একদিনে ব্রণ দূর করার উপায় - তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায়
বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে একদিনে ব্রন দুর করার উপায় সম্পর্কে।আরোও আলোচনা করা হয়েছে তৈলাক্ত ত্বকের ব্রন দুর করা উপায়গুলো নিয়ে। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে মেয়েদের সাধারনত এই সমস্যা হয়ে থাকে।এছাড়া জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে যদি কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলেও এই সমস্যায় পড়তে পারেন।
ভুমিকা
আজকের আর্টিকেলটি যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে মুখের ব্রন দুর করবেন।ব্রনের বিরুদ্ধে লেবু কিভাবে কাজ করে।ব্রন হওয়ার জন্য ছেলে মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল, খাদ্যাভ্যাস ও অনিয়মিত জীবনযাত্রায় শুধুমাত্র দায়ী নয়,তৈলাক্ত ত্বকও মুখের ব্রনের জন্য সমানভাবে দায়ী।
তাই এই সমস্যাগুলো সমাধানকল্পে নীচে কিছু Tips & Tricks নিয়ে আলোচনা করা হলো।
মুখের ব্রণ দূর করার ঘরোয়া উপায়
ছেলে মেয়েদের যখন বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হয় তখন থেকে ত্বকে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। আপনার যদি মুখে ব্রণ হয় তাহলে ত্বকের সৌন্দর্য অনেকখানি ম্লান হয়ে যায়। ব্রনের কারনে মুখে কালো দাগ সৃষ্টি হয়।ফলে চেহারা খুবই কুৎসিত দেখায়।তৈলাক্ত ত্বক মুলত ব্রনের জন্য দায়ী।ব্রন দুর করার জন্য নানান ধরনের প্রসাধন সামগ্রী বাজারে পাওয়া যায়।
এই কেমিক্যাল যুক্ত প্রসাধন সামগ্রীগুলো ত্বকের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর।এগুলো ব্যবহারে ত্বকে কালচে দাগ পড়ে,ত্বক পুড়ে যায় এবং রুক্ষ হয়ে যায়।তাই আজকে আমি আপনাদের কিছু ঘরোয়া টিপস সম্পর্কে আলোচনা করবো যা নিয়মিতভাবে ব্যবহার করলে ত্বক থাকবে নরম কোমল তৈলাক্তহীন ব্রন মুক্ত ও উজ্জল।
হলুদ ও শশার স্ক্রাব: প্রাকৃতিক ভেষজ হিসেবে শশা ও হলুদ ত্বক ব্রনমুক্ত ফর্সা, কোমল ও মসৃন করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
- শশার রস - ৩ টেবিল চামচ
- হলুদ - ১/২ চা চামচ
- লেবুর রস-১ টেবিল চামচ
এই মিশ্রনটি ভালোভাবে মিশিয়ে হাতে ও পায়ে লাগিয়ে দিন।যখন দেখবেন শুকিয়ে গেছে তখন হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এইভাবে সপ্তাহে অন্তত ২ থেকে ৩ বার এই মিশ্রনটি ৩ মাস ব্যবহার করলে দেখবেন মুখের ব্রন দুর হয়েছে।
বেসন: ত্বক পরিষ্কারক হিসেবে বেসনের সুনাম রয়েছে বিউটিশিয়ানদের মধ্যে।আপনি যদি নিয়মিত বেসনের মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন তাহরে দেখবেন আপনার মুখের ব্রন কিভাবে নির্মুল হয়েছে।
- বেসন - ২ টেবিল চামচ
- হলুদের গুঁড়া - ১ চ চামচ
- কাঁচা দুধ বা গোলাপ জল - ২ টেবিল চামচ
- লেবুর রস - ৩ ফোটা
এই মিশ্রনটি ভালোভাবে মিশিয়ে হাতে ও পায়ে লাগিয়ে দিন।যখন দেখবেন শুকিয়ে গেছে তখন হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এইভাবে সপ্তাহে অন্তত ২ থেকে ৩ বার এই মিশ্রনটি ৩ মাস ব্যবহার করলে দেখবেন মুখের ব্রন দুর হয়েছে।
অ্যালোভেরা ও মধুর স্ক্রাব: অনেক প্রাচীনকাল থেকে ত্বকের যত্নে এবং ত্বককে ব্রনমুক্ত রাখতে অ্যালোভেরা ব্যবহার হয়ে আসছে।অ্যালোভেরাতে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি ত্বক থেকে মৃত কোষ বের করে দেয়।ফলে এটি ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ও ব্রনমুক্ত রাখতে অ্যালোভেরা জাদুর মত কাজ করে।
