পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির ঘরোয়া উপায় - পাইলসের মলম

বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলটিতে পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির ঘরোয়া উপায় ও পাইলসের মলম নিয়ে বিস্তরিতভাবে আলোচনা করেছি।এই রোগে ভোগেননি এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে। বর্তমান যুগের পরিবর্তিত জীবন যাপন,অস্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ,কোষ্ঠকাঠিন্য ও আঁশজাতীয় খাবার কম গ্রহণ করার জন্য সাধারণত এই রোগ হয়ে থাকে।
পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির ঘরোয়া উপায়-পাইলসের মলম

ভূমিকা

আজকের এই আর্টিকেলটিতে পাইলসের বিভিন্ন লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছেে। আপনার যদি এই রকম কোন লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে এই আর্টিকেলে রোগ নিরাময়ের জন্য কি করবেন কোন ধরেনের মলম ব্যবহার করবেন এবং কোন ওষুধগুলো খাবেন এছাড়া পাইলসের ব্যাথা কমানোর বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

পাইলস কি

আমাদের পায়খানার রাস্তায় রক্তনালি বা মাংসপেশী বা ইলাস্টিক ফাইবার গুলোতে যদি ইনফ্লামেশন হয় এবং একসাথে হয়ে জমাট বেঁধে আঁচিলের মতো গোটা আকার ধারণ করে এবং পায়খানার রাস্তার ভিতরে ও বাইরে ফুলে যায় তাহলে তাকে পাইলস বলে।

পাইলস এর লক্ষণ

পাইলস হলে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। যা দেখলে বোঝা যায় যে আপনার পাইলস হয়েছে। তাই এই ধরনের কোন লক্ষণ দেখা দিলে প্রাথমিকভাবে এই আর্টিকেলে বর্ণিত চিকিৎসাগুলো নিলে আপনার পাইলস সেরে যাবে। যদি এটি বেশি পরিমানে দেখা যায় তাহলে ডাক্তারের স্বরণাপন্ন হবেন।

পায়খানার সাথে লাল রক্ত: আপনাদের যদি পাইলস হয়ে থাকে তাহলে পায়খানার সাথে লাল রক্ত বের হবে। টয়লেট শেষে টিস্যু দিয়ে পায়খানার দ্বার মুছলে রক্ত দেখতে পাবেন। আপনারা যদি পায়খানা করার পর প্যান লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন ছোপ ছোপ রক্ত পড়ে আছে।
রক্তক্ষরণ হওয়া: যাদের পাইলস হয় তাদের পায়খানার দ্বারে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়। অনেক সময় দেখা যায় পায়খানার রং গাড়ো খয়েরি রঙের বা কালো রং এর হয় ।এটি সাধারণত পাইলসের কারণে হয় না এটি অন্য কোন রোগের লক্ষণ। এইরকম যদি হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাবেন।
নরম গোটা: আপনারা খেয়াল করে দেখবেন পায়খানা করার সময় নরম গোটার মত বের হয়ে আসে। পায়খানা করার পর গোটা গুলো আবার ভিতরে ঢুকে যায়। অনেকের এটি এমনভাবে বেরিয়ে আসে যে হাত দিয়ে ভেতরে ঢুকাতে হয় ।আবার অনেকের নরম আঁচিলের মত অংশগুলো হাত দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করানো যায় না।
ব্যাথা অনুভুত হওয়া: বন্ধুরা যাদের পাইলস রোগ আছে অনেক সময় তাদের ব্যথা খুব একটা তীব্র হয় না ।তখনই ব্যাথা অনুভুত হয় যখন নরম অংশ গুলো হাত দিয়ে চাপ দিলেও ভেতরে ঢুকানো যায় না। এতে নরম গোটা অংশগুলোতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় ফলে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। এই ব্যথা দুই তিন দিন পর্যন্ত থাকে।
পায়ুপথ চুলকানো: আবার অনেক ক্ষেত্রে পায়ু পথের মুখে খুব চুলকায় ও ফুলে উঠে এবং পায়ৃপথের মুখ দিয়ে পিচ্ছিল আঠালো পদার্থ বের হয়। মনে হয় যেন পায়খানা করার পরেও আরো একটুখানি পায়খানা বাঁকি আছে।

