ডাইনোসর বিলুপ্তির কারণ - ডাইনোসর বিলুপ্ত হয় কোন যুগে জেনে নিন

বন্ধুরা,আজকের আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে বর্ননা করা হয়েছে ডাইনোসর বিলুপ্তির কারণ সম্পর্কে।আরোও আলোচনা করা হয়েছে ডাইনোসর বিলুপ্ত হয় কোন যুগে। ডাইনোসর হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও ভয়ঙ্কর প্রানী। এক সময় পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রজাতির ডাইনোসর বসবাস করতো এদের মধ্যে কতিপয় ছিলো মাংসাশী আর কিছু ছিলো তৃনভোজী।
ডাইনোসর বিলুপ্তির কারণ - ডাইনোসর বিলুপ্ত হয় কোন যুগে

ভুমিকা

আজকের আর্টিকেলটি যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন কি কারনে ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়েছিলো, কত বছর আগে ডাইনোসর পৃথিবীতে ছিলো, বিলুপ্ত হয় কোন যুগে।উল্কাপিন্ড আঘাত হানার আগ পর্যন্ত তাদের অবস্থা কেমন ছিলো অর্থাৎ তাদের শেষ দিনটা কেমন ছিলো। এছাড়া বিভিন্ন ডাইনোসরের নাম এবং ডাইনোসর সৃষ্টির ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবেন।

ডাইনোসর বিলুপ্তির কারণ

উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ডাইনোসরের প্রথম জীবাশ্ম পাওয়া যায়।এরপর পৃথিবীতে বিভিন্ন পর্বত বা শিলায় আটকে থাকা ডাইনোসরের কঙ্কাল ধীরে ধীরে আবিষ্কৃত হতে থাকে। ডাইনোসর হল আমাদের এই পৃথিবীর প্রাগৈতিহাসিক অধিবাসী। এরা প্রায় ১৬০ মিলিয়ন বছর পৃথিবীতে রাজত্ব করেছে। আজকে আমরা যে পাখিদের দেখি তা “থেরোপড ডাইনোসরদের” বংশধর বলে ধারণা করা হয়।
ডাইনোসরের প্রথম নামকরণ করেন স্যার রিচার্ড ওয়েন তিনি ছিলেন একজন পুরাজীববিদ। তবে এই ডাইনোসর নামটি গ্রিক ভাষা থেকে এসেছে যার অর্থ হল “ভয়ঙ্কর টিকটিকি” তৎকালীন ইংল্যান্ডে এবং পৃথিবী নানা অঞ্চল থেকে সেরিয়ান গোষ্ঠীর সরীসৃপদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল তাদের নির্দিষ্ট করতে এই শব্দটির ব্যবহার শুরু হয়।

স্যার রিচার্ড ওয়েন ডাইনোসরের নামকরণ করেছিলেন প্রধানত প্রাণীগুলোর আয়তনের কথা বিবেচনা করে। তবে ডাইনোসর প্রকৃত অর্থে গিরগিটি বা টিকটিকি জাতীয় কোন প্রানী নয় বরং এটি সরীসৃপ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত একটা আলাদা গোষ্টির প্রতিনিধি। ডাইনোসর প্রসারের যুগটিকে বলা হয় “মেসোজোয়িক যুগ”। তবে এই যুগটিকে ডাইনোসরের যুগও বলা হয়ে থাকে।

ডাইনোসরের যুগকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে
  • ট্রায়াসিক যুগ
  • জুরাসিক যুগ
  • ক্রিটেশিয়াস যুগ
বিভিন্ন যুগে ডাইনোসরের আকার আকৃতির পরিবর্তন হয়েছিল।ট্রায়সিক যুগ ছিলো ডাইনোসরদের জন্য খুবই প্রতিকুল যুগ, পরিবেশ ছিলো খুব প্রতিকুল। তখন সারা পৃথিবী ছিলো একটা মহাদেশ।

জুরাসিক যুগে এসে মহাদেশগুলো ভাঙতে থাকে ফলে ডাইনোসররা পরস্পর থেকে আলাদা হতে শুরু করে।ক্রিটেশিয়াস যুগে এসে মহাদেশগুলো একটা আকৃতি পায় এবং আবহাওয়া বদলে যেতে শুরু করে।

