ব্যাংকে চাকরির জন্য কি পড়তে হবে জেনে নিন

আপনি যদি ব্যাংকে চাকুরী করতে চান,তাহলে ব্যাংকে চাকরির জন্য কি পড়তে হবে তা আগে জানতে হবে।সফল,স্মার্ট ক্যারিয়ার, স্বাচ্ছ্যন্দময় জীবনের জন্য ব্যাংকের চাকুরীর কোন বিকল্প নেই।এটা তখনই সম্ভব যখন আপনি ব্যাংকে চাকরি পাওয়ার উপায় গুলো সম্পর্কে জানবেন।এই ক্যারিয়ার গড়তে আপনাকে পাড়ি দিতে হবে চরম পরিশ্রমের পথ।

একটা পরিকল্পিত গাইড লাইন ছাড়া এই পথ পাড়ি দেওয়া অত্যন্ত কষ্টকর।আজকের এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে বর্ননা করা হয়েছে,কিভাবে আপনি নিজেকে প্রস্তুত করবেন।

সূচীপত্রঃব্যাংকে চাকরির জন্য কি পড়তে হবে

  • ভূমিকা
  • ব্যাংকে চাকুরী পাওয়ার উপায়
  • সরকারি ব্যাংকে চাকুরীর যোগ্যতা
  • প্রাইভেট ব্যাংকে চাকুরীর যোগ্যতা
  • ব্যাংকে চাকরির জন্য কি পড়তে হবে
  • ব্যাংকে চাকুরীর বেতন কত
  • লেখকের কথা

ভূমিকা

আমাদের দেশের তরুনদের মধ্যে ব্যাংকে চাকরির চাহিদা ব্যাপক। কিন্তু পরিকল্পিত গাইড লাইনের অভাবে অনেকে এই চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।তারা জানেনা ব্যাংকে চাকুরী পাওয়ার উপায় সম্পর্কে।ব্যাংকে চাকরির জন্য কি পড়তে হবে।তাই আসুন এই আর্টিকেলটি তাদের জন্য যারা এই সোনার হরিণটিকে ধরতে চান।

এই আর্টিকেলে বর্ননা করা হয়েছে,সরকারি ব্যাংকে চাকুরীর যোগ্যতা,প্রাইভেট ব্যাংকে চাকুরীর যোগ্যতা,ব্যাংকে চাকুরীর জন্য কি পড়তে হবে,ব্যাংকে চাকুরীর বেতন কত ইত্যাদি সম্পর্কে।

ব্যাংকে চাকুরী পাওয়ার উপায়

ব্যাংকে চাকুরীর জন্য প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়। এত পড়াশোনা করার পর যদি আপনি ১০০ পার্সেন্ট প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারেন,তাহলে কোন লাভ নেই। এই জন্য আপনাকে অবশ্যই কৌশলী হতে হবে। পরীক্ষার হলে অনেককে দেখা যায় ঠিক সময় মত সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। এটার পিছনে কাজ করে তাদের কৌশলী পড়াশোনা।

চাকরির পড়াশোনা তো সকলেই করে কিন্তু কয়জন চাকরি পায়। কিন্তু তারাই চাকরি পায় যারা কৌশলী ভাবে পড়াশোনা করে। এই জন্য কৌশলী না হলে, শুধু ব্যাংকে চাকুরী নয় অন্য যেকোনো পরীক্ষাতেও পিছিয়ে যেতে পারেন।ব্যাংকের চাকুরীতে শুধুমাত্র কৌশলী হলেই চলবে না সময় সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।

আপনি দেখবেন স্কুল,কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকের হাতের লেখা খুব সুন্দর, কিন্তু ঠিক সময়ে পরীক্ষার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনা বলে পরীক্ষায় ভালো করতে পারে না অথচ তারা যদি ঠিক সময়ে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারতো তাহলে তারাই চাকরি পেতো। তাই বলা হয় সময়ের এক ফোঁড় আর অসময়ের দশ ফোঁড়।

আমাদের দেশে দেখা যায় ১টি পোস্টের পেছনে দশ হাজার চাকরিপ্রার্থী অ্যাপ্লিকেশন জমা দেয়, এতে আমরা হতাশ হয়ে যেতে পারি কিন্তু হতাশ হলে হবে না একটু কৌশলি ও সময় সচেতন হোলে অবশ্যই সোনার হরিণ নামক চাকুরীটি আপনি পাবেন।ব্যাংক অথবা অন্য যে কোন চাকুরীর ক্ষেত্রে গণিতের নাম্বার এর ব্যবধানে অনেকে পিছিয়ে যায়।

দেখা যায় কেউ এক নম্বর কম পেলে অন্ততপক্ষে দশ হাজার জনের পিছনে পড়ে যায়। এটা হয় সাধারণত পরীক্ষার হলে অসচেতনতা বা অমনোযোগীতার কারণে। এটা হওয়ার একমাত্র কারণ গণিতের প্রতি আগ্রহ না থাকা। গণিত প্রচুর প্র্যাকটিস করতে হয় শুধুমাত্র প্র্যাকটিস করলেই চলে না গণিতের শর্ট টেকনিকগুলো জানতে হয়।

