দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়ার উপায় - সুখী হওয়ার ১০টি উপায়
বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য যারা দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চান।এছাড়া সুখী হওয়ার ১০ টি উপায়গুলো যদি খুব ভালোভাবে জীবনের সাথে মানিয়ে নিতে পারেন তাহলে দাম্পত্য জীবনে যো সমস্যাগুলোর সৃষ্টি হয় তা অনায়াসেই মোকাবেলা করতে পারবেন।তাই আসুন বিষয়গুলো পড়ে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করি।
ভুমিকা
এই আর্টিকেলটি যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন বিবাহিত জীবনে সুখী হওয়ার উপায়গুলো নিয়ে।এছাড়া আরোও জানতে পারবেন বিবাহিত জীবন কিভাবে মধুময় করে গড়ে তোলা যায়।দাম্পত্য জীবনে কিছু সমস্যা সবসময় আসে তা স্বামী-স্ত্রী মিলেমিশে সমাধান করে নিতে হয়।যারা নতুন দাম্পত্য জীবন শুরু করেছেন।
তারা যদি নীচে উল্লেখিত লেখকের বইগুলো পড়েন তাহলে দাম্পত্য জীবনের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।ফলে সংসার নামক গাড়িটিকে খুব ভালোভাবে জীবন নামক অজানা রাস্তায় পরিচালনা করতে সহজ হবে।
দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়ার উপায়
ছোট বেলায় দাদীমা,নানীমারা টোনাটুনির গল্প শোনাতেন কিভাবে তাদের বিয়ে হলো,সন্তান হলো তারপর সুখে শান্তিতে বসবাস করতে শুরু করলো।শৈশব পেরিয়ে যখন যৌবনে পদার্পন করলেন তখন টোনাটুনির গল্পের ন্যায় আপনারও একটি সংসার হলো কিন্তু এই সংসার জীবনে দুইজনের মধ্যে মতের অমিল,ভুল বোঝাবুঝি, অহংকার ইত্যাদি থাকে।
তাহলে জীবনের চলমান গতিতে ছন্দপতন ঘটে।স্বামী স্ত্রী একসাথে থাকলে মনোমালিন্যতা,ঝগড়া,বিবাদ হবে তাই বলে ভালোবাসার চর্চা বন্ধ করা যাবে না।স্বামী স্ত্রী একসাথে পথ চলতে অনেক বিষয় আছে যা এড়িয়ে চলতে হয়।আবার কিছু বিষয় মেনে চলতে হয়।
শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে: স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে।একে অপরের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে।কোন বাঁধা বিপত্তি আসলে তা একে অপরের মতামতের ভিত্তিতে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।যদি একে অপরের প্রতি সম্মান বা শ্রদ্ধাবোধ না থাকে তাহলে অদৃশ্য দুরত্ব তৈরী হতে পারে।যা জীবনকে অসুখী করে তুলে।
বিশ্বাস রাখতে হবে: বিশ্বাস দাম্পত্য জীবনের এক অনন্য বাঁধন।বিশ্বাসের এই বাঁধুনি যদি ছিঁড়ে যায় তাহলে দাম্পত্য জীবনের আর কিছু বাঁকী থাকেনা।তাই এই অনাকাঙ্কিত ঘটনাটি যাতে না ঘটে সেদিকে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে।আর যদি বিশ্বাসের বাঁধনে চীড় ধরেই যায় তাহলে তা সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে হবে।
নিঃস্বার্থ হতে হবে: ওয়াদা করেছি দুজনে একসঙ্গে জীবন অতিক্রম করবো বলে তাই সেখানে ভালোবাসা থাকবে স্বার্থহীন।কোন প্রতিদান আশা করা ঠিক হবে না,প্রতিদানহীন ভালোবাসা সঙ্গীর মনে জন্মাবে নান্দনিক অনুভুতি।অসুস্থতার সময় তার সেবা করা,কাজের ফাঁকে খোঁজ খবর নেওয়া, একে অপরের পছন্দের প্রতি আগ্রহ দেখানো দাম্পত্য জীবনকে মজবুত ও সুখময় করে তোলে।