- অ্যালোভেরা জেল - ২ টেবিল চামচ
- মধু - ২ টেবিল চামচ
এই মিশ্রনটি ভালোভাবে মিশিয়ে হাতে ও পায়ে লাগিয়ে দিন।যখন দেখবেন শুকিয়ে গেছে তখন হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এইভাবে সপ্তাহে অন্তত ২ থেকে ৩ বার এই মিশ্রনটি ৩ মাস ব্যবহার করলে দেখবেন মুখের ব্রন দুর হয়েছে।
টক দই: টক দই মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে গোসল করার আগে হালকা ম্যাসাজ করুন। এই কাজটি পাঁচ থেকে দশ মিনিট ধরে তারপর হালকা গরম পানিতে ধুয়ে নিন।
- টক দই - ৩ টেবিল চামচ
- লেবুর রস - ১ চা চামচ
এই মিশ্রনটি একটানা ২ মাস ব্যবহার করুন,দেখবেন আপনার মুখে ব্রনের কালো ছোপ ছোপ দাগ দুর হয়েছে।
মধু টমেটোর স্ক্রাব: টমেটোর মধ্যে এমন কিছু এনজাইম আছে যা আপনার ত্বকের ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইট হেড কে তুলে ফেলে ত্বককে ব্রনমুক্ত, সুন্দর,মশৃন ও উজ্জল করে তোলে।
- টমেটোর রস - ৪ টেবিল চামচ
- Brown sugar -২ টেবিল চামচ
- মধু -১ টেবিল চামচ
এই মিশ্রনটি ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে দিন।যখন দেখবেন শুকিয়ে গেছে তখন হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এইভাবে সপ্তাহে অন্তত ২ থেকে ৩ বার এই মিশ্রনটি ৩ মাস ব্যবহার করলে দেখবেন মুখের ব্রন দুর হয়েছে।
পাকা পেঁপে: পাকা পেঁপে ত্বকে ব্রনের কালচে দাগ দূর করতে জাদুর মত কাজ করে। এটি ত্বকের কালচে ভাব দূর করে ত্বককে করে তুলে উজ্জ্বল, কোমল ও মশৃন।
- পেঁপে -১ টুকরা
- মধু -১ চা চামচ
- মুলতানি মাটির গুঁড়া -১ চা চামচ
- কমলার রস -২ চা চামচ
- লেবুর রস -১ চা চামচ
এই মিশ্রণটিকে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেষ্ট তৈরি করুন তারপর এই পেষ্টটি মুখে লাগিয়ে অন্ততপক্ষে ১০থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এই মিশ্রনটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ বার এটি ব্যবহার করলে ১ মাসের মধ্যে দেখবেন আপনার মুখ ব্রনমুক্ত হয়েছে।
আলু: আলুর রস ত্বকে ব্রনের কালচে দাগ দূর করতে জাদুর মত কাজ করে। এটি ত্বকের কালচে ভাব দূর করে ত্বককে করে তুলে উজ্জ্বল, কোমল ও মশৃন।
- আলু- ১ টা মাঝারি আকৃতির
- লেবুর রস-১ টেবিল চামচ
প্রথমে এই মিশ্রণটিকে ভালোভাবে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে একটি মাস্ক তৈরি করুন তারপর এই মাস্কটি হাত-পায়ে লাগিয়ে অন্তত ১৫ মিনিট রাখুন। এটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।সপ্তাহে অন্তত ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করলে দেখতে পাবেন আপনার মুখ ব্রনমুক্ত হয়েছে।
একদিনে ব্রণ দূর করার উপায়
আপনি যদি মানসিকভাবে সব সময় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকেন কিংবা রাত জেগে যেকোনো ধরনের কাজ করেন বা দিনের বেলা বেশিরভাগ সময় রোদের মধ্যে থাকেন তাহলে আপনার মুখে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি।এছাড়াও ১১থেকে ৩০বছর বয়সী প্রতি চারজনের মধ্যে একজন এই ব্রনের সমস্যায় ভোগেন। তবে একটু সচেতন হলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
মুলতানী মাটি: আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় তাহলে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। তাই মুলতানি মাটি আপনি ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমে দুই চামচ মুলতানী মাটি নিয়ে একটি বাটিতে রাখুন তারপর তাতে অল্প পরিমাণ পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেষ্টটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। এরপর শুকিয়ে গেলে হালকা কুসুম পায় গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