গণিতের এমন কিছু টেকনিক আছে যেগুলো খুব কম সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান করে দেয় ,গণিত একটা মজার বিষয় যদি কেউ এই মজাটা পেয়ে যায় তাহলে তার কাছে গণিত খুব একটা কঠিন বিষয় হয় না,গণিত একটা বুদ্ধিবিত্তিক খেলা। তাই গণিতের ব্যাপারে আগ্রহ থাকতে হবে এবং প্রচুর প্র্যাকটিস করতে হবে তাহলে গণিতের ভয় কেটে যাবে।

পরিশেষে আল্লাহ সুবহানাহুয়া তায়ালার উপর পূর্ণ ভরসা ও নিজের প্রতি বিশ্বাস রেখে পরীক্ষার হলে পরীক্ষা দিতে হবে। তাহলে নিশ্চয় আপনি সফল হবেন।বন্ধুরা উপরের আলোচনা থেকে জানতে পারলেন ব্যাংকে চাকুরী পাওয়ার উপায় সম্পর্কে।

সরকারি ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা

সরকারি ব্যাংক এবং বেসরকারি ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় ।সরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে সকল অনুষদের ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দিতে পারে কিন্তু বেসরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে দেখা যায় ব্যবসায়ী প্রশাসনের ছাত্রছাত্রীদেরাই বেশি অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে।

সরকারি ব্যাংকগুলোতে প্রধানত তিনটি পদের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়:
  • সুপারভাইজার
  • অফিসার
  • সিনিয়র অফিসার
এছাড়াও স্পেশাল ক্যাটাগরিতে কিছু লোক নিয়োগ দেওয়া হয়।যেমন:IT ডিভিশন, Accounting ডিভিশনে।বন্ধুরা উপরের আলোচনা থেকে জানতে পারলেন সরকারি ব্যাংকে চাকুরীর যোগ্যতা ।

প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা

নিজস্ব নীতিমালার উপর ভিত্তি করে প্রাইভেট ব্যাংকগুলো সাধারণত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকে। তবে বেসরকারী ব্যাংকের ক্ষেত্রে বাণিজ্য অনুষদের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে।বেসরকারি ব্যাংকগুলো সাধারণত ৪ টি এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে নিয়োগ দিয়ে থাকে।
যেমন:
  • Assistant Officer
  • Junior Officer
  • Officer
  • Probationary Officer
প্রবেশনারী অফিসারদের কে বলা হয় তারা ভবিষ্যৎ ব্যাংকের লিডার অর্থাৎ তারাই হচ্ছে ব্যাংকের ভবিষ্যতের নিতী নির্ধারক বা কাান্ডারী।এক বছর শিক্ষানবীশ শেষে একজন প্রবেশনারী অফিসারকে পরবর্তীতে সিনিয়র অফিসার পদে স্থায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়।এখন নিশ্চয় একটা ধারণা এসেছে প্রাইভেট ব্যাংকে চাকুরীর যোগ্যতা সম্পর্কে।

ব্যাংকে চাকরির জন্য কি পড়তে হবে

খুব কৌশলী ভাবে প্রস্তুতি পর্বটা ছাড়তে হবে। পরিকল্পিতভাবে নির্ধারণ করতে হবে কতটুকু ও কি কি পড়াশুনা করবেন।সাধারণত প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই পর্ব সম্পন্ন হয়। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শেষ হওয়ার কিছুদিন পরই লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়।যার ফলে লিখিত পরীক্ষার সময় খুব একটা পাওয়া যায় না।
পরীক্ষার জন্য নিম্নলিখিত বিষয় গুলোর উপর ভালোভাবে পড়াশোনা করতে হয়:

ইংরেজিঃইংরেজি গ্রামারে ভালো দখল থাকতে হবে এবং ভোকাবুলারি স্টোরেজ ভালো হতে হবে। সাধারণত Synonyms, Antonyms, Analogy , Fill in the blanks, Sentence correction, sentence convert ইত্যাদি টপিকস থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা গল্পের বই এবং অনলাইনে আর্টিকেল পড়তে হবে।

নতুন কোন শব্দ চোখে পড়লেই তার মানে ডিকশনারি থেকে জেনে তা খাতায় লিখে রাখতে হবে। পরবর্তী পর্যায়ে এই শব্দগুলো মুখে মুখে আওড়াতে হবে এতে অনেক শব্দই মনে থাকবে। ইংলিশ বা ইংলিশ ডট ব্যাংক এ দুটো বই ভালোভাবে পড়তে হবে।

চৌধুরী এন্ড হোসাইন এর “অ্যাডভান্স কম্পোজিশন” অথবা পিসি দাসের “অ্যাপ্লাইড ইংলিশ গ্রামার এন্ড কম্পোজিশন” বই দুটি সহায়ক হিসেবে অনেক কাজে লাগতে পারে।

