স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায়-স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির খাবারগুলো সম্পর্কে জেনে নিন
বন্ধুরা বর্তমানে মাল্টি টাস্কিং এর যুগে ঠিকঠাক মতো সবকিছু মনে রাখা সত্যি খুব কষ্টকর ব্যাপার হয়ে গেছে। তাই আজকের আর্টিকেলটি ঐ সকল ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে, যারা কোন কিছু মনে রাখতে পারেন না বা স্মৃতিশক্তি কমে গেছে তাদের জন্য। এই আর্টিকেলটিতে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায় গুলো নিয়েই শুধু নয় স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির খাবার গুলো নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
ভূমিকা
রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে অনেক পরিচিত মানুষের সাথে প্রতিদিন আপনার দেখা হয়। যাদেরকে আপনি খুব ভালোমতো চেনেন কিন্তু ওই মুহূর্তে চিনতে পারছেন না,আবার চিনতে পারলেও নামটা মনে আসছে না। এই ধরনের বিব্রতকর অবস্থায় হয়তো অনেকবার পড়েছেন। আবার বাইরে কোন একটা নির্দিষ্ট কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন কিন্তু রাস্তায় গিয়ে কাজটি ভুলে গেলেন।
এই ধরনের ভুলে যাওয়া বা কোন কিছু মনে রাখতে না পারা কিংবা স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার কারণে এটি হয়ে থাকে।আজকের আর্টিকেলটি তাদের উদ্দেশ্যেই তৈরী করা হয়েছে যারা এই সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছেন। আসুন বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির খাবার
বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষ অনেক কিছুই মনে রাখতে পারেনা বা ভুলে যায়। এটি মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। যত দিন যায় ততই ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায় এই ভুলে যাওয়া প্রবণতাকেই বলা হয় স্মৃতি ভ্রম। সাধারণত এটি হয়ে থাকে আলঝেইমার ,থাইরয়েড ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতির কারনে।
এই ঘাটতি মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বাধা দেয়। ফলে মানুষ স্মৃতিভ্রমে ভুগে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে মানুষের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস এক্ষেত্রে কিছুটা হলেও দায়ী। তবে খাদ্যাভাস পরিবর্তন করে এই সমস্যার কিছুটা সমাধান পাওয়া যেতে পারে। নিম্নে এগুলো নিয়েই আলোচনা করা হলো।
ওমেগা-৩ যুক্ত মাছ:মাছ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকার। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ মাছ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানুষের মস্তিষ্কে যে স্নায়ু কোষগুলো তৈরি হয় তা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড দিয়ে তৈরি হয়। এই ওমেগা থ্রি অ্যালজাইমার রোগ থেকে রক্ষা করে এবং কোন কিছু ভুলে যাওয়া রোধ করতে সহায়তা করে।
ওমেগা ৩ এর প্রধান উৎস হলো সামুদ্রিক মাছ যেমন: ভেটকি, স্যামন, টুনা সার্ডিন ইত্যাদি।
ব্লবেরি: এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মস্তিষ্কের কোষ গুলির মধ্যে যোগাযোগ রক্ষায় সাহায্য করে এবং মস্তিষ্কের কোষগুলোকে উন্নত রাখতে সহায়তা করে। এতে এক ধরনের অক্সিডেন্ট আছে যার নাম অ্যান্থোসায়ানিন যা মস্তিষ্কের প্রদাহ কমায় এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
হলুদ: হলুদের মধ্যে রয়েছে কারকিউমিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি যৌগ ।এইসব উপাদান অ্যালজাইমার রোগ থেকে স্মৃতিশক্তিকে রক্ষা করে। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং বিষন্নতা কমিয়ে মস্তিষ্কে নতুন কোষ উৎপাদন করে।
