জামের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারীতভাবে জেনে নিন
ডায়াবেটিস রোগীর কাঁচা সজনে পাতার উপকারিতাবন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে জামের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। জাম এমন একটা ফলের গাছ যার কোন অংশ বাদ যায় না।জাম খেতে সুস্বাদু, জামের বিচি, ফুল,পাত ও ছাল দিয়ে নানা ধরনের ওষুধ তৈরি করার কাজে ব্যবহৃত হয়।জামের বিচি সংরক্ষন করে রেখে তা গুঁড়ো করে নিয়মিত খেলে শরীর থাকবে রোগমুক্ত।
ভুমিকা
আজকের আর্টিকেলটি যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন জামের উপকারিতা ও অপকারিতাগুলো কি কি।আরোও জানতে পারবেন কিভাবে জামের বিচি গুঁড়ো করে খেতে হয়। এছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে জামের বিচির বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে যা আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হয়েছে। আরোও আলোচনা করা হয়েছে আম ও তেঁতুলের বীজ চুর্নের উপকারিতা নিয়ে।
জামের উপকারিতা ও অপকারিতা
গ্রীষ্মের ফলগুলোর মধ্যে জাম খুব সুস্বাদু একটি ফল।জাম বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিতে ভরপুর। আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানেননা জামের উপকারিতা সম্পর্কে।জাম খেলে অনেক ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।জাম বমি বমি ভাব খাবারে অরুচি ইত্যাদি নিরাময়ে জামের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জামে প্রচুর পরিমাণে শর্করা ,আমিষ ,ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন সি ,ক্যারোটিন রয়েছে।
এই ফল শরীরের হাড়কে মজবুত করে ডায়রিয়া ও আলসার নিরাময় করতে সহায়তা করে । জাম ত্বককে ভালো রাখে স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে জামের মধ্যে এমন এক ধরনের নির্যাস আছে যা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে।এই ফলটি যদি আপনি নির্দিষ্ট পরিমানে খেতে পারেন তাহলে আপনার গ্রোথ হরমোন বৃদ্ধি পাবে।
ফলে ফিগার হবে সুস্থ, সবল ও সুঠাম।
উপকারিতা
- জামে উচ্চমাত্রার পটাসিয়াম রয়েছে। আর এই পটাসিয়াম হৃদস্পন্দনকে স্বাভাবিক রাখে।হার্টের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর ভুমিকা পালন করে। পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সহায়তা করে।ফলে ব্রেন স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমে যায়।
- গবেষকরা বলছেন যারা ধুমপান করেন তাদের ফুসফূস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। জাম খেলে এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব হয়।
- এই ফলটি অ্যান্টি-অষ্কিডেন্ট সমৃদ্ধ যা ফ্রি র্যাডিক্যাল কোষগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করে।ফলে ক্যান্সারের ঝঁকি কমে যায়।জামের মধ্যে সায়ানিডিন নামক এক ধরনের নির্যাস রয়েছে যা কোলন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে।
- জামের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, মিনারেল ও খনিজ পদার্থ থাকায় তা বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলে।
- জামের মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য েএবং ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন গঠনে সাহায্য করে এবং ত্বককে কোরে তোলে মসৃন ,উজ্জল, ঝলমলে ও প্রানবন্ত।
- জামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমানে জিঙ্ক ও ভিটামিন সি শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন জটিলতা নিরোসনে ও হাঁপানি থেকে রক্ষা করে।
- এর মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দাঁত ও মাড়ির সুস্থতায় কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
- এর মধ্যে থাকা পলিফেনল অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে ও ফ্রি র্যাডিকেল নানাবিধ ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- জামে রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন যা রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং রক্তশুন্যতা থেকে মুক্তি দেয়।
- জাম উচ্চ ফাইবারযুক্ত ও কম ক্যালোরির একটি ফল। এটি খেলে ক্ষুধা নিবারন হয় কিন্তু ওজন বৃদ্ধি পায়না।
- জামে গ্লাইসেমিক সুচক কম থাকায় তা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব উপকারী।সাধারনত যারা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের ঘন ঘন প্রসাব লাগে ও গলা শুকিয়ে যায়।এই সমস্যাগুলো মোকাবিলায় জাম খুব কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
- জামে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি আছে যা হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
- প্রচন্ড গরমে আইসক্রিমের বদলে জাম খাওয়া উচিত। কারন জামের মধ্যে ফসফরাস ও আয়োডিন থাকায় শরীরকে আর্দ্র রাখে।তাই প্রতিদিন ১০০ গ্রাম জামে জুস করে খেতে পারেন।
- জামের মধ্যে থাকা অক্সালিক এসিড, গ্যালিক এসিড, ম্যালিক এসিড, ট্যানিন, বেটুলিক এসিড ইনফেকশন দুর করতে সহায়তা করে। এছাড়া দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং মুখের দুর্গন্ধ দুর করতে সহায়তা করে।
অপকারিতা
যদিও জাম ফলটিতে উপকারের পরিমান বেশী তারপরেও এই ফলটি খাওয়ার আগে কিছু সর্তকতা অবলম্বন করতে হয়।জাম খাওয়ার আগে ফলটিকে অবশ্যই খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।প্রতিদিন ১০০ গ্রামের উপর কখনই জাম খাবেন না। খালি পেটে জাম খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, বুক জ্বালাপোড়া ও বদহজমের সমস্যা হতে পারে।
পুষ্টিবিদগন বলেন জাম ও হলুদ কখনই একসাথে খাওয়া ঠিক নয়।জাম খাওয়ার আগে ও পরে দুই ঘন্টা দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার যেমন:মাখন, পনির, দই ইত্যাদি খাওয়া উচিত নয়।চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ডায়াবেটিস রোগী, গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জাম খাওয়া উচিত নয়।
জামের বিচি গুড়া খাওয়ার নিয়ম
জাম আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় ও সুস্বাদু একটি ফল। এই ফলটি যে আমরা শুধু রসনা তৃপ্তি মেটানোর জন্য খায় তা নয় এতে রয়েছে ব্যাপক পুষ্টিগুন। ইউরোপবাসীরা অনেক আগে থেকে জামের বীজের গুঁড়ার উপকারীতা সম্পর্কে জানে।জামের বিচির গুড়া ডায়াবেটিস রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া পাকস্থলী, প্লীহা ও যকৃতের শক্তি বৃদ্ধি করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়ার নিয়ম: ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জামের বিচির গুড়া টনিকের মত কাজ করে।জামের বিচির গুুঁড়া ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা ১ চামচ করে খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমে যায়। জামের বিচির গুঁড়া ১ মাস টানা খেতে হবে।তাহলে এর ফল ভালো পাবেন।তাই প্রতিদিন ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়ম করে এই জামের বিঁচির গুড়া খেতে হবে।
