কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবসা কিভাবে করতে হয় তা জেনে নিন
আপনারা কি প্যাসিভ ইনকামের কথা চিন্তা করছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।এই ব্যবসার সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হলো এতে বিনিয়োগ করতে হয় মূলত একবারই আর আয় হতে থাকে সারা বছরই।শুধু শহরে নয়,আজকাল গ্রামেও খুব পরিচিত নাম কমিউনিটি সেন্টার।
বিয়ের অনুষ্ঠান তো বটেই গায়ে হলুদ,বউভাত,জন্মদিন বিবাহ বার্ষিকী সহ বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রসঙ্গ এলেই এখন চলে আসে কমিউনিটি সেন্টারের নাম।শত লোকের খানাপিনার আয়োজনে বাসায় এত জায়গা কোথায় এত ঝামেলায় বা কে সামলাবে।
ভূমিকা
প্রিয় পাঠকগণ শুধু পারিবারিক অনুষ্ঠান নয় ইফতার পার্টি,ভোজসভা থেকে শুরু করে আজকাল অনেক সম্মেলন ও সামাজিক অনুষ্ঠানের ও আয়োজন করা হয় কমিউনিটি সেন্টারে।তাই কমিউনিটি সেন্টারে ব্যবসায় বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
যেভাবে শুরু করতে পারেন
দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসার কথা চিন্তা করলে আপনি কমিউনিটি সেন্টারকে বেছে নিতে পারেন। অনেকে টাকা থাকা সত্ত্বেও বিনিয়োগের সঠিক ক্ষেত্র খুঁজে পান না। তাদের জন্য চমৎকার একটি উদ্যোগ হতে পারে এটি। তবে হুট করে সিদ্ধান্ত নিয়ে এই ব্যবসায় নামা ঠিক হবে না। শুধু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও পর্যাপ্ত মূলধন থাকলেই এ ব্যবসার কথা ভাবা যেতে পারে।
কমিউনিটি সেন্টার ঘিরেই বেশ জমে উঠতে পারে আপনার ব্যবসা। রাজশাহী সাহেব বাজার সপ্লিন কমিউনিটি সেন্টার এর স্বত্বাধিকার,জানালেন একটি কমিউনিটি সেন্টার স্থাপনে বড় অংকের টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। ছোটখাটো একটি কমিউনিটি সেন্টার করতে গেলেও ৩০ থেকে ৫০ লাখ টাকার প্রয়োজন।
প্রয়োজনীয় মূলধন থাকলে আপনিও তা শুরু করতে পারেন।নিজের কমিউনিটি সেন্টার করার আগে প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি সেন্টার ঘুরে দেখতে পারেন এবং এ বিষয়ে পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন লোকদের সাথে কথা বলতে পারেন। এতে একটি ভালো ধারণা আসবে।
স্থান নির্বাচন
ব্যবসার জন্য স্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এমন একটি স্থান বেছে নিতে হবে, যা নগর বা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত। জনবহুল ও অভিজাত এলাকা হলে গ্রাহক পেতে সুবিধা হয়।। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হতে হবে,, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকতে হবে। পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ ও পানির সুবিধার বিষয়টিও সব সময় মাথায় রাখতে হবে।
জায়গাটি খোলামেলা হতে হবে, পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে। কমিউনিটি সেন্টার স্থাপনের শুরুতে যে বিষয়টি চলে আসে তা হল বাড়ি। এটি যেহেতু একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, তাই সবচেয়ে ভালো হয় নিজের জায়গা কিনে সেখানে কমিউনিটি সেন্টার স্থাপন করলে।