ব্রকলি:এতে আছে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন কে যা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে এছাড়া ব্রুকলিতে আরো কিছু উপাদান রয়েছে যা মস্তিষ্ক প্রদাহ কমায় মস্তিষ্কের বিভিন্নরকম ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
কুমড়ার বীজ: কুমড়ার বীজ কে সুপার ফুড বলা হয়। এতে আছে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন ও কপার ।এছাড়া এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মস্তিষ্কের ফ্রী রেডিক্যালের ক্ষতিগুলো থেকে রক্ষা করে। কুমড়ার বীজ বিষন্নতা, মাইগ্রেন ও মৃগী রোগের ঝুঁকি কমিয়ে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে।
ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেট সাধারণত কোকো পাউডার দিয়ে তৈরি হয়। এই কোকো পাউডারের মধ্যে আছে ফ্ল্যাবোনায়েড, ক্যাফেইন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মস্তিষ্কের উদ্দীপক যৌগ হিসেবে কাজ করে। এই উপাদানগুলো স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে যে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা তা কমিয়ে দেয়।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যারা চকলেট বেশি খান তাদের স্মৃতিশক্তি চকলেট না খাওয়া মানুষের চেয়ে বেশি।
বাদাম: সাধারণত যারা নিয়মিত বাদাম খান তাদের হার্ট সুস্থ থাকে এবং মস্তিষ্ক সুস্থ সবল ও সতেজ থাকে। বাদামে বিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে যেমন:অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন E, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ইত্যাদি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা নিয়মিত বাদাম খান তাদের স্মৃতিশক্তি যারা বাদাম খান না তাদের স্মৃতিশক্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর।
কমলা: কমলার মধ্যে যে ভিটামিন সি রয়েছে তা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এর মধ্যে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলো রয়েছে তা ফ্রী রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্মৃতিশক্তিকে সুস্থ রাখে।
ডিম: ডিমের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেমন ভিটামিন বি ৬ ,বি ১২ ফোলেট এবং কোলিন যা মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কোলিন একটি মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট এটা শরীরের নিউরোট্রান্সমিটার তৈরি করে।যাতে স্মৃতিশক্তি ও মন উভয়ে ভালো থাকে।
গ্রিন টি: গ্রীন টি তে রয়েছে এল থেনাইন নামক অ্যামিনো এসিড। যা রক্তের সঙ্গে মিশে মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং উদ্বিগ্নতা কমাতে সাহায্য করে।এটি মস্তিষ্কের আলফা তরঙ্গের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়িয়ে দিয়ে ক্লান্তি দূর করে। গ্রিনটিতে থাকা পলিফেনল ও অ্যান্টিঅ্যাক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের ক্ষয় রোধ করে যা আলঝেইমার রোগ থেকে মুক্তি দেয়।
আপেল: এতে রয়েছে কোয়ারসেটিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোষের মৃত্যু ঠেকাতে সাহায্য করে ও নিউরনের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
জামের মিল্কসেক: আমরা যদি দুধের সাথে যামের মিল্ক শেখ বানিয়ে খেতে পারি তাহলে তা মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার। এটি মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে ব্লাড প্রেশারের মাত্রা ঠিক রাখে। এবং কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে।
টমেটো: টমেটোতে রয়েছে লাইকোপেন নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মস্তিষ্কের কোষের রেডিকেল ক্ষয় রোধ করে ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে।
