
পেঁপে:নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলে গ্যাসের প্রবনতা কমে যায়।এবং হজম শক্তি বাড়ায়। পেঁপেতে পাপায়া নামক এক ধরনের এনজাইম রয়েছে।
দই: দইয়ে আছে প্রচুর পরিমাণে উপকারী ব্যাকটেরিয়া। এইসব ব্যাকটেরিয়া আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে কার্যকর রাখতে সহায়তা করে ফলে পেট ফাঁপা দূর হয় ও গ্যাস হওয়া রোধ করে।
ঠান্ডা দুধ:পাকস্থলীর গ্যাস্ট্রিক এসিডকে দূর করে এই ঠান্ডা দুধ। এক গ্লাস ঠান্ডা দুধ পান করলে এসিডিটি থেকে দূরে থাকা যায় তবে কারো যদি আমআশা থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে এড়িয়ে চলাই ভালো।
মাঠা: পেটের গ্যাস প্রতিরোধে মাঠা একটি অতি কার্যকর খাবার। এতে রয়েছে ল্যাকটিক অ্যাসিড যা পেটের গ্যাসের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং পেট ফাঁপা থেকে মুক্তি দেয়।
আদা: আদাতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও আন্টি ইনফ্লেমেটরি এজেন্ট যা পাকস্থলীর সুস্বাস্থ্যের জন্য আদার ভূমিকা অনস্বীকার্য,আদার মধ্যে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান আছে যা পাকস্থলী ও খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে। আদা কুচি করে তা মুখে রেখে চিবিয়ে খাওয়া যেতে পারে
এতে করে বমি বমি ভাব দূর হয় এবং বদহজম দূর করতেও আদা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে এক টুকরো আদা খেলে তা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের মত কাজ করে।
কাঁচা হলুদ: কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেলে পেট ফাঁপা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যদি কাঁচা হলুদ খেতে অসুবিধা হয় তাহলে আদার মতো কাঁচা হলুদ ছিলে পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি খাওয়া যেতে পারে।
দারুচিনি:পানিতে ১/২ চা চামচ দারুচিনির গুড়া ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে।তারপর দিনে ২ থেকে ৩বার এই পানি খেলে পেট গ্যাসমুক্ত হয়।
জিরা: জিরা পেটের গ্যাস নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত চমৎকার কাজ করে। পাকস্থলীতে যে এসিড হয় জিরা তাকে নিরপেক্ষ করে পেটের ব্যথা দূর করে এবং খাবার হজমে জিরা বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এক গ্লাস পানিতে সামান্য জিরার গুড়া মিশিয়ে বা ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে প্রতিবেলা খাবার পর খেতে পারেন।
লবঙ্গ: পেটে যদি গ্যাস অনুভূত হয় তাহলে দুই তিনটি লবঙ্গ মুখের মধ্যে দিয়ে চিবিয়ে খাওয়া যেতে পারে এতে একদিকে বুক জ্বালা ও বমি বমি ভাব দূর হয়। ফলে পেট গ্যাসমুক্ত হয় সাথে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।
রসুন: তিন চারটি রসুনের কোয়া ভালোভাবে ধুয়ে দুই কাপ পানিতে ৫ মিনিট ফুটিয়ে তৈরি করা যেতে পারে রসুনের চা যা খুব দ্রুতই এই সমস্যা থেকে উদ্ধার পাবেন।
এলাচ: এলাচের চা অত্যন্ত সুস্বাদু একটি চা,এই চা খেলে পেটে গ্যাস দূর হয়, কারণ এলাচের মধ্যে রয়েছে পাকস্থলীতে গ্যাস উৎপাদনকারী এসিডের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা।এটা লবঙ্গের মতো করে চিবিয়েও খাওয়া যায়।
পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতা আপনার পেটের অম্লতা দুর করে গ্যাস ও বমি বমি ভাব থেকে সাথে সাথে রক্ষা করে। এক কাপ পানিতে কয়েকটি পুদিনা পাতা দিয়ে সেদ্ধ করে দিনে অন্তত দুই তিনবার পান করা যেতে পারে।পুদিনা পাতার পানি যদি খেতে না পারেন তাহলে পুদিনা পাতার পানির সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন এতে আপনার গ্যাসের প্রবনতা কমে যাবে।
পেয়ারা পাতা: পেয়ারা পাতা ফুটিয়ে পানি ছেকে নিয়ে যদি সেই পানি পান করেন তাহলে গ্যাস মুক্ত থাকবেন সারাদিন।
মৌরির পানি: মৌরিকে পানিতে ভিজিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর সেই পানি কে ছেঁকে নিয়ে যদি দিনে দুই থেকে তিনবার এই পানি খাওয়া যায় তাহলে আপনি গ্যাস মুক্ত থাকতে পারবেন।
আলু: রাতের বেলা আলুকে ভালোভাবে ছিলে কয়েক টুকরো করে তা লবণ দিয়ে পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে যদি সেই পানি খাওয়া যায় তাহলে গ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
জাওন: জাওন গ্যাস প্রতিরোধে অতি কার্যকর ভূমিকা পালন করে।কোন খাবার খাওয়ার পরে যদি এক চিমটি জাওন খাওয়া যায় তাহলে তার পেটের মধ্যে কোন গ্যাস উৎপাদন হবে না। কারণ খাওয়ার পর পেটের মধ্যে যে হাইড্রোক্লোরিক এসিড উৎপাদিত হয় ।জাওন ঐ এসিডকে দমন করতে ব্যাপক কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
আপেল সিডার ভিনেগার: ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ২ চামচ ভিনেগার দিয়ে প্রতিদিন পান করলে গ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
বেকিং সোডা: আপনি যদি ১ গ্লাস পানিতে ১/৪ চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে পান করেন তাহলে তা গ্যাস প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
কি খেলে পাদে গন্ধ হয়
পাকস্থলীতে থাকা খারাপ বায়ু বিশেষ প্রক্রিয়ায় পায়ুপথ দিয়ে নির্গত হয় তাকে পাদ বলে।পেটকে চাপমুক্ত করতে পাদের গুরুত্ব অপরিসীম। মলত্যাগের আগে বা পরে এটি মানবদেহের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।বিশেষজ্ঞদের মতে পাদ সাধারনত ২ প্রকার যথা:ঠাস পাদ ও ফুস পাদ।
আরোও পড়ুনঃ
আমরা যে খাবারগুলো খায় তা থেকে হাইড্রোজেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, মিথেন ,হাইড্রোজেন সালফাইড ও অ্যামোনিয়া গ্যাস উৎপন্ন হয় যার পাদে গন্ধ বের হয়।
যে খাবারগুলো খেলে পাদে গন্ধ হয়
- সাধারনত দুধ ও দুধের তৈরি খাবার খেলে পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস সৃষ্টি হয়।
- শিম, ব্রকলি, বরবটি, ফুলকপি, গাজর, মুলা, কচুর লতি, ডাল বেশি খেলে পেটে গ্যাস তৈরি হয় ফলে পাদে ব্যাপক গন্ধ হয়।
- ম্যানিটল, সরবিটল,জেরুজালেম আর্টিকোজ, মিষ্টি আলু, মল্টোজ, ল্যাক্টোজ এগুলো কার্বহাইড্রেটযুক্ত খাবার যা পাদে গন্ধ সৃষ্টি করে।
- পেঁয়াজ, রসুনে রয়েছে উচ্চমাত্রার সালফার যা কাঁটা অবস্থায় খেলে পেটে সালফার ডাই অক্সাইড তৈরি হয়। ফলে পাঁদে ব্যপক গন্ধ বের হয়।
- রাতের বেলা যদি ডাল, কাাঁচা ফল ও শাকসবজি খান তাহলে বৃহদন্ত্রে প্রচুর গ্যাস উৎপাদন হয় যা খুব দুর্গন্ধযুক্ত।
- নানা ধরনের ফাস্টফুড খাবার যেমন:বারগার, পিজ্জা, হটডগ তেলে ভাজা খাবার যেমন:বেগুনী, পেঁয়াজু, বিভিন্ন ধরনের বড়া, পিঠা খেলে পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস তৈরি হয় যা খুব দুর্গন্ধযুক্ত।