পাইলস এর ব্যাথা কমানোর উপায় 

পাইলসের ব্যথা কমানোর বিভিন্ন থেরাপি নিয়ে আলোচনা করা হলো পাইলসের ব্যথা অনুভূত হোলে আপনারা ঘাবড়িয়ে না যেয়ে মাথা ঠান্ডা করে নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো যদি অবলম্বন করেন তাহলে অনেকটাই ভালো থাকবেন।

বরফ থেরাপি: বরফকে একটি কনডমের মধ্যে বা কাপড়ের মধ্যে অথবা পলিথিন এর মধ্যে ঢুকিয়ে পাঁচ থেকে সাত মিনিট যেখানে পাইলসের ব্যথা রয়েছে সেখানে আস্তে করে চেপে ধরে রাখতে হবে। তারপর নরম টিস্যু দিয়ে খুব ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে।
চীৎ হয়ে শুয়ে পড়া: অনেকক্ষণ যদি বসে থাকলে অথবা দাঁড়িয়ে থাকলে পাইলসের ব্যথাটা বেশি অনুভুত হয় ।তাই সঙ্গে সঙ্গে চিৎ হয়ে সোজা হয়ে শুয়ে যাবেন। এরপর পায়ের নীচে দুটো বালিশ দিয়ে রাখবেন অর্থাৎ হাঁটুর নীচে।তাহলে দেখবেন ব্যথাটা কমে গেছে।
গরম পানি: আপনি একটা গামলাতে সহনীয় তাপের গরম পানি নিয়ে তার ওপর বসে পড়ুন। অন্তত ১৫ থেকে ২০ মিনিট গরম পানিতে বসে থাকুন দেখবেন পাইলসের ব্যথা কমে গেছে।
প্যানের উপর কিভাবে বসবেন: কখনোই প্রেসার দিয়ে মলত্যাগ করবেন না বা করার চেষ্টা করবেন না। প্যনের উপর খুবই রিলাক্স মুডে বসবেন তারপর পেটের উপরের দিকে ডান হাত এবং নাভির নিচে বাম হাত দিয়ে এবং একটু সামনের দিকে ঝুঁকে যেয়ে শ্বাসটা ছেড়ে দিবেন।এরপর খেয়াল করবেন আপনার টয়লেট টা ক্লিয়ার হয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া আপনার পায়ের নীচে ১ অথবা ২ ইটের সমান টুল বা পিঁড়া দিয়ে রাখতে পারেন যাতে পা দুটো উপরের দিকে উঠে থাকে আর আপনি একটু সামনে ঝুঁকে থাকবেন। তাহলে দেখবেন ব্যথা ছাড়াই আপনি টয়লেট করতে পারবেন।
টয়লেট টিস্যু ব্যবহার না করা: আপনাদের যাদের পাইলস আছে তারা নরম কাপড় অথবা নরম টিস্যু ব্যবহার করবেন কারণ টয়লেট টিস্যুতে বিভিন্ন ধরনের স্ক্র্যাচ বা রাবিং আছে।
বসার স্থান: আমাদের অনেকেই রাবারের সোফা বা চেয়ারের এর মধ্যে বসি।এটা করা যাবেনঅ কারণ রাবারের সোফা বা চেয়ার এর মধ্যে বসলে ব্যথা বাড়ে। তাই আপনারা ফোমের কুশন ব্যবহার করবেন অর্থাৎ যেখানে বসবেন আপনার পাইলসের অংশটুকু যেন বসার স্থানের জায়গায় ভিতরে ঢুকে যায়।
সাবান ব্যাহার না করা: আপনি যদি পাইলসের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে মলদ্বারে কখনোই সাবান ব্যবহার করবেন না। কারণ সাবানে ক্ষার থাকে। এই ক্ষার পাইলসের ব্যথা বাড়িয়ে দেয়। যদি এত কিছুর পরেও ব্যথা না কমে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাবেন।

পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির ঘরোয়া উপায় 

অশ্ব বা পাইলস অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক একটি অসুখ। এই রোগে মলদ্বারের ভেতরে ও বাইরে প্রচন্ড ব্যথা অনুভুত হয়। পায়খানা করার সময় প্রচন্ড চাপ দিয়ে পায়খানা করতে হয়। যার ফলে ব্যাপক রক্তপাত ঘটে। কেউ যদি এই রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে পায়খানার বেগ আসলেও পায়খানা করতে ভয়ে যেতে চান না। 
বিশেষজ্ঞরা বলেন এভাবে পায়খানার বেগ চেপে রাখলে শরীরের অন্য অংশের ক্ষতি হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে কষা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে এই রোগ শুরু হয়। শুরুতেই যদি এই রোগ দমন করা যায় তাহলে পাইলসের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে আঁশ যুক্ত খাবার গ্রহণ করা। 

আঁশ যুক্ত খাবার খেলে পায়খানা স্বাভাবিক হয়। তাই এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে প্রচুর পরিমাণে আঁশ যুক্ত খাবার খেতে হবে।নিম্নে আঁশ যুক্ত খাবার গুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।

পানি: প্রতিদিন অন্তত ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করুন এই পানি পাকস্থলীতে গ্যাস জমতে দেয় না। সাধারণত পেটে গ্যাস হলে পায়খানা কষা হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে।
টমেটো: টমেটোতে আছে পটাশিয়াম যা শরীরের সোডিয়ামের ভারসাম্য রক্ষা করে যার ফলে পেট ফাঁপা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্ত থাকা যায়।
কলা: কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এই পটাশিয়াম রক্তের সোডিয়ামকে নিয়ন্ত্রণ করে ফলে পেটে গ্যাস উৎপাদন হয় না। তাই কারো যদি পেটে গ্যাস হয় তাহলে সে একটি কলা খেয়ে নিতে পারে। এছাড়া কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সারাদিনে অন্তত দুইটি কলা খাওয়া যেতে পারে।
আনারস: আনারস গ্যাস মুক্ত রাখতে অত্যন্ত কার্যকর একটি ফল। আনারসে আছে ব্রোমিলিন নামে এক ধরনের অ্যান্টি অ্যাসিড এজেন্ট যা আমাদের পেট ফাঁপা রোদে সহায়তা করে এবং গ্যাস হওয়া থেকে মুক্তি দেয় ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
শসা: শসা খুব ঠান্ডা একটি খাবার। এটিতে রয়েছে ফ্লেভালয়েড ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাস উৎপাদন হতে বাধা দেয় ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
পেঁপে: নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলে গ্যাসের প্রবনতা কমে যায়।এবং হজম শক্তি বাড়ায়। পেঁপেতে পাপায়া নামক এক ধরনের এনজাইম রয়েছে যা পায়খানাকে স্বাভাবিক করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য মুক্ত রাখে।
দই: দইয়ে আছে প্রচুর পরিমাণে উপকারী ব্যাকটেরিয়া। এইসব ব্যাকটেরিয়া আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে কার্যকর রাখতে সহায়তা করে ফলে পেট ফাঁপা দূর হয় ও গ্যাস হওয়া রোধ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়।
ঠান্ডা দুধ: পাকস্থলীর গ্যাস্ট্রিক এসিডকে দূর করে এই ঠান্ডা দুধ। এক গ্লাস ঠান্ডা দুধ পান করলে এসিডিটি থেকে দূরে থাকা যায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্ত থাকে তবে কারো যদি আমআশা থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে এড়িয়ে চলাই ভালো।
মাঠা: পেটের গ্যাস প্রতিরোধে ও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দিতে মাঠা একটি অতি কার্যকর খাবার। এতে রয়েছে ল্যাকটিক অ্যাসিড যা পেটের গ্যাসের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং পেট ফাঁপা থেকে মুক্তি দেয়।
আদা: আদাতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও আন্টি ইনফ্লেমেটরি এজেন্ট যা পাকস্থলীর সুস্বাস্থ্যের জন্য আদার ভূমিকা অনস্বীকার্য,আদার মধ্যে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান আছে যা পাকস্থলী ও খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে। 
আরও পড়ুনঃ
আদা কুচি করে তা মুখে রেখে চিবিয়ে খাওয়া যেতে পারে এতে করে বমি বমি ভাব দূর হয় এবং বদহজম দূর করতেও আদা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে এক টুকরো আদা খেলে তা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের মত কাজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য মুক্ত রাখে।