ওটস: উঠছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি শরীরের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে।এবং পেটের নানা ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা করে।এই খাবারটি বাচ্চা ,বয়স্ক সকলের প্রতিদিন খাওয়া উচিত কারণ এতে যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে তা মস্তিষ্কের ক্ষয় রোধ করে মস্তিষ্ককে রক্ষা করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।
গোটা শস্য: এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যাতে গ্লাইসিমিক ইনডেক্স কম থাকে।এই উপকারি উপাদান গুলো মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত ইত্যাদি মস্তিষ্কের জন্য উপকারী খাবার।
বিট: যুক্তরাষ্ট্রের ট্রান্সলেসোন্যাল সাইন্স সেন্টারের গবেষকরা গবেষণা করে দেখেছেন যে প্রাপ্তবয়স্কদের যদি প্রতিদিন বিটের রস এক গ্লাস করে খাওয়ানো যায় তাহলে মস্তিষ্কের যে ট্রান্সমিশন ব্যবস্থা রয়েছে তাকে সঠিক রাখে এবং স্মৃতিভ্রমের প্রবণতাকে কমিয়ে দেয়।
পালং শাক: এই শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ই,বিটা ক্যারোটিন ও ফোলেট যার স্মৃতিশক্তিকে সতেজ রাখে এবং ভুলে যাওয়া রোধ করতে সহায়তা করে।প্রতিদিন যদি পালং শাক খাওয়া যায় তাহলে বিভিন্ন ধরনের মস্তিষ্কের রোগ বিশেষ করে অ্যালঝেইমার রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
গাজর: গাজর চোখের জন্য যেমন উপকারী একটি খাবার ঠিক তেমনি মস্তিষ্কের জন্যও খুবই উপকারী একটি খাবার। এতে উচ্চমাত্রার লুটিওলিন থাকে যা বয়স বাড়ার সাথে সাথে যে স্মৃতি ক্ষয় হয় তা দূর করে এবং মস্তিষ্কের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায়
মাল্টি টাস্কিং পরিহার: কিছু কিছু মানুষ আছে যারা একসাথে অনেকগুলো কাজ করতে পারে অর্থাৎ মাল্টি টাস্কিং এ বেশ পটু। আমাদের দেশের বেশিরভাগ কর্মক্ষেত্র গুলোতে সেটা ঘরের ভেতরে বা ঘরের বাইরে বিশেষ করে অফিসগুলোতে একজন মানুষকে অনেকগুলো কাজ করতে হয়। কারণ আমাদের দেশে কাজের ক্ষেত্রে দক্ষ লোকের অভাব রয়েছে।
তাই একজন দক্ষ লোককে মাল্টি টাস্কিং করতে হয় অর্থাৎ একসাথে অনেকগুলো কাজ করতে হয়। মাল্টি টাস্কিং ভালো হলেও একজন মানুষ দীর্ঘ মেয়াদে এটা করতে পারে না ফলে কাজের মধ্যে অনেক ভুল হয়ে যায়। তাই ভালোভাবে কোন কিছু মনে রাখতে চাইলে বা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে চাইলে একটি কাজকে দক্ষতার সাথে করতে হবে।
নিজের স্ট্রেস নিয়ন্ত্রনে রাখুন: বর্তমান ডিজিটাল এই বিশ্বায়নের যুগে আমাদের মধ্যে মানসিক অবসাদগ্রস্থতা ও মানসিক চাপ শরীরের উপর মারাত্মকভাবে কুপ্রভাব বিস্তার করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এই অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে আমরা আমাদের বিভিন্ন চিন্তাভাবনার যে ক্ষমতা তা লোপ পেয়েছে।
আমাদের মনের মধ্যে যদি এই চিন্তার চাপ জমতে থাকে তাহলে আমরা কোন কিছুই ভালো ভাবে মনে রাখতে পারব না ।এতে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যাবে। কোন ব্যক্তি যদি চাপমুক্ত হয়ে স্বাধীন চিন্তা নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে তাহলে তার স্মৃতিশক্তি ঠিক থাকে এবং মনে রাখার প্রবণতা বেড়ে যায়।
তাই আমরা সবসময় পরামর্শ দিই যেন যতটা পারা যায় এই দৈাড়ঝাপ ও ঝামেলা যুক্ত পৃথিবীতে সরল স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকা যায় ততই ভালো ।আর যতই স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করবেন ততই মনে থাকার সম্ভাবনাটা বেশি থাকবে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
মস্তিষ্ককে চাপে ফেলবেন নাঃ প্রতিটি বস্তুরই যেমন একটা নির্দিষ্ট ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ঠিক তেমনি মস্তিষ্কের ও একটা নির্দিষ্ট ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। অনেক ছাত্র-ছাত্রীদের দেখা যায় সারা বছর পড়াশোনা না করে ঠিক পরীক্ষার আগে সারাদিন সারারাত জেগে পড়াশোনা করে মস্তিষ্কের মধ্যে অতিরিক্ত তথ্য দেওয়া বা মুখস্ত করার চেষ্টা করে।