ডাইনোসর বিলুপ্ত যে কারণে হয়েছিলো

বর্তমানে আমরা যেসব পাখি দেখি তা সব থেরোপড ডাইনোসরদের জীবিত বংশধর। বিজ্ঞানীরা বলছেন কিছু ডাইনোসরের ডানা ছিলো যা দ্বারা তারা উড়তে পারতো।তাদের ঠোঁটগুলো ছিলো দাঁতহীন। এই ডাইনোসরগুলো উল্কাপিন্ডের আঘোতের পরেও বেঁচে গিয়েছিলো।যারা বেঁচে গিয়েছিলো তারা পরিবর্তিত পৃথিবীর জলবায়ুর সাথে খাপ খাইয়ে টিকে ছিলো যার বর্তমান রুপ এই পাখিরা।

উল্কাপাত

প্রধানত দুটি কারনে ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়েছে উল্কাপাত বা গ্রহানুর আঘাত ও আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত।পৃথিবীর বুকে প্রায় ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে বিশাল আকৃতির একটি গ্রহানু বা উল্কা আঘাত আনে। সেই উল্কার ব্যাস ছিলো ৫ থেকে ১৫ কিলোমিটার। এটি বায়ুমন্ডলের ঘর্ষনে পরিনত হয় জ্বলন্ত অগ্নিপিন্ডে। এই জ্বলন্ত অগ্নিপিন্ডে হাজার হাজার ডাইনোসর জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। 
ধ্বংশ হয়ে যায় লক্ষ লক্ষ বৃক্ষরাজি।এই উল্কাপিন্ডের প্রভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরু হয়।ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা হ্রাস পায়। ফলে শুরু হয় ঘুর্নিঝড় বা শুনামি। এর ফলে পৃথিবী হয়ে পড়ে প্রানশুন্য। দেখা দেয় প্রচন্ড খাদ্যাভাব। এতে করে খাদ্যের অভাবে ধীরে ধীরে মারা যেতে থাকে বিশাল আকৃতির এই প্রানীগুলো।

তবে বিষয়টা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।উল্কার আঘাতের আগে ডাইনোসরের অবস্থা কি রকম ছিলো অর্থাৎ তারা কি বিলুপ্তীর পথে ছিলো না প্রসার অবস্থায় ছিলো তা নিয়ে গবেষকরা নিশ্চিত নন। জীবাশ্মের উপর নির্ভর করে বিলুপ্তীর কারন নিশ্চিত করে বলা বেশ কঠিন।তাই বিজ্ঞানীরা কোনো নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি। 

অনেক গবেষক বলেন ডাইনোসরদের ৫০ মিলিয়ন বছর আগে থেকেই বিলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়।

Deccan Trap

Deccan Trap হলো মহাউপদ্বিপীয় মালভুমি, উপদ্বিপীয় মালভুমি বা দক্ষিনাত্যের মালভুমি। ভারতে এই Deccan Trap এর অবস্থান। ভারতের দক্ষিন ভাগের বেশীর অঞ্চল এই মালভুমির অর্ন্তগত। ১৯৮০ সালের পরে বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত ডাইনোসর বিলুপ্তির আরেকটি অন্যতম কারন।

গবেষকরা বলেছেন Deccan Trap এর কারনে পৃথিবীর বায়ুস্তর দুর্বল হয়ে পড়ে ফলে ৭ কোটি বছর আগে ব্যাসল্ট প্লাবন শুরু হয় যা ২০ লক্ষ বছর ধরে চলে।Deccan Trap এর কারনে বিভিন্নভাবে ডাইনোসর বিলুপ্ত হতে থাকে যেমন: ভু-আলোড়নের ফলে এই অঞ্চলের বাতাসে শুরু হয়েছিলো ছাই, ধুলো ও সালফারিঘটিত কুয়াশা যার প্রভাবে সুর্যরশ্মি পৃথিবীতে আসা বন্ধ হয়ে যায়। 
ফলে সালোক-সংশ্লেষন প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো এবং লাভা নির্গত হওয়ার ফলে তৈরি হয়েছিলো ব্যাপক কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস যা বায়ুমন্ডলে গ্রীন হাউসের প্রভাব বাড়িয়ে দিয়েছিলো। যার কারনে পৃথিবী গরম হয়ে উঠেছিলো।উক্ত কারনগুলোর কারনে এতো বিশাল আকৃতির প্রানী হওয়া সত্ত্বেও ডাইনোসর বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যায়।