তাহলে দেখবেন সাথে সাথে আপনার মুখের ব্রণ চামড়ার সাথে মিশে গেছে।
কাঁচা হলুদ ও চন্দন কাঠের গুঁড়ো: কাঁচা হলুদ ও চন্দন কাঠের গুঁড়ো ব্রণ দূর করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। সমপরিমাণ কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো একত্রে মিশিয়ে তাতে পানি দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন তারপর পেষ্টটি ব্রণ আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। মিশ্রণটি শুকিয়ে গেলে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
দেখবেন শুধু ব্রণ নয় ব্রণের দাগ ও দূর হয়েছে।
টুথপেষ্ট: ব্রনের স্থানে টুথপেষ্ট লাগিয়ে কিছুক্ষন রাখুন।তারপর টুথপেষ্ট শুকিয়ে গেলে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন দেখবেন সাথে সাথে ব্রনের অস্তিত্ব হারিয়ে গেছে।
লেবু দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়
হরমোন জনিত সমস্যার কারণে মুখে ব্রণ হতে পারে।এছাড়াও হরমনের কোন অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন যদি হয়ে থাকে তাহলে মুখের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে যা ব্রণের জন্ম দেয়। তবে এই সকল ব্রণ দূর করা খুব একটা কঠিন কাজ নয়। ব্রণের দাগ দূর করতে লেবু জাদুর মত কাজ করে।লেবুর রসকে বলা হয় প্রাকৃতিক ব্লিচ।
লেবুর রস: প্রথমে একটি লেবুকে কেটে নিয়ে রস চিপে একটি বাটিতে রাখুন।তারপর একটি তুলোতে রস লাগিয়ে ব্রনের স্থানে চেপে কিছুক্ষন ধরে রাখুন।শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।লেবুর রস ত্বককে শুষ্ক করে দেয়।তাই এটি ব্যবহারের পর ময়শ্চারাইজার ব্রনের স্থানে লাগিয়ে দিবেন।
লেবুর রস ও মধুর মিশ্রন: লেবুর রস ও মধুর মিশ্রণ ব্রণ ভালো করতে ও মুখে ব্রণের দাগ তুলতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
- লেবুর রস - ১ চা চামচ
- মধু - ১ চা চামচ
এই মিশ্রণটিকে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রনটিকে মুখে লাগিয়ে অন্ততপক্ষে ১০থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এই মিশ্রনটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ বার এটি ব্যবহার করলে ২ মাসের মধ্যে দেখবেন আপনার মুখ ব্রনমুক্ত হয়েছে।
লেবুর রস ও অ্যালোভেরা: লেবুর রস ও অ্যালোভেরা মুখের ব্রন সারাতে ও ব্রনের কালো দাগ করতে জাদুর মত কাজ করে।
- লেবুর রস - ১ চা চামচ
- অ্যালোভেরা - ১ চা চামচ
এই মিশ্রণটিকে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রনটিকে মুখে লাগিয়ে অন্ততপক্ষে ১০থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এই মিশ্রনটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ বার এটি ব্যবহার করলে ২ মাসের মধ্যে দেখবেন আপনার মুখ ব্রনমুক্ত হয়েছে।
লেবুর রস ও ডিমের সাদা অংশ: লেবুর রস ও ডিমের সাদা অংশ ত্বককে টানটান, উজ্জল, মুখের ব্রন দুর করতে ও নরম কোমল রাখতে খুব কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
- লেবুর রস - ১ চা চামচ
- ডিমের সাদা অংশ - ১ চা চামচ
এই মিশ্রণটিকে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রনটিকে মুখে লাগিয়ে অন্ততপক্ষে ১০থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এই মিশ্রনটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ বার এটি ব্যবহার করলে ১ মাসের মধ্যে দেখবেন আপনার মুখ ব্রনমুক্ত হয়েছে।