কিন্তু এতে খুব একটা লাভ হয় না কারণ অতিরিক্ত চাপের কারণে সে কোন কিছুই মনে রাখতে পারে না। তাই শুধুমাত্র পরীক্ষার আগে পড়াশোনা না করে সারা বছর যদি শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিদিন পড়াশোনা করতে পারেন তাহলে আপনার সবকিছু মনে থাকবে অর্থাৎ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
চোখ বন্ধ করে মনে করার প্রবণতা ত্যাগ করুন: অনেকেই আছেন যারা চোখ বন্ধ করে কোন কিছু মনে করার চেষ্টা করে। এভাবে চেষ্টা করলে কি সবকিছু মনে পড়ে যায়? আসলে এভাবে মনে করতে চাইলে আরো ভুল হয়ে যায়।
তাই চোখ বন্ধ করে কোন কিছু মনে করার চেষ্টা করার অর্থ হলো মস্তিষ্ক চোখ থেকে যে সেন্সর স্টিমুলেশন সংগ্রহ করে তা বাধা প্রাপ্ত হয় ফলে কোন কিছুই মনে পড়ে না। তাই চোখ বন্ধ করে কোন কিছু মনে করার প্রবণতা ত্যাগ করে স্বাভাবিক ভাবে মনে করার চেষ্টা করতে হবে এতে তাড়াতাড়ি মনেও পড়বে ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
নিজের ভাষায় অনুবাদ করুন: অনেক সময় কোন তথ্য এমন ভাবে আমাদের সামেনে আসে যেগুলো আমরা যোগাযোগ স্থাপন করতে না পারার কারণে ভুলে যাই। তাই তথ্যকে প্রথমে ভালোভাবে বুঝে নিজের মতো করে নিজের ভাষায় অনুবাদ করে নিতে হবে। এতে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং সবকিছু মনে থাকবে।
অন্তর্জালে জড়াবেন না: আমরা অনেক সময় কোন প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য ইন্টারনেটের শরণাপন্ন হই। অথচ এগুলো আমরা ব্রেন স্টর্মিং করলেই হয়তো উত্তর পেয়ে যাব। কিন্তু আমরা সেটা করি না এর ফলে আমাদের মস্তিষ্ক অলস হয়ে পড়ে ।
তাই কোন প্রশ্নের উত্তর জানতে গেলে আগেই অন্তর্জালে না জড়িয়ে কিছুক্ষণ বসে নিজে নিজে এর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করতে হবে এতে স্মৃতিশক্তি সমৃদ্ধ হবে এবং ভুলে যাওয়ার পরিণতা কমে যাবে।
Visualize করুন: বর্তমান যুগে আমরা কোন কাজ করতে গেলে ফোন অথবা ল্যাপটপে রিমাইন্ডার দিয়ে রাখি। এটা করি এই কারণে, যেন ঠিক সময় মত কাজটি করতে পারি। যেমন আমরা অফিসে বা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়টার সময় যাবো সেখানে কি কি কাজ করবো আবার কখন ফেরত আসবো এই সংক্রান্ত সকল বিষয়ের ব্যাপারে আমরা রিমাইন্ডার দিয়ে রাখি।
যাতে ঠিক সময় মতো কাজটির কথা মনে পড়ে যায়। ঠিক তেমনি মানুষের মস্তিষ্কের ষ্টোরে যেসকল কাজগুলো করার জন্য জমা রাখি সেগুলো করার আগে যদি একবার মনে মনে Visualize করে নেই তাহলে দেখবেন ঠিক সময়মতো মস্তিষ্কের বাক্সে রাখা তথ্যগুলো খুব সহজেই মনে পড়ে গেছে। তাই Visualize করলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
একবার ওলট পালট করুন: রুটিন বাধা জীবন মানুষের মস্তিষ্ককে অলস করে তোলে। প্রতিদিন যদি একই রুটিন অনুযায়ী জীবনযাপন করি তাহলে মনে রাখার প্রয়োজনটা একটু হলেও কমে যায় কারণ আমরা ওই কাজগুলোতে যন্ত্রের মত অভ্যস্ত হয়ে পড়ি। তাই সপ্তাহে দুই দিন রুটিন বাধা জীবন থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করি।
মনে করুন বাড়িতে রাখা যেসব জিনিসপত্র রয়েছে তার স্থান পরিবর্তন করে ফেলুন। প্রথমদিকে হয়তো জিনিসগুলো খুঁজে পেতে একটু কষ্ট হবে। কিন্তু এর একটা বিশেষ সুবিধা হল আপনার স্মৃতিশক্তিকে নতুন স্থান মনে রাখার জন্য বেশ ব্রেন স্টর্মিং করতে হবে। এটা বারবার করলে দেখবেন আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।
কৌশলে করুন : মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর হেলাল উদ্দিন বলেছেন একজন মানুষ তিনটি কৌশল যদি অবলম্বন করেন তাহলে তিনি সবকিছু মনে রাখতে পারবেন।