বাংলাঃসাধারণত ব্যাংকের পরীক্ষায় বাংলা বিষয়ের উপর গতানুগতিক ধারার প্রশ্ন হয়ে থাকে। সাধারণত বাংলা ব্যাকরণ ও বাংলা সাহিত্য এই দুটো অংশ থেকেই বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন আসে। বাজারে যেকোনো একটি ভালো মানের বাংলা গ্রামার বই ও বাংলা সাহিত্য অনুসরণ করা যেতে পারে। তবে নবম ও দশম শ্রেণীর ব্যাকরণের যে বোর্ডের বই রয়েছে তা বেশ কার্যকর।

এছাড়াও বিগত দিনের প্রশ্নগুলোর সমাধান তৈরি করে অনুশীলন করতে হবে।

গণিতঃনতুন অবস্থায় যারা ব্যাংক জবের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা যেন ৮ম ও ১০ম শ্রেণীর গণিতের বোর্ডের বইটি ভালো প্র্যকটিস করবেন। বেসিক ভালো করার জন্য খায়রুলস বেসিক ম্যাথ বইটি বেশ ভালো । গণিত সমাধানের প্রথমেই শর্টকাটে না গিয়ে বেসিকটা ভালো করে শেখা উচিত। আপনার বেসিক ভালো হলে আপনি নিজে শর্টকাট তৈরি করতে পারবেন।

আইসিটিঃএই বিষয়েও গতানুগতিক ও সাধারন প্রশ্ন হয়ে থাকে।কম্পিউটার বিষয়ক বিভিন্ন বই পড়তে হবে কম্পিউটার ম্যাগাজিন এই ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

সাধারণ জ্ঞানঃএ বিষয়ে ভালো করে পড়াশোনা করা দরকার সব সময় সমসাময়িক বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। এবং এই বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের বই যেমন “কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স” “কারেন্ট নিউজ” এই বইগুলো নিয়মিত করতে হবে। এছাড়াও প্রতিদিন নিউজ পেপার পড়তে হবে এবং সমসাময়িক বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে।

সার্বিক প্রস্তুতির জন্যঃভালো প্রস্তুতির জন্য “গর্ভঃমেন্ট সলিউশন” নামে একটি বই আছে এটা সংগ্রহ করে রাখতে পারেন। এই বইটি বেশ বড় এবং করতে বেশ সময় লাগে।তবে পরিকল্পিতভাবে খুললে এই বই শেষ করা কোন সমস্যা নয়। এই বইটি পড়তে গেলে অন্তত চারটি ভাগে ভাগ করতে হবে।

প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে একেকটি ভাগ শেষ করতে হবে। এখান থেকে যে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেগুলো মার্ক করে রাখতে হবে।

প্রস্তুতি পরিকল্পনা ও রুটিনঃপ্রতিদিন অন্তত দুইটি বিষয়ের উপর পড়াশোনা করতে হবে। এভাবে পরিকল্পিতভাবে পড়াশুনা করলে আপনার প্রস্তুতিটা ভালো হবে।অনেক চাকরি প্রার্থী আছে যারা ব্যাংকে চাকরির জন্য কি পড়তে হবে না জানার কারণে ব্যার্থ হচ্ছে।

ব্যাংকে চাকরির বেতন কত

বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারি করেছে,বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে কর্মকর্তাদের ন্যূনতম বেতন হবে ২৮ হাজার টাকা। এবং শিক্ষানবিশ কাল শেষ হলে প্রারম্ভিক মূল বেতন সহ মোট বেতন ভাতা হবে ৩৯ হাজার টাকা। এছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং ও এজেন্ট ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব নিতীমালা প্রনয়ন করতে বলা হয়েছে।

কর্মকর্তা ছাড়া কর্মচারীদেরও সর্বনিম্ন বেতন বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করে দিয়েছে, ব্যাংকের মেসেঞ্জার,পরিচ্ছন্নতা কর্মী,নিরাপত্তা কর্মী,অফিস সহকারী সহ সকল সমজাতীয় পদে সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ২৪ হাজার টাকা ।

দৈনিক ভিত্তিতে যারা কাজ করছেন, তাদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে,স্থায়ীভাবে যারা চাকুরী করছেন,তাদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বেতন ভাতা নির্ধারণ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ প্রদান করেছেন।বন্ধুগণ ব্যাংকে চাকরির বেতন কত জানার পর নিশ্চয় খুব ভালো লাগছে।

লেখকের কথা

প্রিয় পাঠকগণ এখন নিশ্চয় এই আর্টিকেলটি পড়ে জেনে গেছেন ব্যাংকে চাকরির জন্য কি পড়তে হবে ও ব্যাংকে চাকুরী পাওয়ার উপায় গুলো সম্পর্কে।বন্ধুগণ নিশ্চয় আপনি খুশি হয়েছেন এই তথ্যবহুল আর্টিকেলটি  পড়ে।

আপনার পরিশ্রম,সময় সচেতনতা,ও সর্বেোপরি আল্লাহ সুবহানাহুয়া তায়ালার উপর পূর্ণ ভরসা আপনাকে আপনার লক্ষ্যে অবশ্যই পৈাঁছে দেবে।আজ এ পর্যন্তই ,আরও এই ধরনের আর্টিকেল পড়তে লক্ষ্য রাখুন আমাদের সাইটটিতে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