লেবুর রস ও বেকিং সোডা: লেবুর রস ও বেকিং সোডা মুখে ব্রন ও ব্রনের দাগ দুর করতে সাহায্য করে।
- লেবুর রস - ১ চা চামচ
- বেকিং সোডা - ১ চা চামচ
এই মিশ্রণটিকে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রনটিকে মুখে লাগিয়ে অন্ততপক্ষে ১০থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এই মিশ্রনটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ বার এটি ব্যবহার করলে ১ মাসের মধ্যে দেখবেন আপনার মুখ ব্রনমুক্ত হয়েছে।
লেবুর রস ও নারিকেল তেল: লেবুর রস ও নারিকেল তেল মুখে ব্রন ও ব্রনের দাগ দুর করতে খুব কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
- লেবুর রস - ১ চা চামচ
- নারকেল তেল - ১ চা চামচ
এই মিশ্রণটিকে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রনটিকে মুখে লাগিয়ে অন্ততপক্ষে ১০থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এই মিশ্রনটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ বার এটি ব্যবহার করলে ১ মাসের মধ্যে দেখবেন আপনার মুখ ব্রনমুক্ত হয়েছে।
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায়
আমাদের প্রত্যেকের ত্বকের ছিদ্রের নীচে সেবেসিয়াস গ্রন্থি রয়েছে যা সেবাম নামে একটি প্রাকৃতিক তেল উৎপাদন করে।সেবাম নামে এই প্রাকৃতিক তেল আমাদের ত্বককে Hydrated ও স্বাস্থ্যকর রাখতে সহায়তা করে।কিন্তু কোন কারনে অর্থাৎ মানাসিক চাপ, দুশ্চিন্তা বা হরমোনের প্রভাবে এই গ্রন্থি যদি বেশি পরিমানে তেল উৎপাদন করে তাহলে ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায়।
কাজুবাদাম: কাজুবাদামের গুঁড়ো ত্বকের মৃত কোষ কে পরিষ্কার করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্বকের উপরিভাগে যদি অতিরিক্ত তেল থাকে তাহলে তা শুষে নেয়।
- কাজুবাদাম গুঁড়ো - ৩ চা চামচ
- কাঁচা মধু - ২ টেবিল চামচ
এই মিশ্রণটিকে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেষ্ট তৈরি করুন তারপর এই পেষ্টটি মুখে লাগিয়ে অন্ততপক্ষে ১০থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এই মিশ্রনটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ বার এটি ব্যবহার করলে ১ মাসের মধ্যে দেখবেন আপনার মুখ ব্রনমুক্ত হয়েছে।
ফরাসি সবুজ কাদামাটি: এটিকে কসমেটিক ক্লে বলা হয় যা ত্বকের তেল শোষন করতে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করে।
- কাদামাটি - ১ চা চামচ
- গোলাপজল - যতক্ষন না পর্যন্ত এটি পুডিংয়ের মত হয়
এই মিশ্রণটিকে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেষ্ট তৈরি করুন তারপর এই পেষ্টটি মুখে লাগিয়ে অন্ততপক্ষে ১০থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এই মিশ্রনটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ বার এটি ব্যবহার করলে ১ মাসের মধ্যে দেখবেন আপনার মুখ ব্রনমুক্ত হয়েছে।
ডিম শসা ও পুদিনার প্যাক: ডিমের সাদা অংশ তৈলাক্ত ত্বকের তৈলাক্ততা ভাব দূর করতে খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখে, ত্বককে রাখে টানটান। এছাড়া এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল অপসারণে সহায়তা করে।পুদিনা পাতার মধ্যে যে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে তা ব্রণ মুক্ত রাখতে সহায়তা করে।
এছাড়া শসা ত্বককে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে।
- ডিমের সাদা অংশ - ১ টেবিল চামচ
- শসার রস - ৩ টেবিল চামচ
- পুদিনা পাতার পেষ্ট - ১ চা চামচ