৩ টি কৌশল নিম্নরুপ
- Piecemeal approach
- Rehearsal approach
- Learning by Doing approach
Piecemeal approach: একবারে সব বিষয়কে মনে না রেখে ছোট ছোট করে মনে রাখার চেষ্টা করা বা অল্প অল্প ভাগে ভাগ করে মনে রাখা। এটাকে Piecemeal approach বলা হয়।
Rehearsal approach: একটি বিষয়কে বারবার বিভিন্ন দিক থেকে বলতে হবে ,দেখতে হবে এবং সেটাকে বারবার আত্মস্থ করতে হবে।
Learning by Doing approach: যদি কোন বিষয়কে মনে রাখতে চান বা স্মৃতিতে ধরে রাখতে চান তাহলে সেই বিষয়টিকে চোখ দিয়ে দেখুন সেই বিষয়টি সম্পর্কে কান দিয়ে শুনুন নাক দিয়ে তার গন্ধ নীন, ত্বক দিয়ে তা অনুভব করার চেষ্টা করুন জিহ্বা দিয়ে তার স্বাদ গ্রহণ করার চেষ্টা করুন।
অর্থাৎ আমাদের যে শরীরের পঞ্চ ইন্দ্রিয় আছে সেই পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে বিষয়টিকে সেন্সরিং করার চেষ্টা করুন তাহলে দেখবেন সবকিছু মনে থাকবে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
Brain game: নিয়মিত ব্রেন গেম খেলুন। ইন্টারনেটে বহু ধরনের ব্রেইন গেমের ভিডিও রয়েছে সেগুলো ভালোভাবে দেখুন যেমন:সুডোকু,পাজল সলভ ইত্যাদি ব্রেইন গেমে অভ্যাস গড়ে তুলুন। এছাড়া দাবা খেলতে পারেন এটিও খুব ভালো ব্রেইন গেম।
এগুলো যদি আপনি আন্তরিকতার সাথে করতে পারেন তাহলে মস্তিষ্কের সক্রিয়তা বাড়বে। তাহলে আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়বে এবং মনে রাখার প্রবনতা বেড়ে যাবে।
প্রতিদিনের কাজ লিখে রাখুন: স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য একটি ভালো উপায় হচ্ছে একটি রুটিন মেনে চলা এবং পরিপূর্ণভাবে তা পালন করা। এর ফলে মস্তিষ্ক যেমন অনেক কিছু মনে রাখতে পারে তেমনি টাইম ম্যানেজমেন্ট টাও সঠিকভাবে পরিপালন করা হয়।
আমরা প্রতিদিন যে কাজ করব সেটা যদি লিখে রাখি তাহলে বাকি যে কাজগুলো বাঁকি থেকে যায় সেগুলো মনে রাখা সহজ হয়।
নতুন কাজ শেখার চেষ্টা করুন: মাঝেমধ্যে কেউ যদি নতুন কাজ শিখতে পারে তাহলে তার স্মৃতিশক্তি বেড়ে যায়। সেটা যে কোন ধরনের কাজই হতে পারে। সৃষ্টিশীল কোন কাজ যদি হয় তাহলে সেটা বেশি ভালো হয়।
যেমন:ছোটবেলা থেকে অনেকেরই বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করার অভ্যাস ছিলো কিন্তু একসময় পারিবারিক ও পেশাগত জীবনের চাপে পড়ে সেগুলো চাপা পড়ে যায় ।
যদি পারেন অবসরে সেগুলো একটু ঝালিয়ে নিতে তাহলে দেখবেন আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মানসিক চাপ থেকেও কিছু সময়ের জন্য হলেও রেহাই মিলেছে।তাই মানসিক চাপ মুক্ত থাকতে বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতজনের পরিধি বৃদ্ধি করুন এবং তাদের সাথে সুন্দর গঠনমূলক সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তুলুন।
বিভিন্ন পথে বাড়ি ফিরুন: অফিস থেকে বা কলেজ ,বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রোজ একই পথে বাড়ি না ফিরে মাঝে মাঝে অন্য পথ দিয়ে বাড়িতে ফিরুন। যেকোন একটা কাজ মস্তিষ্কে স্মৃতিশক্তির উপর প্রভাব ফেলে ।তাই বিভিন্ন পথ দিয়ে ফিরলে মনে রাখার প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায় এতে স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি পায়।
মস্তিষ্ককে ব্যস্ত রাখুন: মস্তিষ্ককে দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন। সেটা সকালে হতে পারে অথবা দুপুরে হতে পারে। তবে সকালের দিকে করলে বেশি ভালো হয় ।এক্ষেত্রে বিভিন্ন শব্দছকের খেলা, কুইজ টেস্টে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বাচ্চাদের পড়ানোর ফাঁকে নিজের পড়াশোনাটাও একটু ঝালিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