নমনীয়তা দেখাতে হবে: দাম্পত্য জীবনে অনেক ছোট বড় বিষয়, ঘটনা নিয়ে মতের অমিল হতে পারে।তাই বলে নিজেদের মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি করা যাবে না।রাগারাগি না করে বরং উভয়ে নমনীয় হয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।দেখবেন ছোট খাটো বিষয়গুলো সমাধান তো হবেই বড় বিষয়গুলো সমাধান করতে কোন সমস্যা হবে না।
বন্ধুত্বপুর্ন সম্পর্ক রাখতে হবে: দাম্পত্য জীবন যদি বন্ধুত্বপূর্ণ হয় তাহলে অনেক জটিল বিষয় খুব তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে যায়।সংসার জীবনে এমন একটা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন যা জীবনসঙ্গীর সাথে সমাধানের জন্য আলোচনা করতে পারছেন না এতে সমস্যার সমাধান তো হবেই না বরং তা আরো জটিল আকার ধারন করবে।সম্পর্ক যদি বন্ধুত্বপুর্ন হতো তাহলে নিমিষেই এই সমস্যার সমাধান হতো।
ভালো শ্রোতা হতে হবে: আপনি যদি ভালো শ্রোতা হতে পারেন তাহলে আপনার দাম্পত্য জীবন সুখের হবে বলে ধরে নেওয়া যায়।কারন দুজনের একজন যদি শ্রোতা হন তাহলে ঝগড়া,বিবাদ হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকেনা।ঝগড়া,বিবাদ গতিশীল হয় যদি দুজনে বক্তা হন।মনে করেন স্ত্রী কোন কিছু বলছে আর স্বামী তার কথার গুরুত্ব না দিয়ে অন্য কাজ করছে।
এক্ষেত্রে স্ত্রীর জন্য তা খুব অসম্মানজনক।তাই স্বামী স্ত্রী যেকথায় বলুননা কেনো তা উভয়কেই মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে।
সুখী হওয়ার ১০টি উপায়
- আপনি একটি ব্যবসা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন এই ব্যর্থতার গ্লানি মনে রেখে আর ব্যবসা করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই অবস্থা থেকে যদি আপনি বের হতে না পারেন তাহলে আপনি ভুল পথে আছেন। সফল এবং ব্যর্থ মানুষের মধ্যে পার্থক্য হল তারা কতক্ষণ নিজেদের জন্য দুঃখ করে। তাই অতীতের স্মৃতি ভুলে গিয়ে নতুনভাবে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
- সব সময় ইতিবাচক মানুষের সাথে সময় কাটাবেন। কারণ তারা খুব আশাবাদী মানুষ হয় এবং নেতিবাচক মনোভাব থেকে দূরে থাকে। তাদের সাথে যদি সময় পার করেন তাহলে ইতিবাচক ও আশাবাদী কিভাবে হবে তা শেখা যায়।
- সুখী হতে হলে জীবনকে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করতে হবে। ভয়-ভীতি দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সরিয়ে প্রতিদিনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলোকে উপভোগ করতে হবে।
- আপনি যদি নিজেকে ভালাবাসতে পারেন তাহলে নিজে থেকেই সব সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।যেসব কাজ আপনি ভালোবাসতেন কিন্তু এখন সেগুলো করেন না, চেষ্টা করুন সেগুলো করার,দেখবেন মন থেকে আপনি সুখি হবেন।
- অন্যের কথার গুরুত্ব বেশী দিবেন না।এতে আপনি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।কারন সমালোচনা করার মানুষের অভাব নেই।কোন কাজ করতে যেয়ে অন্যের সমালোচনার মুখে পড়ে আপনার কাজটি থামিয়ে দিবেন না এতে করে সফলতার দ্বার প্রান্তে এসে পরাজিত হয়ে ফিরে যেতে হবে।
- কোনো কাজ করতে যেয়ে ফলাফলের দিকে চিন্তা করলে কাজটি আপনি করতে পারবেন না।কারন কোন কাজ শুরুর আগে কখনো সফলতার মুখ দেখে না। তাই যে কাজগুলো করছেন তা মনোযোগ দিয়ে করুন।নিজেকে উৎসাহিত করুন সঠিকভাবে কাজটি করলে আপনি অবশ্যই সফল হবেন।
- যেকোনো কাজ করবেন আন্তরিকতার সাথে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে।তাহলে দেখবেন প্রতি মুহুর্তে যেন নিজেকে আবিষ্কার করছেন।কাজের সৃজনশীলতা দেখে নিজেই অবাক হবেন।ফলে আগের তুলনায় বেশী কাজ করতে পারবেন।