ঐ সময় ৩৫ হাজার ঘনমিটার লাভা ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিনের মালভুমিতে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওজনস্তর।এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সময় লেগেছিলো প্রায় ১০ মিলিয়ন বছর।

তাপমাত্রা পরিবর্তন

বিজ্ঞানীরা মনে করেন ডাইনোসর বিলুপ্তির আরেকটি অন্যতম কারন হচ্ছে তাপমাত্রার পরিবর্তন।তারা তাপমাত্রার ভারসাম্যহীনতার কারনেও পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায়। ছোট আকৃতির ডাইনোসরগুলো নিজেদেরকে পাহাড়ের গুহার মধ্যে লুকিয়ে রাখতে পারলেও বড় ডাইনোসরগুলি তা করতে পারিনি।

আবার অনেক বিজ্ঞানীরা মনে করেন বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত কারনে রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আবার তুষার ঝড় ও ঠান্ডায় অনেক ডাইনোসর মারা যায়।এছাড়া দীর্ঘদিন প্রতিকুল পরিবেশের সাথে লড়তে গিয়ে তাদের যৌন স্পৃহা ও প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়।ডাইনোসরের কোনো কোনো প্রজাতি শুধুমাত্র প্রজনন ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারনে বিলুপ্ত হয়ে যায়।

অনান্য কারন

উল্কাপিন্ডের আঘাত ও আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত ছাড়াও ডাইনোসরের বিলুপ্তির পেছনে আরো কিছু কারন উৎঘাটন করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা ।ডাইনোসরদের মধ্যে কিছু ছিলো মাংসাশী আবার কিছু ছিলো তৃনভোজী।মাংশাসীরা তৃনভোজীদের খেয়ে ফেলতো।এক সময় দেখা গেলো তৃনভোজী ডাইনোসররা পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেছে। 
ফলে ব্যাপক খাদ্য সংকট দেখা দেয়। ফলে ডাইনোসররা বিলুপ্তির পথে চলে যায়। তবে এই যুক্তির পক্ষে বিপক্ষে বিজ্ঞানীদের মধ্যে দুটি মত আছে।কারন তাদের যুক্তি হচ্ছে এইটাই যদি হতো তাহলে শুধুমাত্র মাংশাসী ডাইনোসররা বিলুপ্ত হতোনা কারন তারা নিজেদের মেরে খাওয়ার সাথে সাথে অন্য প্রানীদের কেউ হত্যা করে খেয়ে ফেলতো এবং অন্য প্রানীগুলোও বিলুপ্ত হয়ে যেতো।

ডাইনোসর কত বছর আগে পৃথিবীতে ছিল

আপনাদের অনেকেরই ধারনা ডাইনোসর খুব বড়, হিংস্র ও বিলুপ্ত প্রানী।তবে পৃথীবিতে সব ধরনের গড়নের ও আকারের ডাইনোসর ছিলো।পৃথিবীতে আসা সকল প্রানীদের মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ এই প্রানী। কিন্তু এদের একটা বড় অংশ আকৃতিতে পাখির চেয়েও ছোট যা কবুতর বা মুরগীর মতো।২৩ থেকে ২৪ কোটি বছরের মধ্যে ডাইনোসরদের প্রথম আর্বিভাব ঘটে। 

প্রায় ১৬ কোটি বছর ধরে এরা পৃথিবীতে বিচরন করে। পাখি সদৃশ্য ডাইনোসররা প্রায় ৭ কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায়। তাদের একটি শ্রেনী মাত্র টিকে আছে। বিজ্ঞানীরা বলেন আধুনিক পাখিরা সকলে থেরোপড ডাইনসোরের সরাসরি বংশধর।

ডাইনোসরের শেষ দিন কেমন ছিল 

প্রায় ৭ কোটি বছর আগের একটি দিনে হাজার কিলোমিটার দুরে মহাকাশে ঘটে একটি ঘটনা যার প্রভাবে পৃথিবী চিরদিনের জন্য বদলে যায়। মহাশুন্যে একটি গ্রহানু বা উল্কাপিন্ড কক্ষচ্যুত হয়। প্রচন্ড গতিতে পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়ে। প্রায় ১২ কিলোমিটার প্রশস্ত উল্কা পিন্ডটি পৃথিবীতে প্রবেশের সাথে সাথে জ্বলে উঠে এবং তা মেক্সিকো উপসাগরে চিক্সচুলুব এলাকায় আছড়ে পড়ে। 