ঘুমানোর আগে Remind করুন: রাতের বেলা ঘুমানোর আগে সারা দিনের কর্মকাণ্ড গুলোকে Remind করে নিতে হবে ।যেমন সারা দিনে কি কাজ করলেন, কোন কোন কাজগুলো বাকি থেকে গেল সারাদিনে কি কি ঘটনা ঘটেছে ইত্যাদি।
পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে ।কারন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শরীর ও মনের ওপর প্রভাব ফেলে ।প্রতিদিন অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো জরুরি।
মেডিটেশন করুন: মেডিটেশন স্মৃতিশক্তিকে বৃদ্ধি করে ।এটি করলে মনের উপর চাপ অনেকখানি কমে যায় কোন কাজে বেশি করে মনোযোগ দেওয়া যায় ব্রেনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
তাই প্রতিদিন নিয়মিত ঘুম থেকে উঠে ও রাতে ঘুমানো যাওয়ার আগে মেডিটেশন করতে হবে ।চোখ বন্ধ করে লম্বা করে শ্বাস নিতে হবে। এরকম প্রতিনিয়ত করলে এর সুফল তাড়াতাড়ি পাবেন।
কল্পনা শক্তি বাড়ান: নিজের যে কাজগুলো রয়েছে সেই কাজগুলো ভালোভাবে মনের মধ্যে নিয়ে চিন্তা করুন। একটা সুন্দর ছবি মনের মধ্যে স্থাপন করুন মনের মধ্যে ওই কাজগুলোকে সাজিয়ে গুছিয়ে নিন। তাহলে দেখবেন কাজগুলোর কথা অনেকদিন ধরে মনে আছে।
প্রান খুলে হাসুন: সর্বদা প্রাণ খুলে হাসুন তাহলে আপনার মন ভালো থাকবে সাথে আপনার হার্টও ভালো থাকবে। আর হার্ট ভালো থাকলে ব্রেইনে রক্ত সঞ্চালন সঠিকভাবে সংঘটিত হবে ।হাসিখুশি থাকলে চিন্তা কমে যায় যার কারণে যে কোন কাজ মনোযোগ দিয়ে করতে পারবেন এতে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম
শরীরের ব্যায়াম করলে যেমন শরীর সুস্থ থাকে ঠিক তেমনি মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে গেলে সব সময় কর্মক্ষম রাখতে হয়। এই কর্মক্ষম রাখার জন্য কিছু ব্যায়াম নিয়ে আলোচনা করা হলো।
দৌড়ানো: মস্তিষ্কের একটা অংশ আছে যে অংশের নাম হিপো ক্যাম্পাস এখানে নতুন কোষ সৃষ্টি না হলে মস্তিষ্ক সুস্থ থাকে না। আপনি যদি দৌড়ানো ব্যায়ামটি করেন তাহলে মস্তিষ্কের হিপো ক্যাম্পাসে অবশ্যই নতুন কোষ উৎপাদন হবে। হিপো ক্যাম্পাস সাধারণত নতুন কিছু শেখা, বিভিন্ন কৌশল শেখার কাজটা করে থাকে ।
এই হিপো ক্যাম্পাস যদি সতেজ ও উন্নত থাকে তাহলে মানসিক চাপ কম রাখাতে মস্তিষ্ক বেশ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এর ফলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কাজগুলো করা সহজ হয় ।
অ্যারোবিকস: এটি মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি ব্যায়াম। প্রতি সপ্তাহে যদি ১৫০ ঘন্টা এই ব্যায়াম করা হয় তাহলে মস্তিষ্ক সতেজ ও সরল থাকে। মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগ যেমন স্মৃতি ভ্রম ,হতাশাগ্রস্থতা, মানসিক অস্বস্তি এগুলো কমাতে এই ব্যায়ামটি অত্যন্ত কার্যকর।
সাইকেল চালানো: সাইক্লিং করলে মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় ফলে নতুন কোষ তৈরি হয়। এতে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের জন্য এটি বেশ উপকারী একটি ব্যায়াম কারণ মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বাড়লে মানসিক ভাবে রোগী ভালো থাকবে।রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকরে মন মেজাজ ভালো থাকে।
আর এই ব্যায়াম মানুষের চাপ সৃষ্টিকারী হরমোন কর্টিসল ও এন্ড্রো নালীন এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
ভুজঙ্গাসন: মেঝেতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার হাতের তালু মেঝের উপর ঠেকিয়ে তার উপর ভর দিয়ে পাজরের দুই পাশে রাখুন।তারপর কোমর থেকে পা পর্যন্ত মাটির উপর রেখে হাতের তালুর উপর ভর বাঁকি শরীরটা আস্তে আস্তে উপরের দিকে তুলুন।
এই ভঙ্গিতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট থাকার পর আগের অবস্থায় ফিরে যান।এভাবে সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ পাঁচবার এটি করুন।তাহলে দেখবেন আপনার মন ধীরে ধীরে প্রশান্ত হয়ে আসছে েএবং মনে রাখার প্রবনতা বেড়ে গেছে।