এই মিশ্রণটিকে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেষ্ট তৈরি করুন তারপর এই পেষ্টটি মুখে লাগিয়ে অন্ততপক্ষে ১০থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এই মিশ্রনটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ বার এটি ব্যবহার করলে ১ মাসের মধ্যে দেখবেন আপনার মুখ ব্রনমুক্ত হয়েছে।
কমলার ফেসপ্যাক: ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করতে কমলার খোসার জুড়ি মেলা ভার।
- কমলার খোঁসার গুড়া - ২ চা চামচ
- দুধ - ৪ চা চামচ
- কাঁচা হলুদ বাটা - ১ চা চামচ
- চালের গুঁড়া - ১ চা চামচ
- মসুর ডালবাটা - ১ চা চামচ
এই মিশ্রণটিকে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেষ্ট তৈরি করুন তারপর এই পেষ্টটি মুখে লাগিয়ে অন্ততপক্ষে ১০থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এই মিশ্রনটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ বার এটি ব্যবহার করলে ১ মাসের মধ্যে দেখবেন আপনার মুখ ব্রনমুক্ত হয়েছে।
পাকা কলার ফেসপ্যাক: পাকা কলা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে, ত্বকের কমনীয়তা বজায় রাখতে ও ত্বকের ব্রণ দূর করতে খুর কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এছাড়া লেবুর রস ত্বকের তেল তেলে ভাব দূর করতে সাহায্য করে। মধু হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা ত্বককে ব্রণ মুক্ত রাখতে ও ত্বকের ময়েশ্চারাইজ করতে সহায়তা করে।
- পাকা কলা - ১ টা
- লেবুর রস - ২ চা চামচ
- মধু - ১ চা চামচ
এই উপাদানগুলোকে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেষ্ট তৈরি করুন তারপর এই পেষ্টটি মুখে লাগিয়ে অন্ততপক্ষে ১০থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এই মিশ্রনটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ বার এটি ব্যবহার করলে ১ মাসের মধ্যে দেখবেন আপনার মুখ ব্রনমুক্ত হয়েছে।
ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায়
ব্রণ হল ত্বকের খুবই সাধারণ এবং যন্ত্রণাদায়ক একটি সমস্যা। মেয়েদের মধ্যে ব্রন হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। তবে ছেলেদেরও ব্রণ হয়ে থাকে। সাধারণত ত্বকের যত্নের অভাবে এবং সচেতনতার কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার অনেকে অবহেলা করে এই সমস্যাকে আরো জটিল করে দেয়। ফলে ত্বকের অবস্থা আরোও বেশি খারাপ হয়ে যায়।
যেখানে ব্রণ হয়েছে সেখানে সব সময় হাত দেয়া যাবে না। কারণ হাতে অনেক সময় অনেক ধরনের ময়লা জীবাণু থাকে যা ত্বকের লোমকূপ দিয়ে ত্বকের ভিতরে প্রবেশ করে। এভাবেই মূলত প্রাথমিকভাবে ব্রণ সৃষ্টি হয়। তাই মুখে সবসময় হাত দিবেন না যদি দিতেই হয় তাহলে হাত ভালো করে জীবাণু নাশক দিয়ে পরিষ্কার করে তারপর মুখে হাত দিন।
ব্রন সাধারণত মুখের ত্বকেই বেশি হয়ে থাকে তবে এটি ত্বকের যেকোনো জায়গায় হতে পারে বিজ্ঞানীরা গবেষনা করে দেখেছেন “প্রোপিওনিব্যাকটেরিয়াম” নামক ব্যাকটেরিয়ার কারনে এই ব্রন হয়ে থাকে। এই ব্যাকটেরিয়া ত্বকের প্রধান সৃষ্টি করে এবং ত্বকের মধ্যে যে সিবাম আছে তাকে ফ্যাটি এসি ডি পরিণত করে। প্রতিদিন ত্বকের মধ্যে অতিরিক্ত তেল ময়লা ও ঘাম ত্বকের ব্রণ সৃষ্টি করে।
তাই ত্বকের ব্রণ দূর করতে রাতের বেলা বাইরে থেকে আসার পর পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। এক্ষেত্রে ভালো মানের ফেসওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে।এই ফেসওয়াশে যেন অবশ্যই স্যালিসাইলিক এসিড ও বেনজয়েল পার-অক্সাইড পরিমান মত থাকে। আপনার ত্বক যদি ব্রণ হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে তাহলে খুব সতর্কতার সাথে শেভ করতে হবে।