উল্কাপিন্ডটি মিনিটে ১ হাজার ৮০ কিলোমিটার গতিতে আঘাত হানে এই পৃথিবীতে। এটি যেখানে পড়ে সেখানকার ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার জুড়ে ৩০ কিলোমিটার গভীর খাদের সৃষ্টি হয়।উল্কাপিন্ডটি পড়ার সাথে সাথে বায়ুমন্ডলে প্রায় ৩২৫ গিগা টন সালফার ও প্রায় ৪২৫ গিগা টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছড়িয়ে পড়ে।যাতে পৃথিবীর তাপমাত্র হিমাঙ্কের নীচে নেমে যায়। 

চারিদিক জমে যায় এবং এই অবস্থা থাকে কয়েক বছর।এর প্রভাব সমুদ্রে থাকে কয়েক শতাব্দী ধরে। ফলে পৃথিবী থেকে ৪ ভাগের ৩ ভাগ গাছপালা ও প্রানী ধ্বংশ হয়ে যায়। ঘটে সুনামী যাতে ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটে এই পৃথিবী থেকে। 
বিজ্ঞানীদের একটি দল খনন কাজ পরিচালনা করার সময় দেখেন একটি জায়গায় মাছ, গাছপালা ও আরোও অনেক সামুদ্রিক প্রানীর জীবাশ্ম একসঙ্গে জট পাঁকানো অবস্থায় রয়েছে। তারা দেখেন মাছের ফুলকার মধ্যে মটর দানার মতো কি যেনো আটকে আছে। পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় এগুলোর বয়স প্রায় ৭ কোটি বছর।ঠিক এই সময়ে উল্কাপিন্ডটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছিলো। 

বিজ্ঞানীরা আরোও বলেন এখানে সুনমিও ঘটেছিলো।তবে এর উৎস নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন স্থানীয় কোনো পানির উৎস থেকে এর ঢেউ এসেছিলো। উল্কাপিন্ডের আঘাতে পৃথিবীতে ভুকম্পন সৃষ্টি হয় যা রিক্টার স্কেলে ১০ থেকে ১২ মাত্রার ছিলো।এতেই শুরু হয় সুনামি।

যাতে মিষ্টি পানির মাছ, স্থলের মেরুদন্ডী প্রানী, গাছের শাখা প্রশাখা, অন্যান্য সামুদ্রিক প্রানী সবকিছু একসাথে দলা পাকানো অবস্থায় ছিলো। তাই এই দিনটিকেই ডাইনোসরদের শেষ দিন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছে।

ডাইনোসর কিভাবে সৃষ্টি হয়েছিল 

এই পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত যতগুলো প্রানী এসেছে তার মধ্যে ডাইনোসর হলো সবচেয়ে বড় প্রানী। ডাইনোসররা মুরগীর আকার থেকে শুরু করে পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় আকৃতির প্রানী হিসেবে আধিপত্য বিস্তার করেছিলো। কিন্তু সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় আজ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা সঠিক তথ্য দিতে পারেন না তাদের জন্ম কিভাবে হয়েছিলো।

তবে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন ডাইনোসর কেবলমাত্র একটি প্রজাতির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো না,এটি ছিলো বিভিন্ন প্রজাতির জীবমন্ডল যার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রানী অর্ন্তভুক্ত ছিলো।বিজ্ঞানীরা যখন ডাইনোসর সম্পর্কে জানার চেষ্টা শুরু করলেন তখন থেকে বেশ কিছু আশ্বর্যজনক বিষয় সামনে চলে আসলো। 

পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় ডাইনোসরের নাম হলো “SILESAURIDS” এটি ছিলো চার পায়ের টিকটিকির মতো।যার উচ্চতা ছিলো খুব বেশী।বিজ্ঞানীরা ধারনা করেন এই জীব থেকেই পরবর্তীতে ডাইনোসরের উৎপত্তি হয়েছে।