রক্ত আমাশায় রোগীদের খাওয়ার নিয়ম: জামের সকল অংশ যেমন:জাম ফল, জামের বিচি, জামের পাতা ও জামের ছাল সবই আমাদের রসনা তৃপ্তীকর, শরীরের জন্য উপকারী এবং তা ওষুধ হিসেবে খুব কার্যকর। তাই এর কোন অংশ বাদ দেওয়া যাবে না।
- জাম পাতার রস - ৩ চা চামচ
- ছাগীর দুধ - ৩ চা চামচ
উপরোক্ত মিশ্রনটি ভালোভাবে মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা খালি পেটে ৫ থেকে ৭ দিন খেলে রক্ত আমাশায় বন্ধ হয়ে যায়।
রক্তপাত সারাতে খাওয়ার নিয়ম: জামের সকল অংশ যেমন:জাম ফল, জামের বিচি, জামের পাতা ও জামের ছাল সবই আমাদের রসনা তৃপ্তীকর, শরীরের জন্য উপকারী এবং তা ওষুধ হিসেবে খুব কার্যকর। তাই এর কোন অংশ বাদ দেওয়া যাবে না।
- জাম পাতার রস - ৩ চা চামচ
- আমলকীর কচি পাতার রস - ৩ চা চামচ
- ছাগীর দুধ - ৩ চা চামচ
- মধু - ২ চা চামচ
উপরোক্ত মিশ্রনটি ভালোভাবে মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা খালি পেটে ১ থেকে ২ দিন খেলে রক্তপাত সেরে যাবে।
বমি রোধে খাওয়ার নিয়ম: জামের সকল অংশ যেমন:জাম ফল, জামের বিচি, জামের পাতা ও জামের ছাল সবই আমাদের রসনা তৃপ্তীকর, শরীরের জন্য উপকারী এবং তা ওষুধ হিসেবে খুব কার্যকর। তাই এর কোন অংশ বাদ দেওয়া যাবে না।
- জাম পাতার রস - ১ চা চামচ
- মধু - ১ চা চামচ
উপরোক্ত মিশ্রনটি ভালোভাবে মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা খালি পেটে ১ থেকে ২ দিন খেলে বমি বন্ধ হয়ে যায়।
শুক্রানু ঘন করতে খাওয়ার নিয়ম: জামের সকল অংশ যেমন:জাম ফল, জামের বিচি, জামের পাতা ও জামের ছাল সবই আমাদের রসনা তৃপ্তীকর, শরীরের জন্য উপকারী এবং তা ওষুধ হিসেবে খুব কার্যকর। তাই এর কোন অংশ বাদ দেওয়া যাবে না।
- জামের বিচির গুঁড়া - ৩ চা চামচ
- আমের আটির গুঁড়া - ৩ চা চামচ
উপরোক্ত মিশ্রনটি ভালোভাবে মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা ২ চা চামচ করে ১৫ দিন সেবন করলে বীর্য গাঢ় হয়।
দাঁত নড়া ও মাড়ির দুর্বলতায় খাওয়ার নিয়ম: জামের সকল অংশ যেমন:জাম ফল, জামের বিচি, জামের পাতা ও জামের ছাল সবই আমাদের রসনা তৃপ্তীকর, শরীরের জন্য উপকারী এবং তা ওষুধ হিসেবে খুব কার্যকর। তাই এর কোন অংশ বাদ দেওয়া যাবে না।
- সিদ্ধ করা জামের ছালের রস - ৩ চা চামচ
- আমলকীর কচি পাতার রস - ৩ চা চামচ
- আমের আটির গুঁড়া - ৩ চা চামচ
উপরোক্ত মিশ্রনটি ভালোভাবে মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা ৫থেকে ৭ দিন গড়গড়া করলে উপকার পাওয়া যায়।
যকৃতের দুর্বলতায় খাওয়ার নিয়ম: জামের সকল অংশ যেমন:জাম ফল, জামের বিচি, জামের পাতা ও জামের ছাল সবই আমাদের রসনা তৃপ্তীকর, শরীরের জন্য উপকারী এবং তা ওষুধ হিসেবে খুব কার্যকর। তাই এর কোন অংশ বাদ দেওয়া যাবে না।
- জাম পাতার রস - ৩ চা চামচ
- আমলকীর কচি পাতার রস - ৩ চা চামচ
- মধু - ২ চা চামচ
উপরোক্ত মিশ্রনটি ভালোভাবে মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা ভরা পেটে ২ থেকে ৩ চা চামচ ১৫ থেকে ২০ দিন খেলে যকৃতের দুর্বলতা দুর হয়।