- যারা সবজি খায় তাদের তুলনার যারা বেশী মংস খায় তাদের পাদের গন্ধ খুব বেশী কারন মাংশ একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার,আর এই প্রোটিন পেটে ব্যাপক দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপাদন করে।
- অতিরিক্ত চা, কফি পান করলে পেটে হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে ফলে পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপাদন হয়।
- প্রতিদিন একটির বেশী ডিম খেলে তা পেটে সালফার ডাই অক্সাইড উৎপাদন করে যা খুব দুর্গন্ধযুক্ত।
- অতিরিক্ত পরিমানে চিনা বাদাম খেলে পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপাদন হয়।
- যারা বিয়ার নিয়মিত পান করেন তারা বায়ু ত্যাগ করলে প্রচন্ড দুর্গন্ধ বের হয়।কারন বিয়ার বৃহদন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে।
- রাতে ঘুম কম হলে সাধারনত হজমে সমস্যা হয় এবং হজমে সমস্যা হলে পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপাদিত হয়।
- সাধারনত যাদের খাবার খেলে বদহজম হয় ও এসিডিটির সমস্যা আছে তাদের পাদে ব্যাপক গন্ধ বের হয়।
- আপনারা খাদ্য গ্রহনের সাথে সাথে পানি খাবেন না কারন সাথে সাথে পানি খেলে হজমে ব্যাঘাত ঘটে।আর হজমে ব্যাঘাত ঘটলে পেটে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস তৈরি হয়।তাই খাওয়ার অন্তত ২০ মিনিট পর পানি পান করবেন।
- কোষ্ঠকাঠিন্য হলে বৃহদন্ত্রে দীর্ঘক্ষন মল জমা থাকে ফলে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপাদন হয়।
- দীর্ঘক্ষন ধরে চুইংগাম চাবালে স্ট্র দিয়ে পানীয় পান করলে ও ধুমপান করলে পেটে প্রচুর বাতাস প্রবেশ করে যা খুবই দুর্গন্ধযুক্ত।
দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায়
আমরা যদি একটু খেয়াল করে দেখি তাহলে দেখতে পাবো প্রত্যেক ঘরে এক পাতা করে গ্যাসের ওষুধ রয়েছে। একগাদা ওষুধ খাওয়ার পরেও এই সমস্যা থেকে আমরা মুক্তি পাচ্ছি না। বিভিন্ন কারণে আমাদের পেটে গ্যাসের সমস্যা হয়ে থাকে ,যেগুলো নিয়ে আর্টিকেলটিতে নিম্নে দেওয়া হলো।
- প্রথমে আপনাকে তেল মশলা যুক্ত খাবার ত্যাগ করতে হবে ।যদি খেতেই হয় তবে অল্প পরিমাণে খাবেন।
- কখনোই কাঁচা ছোলা খেতে পারবেন না কারণ কাঁচা ছোলা একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যা পেটের গ্যাস উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
- কচু জাতীয় তরকারি যেমন মুখী কচু এটা খাওয়া যাবে না কারণ এটি গ্যাস্ট্রিককে বাড়িয়ে দেয়।
- শীতকালীন সবজির মধ্যে মুলা খাওয়া পরিহার করতে হবে কারণ এই মূলা খেলে পেট ফেঁপে যায় এবং পেটে গ্যাস হয়।
- বিভিন্ন ধরনের ডাল জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে যেমন সয়াবিন ,ছোলা বুট ,এই জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন সুগার ফাইবার থাকে যা সহজে হজম হতে চায়না ফলে পেটে গ্যাসের সমস্যা হয়।
- শীতকালীন আরো কিছু সবজি যেমন পাতাকপি ,ব্রকলি এই জাতীয় সবজি পরিহার করতে হবে।
- লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ লবণে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম থাকে যা হজম প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়।
- চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে কারণ চর্বিযুক্ত খাবারের প্রচুর প্রোটিন থাকে যা পেটে গ্যাস উৎপাদন করে।