কাঁচা হলুদ: কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেলে পেট ফাঁপা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যদি কাঁচা হলুদ খেতে অসুবিধা হয় তাহলে আদার মতো কাঁচা হলুদ ছিলে পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি খাওয়া যেতে পারে।এতে পায়খানা স্বাভাবিক হয় এবং পায়খানা স্বাভাবিক হয় ও কোষ্ঠকাঠিন্য মুক্ত হয়।
দারুচিনি: পানিতে ১/২ চা চামচ দারুচিনির গুড়া ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে।তারপর দিনে ২ থেকে ৩বার এই পানি খেলে পেট গ্যাসমুক্ত হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
জিরা: জিরা পেটের গ্যাস নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত চমৎকার কাজ করে। পাকস্থলীতে যে এসিড হয় জিরা তাকে নিরপেক্ষ করে পেটের ব্যথা দূর করে এবং খাবার হজমে জিরা বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।এছাড়া জিরা কোষ্ঠকাঠিন্য মুক্ত রাখতে সহায়তা করে। এক গ্লাস পানিতে সামান্য জিরার গুড়া মিশিয়ে বা ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে প্রতিবেলা খাবার পর খেতে পারেন ।
লবঙ্গ: পেটে যদি গ্যাস অনুভূত হয় তাহলে দুই তিনটি লবঙ্গ মুখের মধ্যে দিয়ে চিবিয়ে খাওয়া যেতে পারে এতে একদিকে বুক জ্বালা ও বমি বমি ভাব দূর হয় পেট কোষ্ঠকাঠিন্য মুক্ত থাকবে। ফলে পেট গ্যাসমুক্ত হয় সাথে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।
রসুন: তিন চারটি রসুনের কোয়া ভালোভাবে ধুয়ে দুই কাপ পানিতে ৫ মিনিট ফুটিয়ে তৈরি করা যেতে পারে রসুনের চা যা খুব দ্রুতই এই সমস্যা থেকে উদ্ধার পাবেন এবং কোষ্ঠকাঠিন্য মুক্ত থাকবেন।
এলাচ: এলাচের চা অত্যন্ত সুস্বাদু একটি চা,এই চা খেলে পেটে গ্যাস দূর হয়, কারণ এলাচের মধ্যে রয়েছে পাকস্থলীতে গ্যাস উৎপাদনকারী এসিডের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা এছাড়াও এটি কোষ্ঠকাঠিন্যে বিরুদ্ধে ব্যাপক কার্যকর ।এটা লবঙ্গের মতো করে চিবিয়েও খাওয়া যায়।
পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতা আপনার পেটের অম্লতা দুর করে গ্যাস ও বমি বমি ভাব থেকে সাথে সাথে রক্ষা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য মুক্ত রাখে। এক কাপ পানিতে কয়েকটি পুদিনা পাতা দিয়ে সেদ্ধ করে দিনে অন্তত দুই তিনবার পান করা যেতে পারে।

পুদিনা পাতার পানি যদি খেতে না পারেন তাহলে পুদিনা পাতার পানির সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন এতে আপনার গ্যাসের প্রবনতা কমে যাবে।
পেয়ারা পাতা: পেয়ারা পাতা ফুটিয়ে পানি ছেকে ‍নিয়ে যদি সেই পানি পান করেন তাহলে গ্যাস মুক্ত ও কোষ্ঠকাঠিন্য মুক্ত থাকবেন সারাদিন।
মৌরির পানি: মৌরিকে পানিতে ভিজিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর সেই পানি কে ছেঁকে নিয়ে যদি দিনে দুই থেকে তিনবার এই পানি খাওয়া যায় তাহলে আপনি গ্যাস মুক্ত থাকতে পারবেন এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবেন।
আলু: রাতের বেলা আলুকে ভালোভাবে ছিলে কয়েক টুকরো করে তা লবণ দিয়ে পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে যদি সেই পানি খাওয়া যায় তাহলে গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
জাওন: জাওন গ্যাস প্রতিরোধে অতি কার্যকর ভূমিকা পালন করে।কোন খাবার খাওয়ার পরে যদি এক চিমটি জাওন খাওয়া যায় তাহলে তার পেটের মধ্যে কোন গ্যাস উৎপাদন হবে না। কারণ খাওয়ার পর পেটের মধ্যে যে হাইড্রোক্লোরিক এসিড উৎপাদিত হয়।