কমিউনিটি সেন্টারের উপযোগী বাড়ি ভাড়া করেও এ ব্যবসা পরিচালনা করা যায়। বাড়ি ভাড়া করলে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য চুক্তি করে নেবেন।
যা কিছু লাগবে
বাড়ির পরেই চলে আসে প্রয়োজনীয় উপকরণের বিষয়টি। উপকরণ গুলো কিনতে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার মত প্রয়োজন হতে পারে। এ সময় চেয়ার টেবিল ক্লথসহ অনেক কিছুই প্রয়োজন। রান্নার উপকরণ গুলোর মধ্যে ডেকচি,কড়াই,চামচ,বালতি,মগসহ লাগবে অনেক কিছুই।খাবার পরিবেশন এর জন্য প্রয়োজন হবে গামলা,বাটি,প্লেট,চামচ,গ্লাস সহ দরকারি সব সামগ্রী।
তবে ডেকোরেটরের কাছ থেকে ভাড়া করেও এ কাজ চালানো যায়। ডেকোরেশন ও আলোকসজ্জার বিষয়টি এ সময় মাথায় রাখতে হবে। নানারকম বাতি,ঝাড়বাতি এসবের প্রয়োজন হবে।দেয়ালে কিছু চিত্রকর্ম ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। বেশি হলে ঝাড়বাতি ও কার্পেট কিনতে পারেন।
প্রয়োজনীয় লোক বল
সব নতুন লোক নিয়োগ না দিয়ে ডেকোরেটরের ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট রয়েছে এরকম কিছু লোককে নিয়োগ দিতে হবে। প্রথমেই একজন ব্যবস্থাপক নিয়োগ দিতে হবে, যিনি সার্বিক তত্ত্বাবধান করবেন। রান্নার জন্য দুইজন স্থায়ী বাবুর্চি রাখতে পারেন। এছাড়া কয়েকজন দক্ষ বাবুর্চির ফোন নম্বর বা যোগাযোগের ঠিকানাও জোগাড় করে রাখতে হবে।
খাবার পরিবেশন এর জন্য প্রয়োজন হবে ১০ থেকে ২০ জন লোক। বিদ্যুৎ ও আলোকসজ্জার জন্য একজন টেকনিশিয়ানের প্রয়োজন হবে। বাসনপত্র ধোয়ার জন্য দুই তিন জন লোক রাখতে হবে। এছাড়া সার্বক্ষণিক বিভিন্ন কাজে ছোটাছুটির জন্য কমপক্ষে দুইজন লোক ও একজন দারোয়ান রাখতে পারেন।
ব্যবস্থাপককে মাসে দিতে হবে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা, টেকনিশিয়ান কে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা পরিবেশন কারিকে প্রতিদিন ৩০০ টাকা ও দারোয়ানকে মাসে ৮ হাজার টাকা দিতে হবে।
সফল হওয়ার কৌশল
কমিউনিটি সেন্টার চালু করার আগে আশেপাশের লোকদের সঙ্গে কথা বলে নিতে পারেন বা তাদের মতামত, আগ্রহের বিষয় যাচাই করে দেখতে পারেন। তাদের বোঝানোর চেষ্টা করুন, তাদের প্রয়োজন এই আপনি কমিউনিটি সেন্টার তৈরি করেছেন।
কমিউনিটি সেন্টার স্থাপনের পর একটি সুন্দর নাম দিন ও একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিন।শুরুর দিকে এলাকায় পোস্টারিং, লিফলেট ও ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যানার প্রভৃতির মাধ্যমেও প্রচার করতে পারেন।
শেষ কথা
পরিকল্পনা মাফিক এগুলো কমিউনিটি সেন্টার ব্যবসায় সফল হওয়া কঠিন কোন বিষয় নয় স্থান নির্বাচন সঠিক হলে মাসে ৩০ জন গ্রাহক পাওয়া সহজ। বেশিরভাগ অনুষ্ঠান সন্ধ্যায় হয়ে থাকে। তাই দিনে দুই তিনটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা সম্ভব।আশা করি এই পোস্টটি পড়ে কমিউনিটি সেন্টার সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা আপনারা পেয়েছেন।
আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধু,বান্ধবদের মাঝে অবশ্যই শেয়ার করুন। আর এই ধরনের তথ্য নির্ভর আর্টিকেল পেতে সব মিলবে ডট কম এর সাইটের সাথে থাকুন।।
সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়
comment url