বজ্রাসন: আমরা যেমন নামাজে বসি ঠিক সেইভাবে শিরদাঁড়া সোজা করে বসুন।উরুর ওপর হাত দুটি সোজা করে রাখুন।শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিকভাবে নিন।২০ সেকেন্ড পর আস্তে আস্তে আগের ভঙ্গিতে ফিরে যান।
পদহস্তাসন: পা দুটি ছড়িয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ান।ভালো করে শ্বাস নিন।এরপর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কোমর থেকে শরীরের সামনের অংশ মেঝের দিকে ঝুঁকিয়ে দিন।হাঁটু না ভেঙ্গে হাতের সাহায্যে গোঁড়ালি স্পর্শ করুন। এভাবে ২০ সেকেন্ড থাকুন।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ইসলামিক উপায়
হযরত মুহাম্মদ সাল্লেললাহু আলাইহিস সালাম এর কাছে যখন হযরত জিব্রাইল (আঃ) ওহী নিয়ে আসতেন,তখন তিনি তা মুখস্ত করার চেষ্টা করতেন কিন্তু মুখস্ত করা উনার জন্য খুব কষ্টকর ছিল। তখন আল্লাহ সুবহানাহুয়া তায়ালাতালা আয়াত নাজিল করলেন।এতে রাসুল(সাঃ) এর কষ্ট লাঘব হলো।
স্মরণশক্তি বৃদ্ধির দোয়া : “রাব্বি জিদনি ইলমা”
অর্থ:হে আমার প্রতিপালক,আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন।(সুরা ত্বাহা, আয়াত:১১)
এই দোয়া নিয়মিত পাঠ করলে আল্লাহ সুবহানাহুয়া তায়ালা জ্ঞান দান করবেন।স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করে দেবেন।
স্মরণশক্তি বৃদ্ধির আমল: শুধুমাত্র দোয়া করলেই হবে না,যতক্ষন না পর্যন্ত এই দোয়া করার পাশাপাশি আমল বা কাজে পরিনত না করবো ততক্ষন না পর্যন্ত এই দোয়ার সুফল আমরা পাবোনা।সব ধরনের গুনাহ যেমন:শিরক,বিদআত,কবিরা,সগিরা থেকে পরিপূর্ণভাবে দুরে থাকতে হবে।
সব সময় আল্লাহ সুবহানাহুয়া তায়ালাকে স্মরণ করতে হবে।যেমন:সুবহানআল্লাহ,আলহামদুলিল্লাহ,লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু,আল্লাহু আকবার ইত্যাদি পড়তে হবে।আল্লাহ সুবহানাহুয়া তায়ালা বলেছেন “আর যখন ভুরে যাও,তখন তুমি তোমার রবের যিকির করো এবং বলো,আশা করি,আল্লাহ আমাতে এর চেয়েও নিকটবর্তী সত্য পথের হিদায়াত দিবেন”।(সুরা কাহাফ,আয়াত:২৪)
বিখ্যাত কিছু আলেমগন স্মরণশক্তি বৃদ্ধির কিছু খাবারের কথা বলেছেন ইনাদের মধ্যে ইমাম যুহরি (রহঃ) বলেন:যে হাদিস মুখস্থ করতে চাই সে যেন কিসমিস খায়।(সুত্র্র;খতিব আল-বাগদাদি আল-জামি:২/৩৯৪)।মাথায় হিজামা করা বা শিঙ্গা লাগালে মুখস্থ শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং ভুলে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ওষুধ
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে শুধুমাত্র পুষ্টিকর খাবার ও ব্যায়াম করলেই হবে না এগুলোর সাথে নিম্নোক্ত আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথিক ও এলোপ্যাথিক ওষুধগুলো খাওয়া যায় তাহলে স্মৃতিশক্তি আরো প্রখর হবে।ডাঃ এর পরামর্শ অনুযায়ী যদি আপনারা পথ্যগুলো নিয়মিত সেবন করেন তাহলে দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি আপনাদের স্মৃতিশক্তির উন্নতি হয়েছে।
- ঘি ,হরিতকি, শিলাজিৎ, ত্রিফলা ,চবনপ্রাশ ইত্যাদি প্রতিদিন উপযুক্ত পরিমানে খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
- তুলশী পাতা এবং ব্রাহ্মণী শাকের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
- প্রতিদিন খালি পেটে ৫ চামচ তুলসি পাতার রাস খেলে এবং মাথায় বাদাম তেল মালিস করুন তাহলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- গরম দুধের সাথে যষ্টিমধুর গুঁড়া মিশিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে পান করলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
- নিশিন্দা গাছের মুলের চূর্ণ ২ গ্রাম গরুর ঘিতে গরম করে সকাল ও বিকাল সেবন করলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
- শতমূলি গরম পানিতে মিশিয়ে পান করলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