জাওন ঐ এসিডকে দমন করতে ব্যাপক কার্যকর ভূমিকা পালন করে।পায়খানা স্বাভাবিক হয় ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আপেল সিডার ভিনেগার: ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ২ চামচ ভিনেগার দিয়ে প্রতিদিন পান করলে গ্যাস ও পায়খানা কষা হওয় থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
বেকিং সোডা: আপনি যদি ১ গ্লাস পানিতে ১/৪ চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে পান করেন তাহলে তা গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
উপরোক্ত খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না। আপনারা যদি এই খাবার গুলো প্রতিনিয়ত নিয়ম করে খান তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন।তার কখনোই পাইলস হবে না চিরতরে এই রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।

পাইলস এর ব্যায়াম 

বালাসান: প্রথমে একটি নরম ম্যাট বিছিয়ে তার উপরে নামাজ পড়ার মতো করে বসুন তারপর হাত দুটো তুলে সামনের দিকে ঝুঁকে সিজদার মত দুই পায়ের মাঝে শরীরকে রেখে দুই হাত বিছিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখবেন এভাবে অন্তত পাঁচ মিনিট আসনটি করুন।
বালাসানা
পবন মুক্তাসন: প্রথমে আপনি চিৎ হয়ে শুয়ে পড়বেন তারপর পা দুটো লম্বা করে সামনের দিকে রাখুন। পায়ের আঙ্গুলগুলো বাইরের দিকে থাকবে। দুটো হাত শরীরের সাথে লাগিয়ে রাখুন। তারপর আস্তে আস্তে ডান পাটা উপরের দিকে তুলে হাঁটু ভেঙ্গে বুকের কাছাকাছি নিয়ে আসুন। 
পবন মুক্তাসন
তারপর পা দুটো এমন ভাবে দুই হাত দিয়ে ধরতে হবে যেন বাম হাতের উপর ডান হাতটি থাকে। তারপর আস্তে করে বুকের উপর হালকা চাপ দিন। এভাবে অন্তত ৩০ সেকেন্ড আসনটি করুন। এভাবে একটি পা হয়ে গেলে আবার আরেকটি পা করুন।
বুদ্ধ পদ্মাসন: প্রথমে আপনি মুক্ত পদ্মাসনের মত বসে পড়ুন। পেছন দিক থেকে ডান হাত ঘুরিয়ে এনে ডান পায়ের যে বুড়ো আঙ্গুল রয়েছে তাকে ধরুন আবার বাম হাত ঘুরিয়ে এনে বাম পায়ের যে বুড়ো আঙ্গুল রয়েছে তাকে ধরুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখবেন এভাবে অন্তত ১ মিনিট থাকবেন। এই আসনটি প্রতিদিন পাঁচ বার করুন।
বুদ্ধ পদ্মাসন
ভিপারিতা করানি: প্রথমে আপনি চিৎ হয়ে মেঝের ওপর শুয়ে পড়ুন তারপর আস্তে আস্তে দুটো পা উপরের দিকে তুলুন, এরপর দুটো হাত মাজাতে রেখে ঠেস দিয়ে পিঠের উপরের অংশ মেঝেতে রেখে বাদবাকি অংশ উপরের দিকে থাকবে এভাবে অন্তত ২০থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখবেন।
ভিপারিতা করানি
মালাসন: যখন আপনি মাটিতে যাবেন তখন শ্বাস ছেড়ে দিবেন আবার যখন উঠবেন তখন শ্বাস নিবেন। এভাবে ২ থেকে ৩ বার করতে হবে ।এরপর আস্তে আস্তে বসবেন গোড়ালির উপর ভর দিয়ে এরপর আপনার কনুই দুটি হাঁটুর সংযোগস্থলে সোজা করে ঠেকিয়ে জোড়হাত করে বসবেন। এভাবে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড বসে থাকবেন।
মালাসানা
তবে শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। কোনুই দুটি দিয়ে হাটুর উপর চাপ দিয়ে বাইরের দিকে ঠেলতে হবে। যতটা বাইরের দিকে দেওয়া যায় ততটা ভালো ফল পাবেন।কেননা এতে হিপের মাংসপেশীর সংকোচন প্রসারণের ফলে মলদ্বারে গোটা হতে দেয় না।