ডাইনোসর বিলুপ্ত হয় কোন যুগে

প্রায় ১৫ কোটি বছর আগে ডাইনোসর ও স্তন্যপায়ী প্রানীরা একসাথে বসবাস করতো। আমরা সাধারনত এটাই ধারনা পোষন করে থাকি।কিন্তু ব্যাপারটা পুরোপুরি সঠিক নয়। অনেক ছোট ছোট প্রানী থাকতো ডাইনোসরের যুগে। এরা সাধারনত ছোট পোকা মাকড় ও সরীসৃপ প্রানীদের খেয়ে বেঁচে থাকতো।বড় স্তন্যপায়ী প্রানীদের আবির্ভাব ঘটে ডাইনোসরের বিলুপ্তির পর। 
ডাইনোসরদের বিলুপ্তির মুল কারন হচ্ছে পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারা। পৃথিবীতে এরা দাপটের সঙ্গে বেঁচেছিলো ১৫ কোটি বছর।যেটি আধুনিক মানুষের অস্তিত্বের তুলনায় ৭৫০ গুন বেশি। প্রাগৈতিহাসিক যুগে যে সরীসৃপগুলো ছিলো তা আজকের সরীসৃপগুলো থেকে বেশ আলাদা।আর এ জন্য বেশিরভাগ সরীসৃপকে আমরা ডাইনোসরের প্রকারভেদ মনে করে থাকি। 

ততকালীন সময়ে ৪০ প্রজাতির সরীসৃপ ছিলো যাদের ১০ শতাংশ ডাইনোসর।ডাইনোসরের আর্বিভাব ঘটেছিলো প্রায় ২৩ কোটি বছর পুর্বে।তবে ক্রিটেশিয়াস যুগের শেষের দিকে অর্থাৎ ৬ কোটি বছর পুর্বে একটি বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ডাইনোসররা পৃথিবী থেকে সম্পুর্নভাবে বিলুপ্ত হয়ে যায়।

বিভিন্ন ডাইনোসরের নাম 

আর্জেন্টিনায় সম্প্রতি ৩০ ফুট দীর্ঘ একটি ডাইনোসরের একটি জীবাশ্ম পাওয়া গেছে তাকে ছোট মাপের ডাইনোসর বলা হচ্ছে।বিজ্ঞানীরা বলছেন ঐ জীবাশ্মে পরিনত হওয়া দেহবশেষটি লম্বা গলার হওয়ায় এটি সাওরাপোডা গোত্রের ডাইনোসর হিসেবে বলা হচ্ছে যারা ১৪ কোটি বছর আগে ছিলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্থলচর প্রানী।মুলত উত্তর আমেরিকায় এদের বিচরন ছিলো। 

তবে বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন ডাইনোসরা ছিলো মন্থর গতি সম্পুর্ন, অল্প বুদ্ধি ও ঠান্ডা মেজাজের। কিন্তু পরবর্তীতে এই ধারনার পরিবর্তন ঘটে। ডাইনোসরদের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে কিছু মাংসাশী ও কিছু তৃনভোজী। এরা উচ্চতায় ছিলো ১০০ ফুট আবার অনেক ছোট আকারের অনেকটা মুরগীর সমান। 

৫০০ প্রজাতির ডাইনোসরের জীবাশ্ম আবিস্কৃত হয়েছে ও ১৮৫০ টির মত প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে।অর্থাৎ ৭৫ শতাংশ এখনো অনাবিস্কৃত অবস্থায় আছে। ডাইনোসরের বিচরন অ্যান্টার্কটিকা সহ সারা পৃথিবীর সব মহাদেশেই ছিলো।

ডাইনোসরের নাম
  • Saurischia : এই ডাইনোসরগুলো পুচ্ছদেশ সরীসৃপ এর মত ছিলো
  • Theropods : এরা ছিলো মাংসাশী
  • Sauropods : এদের গলা ছিলো খুব লম্বা। এরা লতা পাতা খেয়ে বেঁচে থাকতো।
  • Ornithischia : এদের পাখির মত ঠোঁট ছিলো।এরা লতা পাতা খেয়ে বেঁচে থাকতো।
  • Armoured dinosaurs : এদের পিঠে ছিলো বড় বড় হাড়।
  • Ornithopoda : এদেরকে “Duck- billed” ডােইনোসর বলা হতো।
  • Pachycephalosauria : এদের মাথা খুব শক্ত ছিলো ।

লেখকের শেষকথা

উপরের বিস্তারিত আলোচনা থেকে নিশ্চয়ই আপনারা জেনে গেছেন ডাইনোসর বিলুপ্তির কারন, কোন যুগে এরা বিলুপ্ত হয়েছিলো, কত বছর এরা পৃথিবীকে শাসন করেছিলো ও এদের সৃষ্টির ইতিহাস সম্পর্কে।
উপরের আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।

যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