- রাতে গরম দুধের সাথে অশ্ব গন্ধার গুড়া মিশিয়ে পান করলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
- নারকেল,বাদাম,আখরোট,পোস্তদানা সেবন করলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
- বচের মুল গরম জলে ফুটিয়ে কফ তৈরী করে পান করুন তাহলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- তুলসী পাতা, বাদাম ,গোলমরিচ তিনটিকে পিষে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে পান করুন তাহলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- মেহেন্দির বীজের সাথে মধু মিশিয়ে সারাদিনে ৩ বার পান করলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- কাঁচা হলুদ ও দারুচিনির গুড়া মিশিয়ে খান এবং গুলনচের কফ তৈরী করে খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
- ১ চামচ আমলকির সাথে মধু মিশিয়ে প্রতিদিন দুই বেলা খান ও এর সাথে জোয়ান পাতা সেবন করুন তাহলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- গোলমরিচের সাথে মধু মিশিয়ে সকাল বিকাল খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- ১ গ্লাস দুধের সাথে ৫ গ্রাম শঙ্খ পুষ্পির গুঁড়া মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে পান করলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- তামার গ্লাসে রাতের বেলা পানি রেখে সকালে পান করুন।খাবার পর আবার পানি রেখে ৮ ঘন্টা পর পান করুন।
- ৫ টি বাদাম ১১ টি গোল মরিচ পিসে একটু মিশ্রি অর্ধেক গ্লাস পানি ও ১ কাপ দুধের সাথে প্রতিদিন সকালে নিয়মিত পান করলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- Branolia syrup এটি বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরী যেমন শতমুলি, বেরেলা, অশ্বগন্ধা, যষ্টিমধু ,কুশি ও ব্রাহ্মণী। এই সিরাপটি ১৮ বছরের উপরে সকলেই খেতে পারবেন। ১০ মি.লি পরিমাণ সিরাপ খাওয়ার পর সকালে এবং রাতে খেতে হবে। এই সিরাপ নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- Giloba 60 Capsule সকালে ও রাতে খেতে হবে।এটি নিয়মিত ৩ থেকে ৪ মাস ১ টি করে খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- Monera syrup সকালে ১ চামচ রাতে ১ চামচ করে এটি নিয়মিত ৩ থেকে ৪ মাস খেতে হবে তাহলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- XincB Tablet এটি সকালে ও দুপুরে এবং রাতে ১ টি করে খেতে হবে এটি নিয়মিত ২ মাস খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
- Bacopa Munnieri ও Alfa Alfa এই দুটি ওষুধ ৮ কাপ পানিতে ১৫ ফোটা করে মোট ৩০ ফোটা খাবার আধা ঘন্টা আগে দিনে ৩ বার অর্থাৎ সকাল,দুপুর,রাতে ১ বার করে খেতে হবে।৩ মাস খেতে হবে।
- Anacardium orientale 30ch ৫ml করে খাবার আধা ঘন্টা পরে ৩ ফোটা করে জিভে দিয়ে খেতে হবে।৩ মাস খেতে হবে।
- Kali phosphoricum 6x Tablet এই ওষুধ টি ৫ টা করে ১ কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে খাবার আধা ঘন্টা পরে সকালে ও রাতে ঘুমানোর সময় খেতে হবে।৩ মাস খেতে হবে।
লেখকের শেষ কথা
বন্ধুগণ উপরে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তা যদি যথাযথ ভাবে পালন করতে পারেন তাহলে অবশ্যই এই সমস্যা থেকে আপনারা উদ্ধার পাবেন। উপরোক্ত বিষয়গুলো পালন করার জন্য একটা নির্দিষ্ট রুটিন করে নিবেন। রুটিন মাফিক যদি কাজ করতে পারেন তাহলে আপনারা উপকৃত হবেন এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।
উপরের আর্টিকেল থেকে যদি আপনারা সামান্য পরিমাণ উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করতে ভুলবেন না।আবারও এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন আমাদের এই সাইটটিতে।
সব মিলবে ডট কমের নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা যায়
comment url