পাইলসের মলম 

Rectocare 0.4% ointment : এটি প্রতি ১২ ঘণ্টা অন্তর অন্তর মলদ্বারের প্রয়োগ করতে হবে ।সর্বোচ্চ ৮ সপ্তাহ ব্যবহার করলে ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।
Doctor piles 15mg : চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে দিনে ২ বার আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে।তাহলে ভালো ফল পাবেন।
Erin 15mg: এই মলমটি অল্প করে আঙ্গুলে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে সকাল ও সন্ধ্যায় ১ বার করে লাগাতে হবে।

Fungidal-HC 15mg: এই মলমটি ১ থেকে ২ সপ্তাহ প্রতিদিন দুই থেকে চারবার হাতের আঙ্গুলে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে।তাহলে ভালো ফল পাবেন।

Dictamni hemorrhoid 20mg: নিয়মিত এই ক্রিমটি দিনে ২ থেকে ৩ বার আক্রান্ত স্থানে লাগালে উপকার পাবেন।

Himalaya Pilex forte ointment 30mg: এই ক্রিমটি ব্যবহারের আগে কুসুম গরম পানি দিয়ে মালদারটি পরিষ্কার করে নিতে হবে ।তারপর আক্রান্ত স্থানে এক আঙ্গুলে ক্রিম লাগিয়ে আক্রান্ত স্থানে  লাগাতে হবে। নিয়মিত দিনে ১ থেকে ২বার প্রয়োগ করলে উপকার পাওয়া যায়।


Wartex cream 20mg: আক্রান্ত স্থানে ২-৩ বার লাগালে উপকার পাবেন।


Pilosol oinment: প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বার সকালে ও রাতের বেলায় বা ঘুমানোর আগে সম্ভব হলে মলত্যাগের পরে ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।


Lignocaine gel: পায়খানা করার ১০ থেকে ১৫মিনিট আগে মলদ্বারে লাগিয়ে নিয়ে পায়খানা করতে বসবেন।

পাইলসের ওষুধ

Osmolax syrup: প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ভরা পেটে এটি খেতে হয়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এটি খেলে পাইলস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

daflon 1000 mg: এই ওষুধটি পাইলসের জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি ওষুধ। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধটি খেলে পাইলস রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

Normanal 500 mg: পাইলস রোগীদের জন্য এই ওষুধটি দেওয়া হয়।এই ওষুধটি পাইলসের জন্য খুব কার্যকর একটি ওষুধ। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত সেবন করলে পাইলসের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

পাইলস এর চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি ঔষধ

Bioplasgen no17: এই ওষুধটি রোজ ৪ টা করে বরি রোজ৩ বার সেবন করতে হয়।

Aesculus pentarkan Ptk.3: এটি ১০ ফোঁটা করে এককাপ পানির সাথে মিশিয়ে রোজ ৩ বার খেতে হয়।


লেখকের কথা 

উপরের আর্টিকেলটি পড়ে জানতে পারলেন পাইলস নিরাময়ের উপায় গুলো নিয়ে।পাইলসের ব্যথা কমানোর উপায়গুলো কি কি। আপনারা যদি আপনাদের জীবন যাপনে স্বাভাবিকতা আনেন, খাদ্যাভাসের পরিবর্তন আনেন তাহলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। নিশ্চয়ই আপনারা খুশি হয়েছেন তথ্যনির্ভর এই আর্টিকেলটি পড়ে।

উপরের আর্টিকেল থেকে যদি আপনি সামান্য পরিমাণ উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