- অন্যের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করবেন না।কারন আপনার তুলনা শুধু আপনি নিজেই।আপনি এমনভাবে কাজ করুন যেন অন্যের কাছে আপনি তুলনীয় হন।
- জীবনে যা পেয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট থাকার চেষ্টা করুন।আরোও পাওয়ার জন্য কাজ করে যান।তাহলে দেখবেন আপনি সুখে আছেন।
- সব সময় আল্লাহ তায়ালাকে স্মরন করুন।তার অনুগ্রহ পাওয়ার জন্য সালাত আদায় করুন।এটি আপনার কাজের গতিকে বাড়িয়ে দিবে এবং কম সময়ে বেশি কাজ করতে পারবেন।
দাম্পত্য জীবন কিভাবে মধুর হয়
দুটি মানুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় সুখী দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করার জন্য।চোখে চোখ রেখে,হাতে হাত রেখে কখন যে সময় পার হয়ে যায় তা কেউ বলতে পারেনা।দুজনে দুজনকে ভালোবাসা,ভালোলাগা বিভিন্ন ধরনের খুনসুটি করতে কোন অনাগ্রহতা থাকেনা।প্রতিদিন ভালোবাসার মধ্যে থাকে নিত্য নতুন রং।জীবন সঙ্গীর প্রতিটি জিনিষ ভালোলাগে তখন।
কিন্তু এক সময় ভালোবাসার এই রংগুলি কোথায় যেন হারিয়ে যায়।গল্পের আর বাঁকি থাকেনা।জীবনে আর কোনো নতুনত্ব থাকেনা।ফলে সস্পর্কে এর প্রভাব পড়ে।তাই ভালোবাসার রংগুলি ধরে রাখতে দাম্পত্য জীবনের মধুর টিপসগুলো জেনে নিন।
ভালোবাসার প্রকাশ: আপনি যদি দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে চান তাহলে অবশ্যই বেশি বেশি করে ভালোবাসার প্রকাশ ঘটাতে হবে। আপনি হয়তো মনে করতে পারেন আপনি আপনার জীবন সঙ্গীকে তো ভালবাসেন এতে বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর কি আছে।এটা কখনোই মনে করবেন না।
কারন আপনার জীবন সঙ্গী মনে মনে চায় আপনি যেন তার হাতটা ধরে কিছুক্ষন বসে থাকুন,তাকে জড়িয়ে ধরে থাকুন।একটু কেয়ার করুন, জড়াজড়ি করে ঘুমিয়ে থাকুন।তাই এই ধরনের ভালোবাসার প্রকাশগুলো যদি থাকে তাহলে দাম্পত্য জীবন মধুর হবে।
পরকীয়া প্রেম:পরকীয়া প্রেম দাম্পত্য জীবনকে অসুখী করার জন্য যথেষ্ট।স্বামী-স্ত্রীর কেউ একজন যেন পরকীয়ায় জড়িয়ে না যায় সে ব্যাপারে দুজনকেই দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করতে হবে।নিজেদের সম্পর্কের টানাটানিতে পরকীয়া করতে হবে এটা কোনো সমাধান নয়।পরকীয়ায় কেউ যেন জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আয় বুঝে ব্যায়: শহরে যারা বসবাস করেন তারা বর্তমানে স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে চাকুরী করেন।আবার কোন কোন সংসারে শুধু স্বামী চাকুরী করেন। রোজগার যেই করুক না কেন আয় বুঝে ব্যায় করতে হবে।দাম্পত্য জীবন সুখী করতে বুঝে শুনে খরচ করতে হবে।
পারিবারিক সিদ্ধান্ত: আপনার ছেলে,মেয়ে বা অন্য কোন বিষয়ে পারিবারিক সিদ্ধান্তগুলো একসাথে নিবেন।একক সিদ্ধান্ত কখনোই সংসারে সুফল বয়ে আনে না।একজনের সিদ্ধান্ত অন্যজনের উপর যদি চাপিয়ে দেন তাহলে কখনও দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে পারবেন না।
যৌন জীবন: দাম্পত্য জীবনকে সুখী করতে যৌন জীবনে স্বাভাবিকতা থাকতে হবে।যদি কখনো কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের স্মরনাপন্ন হতে হবে।মানসিক সমস্যা থাকলে কোনে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে দেখাতে হবে।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় একে অপরকে দোষারোপ করে। এই দোষারোপ থেকে বিরত থাকুন তাহলে জীবনটা সুখের হবে।