শেভ করার আগে অবশ্যই রেজার গরম পানি দিয়ে ধুঁয়ে নিতে হবে এবং জীবানুনাশক দিয়ে জীবনমুক্ত করে নিতে হবে। শেভ করার সময় অবশ্যই ত্বকে ভালো মানের প্রি-শেভিং অয়েল বা শেভিং ক্রিম দুটোই ব্যবহার করতে পারেন। শেভ করার পরে অ্যালকোহল মুক্ত শেভিং লোশন ব্যবহার করা উচিত। কেউ এর পরিবর্তে অ্যালোভেরা জেল করতে পারেন।
সেভ করার পর অনেকের মুখে ছোট ছোট ফুসকুড়ি উঠে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে এই ফুসকুড়ি গুলো নিরাময় করা যায়। এছাড়াও অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার ও ভাজাপোড়া খেলে বা পানি কম খেলে,প্রচন্ড মানসিক চাপে থাকলে, ঘুম কম হলে ,কোষ্ঠকাঠিন্য হলে ব্রণ হতে পারে। তাই যেখানে ব্রণ হয়েছে সেখানে হাত দিয়ে খোঁটাখুটি করা যাবে না।
বেশিরভাগ সময় ব্রণ নিজে নিজে সেরে যায়। তারপর খেয়াল রাখতে হবে যেন কোষ্ঠকাঠিন্য না হয়, ভালো ঘুম হয়, পরিমাণ মতো পানি খেতে হবে, ভাজাপোড়া পারতপক্ষে না খাওয়াই ভালো এবং মানসিক চাপ যুক্ত থাকতে হবে।
মেয়েদের মুখে ব্রণ দুর করা উপায়
খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে মেয়েরা তাদের মুখের ব্রণ দূর করতে পারে। কেননা স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন মুখের ব্রন মুক্ত রাখতে মূল ভূমিকা পালন করে। এজন্য আপনাকে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, প্রচুর পরিমানে পানি খেতে হবে, সময় মতো ঘুমাতে হবে, ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে, নিয়ম অনুযায়ী ত্বকের যত্ন নিতে হবে।
তবে বর্তমান ব্যস্ততার জীবনে রুটিন মেনে ত্বকের যত্ন করা খুব কঠিন একটা কাজ। তাই ছোট ছোট কিছু নিয়ম মেনে চলতে পারলে মুখের ব্রন থেকে মুক্তি পাবেন।
ক্লিনজার: মুখের ব্রণ দূর করতে ক্লিনজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি যে কোন বয়সের নারী পুরুষ ত্বক পরিষ্কারের জন্য ব্যবহার করতে পারে। এটি ব্যবহার করলে মুখের মধ্যে জমি থাকা সব ময়লা দূর হয় খুব তাড়াতাড়ি। এই ক্লিনজার গুলো এমন প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয় যা মুখের ত্বকের জ্বালাপোড়া ও চুলকানি কমিয়ে দেয়।
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ফেসওয়াশ: মুখের ত্বকে ছোট ছোট ব্যাকটেরিয়ার কারণে সাধারণত ব্রণ হয়ে থাকে। তাই এই ব্যাকটেরিয়া দূর করার জন্য অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ফেসওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই ফেসওয়াশগুলো ব্যবহার করলে এর মধ্যে যে Active উপাদান গুলো রয়েছে তা অসংখ্য ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে সহায়তা করে এবং পুনরায় ব্যাকটেরিয়া ত্বকে ফিরে আসতে বাধা দান করে।
লেখকের শেষকথা
উপরের বিস্তারিত আলোচনা থেকে নিশ্চয়ই আপনারা জেনে গেছেন মুখে ব্রন হওয়ার কারন ও তা সমাধান কল্পে গ্রহনীয় কার্যপ্রনালী সম্পর্কে। এছাড়া আরোও জানতে পেরেছেন বিভিন্ন Tips & Tricks অবলম্বন করে কিভাবে উপকৃত হবেন। আপনি যদি নিয়মিতভাবে উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলেন তাহলে আপনার ত্বক থাকবে উজ্জল, সতেজ, প্রানবন্ত ও ব্রন মুক্ত।
উপরের আর্টিকেল থেকে আপনারা নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন।যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।
সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়
comment url