পাকস্থলীর দুর্বলতায় খাওয়ার নিয়ম: জামের সকল অংশ যেমন:জাম ফল, জামের বিচি, জামের পাতা ও জামের ছাল সবই আমাদের রসনা তৃপ্তীকর, শরীরের জন্য উপকারী এবং তা ওষুধ হিসেবে খুব কার্যকর। তাই এর কোন অংশ বাদ দেওয়া যাবে না।
- জামের বিচির গুঁড়া - ৩ চা চামচ
- পেঁয়াজের রস - ১ টি
- ১ ইঞ্চি আদার রস - ১/২ টি
উপরোক্ত মিশ্রনটি ভালোভাবে মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা খাবারের মাঝামাঝিতে ১ চামচ করে ১৫ থেকে ২০ দিন খেলে পাকস্থলীর দুর্বলতা দুর হয়।
মেহ রোগে খাওয়ার নিয়ম: জামের সকল অংশ যেমন:জাম ফল, ফুল, জামের বিচি, জামের পাতা ও জামের ছাল সবই আমাদের রসনা তৃপ্তীকর, শরীরের জন্য উপকারী এবং তা ওষুধ হিসেবে খুব কার্যকর। তাই এর কোন অংশ বাদ দেওয়া যাবে না।
- জাম ফুল বাাঁটা - ২৪ গ্রাম
- মিসরি - ৪০ চা চামচ
উপরোক্ত মিশ্রনটি ভালোভাবে মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা খালি পেটে ২ থেকে ৩ চামচ ১ মাস খেলে মেহ রোগে আরাম পাওয়া যায়।
মাথার ঘা উপসমে খাওয়ার নিয়ম: জামের সকল অংশ যেমন:জাম ফল, জামের বিচি, জামের পাতা ও জামের ছাল সবই আমাদের রসনা তৃপ্তীকর, শরীরের জন্য উপকারী এবং তা ওষুধ হিসেবে খুব কার্যকর। তাই এর কোন অংশ বাদ দেওয়া যাবে না।
- জাম পাতার রস - ৩ চা চামচ
- জামের বিচির গুঁড়া - ৩ চা চামচ
- আমলকীর কচি পাতার রস - ৩ চা চামচ
উপরোক্ত মিশ্রনটি ভালোভাবে মিশিয়ে গোসল করার আগে মাথায় মেখে নিতে হবে। তারপর শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে ১০ থেকে ১৫ দিন ব্যবহার করলে ঘা শুকিয়ে যায় এবং মাথায় নতুন চুল গজায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে জামের বীজের ব্যবহার
গাছ থেকে পেড়ে আনা জামগুলোকে প্রথমে পরিষ্কার করে একটি পাত্রে রাখতে হবে।বীজগুলোকে ফল থেকে ছড়িয়ে নিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে তারপর একটি বোতলে ভরে রেখে দিতে হবে।এরপর একটি সুতি কাপড়ে বীজগুলোকে ছড়িয়ে ৩ থেকে ৪ দিন শুকিয়ে নিতে হবে।
ভালোভাবে শুকানোর পর উপরের পাতলা আবরন ছাড়িয়ে ভেতরের সবুজ অংশ বের করে নিতে হবে যাতে সবুজ অংশটিকে যেন খুব সহজেই আঙুলের চাপে ভেঙে ফেলা যায়।সবগুলো ভাঙ্গার পর আরোও ৩ থেকে ৪ দিন রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।এবার শুকনো বীজগুলোকে মিক্সিতে ভালো ভাবে গুঁড়ো করে নিতে হবে।গুঁরো করার পর চালনিতে চেলে নিতে হবে।
এরপর গুঁড়োগুলোকে এয়ার টাইট বোতলে ভরে রেখে দিন।এই গুঁড়ো এক গ্লাস পানিতে ১ চা চামচ মিশেয়ে প্রতিদিন সকালে খালে পেটে খেলে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকবে।
আম বীজ চূর্ণ খাওয়ার উপকারিতা
বর্তমানে নানা জাতের আম বাজারে পাওয়া যায়। সুস্বাদু এই আম পছন্দ করে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া খুব বিরল। আমের শাঁস খেতে যেমন খুব সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ঠিক তেমনি আমের বিচি বিভিন্ন রোগ সারানোতে ওষুধ হিসেবে ব্যাপক কার্যকর।
সম্প্রতি American Brown University এর গবেষকগন বলছেন অতিরিক্ত আম খেলে ডায়াবেটিস যেমন বৃদ্ধি পায় ঠিক আমের বিচিকে প্রক্রিয়া করে গুঁড়ো করে খেলে তা ডায়াবেটিস কমাতে সহযোগীত করে। আমের বিচিতে রয়েছে ম্যাঞ্জিফেরিন যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের খুব ভালো উৎস। আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের কোষকে ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে।