অল্পতে সন্তুষ্ট থাকা: অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে অতিরিক্ত কোন কিছুই সুফল বয়ে আনতে পারে না। সামর্থের মধ্যে থেকে দুজনের চাহিদা গুলো পূরণ করবেন। আপনাদের এই আচরণগুলো সন্তানেরা ফলো করবে এবং তাদের মধ্যেও এর প্রভাব পড়বে।তাই সংসার সুখে রাখতে এই বিষয়গুলি খেয়াল রাখতে হবে।
ধৈর্য্য ধারন: ধৈর্যধারণ করাটা খুব ভালো একটা গুণ। যত বেশি ধৈর্যধারণ করবেন দাম্পত্য জীবনে তত বেশি সুখী হবেন।তাই স্বামী স্ত্রী উভয়কে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে।বর্তমানে এই গুণটির খুব অভাব রয়েছে আমাদের বর্তমান সমাজে। সংসার করতে গেলে সাধারণত অনেক ধরনের বিপদ ,আপদ চলে আসে সেগুলোকে ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা কবতে হবে।
তাহলে সৃষ্টিকর্তাও আপনাকে সহযোগিতা করবেন। আর ধৈর্যশীলদের আল্লাহতালা পছন্দ করেন।
দাম্পত্য জীবন সুখী হোক
নারী ও পুরুষের জন্য দাম্পত্য জীবন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।আল্লাহ তায়ালা বলেছেন তিনিই তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন ও তার থেকে তার স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন,যাতে সে তার কাছে শান্তি পায়।(সুরা আরাফ-১৮৯ নং আয়াত)।নারী পুরুষের মধ্যে আর্কষন এটা স্বভাবজাত ও চিরন্তন।নারী ও পুরুষ একে অপরের সাথে বিভিন্নভাবে সম্পর্ক স্থাপন করে থাকে।
সেটা বিবাহের মাধ্যমে হতে পারে আবার জিনা ও ব্যাভিচারের মাধ্যমেও হতে পারে। প্রকৃতির দাবি ইসলাম কখনই অস্বীকার করেনা।এই জন্য আল্লাহ তায়ালা নারী ও পুরুষের সম্পর্ককে বিবাহের মাধ্যমে বৈধতা দান করেছেন।বিয়ে সস্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন,তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্যে থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন,যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি লাভ করতে পারো।
আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য,যারা চিন্তা করে।(সুরা আর-রুম-২১ নং আয়াত)।বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত যা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম এর হাদিস দ্বারা প্রমানীত।কোরআন মজিদে স্বামী-স্ত্রীকে একে অপরের পোশাক হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
পোশাক দ্বারা মানুষ তার লজ্জাস্থান ঢেকে রাখে ।শরীরকে বাহিরের নোংরা পরিবেশ থেকে রক্ষা করে এবং প্রচন্ড শীত থেকে শরীরকে আরামদায়ক অনুভূতি দিতে সহায়তা করে।ঠিক তেমনি স্বামী স্ত্রী ও একে অপরের পোশাকের নেয় কাজ করে। পরস্পরের প্রতি দয়া, মায়া, শ্রদ্ধাবোধ, ভালোবাসা প্রদর্শন করে একে অপরকে হেফাজত করতে সাহায্য করে।
তাই উপযুক্ত, যোগ্য ও সমর্থ হলেই বিয়ে করার আদেশ দিয়েছে ইসলাম।আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী পুরুষ ও সৎ কর্মশীল দাস দাসীদের বিবাহ দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দিবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী। চরিত্র ঠিক রাখতে অবশ্যই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।