- বাদাম ও মটরশুটি খাবার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে কারণ এই দুটি খাবারে পেটে গ্যাস উৎপাদন হয়।
মুখে দুর্গন্ধ কিসের লক্ষণ
আমাদের প্রত্যেকের মুখে নিজস্ব কিছু গন্ধ আছে, গবেষকগন বলেন নিঃশ্বাসের গন্ধে যদি অস্বাভাবিকতা পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে আপনার শরীরে কোন না কোন রোগ বাসা বেধেছে। আমাদের জিহ্ববার পেছনে, গলা ও টনসিলে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যার নাম অ্যানারোবিক ব্যাকটেরিয়া যা মুখের দুর্গন্ধের জন্য দায়ী।
এই ব্যাকটেরিয়া আমাদের খাবারে থাকা প্রোটিনকে ভেঙ্গে নিজের খাবারে পরিনত করে।কিন্তু আপনি যদি রোগাক্রান্ত হন তাহলে এই ব্যাকটেরিয়া তার স্বাভাবিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারেনা। ফলে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির মুখ নিয়ে নির্দিষ্ট একটি রাসায়নিক গন্ধ পাওয়া যায়।
- আপনি যদি টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন তাহলে আপনার মুখ থেকে অ্যামোনিয়ার গন্ধ বের হবে।কারন এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে ইনসুলিনের অভাবে শরীর শর্করাকে শক্তিতে রুপান্তরিত করতে না পেরে তা শরীরের চর্বিকে ভেঙ্গে ফেলে যা কিটোন নামে এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান তৈরি করে যা মুখে ও ইউরিনে ঝাঁঝালো গন্ধ তৈরি হয়।
- ঠান্ডাজনিত সমস্যা হলে বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারনে মাথা ব্যাথা হয়ে থাকে।ফলে নাক ও গলায় শ্লেষ্মা জমা হয় যাতে ঘন প্রোটিন থাকে। যেসব প্রোটিনকে শরীর ভাঙতে পারেনা ঐ সব প্রোটিন থেকে কর্পুরের মতো গন্ধ বের হয় যা মুখ দিয়ে বের হয়ে আসে।
- কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারের চেয়ে যদি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া তাহলে মুখ দিয়ে টক দুধের মতো গন্ধ বের হয় যা পেষ্ট বা মাউথওয়াশ ব্যবহার করলেও দুর হয় না।
- টনসিলজনিত সমস্যা ও অনেকটা বিরল হলেও কিছু ক্ষেত্রে লিভার সিরোসিস হলে জিহ্ববার পেছনে থাকা অ্যানারোবিক ব্যাকটেরিয়া খাবারের প্রোটিনকে ভাঙতে পারে না। কারন টনসিলের মধ্যে থাকা সালফার তৈরিকারী ব্যাকটেরিয়া প্রোটিনকে ভাঙতে বাধা প্রদান করে।ফলে সালফারের গন্ধ মুখ দিয়ে বের হয়।
- গলা শুকিয়ে যাওয়া বা জেরোস্টোমিয়া রোগে আক্রান্ত হলে মুখে পর্যাপ্ত লালা উৎপাদন হয় না ফলে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয় ও মুখে কটু গন্ধ করে।
- কিডনিজনিত রোগ হলে সাধারনত পেটে নাইট্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়। এই নাইট্রোজেন গ্যাসের কারনে মুখ থেকে মাছের আঁশটে গন্ধ বের হয়।
- মাড়ির সংক্রমন হলে অ্যানারোবিক ব্যাকটেরিয়া সঠিকভাবে কাজ করতে পারেনা ফলে নষ্ট হওয়া দেহকোষ থেকে মল বা বিষ্ঠার মতো গন্ধ মুখ দিয়ে বের হয়।
লেখকের শেষকথা
উপরের বিস্তারিত আলোচনা থেকে নিশ্চয়ই আপনারা জেনে গেছেন কি খেলে পাদে গন্ধ হয় সে সম্পর্কে। এছাড়া আরোও জানতে পেরেছেন উপরোক্ত সমস্যাগুলো সমাধান কল্পে আমাদের কি ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে।উপরের আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।
যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।
সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়
comment url