পেটের রোগ উপসমে:আপনাদের মধ্যে অনেকেই আসেন যারা দীর্ঘদিন ধরে পেটের অসুখে ভুগছেন যেমন: ডায়ারিয়া ও আমাশয়জনিত রোগ। এক্ষেত্রে আমের আঁটির গুঁড়ো রোগ সারাতে খুব কার্যকর ভুমিকা পালন করে।আমের আঁটির গুঁড়ো হালকা গরম পানিতে ১ চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে সকাল সন্ধ্যা ১ থেকে ২ সপ্তাহ খেলে পেটের সব ধরনের সম্যার সমাধান হবে।
কোলেষ্টরল নিয়ন্ত্রনে রাখতে: বর্তমানে আপনাদের মাঝে অনেকেই কোলেষ্টরলজনিত সমস্যায় ভুগছেন। তাই কোলেষ্টরল নিয়ন্ত্রন করতে আমের আঁটির গুঁড়া কার্যকর ভুমিকা পালন করে। আমের আঁটির গুঁড়ো গরম দুধের সাথে মিশিয়ে রাতের বেলা খাওয়ার পর খেতে হবে।এভাবে ১ থেকে ২ সপ্তাহ এটি খেলে কোলেষ্টরল নিয়ন্ত্রনে চলে আসবে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে: হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে আমের আঁটির গুঁড়ো খুব কার্যকর ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে হৃদরোগজনিত সমস্যা মারাত্মক আকার ধারন করেছে। সাধারনত রক্তে খারাপ কোলেষ্টরলের মাত্রা বেড়ে গেলে হার্টের রোগ হয়ে থাকে।তাই ১ চামচ আমের আঁটির গুঁড়ো প্রতিদিন খেতে পারলে রক্তে খারাপ কোলেষ্টরলের মাত্রা কমে যায় এবং হার্ট ভালো থাকে।
তেঁতুল বীজ চূর্ণ খাওয়ার উপকারিতা
তেঁতুল বাংলাদেশে খুব জনপ্রিয় একটি ফল।তেঁতুলের আচার আমরা প্রচুর পরিমানে খেয়ে থাকি। তেঁতুল এমন একটি ফল যে ফলের কোন কিছুই বাদ দেওয়া হয় না। কারন তেঁতুলের বিচি দিয়ে আমরা নানা ধরনের কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকি যার কারলে ভারত থেকে আমরা সম্প্রতি ৯০ মেট্রিকটন তেঁতুলের বিচি আমদানি করা হয়েছে।
- আমাদের দেশের পাটকল ও কাপড়ের মিল গুলোতে সুতা রং করতে তেঁতুলের বিচি ব্যবহার করা হয়। অনেকদিন ধরে তেঁতুলের বিচির ব্যবহার করা হয় সুতার রং টেকসই করার জন্য।
- কয়েল তৈরির কাাঁচামাল হিসেবে তেঁতুলের বিচি ব্যবহার করা হয়। স্থানীয় কয়েল উৎপাদনকারী উদ্যোক্তারা সাধারনত তেঁতুলের বিচি আমদানি করে থাকে।
- ইউনানী, আয়ুর্বেদ, অ্যালোপ্যাথিক ও হোমিও ওষুধ তৈরিতে তেঁতুলের বিচি ব্যবহার করা হয়।
- চোখের ড্রপ তৈরিতে তেঁতুলের বিচি ব্যবহার করা হয়।
- লিভার,পাকস্থলী সমস্যা সমাধানে ও গল ব্লাডারের সক্ষমতা বাড়াতে তেঁতুলের বিচি ব্যবহার করা হয়।
- গর্ভকালীন সময়ে বমি বমি ভাব ও মাথাঘোরা উপসমে তেঁতুলের বিচির শরবত খুব উপকারী ।
- তেঁতুলের বিচি গরম পানিতে ফুটিয়ে পরে গলিয়ে আঠা তৈরি করা হয় যা ছবি আঁকার কাজে ব্যবহার করা হয়।
- তেঁতুলের বিচি চুর্ন খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে, ওজন হ্রাসে সহায়তা করে, পেপটিক আলসার নিরাময় করে, হার্ট সুস্থ রাখে, ক্যান্সার প্রতিরোধে সহয়তা করে, ক্ষত নিমিষেই সারিয়ে দেয়, ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি করে, সর্দি, কাশি সারাতে সাহায্য করে, ও লিভারকে সুরক্ষিত রাখে।
লেখকের শেষকথা
আশা করছি ,উপরের আর্টিকেলটি আপনারা খুব ভালো মতো পড়েছেন। ফলে আপনারা জেনে গেছেন জাম ও জামের বিচির গুঁড়োর উপকারিতাগুলো নিয়ে এবং এটি নিয়মিত খেলে আপনি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবেন। উপরের আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।
যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।
সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়
comment url