বিবাহ মানুষকে সব ধরনের পাপ কাজ থেকে বিরত রাখে। মানুষ যখন বিবাহ করে তখন তার পক্ষে পর নারি বা পর পুরুষ থেকে নিজের দৃষ্টিকে হেফাজতে রাখাটা খুব একটা কঠিন কাজ হয় না। তবে চরিত্রহীনদের ব্যাপারটা সম্পূর্ণই আলাদা সবাই যদি নিজের চরিত্রকে সংবরণ করতে পারতো তাহলে সমাজটা শান্তিপূর্ণ হতো।
আমাদের দেশের ছেলেদের বিয়ে করতে ৩০ থেকে ৩২ বছর বয়স সময় লেগে যায়। অথচ যৌবন আসে অনেক আগে। ফলে দীর্ঘ সময় নিজের চরিত্রকে ঠিক রাখা ছেলেদের ক্ষেত্রে খুব কষ্টকর হয়ে যায়। মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। যারা নিজের চরিত্রকে সংরক্ষণ করার ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করেনা তারা বিভিন্ন ধরনের যেনা, ব্যভিচার ও ধর্ষণের মতো মহাপাপে জড়িয়ে পড়ে।
যার ফলে সমাজে মেয়ে ও মেয়ের পরিবার খুব আতঙ্কের মধ্যে দিনানিপাত করে। বর্তমানে প্রতিনিয়ত আমাদের সমাজে এই ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে। বর্তমান যুগে দাম্পত্য জীবন নিয়ে মানুষের মধ্যে একটা চরম হতাশা জনক অবস্থা বিরাজ করছে। পত্রিকা খুললেই দেখা যায় দাম্পত্য জীবন নিয়ে নানা ধরনের নেতিবাচক সংবাদ।
যেমন: যৌতুকে না পেয়ে স্ত্রীকে খুন, স্বামী মোহরানা দিতে না পারায় স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন বা শ্বশুরবাড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে স্ত্রীর আত্মহত্যা, পরকীয়ার জের ধরে স্বামী কর্তৃক স্ত্রী বা স্ত্রী কর্তৃক স্বামী খুন। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে রাগারাগি অতঃপর বিবাহ বিচ্ছেদ। বর্তমানে বহু নারী স্বামী ও স্বামীর বাড়ির লোকজনের অবহেলা ও মানসিক নির্যাতনে নিষ্পেষিত হচ্ছেন।
তা সত্বেও শুধু বাবা মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে নিরবে নিভৃতে সংসার করে যাচ্ছে। শাশুড়ি যিনি নিজে একজন নারী হওয়া সত্ত্বেও আরেকজন নারী যে তার পুত্রবধু তাকে নির্যাতন করতে পিছুপা হয়না। ঠিক তেমনি নিজের মায়ের মত শাশুড়িকে কি অমানুষিকভাবে নির্যাতন করছে যা আমরা হরহামেশাই দেখতে পাচ্ছি।
ইসলামের জ্ঞান যদি শাশুড়ি ও পুত্রবধূর মধ্যে যদি থাকতো তাহলে প্রতিটি পুত্রবধূর তার শাশুড়িকে নিজের মায়ের মত মনে করতো। ঠিক একই ভাবে প্রতিটি শাশুড়ি তার পুত্রবধূকে নিজের মেয়ে বলে বলে মনে করতো।
দাম্পত্য জীবন নিয়ে বই
- আদর্শ দাম্পত্য জীবন: লেখক মোঃ জয়নুল আবেদীন
- Love and Respect: লেখক ডক্টর এমারসন এগারিচেস
- সম্পর্কের ভুলগুলি: লেখক লতিফুর রহমান
- প্রিয়তমা: লেখক সালাউদ্দিন জাহাঙ্গীর
- বিয়ে: লেখিকা বিনতে আনিস
- বিয়ে করনীয় ও বর্জনীয়: লেখক আল্লামা নাসিরুদ্দিন আলবানী (রাহঃ)
- সৌভাগ্যময় জীবনের পূর্ণাঙ্গ উপায়: লেখক শায়খ আব্দুর রহমান ইবনে নাসির আস-সাদি
- আদর্শ বিবাহ ও দাম্পত্য: লেখক আব্দুল হামিদ মাদানী
- দাম্পত্য রসায়ন: লেখক ডঃ ইয়াসির ক্বাদি
- বিবাহ-শাদী ও দাম্পত্য জীবন: লেখক মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রাহঃ)
- বিবাহ ও স্বামী স্ত্রীর অধিকার: লেখক মুফতি মোহাম্মদ তাকি ওসমানী
- মুমিন জীবনে পরিবার: লেখক ডঃ ইউসুফ আল করজাভী
দাম্পত্য জীবনের সমস্যা
দাম্পত্য জীবনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকতে পারে যদি আন্তরিকতা থাকে তাহলে খুব সহজেই এই সমস্যার সমাধান করা যায়। আমরা মনে করে থাকি তৃতীয় ব্যক্তির কারণে হয়তো দাম্পত্য জীবনে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। কিন্তু অনেক সময় এই ধারণাটা সঠিক নাও হতে পারে। কারণ নিজেদের কারণনও দাম্পত্য কলহ হতে পারে।
সমাজ বিজ্ঞানীরা মনে করেন, দাম্পত্য সমস্যা সাধারণ একটি ব্যাপার। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এর আগমন ঘটে, এই সমস্যা মূলত সৃষ্টি হয় দুজনের প্রয়োজনের চাহিদা থেকে অর্থাৎ একজনের চাহিদার সাথে যদি অন্যজনের চাহিদার সংঘর্ষ ঘটে তখনই দাম্পত্য জীবনে কলহের সৃষ্টি হয়।
যাগাযোগের অভাব: যে কোন সম্পর্কের ক্ষেত্রে Communication বা যোগাযোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।এই Communication gap যখন শুরু হয় তখনই সমস্যার সৃষ্টি হয়।যেমন: স্বামী-স্ত্রী যদি একে অপরের সাথে কথা না বলে বা কম কথা বলে। কথা বলার সময় তর্ক বা ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে পড়ে।
একে অপরের ব্যাপারে কোনরকম Compromise না করে তাহলে বুঝতে হবে সম্পর্ক নষ্ট হতে চলেছে।
একে অপরের প্রতি বিতৃঞ্চা: অনেক পুরনো সম্পর্কের ক্ষেত্রেও যদি একে অপরের দোষ ত্রুটি ধরে বা একে অপরকে দোষারোপ ও বিদ্রুপ করে তাহলে এমন পুরনো সম্পর্কের ভীতও আস্তে আস্তে নড়ে যায়।এর ফলে একে অপরের সাথে দুরত্ব সৃষ্টি হয়।এটা দিন দিন বাড়তে থাকে।এক পর্যায়ে সম্পর্কের ইতি টানা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।
অন্তরঙ্গতার অভাব: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শারীরিক ও মানসিক দুই ধরনের অন্তরঙ্গতা ,সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। যদি দেখেন এই অন্তরঙ্গতা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে তাহলে বুঝবেন আপনাদের দাম্পত্য জীবনে খারাপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তাই আপনাদের উচিত এ বিষয়ে দুজনকে লক্ষ্য রাখা এবং সতর্ক থাকা কি কারনে এই ধরনের সমস্যা হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা করা।
বিশ্বস্ততার অভাব: দাম্পত্য জীবনকে ধ্বংস করতে একে অপরের প্রতি অবিশ্বস্ততা সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। আপনার জীবন সঙ্গী যদি অন্য কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে যায় আর একবার তার মধ্যে যদি অবিশ্বস্ততার তকমা লেগে যায় তাহলে তা সমাধানের আর কোনো উপায় থাকে না।এক পর্যায়ে যেয়ে এই সম্পর্কের ইতি টানা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।
যৌন আকাঙ্ক্ষায় অমিল: দাম্পত্য জীবন টিকিয়ে রাখতে এবং তা সুখের করতে যৌন চাহিদা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন। আপনাদের মধ্যে যদি যৌন আকাঙ্ক্ষার বিষয়ে মিল না থাকে তাহলে আপনার জীবন সঙ্গী অন্য কোথাও গিয়ে যৌন আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে চেষ্টা করবে।
আরোও পড়ুনঃ
বিষয়টা কোনভাবেই কারো পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব হয়না।যা এক সময় সম্পর্কের ইতি টানেতে বাধ্য করে।
লেখকের শেষকথা
উপরের বিস্তারিত আলোচনা থেকে নিশ্চয়ই আপনারা জেনে গেছেন দাম্পত্য জীবনে কিভাবে সুখী হবেন তা সম্পর্কে।আপনি যদি উপরোক্ত বিষয়গুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করতে পারেন তাহলে বিবাহিত জীবনে অসুখী হওয়ার হাত থেকে মুক্তি পাবেন।
যদি এই আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।
সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়
comment url